জনাব মুহাম্মাদ ক্বামারুযযামানের ফাঁসি

১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও সাপ্তাহিক সোনারবাংলা পত্রিকার সাবেক সম্পাদক জনাব মুহাম্মাদ ক্বামারুযযামানকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর গত ১১ই এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাত ১০.৩০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এ রায় কার্যকর হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। উল্লেখ্য, এর প্রায় দেড় বছর পূর্বে বিগত ১২ই ডিসেম্বর’১৩-এ অপর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল জনাব আব্দুল কাদের মোল্লাকে একই অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া হয়।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ২০১০ সালের ২৯শে জুলাই জনাব ক্বামারুযযামানকে গ্রেফতার করা হয় এবং ওই বছর ২রা আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। ৯ই মে’১৩ তারিখে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক তার বিরুদ্ধে করা মোট ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিতে অভিযুক্ত করে দু’টি অভিযোগে মৃত্যুদন্ড, দু’টিতে যাবজ্জীবন এবং অপর একটিতে ২০ বছর কারাদন্ড দেন। অতঃপর নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে আসামীপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। তারপর ৩রা নভেম্বর’১৪ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ মৃত্যুদন্ডের একটি অভিযোগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বহাল রাখেন। আরেকটিতে সাজা বাতিল করে যাবজ্জীবন করেন। এরপর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে আপিল বিভাগে রিভিউি পিটিশন করা হয়। গত ৬ই এপ্রিল’১৫ উক্ত আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা হয়।

মুহাম্মাদ ক্বামারুযযামান ১৯৫২ সালে শেরপুর যেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মুদিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি এসএসসি এবং ১৯৭৪ সালে বিএ পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৯৭৬ সালে এম এ পাস করেন। মুহাম্মাদ ক্বামারুযযামান সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত ছিলেন। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত তিনি সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান।

নিশ্চিহ্ন হ’তে চলেছে সুন্দরবন

বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষা অনুযায়ী সুন্দরবনের আয়ু আছে আর মাত্র ১০ বছর। এর মধ্যেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ ম্যানগ্রোভের বেশিরভাগ অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘আগামী একদশকের মধ্যে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের একটি বড় অংশ পানির তলায় হারিয়ে যেতে পারে। প্রতি বছর ৩-৮ মিলিমিটার পানির স্তর বেড়ে যাবে সুন্দরবনে। রিপোর্টে বলা হয়, ২০০৪ সালে সুনামির সময় সুন্দরবনের অবস্থা কী হ’তে পারে তার একটি পরিষ্কার চিত্র ফুটে উঠেছিল। এখনও জোয়ারের সময় ঘোড়ামারা এবং তার সংলগ্ন আরও বেশ কয়েকটি দ্বীপ পুরোপুরি পানির তলায় চলে যায়। রিপোর্টে সতর্ক করা হয়েছে, যদি সমস্যা সমাধানে বড় ধরনের পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তবে মানচিত্রে সুন্দরবনের কোন চিহ্ন থাকবে না। কারণ সুন্দরবনের ভূ-পৃষ্ঠ সমুদ্রতল থেকে বেশী উঁচুতে নয়। ফলে মাত্র ৪৫ সেমি পানিস্তর বাড়লেই গোটা সুন্দরবনের ৭৫ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

বিদেশ

সন্ত্রাসী হামলার পর ফ্রান্সে ইসলামী বইয়ের বিক্রয় বৃদ্ধি

ফ্রান্সের জাতীয় বুকশপ ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ইসলাম বিষয়ক বই বিক্রয়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ইউরোপে দ্রুত বিস্তার লাভ করতে থাকা এ ধর্মের ব্যাপারে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। গত জানুয়ারীতে প্যারিসে এ হামলায় ১৭ জন নিহত হওয়ার পর ফ্রান্সের ফিলোসফি ম্যাগাজিনের কুরআন বিষয়ক বিশেষ ক্রোড়পত্র এত বেশী বিক্রি হয়েছে যে, এখন আর তা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন দোকানে ইসলাম বিষয়ক অন্যান্য বইও দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রোড়পত্রের প্রকাশক ম্যাগাজিনের পরিচালক ফেব্রিস গারশেল বলেন, ফরাসীরা ইসলাম সম্পর্কে বস্ত্তনিষ্ঠ তথ্য জানতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে তারা এ ধর্ম সম্পর্কে যা জানতে পারছে, তাতে তারা খুব বেশী সন্তুষ্ট হ’তে পারছে না।

বিশেষতঃ ফরাসী শিক্ষাবিদরা ইসলাম সম্পর্কে আরো জানার ব্যাপারে কৌতূহলী হচ্ছেন। সম্প্রতি প্যারিসের নামকরা কলেজ দ্য ফ্রান্সে কুরআন অধ্যয়নে একটি চেয়ার উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকগণ কৌতূহলী হয়ে ইসলামকে সঠিকভাবে চেনার জন্য নতুন করে পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন শুরু করেছেন।

ভারতে গরু যবেহ নিষিদ্ধ করবে ভারত সরকার

-কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ভারতে গরু যবেহ নিষিদ্ধ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে সরকার। গত ২৯শে মার্চ জৈন সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারতে কোনভাবেই গরু যবেহ মেনে নেয়া যায় না। দেশে গরু যবেহ নিষিদ্ধ করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব। এ ব্যাপারে ঐক্যমত গড়ে তোলারও চেষ্টা করা হবে। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় এরই মধ্যে গরু যবেহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সমাবেশে গরুর পাশাপাশি মহিষ যবেহও নিষিদ্ধ করার জন্য আইন প্রণয়নের দাবী ওঠে।

এছাড়া তিনি বাংলাদেশীরা যাতে গরুর গোশত খাওয়া ত্যাগ করে, সেজন্য গরু চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েনের নির্দেশও দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, সীমান্তে গরু চোরাচালানের বিরুদ্ধে টহলব্যবস্থা যোরদার করায় সম্প্রতি বাংলাদেশে গরুর গোশতের দাম ৩০ শতাংশের বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। এই টহল আরো কঠোর করলে চোরাচালান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশে গরুর গোশতের দাম ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তখন বাংলাদেশের মানুষ গরুর গোশত খাওয়া ছেড়ে দেবে। ভারতের সরকারী পরিসংখ্যান মতে, ২০১৪ সাল থেকে ১৭ লাখ গরু ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছে।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয় গরু যবেহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে একটি বিল তৈরী করেছিল। কিন্তু পার্লামেন্টে ঐ বিল পাস হয়নি।

এদিকে ভারতের ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশে গরু না এলে বছরে ৩৯ হাযার কোটি রুপি ক্ষতির মুখে পড়বে ভারত। কারণ এতে বছরে সোয়া কোটি দুধ বন্ধ হয়ে যাওয়া গরু ভারতে গোয়ালেই থেকে যাবে। তখন এই গরুগুলো পুষতে এ খরচের বোঝা বহন করতে হবে।

[মানুষ কখনো গরুর পূজা করতে পারে না। অথচ এতবড় একটা দেশের নেতাদের মাথায় এখন গোপূজা ঢুকেছে। তারা গরুকে শকুন দিয়ে খাওয়াতে রাযী, কিন্তু তা যবেহ করে মানুষ দিয়ে খাওয়াতে রাযী নয়। কি চমৎকার প্রগতিবাদ! গরুর কাছে মানবতার এই পরাজয় নিঃসন্দেহে অবমাননাকর। সত্য-মিথ্যার ও হালাল-হারামের কোন স্থায়ী মানদন্ড না থাকার কারণেই ভারতীয় নেতাদের এই লজ্জাকর পদস্খলন। গরু সহ সকল গবাদি পশুকে আল্লাহ মানুষের সেবার জন্য ও তাদের খাদ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন (নাহল ১৬/৫; হজ্জ ২২/৩৪)। এই কুরআনী সত্যকে মেনে নেবার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানাই (স.স.)]

ইসরাঈলের পরমাণু বোমা তৈরীর কথা ফাঁস করল আমেরিকা

ইসরাঈলের পরমাণু বোমা বানানোর বিষয়টি ফাঁস করে দিয়েছে আমেরিকা। সত্তর-আশির দশকে প্রচলিত আণবিক বোমার চেয়ে এক হাযার গুণ শক্তিশালী বোমা তৈরীর চেষ্টা ইসরাঈল করছে বলে ইসরাঈলের পরমাণু কর্মসূচি সংক্রান্ত আমেরিকার গোপন প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের নির্দেশে একটি সংস্থা কর্তৃক তৈরী করা এই প্রতিবেদনটি গত ফেব্রুয়ারী মাসে প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। এতে ইসরাঈলী পরমাণু গবেষণাগারগুলোর উচ্চ মানের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সোরেক এবং দিমোনা পরমাণু স্থাপনা মানের দিকে থেকে আমেরিকার লস অ্যালমস, লরেন্স লিভারমোর এবং ওক ন্যাশনাল ল্যাবোরেটরিজের পরমাণু গবেষণাগারগুলোর সমান। এছাড়া এখানে অনেক গোপন তথ্যের সমাবেশ ঘটেছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত ইসরাঈলের পরমাণু বোমা বিষয়ক তথ্য ফাঁস করল আমেরিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৩ লাখ মানুষ

ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এক দশকের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ পর্যন্ত ১৩ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ে ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে ইরাকে। ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে আফগানিস্তানে। পাকিস্তানে নিহত হয়েছে প্রায় ৮১ হাযার মানুষ। এছাড়া এর প্রভাবে এ তিনটি দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।






আরও
আরও
.