২১শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার : অদ্য সকাল ৬-টায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও ইসলামী জাগরণী পরিবেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর বার্ষিক কর্মী সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে স্বাগত ভাষণ পেশ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক্বীম আহমাদ (রাজশাহী)। উদ্বোধনী ভাষণ পেশ করেন কর্মী সম্মেলনের সভাপতি ও ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া)। এরপর ‘সংগঠনের অগ্রগতির উপায় সমূহ’ বিষয়ে যেলা সভাপতি ও প্রতিনিধিগণের মধ্য হ’তে পরামর্শমূলক বক্তব্য পেশ করেন বরিশাল যেলা সভাপতি কায়েদ মাহমূদ ইমরান, নরসিংদী যেলা সভাপতি আব্দুস সাত্তার, ঝিনাইদহ যেলা সভাপতি আসাদুল্লাহ মিলন, লালমণিরহাট যেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম, যশোর যেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রহীম, নারায়ণগঞ্জ যেলা সভাপতি জালালুল কবীর, বগুড়া যেলা সভাপতি আল-আমীন, পাবনা যেলা সভাপতি হাসান আলী ও চট্টগ্রাম যেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য আলমগীর হোসায়েন। কর্মীদের গুণাবলী’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবুল কালাম (জয়পুরহাট), আহলেহাদীছ আন্দোলন কি চায়, কেন চায়, কিভাবে চায় বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরীফুল ইসলাম (চাঁপাই নবাবগঞ্জ), আজকের সোনামণিরা আগামী দিনের যুবসংঘ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক আবদুল হালীম (রাজশাহী), সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে যুবসংঘ-এর ভূমিকা বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব (রাজশাহী), জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আহলেহাদীছ যুবসংঘ-এর ভূমিকাবিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. নূরুল ইসলাম (রাজশাহী), কর্মপদ্ধতি পর্যালোচনা করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম (রাজশাহী)। আরো বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন প্রমুখ।

অতঃপর প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর প্রধানতম সংস্কার কর্মসূচী তিনটি : ১. নেতৃত্বের সংস্কার, ২. শিক্ষা সংস্কার ও ৩. অর্থনৈতিক সংস্কার। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ ‘অহি’ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ হ’ল অভ্রান্ত সত্যের চূড়ান্ত মানদন্ড। উক্ত অহি-র সত্যকে মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগে প্রতিষ্ঠা করা ও সেই আলোকে সমাজের আমূল সংস্কারের লক্ষ্যে আমরা উক্ত তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।

তিনি বলেন, আমাদের নেতৃত্ব নির্বাচনের সাথে অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনের মিল নেই। এমনকি আহলেহাদীছ নামের অন্যান্য সংগঠনের সাথেও আমাদের নেতৃত্ব নির্বাচনে পার্থক্য রয়েছে। এখানে যোগ্য নির্বাচকদের পরামর্শের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হয়। শুধুমাত্র ইলম দিয়ে নেতা হওয়া যায় না। ইলমের সাথে যোগ্যতা লাগে। যোগ্যতার সাথে লাগে সাহস। রাজতন্ত্রে রাজার ছেলে নেতা হয়। গণতন্ত্রে অধিকাংশের রায়ে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। আমাদের এখানে এর কোনটাই নেই।

‘যুযসংঘে’র নতুন কমিটি গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ছেলে ‘যুবসংঘে’র সভাপতি হোক তা আমি কখনো চাইনি। কিন্তু বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় যে, তাকেই সভাপতি করা হবে। আমি আমীর হিসাবে কাউন্সিল সদস্যদের সিদ্ধান্তকে বাতিল করতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু পরামর্শের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে এটা করা হয়েছে, তাই বাতিল করিনি। সকলের মতামতকে সম্মান জানিয়েছি। আমরা আল্লাহর কাছে দো‘আ করছি, আল্লাহ যেন তাকে সার্বিক যোগ্যতা দান করেন এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের তাওফীক দান করেন।

আমীরে জামা‘আত বলেন, আমরা যাওয়ার পথে। ভবিষ্যতে যুবসংঘের ছেলেরাই নেতৃত্ব দিবে। বিদায়বেলায় এটুকুই বলতে চাই, তোমরা লক্ষ্যে দৃঢ় থাকবে এবং স্থির অটল একটি দেহের বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে। কেননা ঐক্যবদ্ধ একটি সংগঠনকে ধ্বংস করার ক্ষমতা কারু নেই। আমাদের লক্ষ্য দৃঢ় থাকার কারনেই আজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমরা দু’ধরণের বাধার সম্মুখীন হয়েছি। ১. লোভের বাধা। সেটি হ’ল মাল ও মর্যাদার লোভ। ২. ভয়ের বাধা। আর এই উভয় বাধা মোকাবেলা করেই লক্ষ্যপানে এগিয়ে যেতে হবে। অতঃপর ২য় দিনের সম্মেলনে সমাপনী বক্তব্য পেশ করেন ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশীদ আখতার

উল্লেখ্য যে, সম্মেলনের ২য় দিন শুক্রবার বাদ ফজর মারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ মসজিদে ‘দরসে কুরআন’ পেশ করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত এবং একই সময়ে পশ্চিম পার্শ্বস্থ মসজিদে ‘মৃত্যুকে স্মরণ’ বিষয়ে দরসে হাদীছ পেশ করেন খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম।

দু’দিন ব্যাপী কর্মী সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে কুরআন তেলাওয়াত করেন, হাফেয লুৎফুর রহমান (প্রধান, হিফয বিভাগ, মারকায), হাফেয সাইফ আলী (শিক্ষক, মারকায), হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির (সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, আল-‘আওন), হাফেয মুখলেছুর রহমান (বগুড়া) ও হাফেয দেলোয়ার হোসাইন (ছাত্র, মারকায)। ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করে আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান (জয়পুরহাট), রাক্বীবুল ইসলাম (মেহেরপুর), আব্দুল্লাহ আল-মামুন (সাতক্ষীরা), হাফেয আব্দুল্লাহ শাকিল (নাটোর), কেরামত আলী (পাবনা) প্রমুখ। সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে সঞ্চালক ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক দুররুল হুদা, দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর অর্থ সম্পাদক কাযী হারূণুর রশীদ, ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ। 

সম্মেলনের অন্যান্য রিপোর্ট :

১. ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মনোনয়ন : সম্মেলনের ১ম দিন রাতে ‘যুসংঘে’র কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্যদের সর্বসম্মত পরামর্শের ভিত্তিতে ২০১৮-২০২০ সেশনের জন্য ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসাবে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের জ্যেষ্ঠ পুত্র আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিবকে মনোনীত করা হয়। অতঃপর ২৭শে সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও শপথ গ্রহণ সম্পন্ন হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিম্নরূপ :

 

নাম

পদবী

শিক্ষাগত যোগ্যতা

যেলা

আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব

সভাপতি

এম.এ

রাজশাহী

মুস্তাফীযুর রহমান সোহেল

সহ-সভাপতি

এম.কম

নারায়ণগঞ্জ

মুস্তাক্বীম আহমাদ

সাধারণ সম্পাদক

বি.এ

রাজশাহী

আবুল কালাম

সাংগঠনিক সম্পাদক

কামিল

জয়পুরহাট

আব্দুল্লাহিল কাফী

অর্থ সম্পাদক

এম.এ

রাজশাহী

ইহসান ইলাহী যহীর

প্রচার সম্পাদক

দাওরায়ে হাদীছ, এম.এ

কুমিল্লা

মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

প্রশিক্ষণ সম্পাদক

এম.পি.এইচ (শেষ বর্ষ)

ঝিনাইদহ

আব্দুল্লাহ আল-মামূন

ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক

এম.এ (অধ্যয়নরত)

বগুড়া

মুখতারুল ইসলাম

তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক

এম.এ

রাজশাহী

শামীম আহমাদ

সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক

আলিম

সিরাজগঞ্জ

সা‘দ আহমাদ

সমাজকল্যাণ সম্পাদক

এস.এস.সি

মেহেরপুর

মুহাম্মাদ আজমাল

দফতর সম্পাদক

এম.এ

রাজশাহী

 

২. কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলন : সম্মেলনের ২য় দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯-টা থেকে ১১-টা পর্যন্তমারকাযের পূর্ব পার্শ্বস্থ মসজিদের ২য় তলায় মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সভাপতিত্বে ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণ পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। অতঃপর ২০১৭-২০১৮ বর্ষের কেন্দ্রীয় বার্ষিক আয়-ব্যয়ের অডিটকৃত হিসাব পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম। এরপর সংগঠনের সার্বিক রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। সংগঠনের অগ্রগতি সম্পর্কে পরামর্শমূলক বক্তব্য পেশ করেন রাজশাহী সদর সাংগঠনিক যেলার উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট জারজিস আহমাদ, দিনাজপুর-পশ্চিম সাংগঠনিক যেলার প্রশিক্ষণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ। অতঃপর কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত। এ সময়ে তিনি সংগঠনের বিভিন্ন যেলার অসুস্থ কর্মী ও সুধীদের জন্য দো‘আ করেন। তারা হ’লেন, ১. হাবীবুর রহমান (যশোর), ২. নূরুযযামান (মাগুরা), ৩. দূররুল হুদা (রাজশাহী), ৪. আব্দুর রহমান সানা (সাতক্ষীরা), ৫. শরাফত আলী (কুমিল্লা), ৬. মীযানুর রহমান (জামালপুর-দক্ষিণ), ৭. রফীকুল ইসলাম (বগুড়া), ৮. আমজাদ হোসাইন (দিনাজপুর-পশ্চিম), ৯. দ্বীন মুহাম্মাদ (সাতক্ষীরা)। সেই সাথে সংগঠনের বিভিন্ন যেলায় সম্প্রতি মৃত্যুবরণকারী কর্মী ও দায়িত্বশীলবৃন্দের মাগফেরাতের জন্য দো‘আ করা হয়। তারা হ’লেন, ১. সাতক্ষীরা যেলা আন্দোলন’-এর উপদেষ্টা মাষ্টার আমীনুদ্দীন, ২. যশোরের কেশবপুর উপযেলাধীন দোরমুটিয়া শাখা ‘আন্দোলন’-এর দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ নাযীর আহমাদ ও ৩. লালমণিরহাট যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মাদ জাহিদ হোসাইন।

৩. জুম‘আর খুৎবা : সম্মেলনের ২য় দিন জুম‘আর খুৎবায় হাম্দ ও ছানা পাঠের পর আমীরে জামা‘আত বার্ষিক কর্মী সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। অতঃপর কর্মী সম্মেলনে আগত কর্মী, সুধী ও মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত রাসূল (ছাঃ) তাওহীদের দাওয়াত দেননি ততদিন পর্যন্ত তিনি সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। যখন তিনি তাওহীদের দাওয়াত দেয়া শুরু করলেন তখন থেকেই তার বিরুদ্ধাচরণ শুরু হয়ে গেল। যে ইবরাহীম মূর্তি ভেঙ্গেছিলেন সেই ইবরাহীমের পরবর্তী বংশধরেরা মূর্তি পূজা শুরু করেছিল। তাদেরকে এই শিরক হ’তে বাঁচানোর জন্য দাওয়াত প্রদানের জন্যই শেষ নবী (ছাঃ)-কে নির্যাতিত হ’তে হয়েছিল। তাকে মক্কা থেকে বহিষ্কৃত হ’তে হয়েছিল।

তিনি বলেন, আবূ জাহল ছিলেন তৎকালীন আরবের একজন ধর্মীয় ও সমাজ নেতা। তার দায়িত্বে হজ্জের ব্যবস্থাপনা সম্পাদিত হ’ত। অন্যদের কাফেলা লুট হ’লেও তাদের কাফেলা লুট হ’ত না। কারণ ধর্মীয় আভিজাত্য তাদের মধ্যে ছিল। কিন্তু তারা আল্লাহর বিধানকে মানেনি। ধর্ম, রাজনীতি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে তারা নিজেরাই বিধান তৈরী করেছিল। সূদী অর্থনীতিকে তারা গ্রহণ করেছিল। ফলে মানুষের মধ্যে পাঁচতলা ও গাছতলার মত বিশাল পার্থক্য সূচিত হয়েছিল। একদিকে বিশাল ধনীরা ছিল অপরদিকে ক্ষুধায় ক্রীতদাস হয়ে বাজারে বিক্রি হ’ত অনেকেই। রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ধর্মীয় কোন ক্ষেত্রেই তারা আল্লাহ্কে মানত না। এই মানুষগুলিকে হেদায়াত করার জন্যই আমাদের প্রিয়নবী (ছাঃ) তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছিলেন।

আমীরে জামা‘আত বলেন, অধিকাংশ ইসলামী দল ছুটছে বঙ্গভবনের দিকে। আর আহলেহাদীছ আন্দোলন চলছে স্রেফ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাজ সংস্কারের দিকে। তাদের আর আমাদের পথ আদৌ এক নয়। ধরুন! দেশের সবগুলি ইসলামী দল সংসদে গেল। এরপর সেখানে ফিতরা নির্ধারণ সম্পর্কে স্পিকার বললেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক এবারের ফিতরা ৬৬/= টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একজন মিসকীন আহলেহাদীছ এমপি দাঁড়িয়ে বললেন, হাদীছে খাদ্য দ্বারা ফিতরা দেয়ার কথা এসেছে। তাই আমরা হাদীছ মোতাবেক আড়াই কেজি চাউল দিব। স্পিকার বললেন, আপনি সুন্দর বলেছেন। কিন্তু যেহেতু সংসদের অধিকাংশই ৬৬/= টাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন তাই এটাই বহাল রাখা হ’ল। আপনি একটি সংখ্যালঘু দলের নেতা। তাই আপনার বক্তব্য গৃহীত হ’ল না।

এখন আপনারাই বলুন! সংসদের এই রায় কি আপনারা মানবেন? মানুষ বড়, নাকি কুরআন-হাদীছ বড়? এখানে জনগণের সার্বভৌমত্বের জয় হ’ল, নাকি আল্লাহর? এটা কি শিরক নয়? অথচ আল্লাহ বলেছেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়ছালা দিলে কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর সে বিষয়ে নিজস্ব কোন ফায়ছালা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে, সে ব্যক্তি স্পষ্ট ভ্রান্তিতে পতিত হবে’ (আহযাব ৩৩/৩৬)

আমরা বলছি আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি। আমরা কাউকে শত্রু মনে করি না। সবাই আমাদের ভাই। এটাই আমাদের দাওয়াতের তরীকা। যা অন্যান্য ইসলামী দলের তরীকার সাথে পার্থক্য সৃষ্টি করে। অন্যান্য দলের লক্ষ্য দলকে বিজয়ী করা, আর আমাদের লক্ষ্য হ’ল, কুরআন-হাদীছকে বিজয়ী করা। সকল দলের কাছে কুরআন-হাদীছের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। আমাদের লক্ষ্য সমাজ পরিবর্তন করা, আর অন্যদের লক্ষ্য দল ভারি করে সরকার পরিবর্তন করা। তাদের সরকারের মেয়াদ ৫ বছর। আর আমাদের সমাজের মেয়াদ আজীবন। আমাদের দাওয়াত সুদূরপ্রসারী, আর তাদের দাওয়াত সাময়িক টোটকা ঔষধের মত। তিনি বলেন, ‘সকল বিধান বাতিল কর, অহি-র বিধান কায়েম কর’ এটাই হ’ল সমাজকে স্থায়ীভাবে পরিবর্তনের একটি সর্বব্যাপী ঘোষণা। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ এই ঘোষণার মাধ্যমে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে, তোমাদের সৃষ্ট মতবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে অচল। সকল কল্যাণ রয়েছে অহি-র বিধান পালন করার মধ্যে। আমাদের দাওয়াতের পদ্ধতি হ’ল তিনটি। ১. তাযকিয়াহ তথা পরিশুদ্ধিতা। ২. তারবিয়াহ তথা পরিচর্যা। ৩. জামা‘আতবদ্ধ দাওয়াত। অতএব আসুন! এই তিনটি মূলনীতি অনুসরণে দুর্বার গতিতে সম্মুখপানে এগিয়ে চলি। আল্লাহ আমাদের সকলকে সেই তাওফীক দান করুন- আমীন!

৪. আল-‘আওন-এর ক্যাম্পিং ও ব্লাড গ্রুপিং : সম্মেলন উপলক্ষে মূল প্যান্ডেল সংলগ্ন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী কমপ্লেক্স-এর আবাসিক ভবনের নীচতলার বারান্দায় আল-‘আওন-এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আল-‘আওন-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ জাহিদ, প্রচার সম্পাদক রাক্বীবুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির, দফতর সম্পাদক আব্দুল বাছীর প্রমুখ। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে মোট ৬০ জনের ব্লাড গ্রুপিং ও ১০৫ জন রক্তদাতা সদস্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময় আল-‘আওনের শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন সমূহ প্রদর্শন করা হয়।

৫. গ্যালারী : সম্মেলন উপলক্ষে মারকাযের দশম শ্রেণীর ছাত্ররা পূর্ব পার্শ্বের প্রবেশ পথে গেইট সংলগ্ন বালু ও মাটিতে ‘কর্মী সম্মেলন ২০১৮ সফল হোক, বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ লেখা সম্বলিত সুদৃশ্য গ্যালারী তৈরী করে। যা সকলের নযর কাড়ে।






আরও
আরও
.