চীনের
জিনজিয়াং (পূর্ব তুর্কিস্থান) মুসলিম অধ্যুষিত এবং তিববত একটি বৌদ্ধ
প্রধান প্রদেশ। এ দু’টি অঞ্চল একসময় স্বাধীনসত্তা নিয়ে থাকলেও পরবর্তীতে
সেখানে আসে চৈনিক সেনারা। ধীরে ধীরে অঞ্চল দু’টির স্বাধীনতা অস্বীকার করে
চীন সেগুলোকে নিজের অঙ্গীভূত করে নেয়। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে
বিজেপি সরকার এখন যে নীতি অনুসরণ করছে তা দেখে বোঝা যাচ্ছে যে, তারা
জিনজিয়াং এবং তিববতের প্রতি বেইজিংয়ের কৌশলকেই কাজে লাগাচ্ছে।
একটি স্বাধীন অঞ্চলকে বিভিন্ন অজুহাতে নিজের অঙ্গীভূত করে নেওয়া এবং সে অঞ্চলে বসবাসকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের নামে সংখ্যালঘু করে ফেলার কৌশলকে পশ্চিমের দেশগুলো নাম দিয়েছে ‘চায়না মডেল’। পশ্চিমের গণমাধ্যম বলছে, কাশ্মীর ইস্যুতে মোদি যেন ‘চীনের কৌশল’ অনুসরণ করছে।
কাশ্মীর এবং জিনজিয়াংয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক মিল। এই মুসলিম-প্রধান অঞ্চল দু’টির স্বাধীনতাকে বিতর্কিত করা হয়েছে। অঞ্চল দু’টির ওপর চেপেছে ভিন্নধর্মের মানুষের শাসন। শুধু তাই নয়, অঞ্চল দু’টিতে বহুজাতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক চাপ।
জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায় এক সময় তাদের অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকলেও এখন তারা হান জনগোষ্ঠীর অভিবাসনের ফলে সেসব জায়গায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। এমনকি চীন সরকার মুসলমানদের ধরে ধরে ‘শিক্ষা শিবিরে’ পাঠিয়ে তাদের ব্রেইন ওয়াশের কাজ করে চলেছে সুচতুরভাবে। ছালাত, ছিয়ামের মত ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধানের উপর নানা বিধি-নিষেধ আরোপ সহ নারীদের বন্ধ্যা করার মত ভয়াবহ নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সংবিধানে যে ৩৭০ ধারা ছিল, তা গত ৫ই আগস্ট তুলে নেওয়ার পর ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতাদের মুখে যেসব কথা শোনা যাচ্ছে তাতে চীনের নেতাদের কথারই প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। বিজেপি নেতারা এখন দলের কর্মীদের কাশ্মীরে গিয়ে বসবাস করার পাশাপাশি মুসলিম মেয়েদের বিবাহ করার প্রতি উৎসাহিত করছেন।
[ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই অপকৌশল সারা বিশ্বে চললেও কোন মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমনকি প্রতিবাদ করার মত সাহসও তাদের নেই। আল্লাহর উপর ভরসাকারী সাহসী নেতা আজ একান্তভাবেই কাম্য (স.স.)]।