যেলা সম্মেলন

অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে কোন নির্যাতনকে পরোয়া করবেন না

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

কানসাট, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ ২৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর যেলার শিবগঞ্জ থানাধীন কানসাট রাজবাড়ী মাঠে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, কানসাটের অদূরে নারায়ণপুরের রফী মোল্লা শিরক-বিদ‘আত সহ যাবতীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম করে এদেশের মানুষকে কুরআন ও হাদীছের পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন। এ কারণেই তাকে বৃটিশ সরকার ১৮৫৩ সালে মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুর জেলখানায় বন্দী করে রেখেছিল। কিন্তু হকের দাওয়াত থেকে তিনি এক চুল পরিমাণও সরে যাননি। পরে তাঁর ছেলে মৌলবী আমীরুদ্দীন পিতার এ দাওয়াত অব্যাহত রাখেন। বেদ‘আতী ফকীর ও গ্রাম্য মাতববরদের চক্রান্তে ওয়াহহাবী নামে অভিহিত হয়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং বিচারে ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত হন। কিন্তু তাতে আলহামদুল্লিাহ বলায় তাকে আন্দামানে  যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের দন্ড দেওয়া হয় এবং সমস্ত সম্পত্তি বাযেয়াফ্ত করা হয়। ১৮৭২ সালের মার্চ থেকে ১৮৮৩ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় ১১ বছর রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন করে ছালাত আদায় করলে  তাকে নির্বাসনে কাটাতে হয়। একইভাবে রাফ‘ঊল ইয়াদায়েন করে ছালাত আদায় করে ওয়াহহাবী হিসাবে ধরা পড়ার ভয়কে উপেক্ষা করে শিয়ালকোটের (পাকিস্তান) জুম‘আ মসজিদে ধরা পড়ার পরে সাতক্ষীরার মার্জুম হোসেনকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছিল। কিন্তু তিন তিন বার ফাঁসির দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় ভীত হয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সেদিন যেকোন মূল্যে সুন্নাতের উপর দৃঢ় থাকার কারণে ও হক্বের দাওয়াত দেওয়ার কারণে রফী‘ মোল্লা, আমীরুদ্দীন ও মার্জুম হোসেনকে ওয়াহহাবী জঙ্গী আখ্যায়িত করে নির্যাতন করা হয়েছিল। আজও ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর নেতা-কর্মীদেরকে একই কারণে মিথ্যা অপবাদে সরকারের হাতে নির্যাতিত হ’তে হচ্ছে। তিনি সমবেত বিশাল জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আল্লাহর উপরে ভরসা করে অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলে ঐক্যবদ্ধ হউন। এজন্য কোন অপবাদ ও নিপীড়নকে পরোয়া করবেন না।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডঃ মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, স্থানীয় মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুবিনুর রহমান ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ জর্জকোর্টের এ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন, প্রচার সম্পাদক মুহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম এবং প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার।

পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছই অভ্রান্ত সত্যের একমাত্র উৎস

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

তেরখাদা, খুলনা ৬ ডিসেম্বর সোমবার : অদ্য বাদ আছর যেলার তেরখাদা উপযেলা শহরের ইখড়ি-কাঠেংগা হাইস্কুল ময়দানে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ খুলনা যেলার তেরখাদা এলাকার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বিগত দিনে প্রসিদ্ধ চার ইমামের উপরে সরকারী নির্যাতনের কাহিনী বর্ণনা শেষে বলেন যে, সে যুগে সরকারের লেজুড় আলেমদের চক্রান্তে পড়েই তাঁরা সরকারের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন। আজও সেক্যুলার ও পপুলার ইসলামীদের জোট সরকার ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর নেতা-কর্মীদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ চার ইমামের বক্তব্য ছিল একটাই যে, ‘যখন তোমরা ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনে রেখ সেটাই আমাদের মাযহাব’। এতেই দুনিয়া পূজারীরা ক্ষিপ্ত হয়। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পরে তাদের নাম ভাঙিয়ে দুনিয়াদার লোকেরা দলাদলিতে লিপ্ত হয়। এতে তারা দুনিয়াতে কিছু লাভবান হ’লেও আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও ইমামদের আদর্শ তাদের মধ্যে বলতে গেলে কিছুই নেই। তিনি বলেন, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ছাহাবাযুগ থেকে চলে আসা সমাজ সংস্কার আন্দোলনকে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ বলা হয়। শেষনবী ছিলেন বিশ্বনবী। তাঁর রেখে যাওয়া কুরআন ও হাদীছ বিশ্বের সকল মানুষের কল্যাণের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত্ব অভ্রান্ত এলাহী বিধান। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ তাই কোন গোষ্ঠীগত আন্দোলন নয়, বরং এটি বিশ্ব মানবতার মুক্তি আন্দোলন। তিনি বলেন, তওরাত, যবূর, ইঞ্জীল পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু কুরআন রয়েছে পরিবর্তনের যাবতীয় সন্দেহের ঊর্ধ্বে। কারণ কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন। এই কুরআন গবেষণা করেই অনেক খৃষ্টান বিজ্ঞানী ইসলাম কবুল করেছেন। আজকে আমাদেরকেও অভ্রান্ত সত্যের উৎস পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী আমাদের সার্বিক জীবন গড়ে তুলতে হবে। তাহ’লেই আমাদের ইহকাল ও পরকালে সফলতা অর্জিত হবে। তিনি উপস্থিত সকলকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ার উদাত্ত আহবান জানান।

খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক জনাব গোলাম মোক্তাদির, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম ও ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল (ঢাকা), রূপসা-পূর্ব এলাকা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও চাঁদপুর দাখিল মাদরাসার সহ-সুপার মাওলানা মামূনুর রশীদ ও জুনারী দাখিল মাদরাসার সহ-সুপার মাওলানা আব্দুর রহীম প্রমুখ। সম্মেলনে ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করেন ‘আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠী’র প্রধান মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম (জয়পুরহাট)।

উত্তর বঙ্গের তিনটি প্রসিদ্ধ মাদরাসায় আমীরে জামা‘আতের পক্ষ হ’তে হাদিয়া প্রদান

উত্তরবঙ্গের নওগাঁ যেলাধীন সাপাহার থানার তিনটি প্রসিদ্ধ কওমী মাদরাসায় মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের পক্ষ থেকে কিছু হাদিয়া নিয়ে গত ৭ই ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠান সমূহে গমন করেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। তার সফরসঙ্গী ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন, ‘সোনামণি’ কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন, সহ-পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর শিক্ষক মাওলানা ফযলুল করীম, চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ, নওগাঁ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সহ-সভাপতি আফযাল হোসাইন ও নওগাঁ যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি আফযাল হোসাইন প্রমুখ।

সকাল সাড়ে ৮-টায় রাজশাহী থেকে মাইক্রোযোগে রওয়ানা হয়ে প্রথমে তারা আলাদীপুর দারুল হুদা সালাফিইয়া মাদরাসায় গমন করেন এবং মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব হাটহাজারী-এর নিকট প্রিণ্টার, ইউপিএস সহ একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার সেট উপহার হিসাবে প্রদান করেন। সেই সাথে একটি আল-মাকতাবাতুশ শামেলাহর সিডি প্রদান করা হয়। যেখানে তাফসীর, তারীখ, হাদীছ, ফিক্বহ প্রভৃতির প্রায় ১১ হাযার অমূল্য গ্রন্থের সংগ্রহ রয়েছে। শিক্ষক ও ছাত্রগণ এসব সংগ্রহ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সমূহ জেনে নিতে পারবেন। অতঃপর মাদরাসা সংলগ্ন মসজিদে সমবেত ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মেহমানগণ বক্তব্য পেশ করেন।

বাদ যোহর তাঁরা আলাদীপুর হ’তে অন্যূন ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী কদমডাংগা ইসলামিয়া আরাবিয়া সালাফিইয়াহ মাদরাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সেখানে অপেক্ষমান উক্ত মাদরাসার শিক্ষক মন্ডলী ও কমিটির সদস্যগণ তাদেরকে স্বাগত জানান। অতঃপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে আত-তাহরীক সম্পাদক সকলকে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সালাম পৌঁছে দেন এবং মাদরাসার ভবন নির্মাণ বাবদ কিছু নগদ অনুদান কমিটির সভাপতি জনাব হায়াত আলী মাষ্টার-এর নিকট প্রদান করেন। এ সময়ে মসজিদে সমবেত ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশ্যেও মেহমানগণ বক্তব্য পেশ করেন।

সেখান থেকে বিকাল ৪-টায় রওয়ানা হয়ে মাগরিবের সময় তারা দেশের সর্ব উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত সংলগ্ন কলমুডাংগা দারুল উলূম সালাফিইয়াহ মাদরাসায় গমন করেন। সেখানে মাদরাসার অফিস কক্ষে কমিটির সদস্য বৃন্দ ও শিক্ষক মন্ডলীর সাথে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আত-তাহরীক সম্পাদক মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সালাম পৌঁছে দেন এবং  অত্র প্রতিষ্ঠানে যেন ইলমে হাদীছের দারস ও তাদরীস ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকে, সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অতঃপর তিনি মাদরাসার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার সেট মুহতামিম জনাব আব্দুল হাকীম-এর হাতে তুলে দেন। অতঃপর মসজিদে সমবেত ছাত্রদের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় মেহমানগণ উপদেশমূলক বক্তব্য পেশ করেন। অতঃপর বাদ মাগরিব তারা রাজশাহীতে রওয়ানা হন।

উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত তিন মাদরাসারই স্বনামধন্য সাবেক শিক্ষক ও আমৃত্যু আলাদীপুর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা শামসুদ্দীনের জানাযায় অংশগ্রহণ শেষে গত ২৩ অক্টোবর শনিবার মুহতারাম আমীরে জামা‘আত অত্র মাদরাসাগুলি পরিদর্শন করেন এবং নিভৃত পল্লীতে প্রতিষ্ঠিত ইলমে হাদীছের এই দরসগাহ গুলি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। অতঃপর তারই ধারাবাহিকতায় তিনি মাদরাসাগুলিতে যৎসামান্য উপঢৌকন প্রেরণ করেন।

হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর গবেষণা বিভাগ উদ্বোধন

গবেষণা বিভাগ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের সকল মানুষের কল্যাণে কাজ করবে

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

রাজশাহী, ১ ডিসেম্বর বুধবার : অদ্য বাদ আছর দারুল ইমারত আহলেহাদীছ নওদাপাড়া, রাজশাহীতে ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর গবেষণা বিভাগ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক এবং ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর উন্নতি-অগ্রগতির মূলে দু’টি কারণ রয়েছে। একটা মানুষের নিজস্ব প্রচেষ্টা এবং আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা, যা নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে হয়েছে। এ পৃথিবীতে জ্ঞানে, বোধশক্তিতে আল্লাহ কাউকে বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। এমনকি নবী-রাসূলদের মধ্যেও আল্লাহ কাউকে মর্যাদায় উচ্চ করেছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীতে দুইভাবে পরিবর্তন হয়েছে; নবুয়াত ও রেসালাতের মাধ্যমে এবং মানুষের দ্বারা সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে। তিনি বলেন, অমুসলিম পন্ডিতগণ, যাদের কাছে অহি-র আলো ছিল না, তারা নিজেদের আলো দ্বারা মানুষের কল্যাণ করতে চাইতেন। যেমন এরিষ্টটল, প্লেটো, আইনষ্টাইন প্রমুখ। তারা নিজেদের জ্ঞানের আলোকে পৃথিবীর কল্যাণ করতে চেয়েছিলেন। পক্ষান্তরে মুসলমানরা চেয়েছেন নিজেদের জ্ঞানের সাথে অহি-র জ্ঞান যোগ করে পৃথিবীকে আলোকিত করতে। যেমন আমরা খোলাফায়ে রাশিদার আমলে দেখেছি।

তিনি বলেন, হাদীছ ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগকে বর্তমান যুক্তি ও বিজ্ঞানের মোকাবিলা করতে হ’লে হাদীছের মাধ্যমেই করতে হবে। গবেষণা বিভাগের সামনে মৌলিক কয়েকটি বিষয় থাকতে হবে। আহলুর রায়রা তাদের বিগত দিনের ইমামদেরকে তাদের গবেষণার সামনে রাখে। সেক্যুলাররা তাদের জ্ঞানীদের সামনে রাখে। কিন্তু আহলেহাদীছ গবেষকদের সামনে থাকবে কুরআন, হাদীছ ও মুহাদ্দিছীনের মাসলাক। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এমনকি উপমহাদেশে কোন সংগঠনের কোন গবেষণা বিভাগ নেই, যা আজ ‘আহলেহাদীছ আন্দোলনে’র হয়েছে। সুতরাং এ বিভাগের গবেষকদেরকে দুনিয়ার সকলের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর সচিব অধ্যাপক আব্দুল লতীফ ‘আন্দোলন’-এর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, দফতর সম্পাদক হারূনুর রশীদ, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, সোনামণির কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন, নওদাপাড়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা রুস্তম আলী, ফযলুল করীম হাফেয লুৎফর রহমান, শামসুল আলম মুফাক্ষার হোসেন, হাফেয মাসুদ ও গবেষণা বিভাগের জন্য সদ্য নিয়োগকৃত গবেষকবৃন্দ।

যুবসংঘ

কেন্দ্রীয় কর্মী প্রশিক্ষণ

রাজশাহী ২৩, ২৪, ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার : গত ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ আছর হ’তে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীতে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর ‘তিন দিন ব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মী প্রশিক্ষণ ২০১০’ শুরু হয়। ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন ‘আন্দোলন’-এর শূরা সদস্য ও ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ, ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারূক আহমাদ, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শেখ আব্দুছ ছামাদ, তাবলীগ সম্পাদক মুহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার হেফয বিভাগের প্রধান হাফেয লুৎফর রহমান প্রমুখ। তিন দিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। তিনি ‘যুবসংঘে’র বিগত দিনের ইতিহাসের উপরে কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এতে বহু অজানা তথ্য জানতে পেরে কর্মীগণ দারুণভাবে উজ্জীবিত হন। দেশের বিভিন্ন যেলা থেকে আগত কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অহি-র দাওয়াত দিতে গেলে বিভিন্ন বাধা আসবে। সেসকল বাধাকে ঈমানী শক্তি নিয়ে পেরিয়ে যেতে হবে। কোন যুলুম-নির্যাতনের ভয়ে হক-এর দাওয়াত হ’তে পিছিয়ে থাকা যাবে না। তিনি কর্মীদেরকে যে কোন মূল্যে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে পরিচালিত এ মহান সমাজ সংস্কার আন্দোলনকে অব্যাহত রাখার আহবান জানান।

প্রশিক্ষণ শেষে মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুহাম্মাদ মুনীরুল ইসলাম (রাজবাড়ী) ১ম স্থান, মুহাম্মাদ যুবায়েদ আলী (কুমিল্লা) ২য় স্থান ও মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম (ঢাকা) ৩য় স্থান অধিকার করেন। মুহতারাম আমীরে জামা‘আত তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ও দো‘আ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক এবং ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন ও সাবেক সভাপতি ডঃ এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ।

ইবতেদায়ী সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষায় নওদাপাড়া মাদরাসার সাফল্য; সমাপনীতে ১০ম স্থান অধিকার

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০১০ সালের ৫ম শ্রেণীর ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী ও প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ৮ম শ্রেণীর দাখিল জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর ছাত্ররা শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় ৫৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৭ জন ১ম বিভাগে, ৪ জন ২য় বিভাগে এবং ২ জন ৩য় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে আব্দুল মুহায়মিন (বগুড়া) সর্বমোট ৬০০ নম্বরের মধ্যে ৫৭০ পেয়ে রাজশাহী মহানগরীতে ১ম ও সারাদেশে মেধা তালিকায় ১০ম স্থান অধিকারের গৌরব অর্জন করেছে। এছাড়া অন্য যে ৭ জন বৃত্তি পেয়েছে তারা হ’ল- সুলতানা আক্তার (রাজশাহী, ১১তম), আমীনুল ইসলাম (ঝিনাইদহ, ১৫তম), মঈনুদ্দীন (রাজশাহী, ১৭তম), ওমর ফারূক (নওগাঁ, ২০তম), সাইফুল ইসলাম (রংপুর, ২১তম), আব্দুর রাকীব (রাজশাহী, ২২তম) ও আসাদুল্লাহ আল-গালিব (কুষ্টিয়া, ২৫তম)।

অন্যদিকে ৮ম শ্রেণীর জেডিসি পরীক্ষায় ৩৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১জন A+, ২৩ জন A, ৭ জন A-, ১ জন B ও ১ জন C গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে একমাত্র আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ (বগুড়া) A+ পাওয়ায় কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

(২) দারুল হাদীছ আহমাদিয়াহ সালাফিইয়াহ

ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষায় দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়াহর (বাঁকাল, সাতক্ষীরা) ছাত্ররা শতভাগ পাশের  কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায়  ১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন  ১ম বিভাগ ও ১০ জন ২য় বিভাগ পেয়েছে। এদের মধ্যে বৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্ররা হচ্ছে ছাকিব ইমতিয়ায (ইটাগাছা, সাতক্ষীরা; যেলায় ৯ম), আসিফ (১১তম), মওদূদ হোসেন (তালা, ১৬তম) ও সাইফুল্লাহ (পায়রাডাঙ্গা, ১৭তম)। অন্যদিকে  ৮ম শ্রেণীর জেডিসি পরীক্ষায় ১৮জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন A+, ২ জন A, ৪ জন A-, ৮ জন B ও ৩ জন C গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। এদের মধ্যে বুরহানুদ্দীন (তালা, সাতক্ষীরা) জিপিএ-৫ এবং নাঈমা ছিদ্দীকা (বুলারাটি) জিপিএ-৪ (৪.৬১) ও হাবীবুল্লাহ জিপিএ-৪ (৪.২৮) পেয়েছে।

মৃত্যু সংবাদ

(১) ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য ও কুমিল্লা যেলা ‘যুবসংঘে’র সাবেক সভাপতি এবং যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাবেক প্রশিক্ষণ সম্পাদক আহমাদ শরীফ লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর বিকাল ৩-টায় ঢাকার হাতীরপুলের ব্রাইটন হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘উন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। তিনি ১ ছেলে, ১ মেয়ে, স্ত্রী ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ২৮ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ১১-টায় জগৎপুর ঈদগাহ ময়দানে তার ছালাতে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন তার ভগ্নিপতি ও নরসিংদী যেলা ‘আন্দোলন’-এর দফতর সম্পাদক হাফেয অহীদুয্যামান। জানাযায় যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মাওলানা ছফিউল্লাহ এবং ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র নেতৃবৃন্দ সহ জগৎপুর মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকার জনগণ অংশগ্রহণ করেন। তাকে জগৎপুরে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

(২) মাসিক আত-তাহরীক-এর কম্পিউটার অপারেটর যিয়াউর রহমানের মাতা মুসাম্মাৎ রহীমা বেগম (৬৬) গত ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৯-১৫মিনিটে সাতক্ষীরার স্বপ্না ক্লিনিকে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লা-হি ...। বাদ জুম‘আ নিজ গ্রাম বুলারাটিতে (সাতক্ষীরা সদর) তাঁর ছালাতে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র যিয়াউর রহমান জানাযায় ইমামতি করেন। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানাযায় অংশগ্রহণ করেন। জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

[আমরা তাঁদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। - সম্পাদক]






আরও
আরও
.