মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার যতগুলো কারণ আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে মানুষই সর্বপ্রথম পৃথিবীর অন্য প্রজাতির প্রাণীদের অনুসন্ধান করতে শুরু করে। সেই অনুসন্ধান এখনো চলছে। মানুষ গহীন জঙ্গলে, পর্বতে, গুহায়, গভীর সমুদ্রে যেমন খুঁজছে প্রাণের সন্ধান, তেমনি খুঁজছে মহাশূন্যে। কিন্তু পৃথিবীতে ঠিক কত প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, সে বিষয়ে মানুষের জ্ঞান যে কত সামান্য সেটা বেরিয়ে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্সের চমকে দেওয়ার মত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর ৯৯.৯৯ শতাংশ প্রাণীই এখনো অনাবিষ্কৃত! পৃথিবীতে আরও এক হাযার কোটি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যার কথা বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত জানেন না। এই গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গবেষকরা বলেছেন, প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা নির্ণয়ের এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে জেনেটিক সিকুয়েন্সিং টুল বা জিনের ধারাবাহিকতা নির্ণয়ক যন্ত্র দিয়ে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে গবেষণার লেখক এবং ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী জে লেনন এবং কেন লোসে অণু-পরমাণু পর্যায়ের ফাঙ্গাই থেকে শুরু করে বড় আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণীদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। ঐ তালিকার মিশ্রণ থেকে স্কেলিং ল বা পরিমাপ আইন ব্যবহার করে তারা প্রাণী ও উদ্ভিদের মোট প্রজাতির সংখ্যা বের করেছেন। লেনন বলেছেন, ‘জীবাণুদের মধ্যে যে কি পরিমাণ বৈচিত্র্য রয়েছে সেটা আমাদের কল্পনাতেও ছিল না’। তারা আবিষ্কার করেছেন যে, এই পর্যন্ত যত জীবাণু আবিষ্কৃত হয়েছে তার এক লাখ গুণ বেশী জীবাণু এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। আরও ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) জীবাণু নিয়ে গবেষণা করতে হবে। তাই মহাবিশ্বের বিশালত্ব নিয়ে অতি বৃহৎ গবেষণা আর ক্ষুদ্র জীবাণুর অতি ক্ষুদ্রতা নিয়ে গবেষণা মূলতঃ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।