কলারোয়া পাইলট স্কুল ফুটবল ময়দান, সাতক্ষীরা ২৯শে অক্টোবর শনিবার : অদ্য বাদ যোহর যেলার কলারোয়া উপযেলাধীন কলারোয়া পাইলট স্কুল ফুটবল ময়দানে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ কলারোয়া উপযেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত উপযেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, ইসলাম এসেছে মানুষের কর্ম ও আচরণের মাধ্যমে, শুধু বক্তৃতার মাধ্যমে নয়। নবী-রাসূলগণ তাদের কর্ম ও আচরণের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে আকৃষ্ট করেছিলেন। আমাদেরকেও সে পথেই অগ্রসর হতে হবে। তিনি বলেন, সত্য-মিথ্যার মানদন্ড হ’ল পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ। সার্বিক জীবনে তাই অপরিবর্তনীয় এই সংবিধানের অনুসরণ করা সকলের উপরে অপরিহার্য।

তিনি বলেন, আমি প্রাণভরে অভিনন্দন জানাচ্ছি বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েয ছিদ্দীকীকে। তিনি সূরা নিসার ১৩৬ আয়াত অনুবাদসহ বিল বোর্ডে লিখে হাইকোর্টের সামনে টাঙিয়ে দিয়েছেন। অথচ ২০১৬ সালে গ্রীক দেবী থেমিসের মূর্তি সেখানে স্থাপন করা হয়েছিল, যা হটানোর জন্য আমরা সে সময়েই জোরালো দাবী করেছিলাম। তিনি বলেন, অমুসলিম রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ‘ল’ ফ্যাকাল্টির লাইব্রেরীর সামনে সূরা নিসার ১৩৬ আয়াত ইংরেজী অনুবাদসহ লেখা আছে। বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। তিনি কর্মী ও দায়িত্বশীলদেরকে দাওয়াতী ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।

‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর নযরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর শিক্ষক হাফেয আব্দুল মতীন, ঢাকা বায়তুল মা’মূর আহলেহাদীছ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শামসুর রহমান আযাদী প্রমুখ। সম্মেলনে স্বাগত ভাষণ পেশ করেন উপযেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও সম্মেলনের আহবায়ক মাওলানা রবীউল হক। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীদু্য্যামান ফারূক।

‘আল-‘আওন’ : সম্মেলনে ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ও যেলা দায়িত্বশীলদের সহযোগিতায় ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে মোট ৬০ জনের ব্ল­াড গ্রুপিং ও ৩৩ জন ডোনর বা রক্তদাতা সদস্য তালিকাভুক্ত হন। এ সময় ‘আল-‘আওন’-এর শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন সমূহ প্রদর্শন করা হয়।

উল্লেখ্য, শ্রোতাদের ব্যাপক উপস্থিতি সম্মেলনকে প্রাণবন্ত করে তুলে। প্যান্ডেল ও ময়দান ছাপিয়ে আশপাশের রাস্তাঘাটেও বিপুল সংখ্যক লোকের ভিড় পরিলক্ষিত হয়। যে যেখানে সম্ভব বসে, দাড়িয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ শ্রবণ করেন। এ সময়ে শ্রোতাদের মুহুর্মুহু শ্লোগানে চারদিক গুঞ্জরীত হয়ে ওঠে।

হাজী আব্দুর রহমান-এর পাশে আমীরে জামা‘আত : কলারোয়া পৌঁছে বাদ আছর আমীরে জামা‘আত ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ হাজী আব্দুর রহমানকে দেখতে কলারোয়া থানাধীন রাজপুর গ্রামে গমন করেন। এ সময়ে তার সাথে ছিলেন উপযেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মোফলেহুর রহমান ও ‘আল-‘আওন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির। উল্লেখ্য, হাজী আব্দুর রহমান মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে মারাত্মকভাবে আহত হ’লে প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে ঢাকায় চিকিৎসার পর তার একটি পা উরু পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। আমীরে জামা‘আত তার সার্বিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং দো‘আ করেন। উল্লেখ্য, পরদিন ৩০শে অক্টোবর ‘আন্দোলন’-এর প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন তাকে দেখতে যান।

হাজী আব্দুর রহমানকে দেখে ফিরে এসে আমীরে জামা‘আত উপযেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা ও কলারোয়া আহলেহাদীছ মসজিদ কমপ্লেক্স-এর অর্থ সম্পাদক অসুস্থ মাষ্টার এ.বি.এম বনীয়ামীনকে দেখতে তার বাসায় যান। সেখান থেকে উপযেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মোফলেহুর রহমানের পিতা মাওলানা মুহাম্মাদ মনীরুল হুদাকে দেখতে তার বাসায় গমন করেন এবং তাদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন।

আব্দুল মান্নান-এর শয্যা পাশে আমীরে জামা‘আত : পরদিন ৩০শে অক্টোবর রবিবার বেলা ১১-টায় আমীরে জামা‘আত যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নানকে দেখতে সদর উপযেলাধীন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে গমন করেন। তিনি তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন ও আশু রোগমুক্তির জন্য দো‘আ করেন। এ সময়ে ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ও অন্যান্য কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, মাওলানা আব্দুল মান্নান ভারতে হার্ট-এর চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পূর্বমুহূর্তে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। অতঃপর ভারতে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হ’লে তাকে দেশে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়ীতে চিকিৎসাধীন আছেন।

দায়িত্বশীল বৈঠক : একই দিন বাদ আছর দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিইয়া জামে মসজিদে যেলা ‘আন্দোলন’-এর উদ্যোগে দায়িত্বশীল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত। যেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক দায়িত্বশীল ও কর্মী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ সময়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন। অতঃপর মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে বৈঠক ও মাদ্রাসা কমিটির বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১০-টায় আমীরে জামা‘আত সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাগেরহাট সম্মেলনে যোগদানের জন্য খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।






আরও
আরও
.