আফগানিস্তানের জালালাবাদ এলাকায় সম্প্রতি ঘটে গেছে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা। গৃহযুদ্ধের নির্মম শিকার হয়েছে পুরো একটি পরিবার। সকাল ৬টার দিকে বাড়ির বাইরে অদ্ভূত কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখে ভিড় জমায় মির্জা গুল পরিবারের ১১ সদস্য। যার মধ্যে ১০ জনই শিশু। এর আগের রাতেই আশপাশের এলাকায় তালেবানের সঙ্গে আফগান সৈন্যদের সংঘর্ষ হয়। দুই শিশু অচেনা জিনিসটি হাতে তুলে নিলে ১৬ বছরের জলিল বুঝতে পারে যে ওটা অবিস্ফোরিত একটি রকেট। সে তাদের বাধা দিতে গেলে কাড়াকাড়ির একপর্যায়ে সেটি পড়ে গিয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়।
আফগানিস্তানে চলমান এই দীর্ঘ যুদ্ধের ইতিহাসে এটি একটি নিষ্ঠুরতম দিন। ঘটনাস্থলেই তাদের মা আর দুই যমজ বোন নিহত হয়। আরেক ভাই মারা যায় হাসপাতালে। সারাজীবন শোকের ভার বয়ে বেড়ানোর জন্য ৭ ভাইবোনের মধ্যে পাঁচজন হারায় একটি করে পা, আর বাকি দু’জন হারায় দু’টি করে পা। নঙ্গরহর এলাকার স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকরা দু’দিন একটানা কাজ করে শিশুদের শরীরের নানা অংশের ছিন্নভিন্ন মাংসপেশি ঠিক করার চেষ্টা চালান। এর মূল দায়িত্বে থাকা অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সায়েদ বিলাল মিখায়েল বলেন, আমার অস্ত্রোপচার কক্ষেই কান্না পাচ্ছিল। এই হাসপাতালে অনেক কাটাছেঁড়ার কাজই এর আগে করা হয়েছে। কিন্তু এবারের এরা সবাই শিশু, তাও আবার একই পরিবারের সদস্য। পরিবারটি অত্যন্ত গরীব।
যেলা পুলিশপ্রধান আব্দুর রহমান বলেন, রকেটটি মূলতঃ সরকারপক্ষের সৈন্যদের প্রতি তালেবান যোদ্ধাদের ছোড়া একটি অবিস্ফোরিত রকেট। পরিবারটির প্রধান মির্জা গুল বলেন, ‘দিনের পর দিন এগুলো শুধু চলতেই থাকে। আমরা জানি না কাকে দোষ দেব’।