নাযুক অবস্থায় কিউবার মুসলিম সম্প্রদায়

কমিউনিস্ট দেশ কিউবায় মুসলমানের সংখ্যা মাত্র চার হাযার। সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু সেখানে নেই কোন মসজিদ, নেই কোন হালাল গোশতের দোকান! ছোট্ট এক উপকুলীয় শহর আলামারার একটি পরিত্যক্ত খেলার মাঠে প্রতি শুক্রবার জুম‘আর ছালাতের জন্য জড়ো হন কিছু সংখ্যক কিউবান মুসলিম। এই শহরে হাতে গোনা অল্প ক’জন মুসলিমের বাস। খেলার মাঠে যখন তারা ছালাত আদায় করেন, তখন আশ-পাশে থাকে মদ্যপানরত মানুষ আর অশ্লীলতার ছড়াছড়ি! কিউবার মতো একটা দেশে ইসলামিক রীতি এবং ঐতিহ্য মেনে চলা যে কত কঠিন চ্যালেঞ্জ তা এ অবস্থা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়।

রাজধানী হাভানায় মুসলমানদের ছালাত আদায়ের স্থান এখন পর্যন্ত একটাই। সেটা হ’ল ইমাম ইয়াহইয়া পেড্রো টোরেজের বাড়িতে। তিনি কিউবার ইসলামিক লীগের প্রেসিডেন্ট। তিনি স্বীকার করলেন, কিউবার মত দেশ, যেখানে মদ্য পান আর খোলামেলা যৌনতা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার, শূকর যেখানে জাতীয় খাদ্য, সেখানে কড়াকড়িভাবে ইসলাম মেনে চলা খুবই কঠিন। সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী একজন বলছিলেন, আমরা হালাল খাবার চাই, সেটা পাওয়া মোটেও সহজ নয়। তবে সবার সঙ্গে আমাদের খুব চমৎকার সম্পর্ক। সম্প্রতি সঊদী আরব কিউবার রাজধানী হাভানার শিল্পাঞ্চলের কাছে মসজিদ তৈরির কাজ শুরু করেছে। যেটা হবে কিউবার প্রথম মসজিদ।

যৌথবাহিনী গঠন করবে আরব লীগ

আরব লীগভুক্ত দেশগুলো সর্বসম্মতভাবে যৌথ সামরিক বাহিনী গঠনের খসড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি মোকাবিলায় এ বাহিনী গঠন করা হবে। গত ২৯শে মার্চ আরব লীগের মহাসচিব নাবীল আরাবী একথা জানান। তিনি বলেন, মিশরে আরব লীগ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ বাহিনী গঠন বিষয়ক খসড়া ইশতেহারের বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে। আরব রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে কোন হুমকি দেখা দিলে এ বাহিনী দ্রুত অভিযানে নামবে বলে খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে। আরব লীগের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে এ প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সম্প্রতি ইয়ামনে হাওছীদের উত্থান এবং লিবিয়া, সিরিয়া ও ইরাকে চরমপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আরব দেশগুলোর সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে আরব দেশগুলোর নেতারা এই আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের উদ্যোগ নিলেন। 

পর্যালোচকদের মতে, প্রায় ২২টি দেশ এই প্রস্তাবিত বাহিনীতে যোগ দেবে। এই বিশেষ বাহিনীতে ৪০ হাযার সেনা থাকবে। তাদেরকে যুদ্ধবিমান, যুদ্ধ জাহায ও হালকা অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা হবে।

চীনে দাড়ি রাখা ও বোরকা পরায় দম্পতির কারাদন্ড

চীনে ইসালম ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তিকে দাড়ি রাখার দায়ে ছয় বছর এবং নেকাবসহ বোরকা পরার অপরাধে তার স্ত্রীকে দু’বছর কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। গত ২৯শে মার্চ ঐ দম্পতির বিরুদ্ধে সমস্যার সৃষ্টি ও ঝগড়ার মতো অস্পষ্ট অভিযোগ এনে এ শাস্তি দেওয়া হয়। জিনজিয়াং অঞ্চলের উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ৩৮ বছর বয়স্ক ঐ ব্যক্তি ২০১০ সাল থেকে দাড়ি রেখে আসছেন এবং তাঁর স্ত্রী বোরকা ও নেকাবে মুখ ঢেকে রাখতেন।

উল্লেখ্য, চীনা কর্তৃপক্ষ দাড়ি রাখার বিষয়টিকে উগ্রপন্থার সঙ্গে তুলনা করে এবং দাড়ি না রাখতে উইঘুর মুসলমান পুরুষদের নিরুৎসাহিত করে আসছে। এছাড়া ‘প্রজেক্ট বিউটি’ নামের আরেকটি অভিযানের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নেকাব ত্যাগ করতে উৎসাহ দিয়ে আসছে। গণ-পরিবহনে ইসলামী পোষাক পরাও নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মুসলিম চাকরিজীবী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রামাযান মাসে ছিয়াম রাখাও নিষিদ্ধ রয়েছে সেখানে।

[জি-হ্যাঁ! এটাই হ’ল গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ধ্বজাধারী এবং জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতার অধিকারী একটি দেশের ভিতরকার চরিত্র। চীন, ভারত, আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানী কোন দেশেই মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই। কারণ ত্বাগূতী বিধানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীই হ’ল ইসলাম। ফলে সংঘর্ষ স্বাভাবিক। বস্ত্ততঃ ইসলামের মধ্যেই রয়েছে মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা। মানুষ যত দ্রুত এটা বুঝবে, তত দ্রুত তাদের মঙ্গল হবে (স.স.)]

৫০ সালে ইসলাম ধর্মবিশ্বাসীদের সংখ্যা দাঁড়াবে ২.৮ বিলিয়ন

বিশ্বে ইসলামই সবচেয়ে দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। জনপ্রিয়তার বিচারেও ইসলামই সর্বশীর্ষে। ২০৫০ সাল নাগাদ ইসলাম ধর্মবিশ্বাসীদের সংখ্যা দাঁড়াবে ২.৮ বিলিয়ন। এটা হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। সাম্প্রতিককালে ইসলাম গ্রহণকারীদের সংখ্যা নিকট অতীতের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৫০ জন ইসলাম গ্রহণ করে, যাদের বেশীর ভাগই তরুণ-তরুণী। ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যাই থাকতে পারে সবচেয়ে বেশী। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। একদিন ধর্মসমূহ ডাইনোসরের মতো বিলুপ্ত হয়ে যাবে, এমন ধারণার কথা অতীতে অনেকেই বলেছেন। তবে ঐ গবেষণার ফলাফল বলছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। সেখানে বলা হয়েছে, প্রায় প্রতিটি ধর্মের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। ধর্ম হিসাবে ইসলামের এই বিস্তার ও প্রভাবের কারণ ইসলামের নীতি-আদর্শ ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।

তবে দৃশ্যগ্রাহ্য দু’টি প্রধান কারণ হ’ল, মুসলমানদের মধ্যে জন্মহার তুলনামূলকভাবে বেশী এবং ধর্মান্তরকরণের মধ্যে এই ধর্মে প্রবেশের হার অন্যান্য ধর্মের চেয়ে বহুগুণ বেশী। অবশ্য ইহূদী-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ-হিন্দু কেউই একে ভালো চোখে দেখছে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সারাবিশ্বে মুসলমানদের উপর অন্যায় নির্যাতন এবং মুসলিম দেশগুলোতে চলমান যুদ্ধ-হানাহানির পেছনে প্রধান কারণই যে ইসলামের উত্থান ও মুসলিম আধিপত্য ঠেকানো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।






আরও
আরও
.