‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় যুববিষয়ক সম্পাদক ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর সেক্রেটারী অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম (৫২) লিভার সিরোসিস ও কোলন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১৪ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২-টায় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার পশ্চিম পার্শ্বস্থ আবাসিক ভবনের ১০৬ নং কক্ষে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্ল­া-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ পুত্র ও ১ কন্যা এবং বড় ২ ভাইসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। পরদিন দুপুর ১২-টায় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর পশ্চিম পার্শ্বস্থ ময়দানে তাঁর প্রথম জানাযার ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব

জানাযায় ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ, প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক দুররুল হুদা, দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ড. নূরুল ইসলাম, রাজশাহী-সদর সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা দুররুল হুদা, ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম,  ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্ল­াহ নাজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকিরসহ রাজশাহী-পূর্ব, পশ্চিম ও সদর সাংগঠনিক যেলার ‘আন্দোলন’ ‘যুবসংঘ’ ও ‘সোনামণি’র দায়িত্বশীল ও কর্মীবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। অতঃপর বাদ যোহর তাঁর দ্বিতীয় জানাযার ছালাত অনুষ্ঠিত হয় তাঁর নিজগ্রাম রাজশাহীর মোহনপুর উপযেলাধীন মেলান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ময়দানে। জানাযায় ইমামতি করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শিক্ষাজীবন : তিনি ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর রাণীবাজার ‘মাদ্রাসা ইশা‘আতে ইসলামে’ মিশকাত পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। অতঃপর কুষ্টিয়ার কুওয়াতুল ইসলাম কামিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৮৮ সালে দাখিল, মেহেরপুর যেলার গাংনী উপযেলাধীন হাড়াভাঙ্গা দারুল হাদীছ সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ১৯৯০ সালে আলিম ও ১৯৯২ সালে ফাযিল পাশ করেন। অতঃপর রাজশাহী দারুস সালাম কামিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৪ সালে কামিল পাশ করেন। তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে ১৯৯৪ সালে অনার্স ও ১৯৯৫ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন : তিনি ১৯৯৮ সালের ১৫ই অক্টোবর রাজশাহী যেলার মোহনপুর উপযেলাধীন আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রী কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ‘প্রভাষক’ পদে যোগদান করেন। অতঃপর ১লা জানুয়ারী ২০১০ তারিখে ‘সহকারী অধ্যাপক’ হিসাবে পদোন্নতি পান এবং আমৃত্যু উক্ত পদে আসীন ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত  মাসিক আত-তাহরীক-এর সহকারী সম্পাদক নিযুক্ত হন।

সাংগঠনিক জীবন : অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম ১৯৮৪ সালে ‘মাদ্রাসা ইশা‘আতে ইসলাম’ রাণীবাজার, রাজশাহীর শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’ যোগদান করেন। অতঃপর ১৯৯১-৯৩ এবং ১৯৯৩-৯৫ পরপর দুই সেশনে তিনি ‘যুবসংঘ’-এর দফতর সম্পাদক হিসাবে মনোনীত হন। অতঃপর ১৯৯৫-৯৭ সেশনে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর ১৯৯৭-৯৯, ২০০১-০৩ ও ২০০৩-০৫ তিন সেশনে তিনি ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর তিনি ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় ‘মজলিসে শূরার সদস্য মনোনীত হন। অতঃপর ২০০৭ সালের ৬ই ডিসেম্বর তিনি ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মনোনীত হন। অতঃপর ২০১৫-১৭ সেশনে তিনি ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হন এবং ২০১৭-১৯ সেশন থেকে আমৃত্যু যুববিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০১১-২০১৩ সেশনের মজলিসে শূরার ১৩.০৬.২০১৩ তারিখে অনুষ্ঠিত ৪র্থ বৈঠকে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী কমপ্লেক্স বালক ও বালিকা উভয় শাখার সেক্রেটারী মনোনীত হন এবং আমৃত্যু উক্ত পদে বহাল থাকেন।

[আমরা মাইয়েতের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। -সম্পাদক]।






আরও
আরও
.