ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের লোহার ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীর্ণ আদি বুড়িগঙ্গার দুই পাশ যেন প্লাস্টিক বর্জ্যের ভাগাড়। শুধু এই এলাকারই নয়, রাজধানীর অনেক এলাকার বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। চারপাশটা এতটাই দুর্গন্ধযুক্ত যে, নাক-মুখ চেপেও পথচলা কঠিন। এখানেই কাজ করছে একদল শ্রমিক। যারা ফেলে দেওয়া নানা বর্জ্য থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করছে। এই ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য থেকেই পরবর্তীতে উৎপাদিত হচ্ছে পরিবেশবান্ধব টাইল্সসহ বিভিন্ন পণ্য। উৎপাদিত টাইল্স রাস্তার পাশে ফুটপাতে, গাড়ি পার্কিংয়ের গ্যারেজে, ছাদ বাগানে চলাচলের পথ তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শুধু কামরাঙ্গীরচর এলাকাতেই প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পণ্য উৎপাদনে প্রায় ৩ হাযার কারখানা গড়ে উঠেছে। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে টাইল্স তৈরি করা হোসাইন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী নাজির হোসাইন বলেন, মাটি দিয়ে যদি টাইল্স তৈরি করা যায়। তাহ’লে কেন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা যাবে না। এছাড়া এখানে প্লাস্টিক বর্জ্যের ভাগাড় থাকায় আমার মনে হ’ল এটা গলিয়ে সহজেই টাইল্স তৈরি করা সম্ভব। পরে নিজেই ছাঁচ তৈরি করে টাইল্স বানিয়ে ফেললাম। তিনি বলেন, দেশে এতো প্লাস্টিক বর্জ্য আছে যে, কাঁচামালের কোন অভাব হবে না। এছাড়া প্লাস্টিকের টাইল্সগুলো ওযনে হালকা এবং মাটি বা সিরামিকের টাইলসের চেয়ে অনেক বেশী সাশ্রয়ী হবে। এগুলো পরিবহন ও স্থাপন করা সহজ। সংশ্লিষ্টরা জানায়, বিশ্বে প্লাস্টিক টাইলসের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। ইতিমধ্যে ভারত, মিসর ও কেনিয়াসহ আরো কিছু দেশ এর বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু করেছে।
কামরাঙ্গীরচরে প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে নানা পণ্য তৈরির আরেক কারখানা মেসার্স ইউসুফ সেনিটারী। এখানে প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে টয়লেটের প্যান, পিভিসি পাইপ, চারা গাছ রাখার ট্রেসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হয়। এসব পণ্য ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্রি হয়।
[দেশের এই সব অখ্যাত কারিগরদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন রইল। সরকারের উচিত এদেরকে কাজে লাগানো (স. স.)]