তথ্যপ্রযুক্তির জগতে সম্প্রতি তোলপাড় চলছে একটি নতুন কম্পিউটার অ্যাপ নিয়ে। হচ্ছে বিতর্ক, আসছে হঁশিয়ারী বার্তা। সার্চ ইঞ্জিন গুগল, যেটি তথ্যের জগতে সেরা সফটওয়্যার সেটিও এখন হুমকির মুখে। সারা বিশ্বের সেরা সেরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাথা ঘামাচ্ছেন, কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এই প্রযুক্তির ব্যাপারে। পেশাজীবীদের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নতুন অ্যাপটি। কারণ এটি কেড়ে নিতে পারে অনেক পেশাজীবীর মুখের গ্রাস।

নতুন এই কম্পিউটার অ্যাপের নাম ‘চ্যাটজিপিটি’। এটি একটি চ্যাটবট। একটি রোবট। এতে ইন্টারনেটের টেক্সট ডাটাবেস ভরে দেয়া আছে। ইন্টারনেটের ওয়েব পেজ, ওয়েব টেক্সট, বই, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে বিপুল ডাটাসমৃদ্ধ এই ‘চ্যাটজিপিটি’। আছে ৩০০ বিলিয়ন শব্দের অবিশ্বাস্য বিশাল ভান্ডার। পাশাপাশি এটি একটি বাক্যের পরবর্তী শব্দটি কী হওয়া উচিত সেটিও অনুমান করতে সক্ষম।

কী আছে চ্যাটজিপিটিতে?-এর থেকে সহজ প্রশ্ন: কী নেই এখানে? মানুষের মতো চ্যাট করার পাশাপাশি চ্যাটজিপিটি তৎক্ষণাৎ লিখে দিতে পারে গান-কবিতা, আঁকতে পারে ছবি, ইতিহাস নিয়ে লিখতে পারে দীর্ঘ রচনা। যদি একে কোন একটি বিষয়ের ওপর একটি নিবন্ধ লিখতে বলা হয়, সে লিখে দেয় এক মুহূর্তে।

চ্যাটজিপিটিকে যেকোন প্রশ্ন করলে লিখিত আকারে মানুষের মতো উত্তর দিতে পারে। কোন কিছুর ব্যাখ্যা চাইলে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করে দেয়। কোন কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখে দিতে বললে তা লিখে দেয়। কোন একটা বিষয়ের ওপর নিবন্ধ লিখতে বললেও মুহূর্তেই লিখে দেয় দক্ষতার সাথে। এককথায় সে সব বিষয়ে পারদর্শী। সর্বোপরি এটি সব ধরনের তথ্য এতটাই নিখুঁত এবং যৌক্তিকভাবে জানাতে পারে যে, বিস্মিত না হয়ে উপায় থাকে না। 

গত বছরের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করার পর ৩ মাস অতিক্রম করেছে। না হ’তেই এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি পার হয়েছে। ইতিমধ্যে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এ্যাপটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ে এ পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন ১ লাখ কোটি টাকারও অধিক। এ্যাপটির ব্যাপারে তার বক্তব্য, ‘চ্যাটজিপিটি ইন্টারনেট আবিষ্কারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পুরো বিশ্বকে বদলে দেবে’। 

এই সফটওয়্যারের উদ্ভাবক সংস্থা ওপেনএআই হ’ল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে এমন একটি গবেষণা সংস্থা, যা ২০১৫ সালে এলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে এলন মাস্ক এই কোম্পানি থেকে বেরিয়ে যান।

চ্যাটজিপিটি একেবারে যে নির্ভুলভাবে সব প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে এমন নয়। সাম্প্রতিক কোন ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে এটি উত্তর দিতে পারবে না। তবে একদল কর্মী প্রতিনিয়ত এর ডাটাবেস সমৃদ্ধ করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কোন প্রশ্নের ভুল জবাব দিলে এর কর্মীবাহিনী প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি সিস্টেমে ইনপুট করে দেন। এভাবে ‘চ্যাটজিপিটি’র জ্ঞানের ভান্ডার ক্রমেই বাড়তে থাকে।






আরও
আরও
.