পৃথিবীর ফুসফুস বলে খ্যাত ব্রাজিলের গভীর আমাজন জঙ্গলে ৪০দিন পূর্বে বিধ্বস্ত হয়েছিল কলম্বিয়ার একটি ছোট বিমান। এতে পাইলটসহ প্রাপ্তবয়স্ক তিন ব্যক্তি নিহত হন। অথচ বেঁচে যায় চারটি শিশু। যাদের বয়স যথাক্রমে ১ বছর, ৪ বছর, ৯ বছর ও ১৩ বছর।
গত ৯ই জুন চার শিশুকে জীবিত উদ্ধারের এ ঘটনায় টুইট করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। তিনি লিখেছেন, ‘আমাজন জঙ্গল থেকে চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ৪০ দিন আগে বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার এই চার শিশু নিখোঁজ ছিল’।
গত ১লা মে ছোট আকারের একটি বিমান আমাজন জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা উক্ত শিশুদের খোঁজ মিলছিল না। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরসহ ১৭০ জন সেনাকে মোতায়েন করা হয়। এর সাথে ৭০ জন আদিবাসীর সমন্বয়ে উদ্ধারকারী দলটি শিশুদের খুঁজে পেতে অন্তত ১০ হাযার লিফলেট ফেলেছিল জঙ্গলে। এছাড়া অসংখ্য খাবারের বাক্স এবং পানির বোতলও উপর থেকে ফেলা হয়েছিল সম্ভাব্য এলাকাগুলোতে। শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কি.মি. পশ্চিমে শিশুদের খুঁজে পায় তারা।
প্রশ্ন উঠেছে, বিমানের বয়স্ক সবাই নিহত হ’লেও চারটি শিশু কিভাবে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেল! যেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় সেই এলাকাটি হিংস্র পশু, বিষধর সাপসহ অন্যান্য ভয়ংকর সব প্রাণীর আবাসস্থল। এছাড়াও ঐ এলাকাটিতে কিছু অস্ত্রধারী মাদক চোরাকারবারী গ্রুপও সক্রিয়।
শিশুদের দাদী ফাতেমা মনে করেন, তাদের বেঁচে যাওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ১৩ বছর বয়সী বালিকাটি। বড় বোন হিসাবে বাকীদের দেখভালের দায়িত্ব নিজ থেকেই সে পালন করেছিল। কারণ বাচ্চাদের লালন-পালনের বিষয়ে ঐ কিশোরীর কিছু পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। বাড়িতে মা কাজে ব্যস্ত থাকলে বাচ্চাদের সামলে রাখার দায়িত্বটি অনেক সময় তাকেই সামলাতে হ’ত। তিনি জানান, বিমানের মধ্যে থাকা ময়দা ও কাসাভা রুটি খাওয়ার সাথে সাথে ঝোপঝাড় থেকে কিছু ফলমূলও তারা সংগ্রহ করে থাকতে পারে।
[আকাশ থেকে গভীর জঙ্গলের গাছ-পালার আঘাত খেয়ে নীচে পড়া ও হিংস্র প্রাণীর মধ্যে ৪০ দিন বেঁচে থাকা নিঃসন্দেহে অলৌকিক ব্যাপার। স্রেফ আল্লাহর রহমতেই এটা সম্ভব হয়েছে। অতএব তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা (স.স.)]