যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) গত ৯ই জানুয়ারী
বুধবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে ‘গণতান্ত্রিক’ কিংবা ‘ত্রুটিপূর্ণ
গণতান্ত্রিক’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। গত এক দশক ধরে
স্বৈরতান্ত্রিক ও ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অবস্থার মাঝামাঝি ‘হাইব্রিড
রেজিম’ তালিকায় দেশটি অবস্থান করছে বলে ইআইইউ বলছে। তবে বৈশ্বিক গণতন্ত্র
সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের স্কোর আগের বছরের তুলনায় ০.১৪ বেড়েছে। ফলে ২০১৭
সালে যেখানে দেশটির অবস্থান ছিল ৯২তম, পরের বছর হয়েছে ৮৮তম। ইআইইউ প্রতিটি
দেশকে গণতন্ত্র সূচক পরিমাপ করতে পাঁচটি মানদন্ড ব্যবহার করে। সেগুলো হ’ল-
নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, নাগরিক অধিকার, সরকারে সক্রিয়তা,
রাজনৈতিক এবং অংশগ্রহণ। প্রত্যেকটি মানদন্ডকে ০ থেকে ১০ স্কোরের মধ্যে
হিসাব করে গড় করা হয়। প্রাপ্ত স্কোরের ভিত্তিতে দেশগুলোকে চারটি
ক্যাটেগরিকে ভাগ করা হয়; স্বৈরতন্ত্র, হাইব্রিড রেজিম, ত্রুটিপূর্ণ
গণতন্ত্র এবং পূর্ণ গণতন্ত্র।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের হিসাব মতে বিশ্বের ১৬৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ২০টি দেশ গণতন্ত্রের তালিকায়। ৫৫টি দেশ ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশের তালিকায়। ৩৯টি দেশ হাইব্রিড রেজিমের তালিকায় এবং ৫৩টি দেশ স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় রয়েছে।
ইআইইউ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ বিরাজ করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তানে ‘হাইব্রিড রেজিম’ এবং আফগানিস্তানে ‘স্বৈরতন্ত্র’ সরকার ব্যবস্থা আছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২০০৬ সাল থেকে এধরনের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ইআইইউ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্র পর্যালোচনা করে তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবার ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ স্কোর ৯.৮৭ পেয়ে গণতন্ত্র সূচকে সবচেয়ে উপরের অবস্থানে আছে নরওয়ে। অন্যদিকে মাত্র ১.০৮ স্কোর নিয়ে উত্তর কোরিয়ার অবস্থান সবার নীচে।
ভারত গণতন্ত্র সূচকে বৈশ্বিক অবস্থান ৪১তম গড়স্কোর ৭.২৩ পেয়ে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, শ্রীলঙ্কা ৬.১৯ পেয়ে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, বাংলাদেশ ৮৮তম গড় স্কোর ৫.৫৭ পেয়ে হাইব্রিড রেজিম, ভুটান ৯৪তম গড়স্কোর ৫.৩০ হাইব্রিড রেজিম, নেপাল ৯৭তম গড়স্কোর ৫.১৮ পেয়ে হাইব্রিড রেজিম, পাকিস্তান ১১২তম গড়স্কোর ৪.১৭ পেয়ে হাইব্রিড রেজিম ও আফগানিস্তান ১৪৩তম গড়স্কোর ২.৯৭ পেয়ে স্বৈরতন্ত্র দেশ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।