কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়িত হ’লে এ প্রকল্প থেকে প্রতি বছর ২২৩ কেজি পারদ নির্গত হবে। এ পারদ পাশের সংবেদনশীল ভূমিতে অবক্ষেপ ও সঞ্চিত হবে। ফলে সুন্দরবন এলাকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকাংশই প্রতিবন্ধী হবে।
‘সুন্দরবনের জীব ভৌগোলিক বলয়ে রামপাল থেকে নির্গত পারদের প্রভাব’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিরাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর চার্লস টি ড্রিসকল এ গবেষণা করেছেন। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলন করে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে যৌথভাবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট।
গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের উন্নত দেশে পারদ নির্গতকারী প্রতিষ্ঠানে যত উন্নতমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক না কেন, তা প্রতি বছর ২২৩ কেজির অর্ধেক নির্গতই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। অথচ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র পারদ নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে অতটা উন্নতমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না। তাই এর প্রভাব মানুষের ওপর প্রকটভাবে পড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর বদরুল ইমাম বলেন, প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা প্রজ্বলনের কারণে প্রতি বছর ২২৩ কেজি পারদ নির্গত হবে। যা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আশপাশের অঞ্চলে নদীপথ ও বায়ুপথে জলজ ও বনজ পরিবেশ, যেখানে পশুর নদী ও গাঘেঁষা সুন্দরবনকে আক্রান্ত করবে।
ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের ডা. নাজমুন নাহার বলেন, পারদ দূষণ খুবই মারাত্মক। এটি মানুষকে বিকলাঙ্গ করাসহ জীবনে নানা ধরনের জটিল রোগের আবির্ভাব ঘটায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা এর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম দেন। অর্থাৎ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হ’লে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকাংশই হবে প্রতিবন্ধী।
[কর্তৃপক্ষের হটকারিতা বন্ধ হবে কি? (স.স.)]