২৭শে জানুয়ারী শনিবার কক্সবাজার : অদ্য বিকাল সাড়ে ৩-টায় যেলা শহরের পাবলিক হল মিলনায়তনে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ কক্সবাজার যেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্ল­াহ আল-গালিব জনগণের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান।

তিনি সূরা আলে ইমরান-এর ১৩৩ আয়াত তেলাওয়াত করে বলেন, খালেছ মুমিন ও মুত্তাক্বীদের জন্যই আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত প্রস্ত্তত করে রেখেছেন। সেই কাঙ্ক্ষিত জান্নাতে যেতে হ’লে অবশ্যই আমাদের নেকীর কাজে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে এবং নেকীর প্রতিযোগিতা করতে হবে। আর আমাদের জীবন পরিচালিত হবে তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাত বিশ্বাসের ভিত্তিতে।

তিনি কক্সবাজারের ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, ক্যাপ্টেন কক্স-এর নামে কক্সবাজার নামকরণ হয়। এই যেলার রামু উপযেলাটি প্রাচীন রাহমী বংশীয় রাজাদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যে রাজা ইসলামের নবী (ছাঃ)-কে এক কলস আদা পাঠিয়েছিলেন বলে একটি হাদীছ থেকে জানা যায় (হাকেম হা/৭১৯০, ৪/১৫০)। নাফ নদীর তীরবর্তী আরাকানের ২২ হাযার বর্গমাইল এলাকা প্রাচীন রাহমী বা ‘রামু’ রাজ্যভুক্ত ছিল। ১৪৩৪ থেকে ১৬৪৫ খৃ. পর্যন্ত দু’শো বছরের অধিক কাল যাবৎ ১৭ জন মুসলিম রাজা স্বাধীন আরাকান রাজ্য শাসন করেন। যা আজ মিয়ানমারের অধিকারভুক্ত। যেখান আদিবাসী রোহিঙ্গা মুসলিমরা আজ সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী আকিয়াব ছিল তখন শ্রেষ্ঠ বন্দর নগরী, যা চাউল রফতানীর জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপটি প্রথমে আরব বণিকরাই আবিষ্কার করেন এবং নাম দেন জাযীরাহ বা দ্বীপ। পরবর্তীতে কক্সবাজার যেলা প্রশাসক মার্টিন-এর নামে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নামকরণ হয়। যদিও সেখানে কোন খৃস্টান ছিল না, আজও নেই। তিনি বলেন, সাগর তীরবর্তী ইসলামের এই স্মৃতিধন্য শহরে আজ আহলেহাদীছ আন্দোলনের যেলা সম্মেলন হচ্ছে, এটি বড়ই গৌরবের বিষয়। কারণ এই দ্বীপের মানুষ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আগমন বার্তায় খুশী হয়েছিল। তখনকার ইসলাম ছিল বিশুদ্ধ ইসলাম। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ যার পুনর্জাগরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি এ্যাডভোকেট মুহাম্মাদ শফীউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এবং ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষাবোর্ড’-এর চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, ‘আহলেহাদীছ পেশাজীবী ফোরামে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. শওকত হাসান, যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাবেক প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়ব জালাল, কুমিল্লা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ছফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ শেখ সাদী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আসীফুল ইসলাম চৌধুরী, হাফেয আহমাদ চৌধুরী আহলেহাদীছ জামে মসজিদের খতীব মাওলানা মুশতাক আহমাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রচার সম্পাদক মুহাম্মাদ আবুল কালাম ও যেলা ‘যুবসংঘ’-এর আহবায়ক কমিটির সদস্য মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান। সম্মেলনে কক্সবাজার ছাড়াও, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা প্রভৃতি যেলা সমূহ থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম থেকে দুপুর সাড়ে ১১-টায় পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন যোগে আমীরে জামা‘আত সফরসঙ্গীদের নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। কেন্দ্রীয় মেহমান ছাড়াও চট্টগ্রাম যেলা সভাপতির নেতৃত্বে একটি টীম তাঁর সফরসঙ্গী হন। কক্সবাজারে পৌঁছলে যেলা সভাপতি এ্যাডভোকেট শফীউল ইসলামের নেতৃত্বে যেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।







আরও
আরও
.