আমাদের দেশে বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা রকম মৌসুমি ফলের দেখা মেলে। যার মধ্যে অন্যতম হ’ল আমড়া। এটি কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি সুস্বাদু আচার, চাটনি ও জেলি তৈরি করা যায়। আবার তরকারী হিসাবেও রান্না করে খাওয়া যায়। আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আমড়ার মৌসুম। সবুজ রঙের এই ফলটির অনেক উপকারী দিক রয়েছে। এটি ভিটামিন সি-এর এক বড় উৎস। একটি আপেলের চেয়েও অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রণ থাকে একটি আমড়াতে। এ ফলটির অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।-
১. হজমে উপকারী : আমড়ায় অনেক পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে। এ কারণে এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক কার্যকরী। এছাড়া হজমের কারণে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়; যেমন- গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূর করতেও অনেক উপকারী। আর নিয়মিত খাবারের পর আমড়া খেলে তা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
২. হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে : আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকার কারণে এটি শরীরে হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। আর এর ফলে শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া আমড়া শরীরের রক্তস্বল্পতা এবং অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধেও উপকারী।
৩. ভিটামিন ‘সি’র ভাল উৎস : আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এ কারণে এটি শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতসহ নানান রোগের নিরাময়ে উপকার করে। এছাড়া আমড়াতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ মানুষের দেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে ত্বকের উজ্জ্বলতা, দৃঢ়তা বজায় রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধেও অনেক ভাল কাজ করে।
৪. হাড়কে মযবূত করে : আমড়াতে অনেক বেশী পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত এটি খেলে তা প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে পারে। ফলে হাড়ের যে কোন রোগ দূর করা ছাড়াও হাড়কে শক্তিশালী রাখতেও সাহায্য করে।
৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ : আমড়াতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল থাকে। আর এ উপাদানগুলো শরীরের সিস্টেমের কারণে সহায়তা করে ও স্ট্রেসের প্রভাব কমাতে সহায়তা করে।
৬. পেশিশক্তি বৃদ্ধি করে : আমড়াতে থিয়ামিন নামের একটি উপাদান পাওয়া যায়, যেটি মানুষের শরীরে পেশী সংকোচন ও স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সহায়তা করে। তাই আমড়া মানুষের পেশীর দুর্বলতা দূর করে তাকে শক্তিশালী করতে উপকারী হিসাবে কাজ করে।
৭. মূত্রবর্ধক : আমড়ার রসে অনেক ঔষধি গুণাগুণ পাওয়া যায়। এটি মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করে পর্যাপ্ত প্রস্রাবের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে তরল বের করে দিতে সহায়তা করে। ফলে শরীর থেকে সোডিয়াম কমে গিয়ে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া এটি সর্দি-কাশি ও জ্বরের সমস্যা দূর করতেও অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে।