পর্ব ১পর্ব ২পর্ব ৩ শেষ পর্ব

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি সৃষ্টিকুলের প্রতিপালক। দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক নবী ও রাসূলকুলের শ্রেষ্ঠজন আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ ও ছাহাবীদের সকলের প্রতি।

অতঃপর মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমার পক্ষে অন্তরের আমল সমূহ (أعمال القلوب) বিষয়ে বারটি জ্ঞানগর্ভ আলোচনা রাখার সুযোগ হয়েছিল। এই আলোচনাগুলো তৈরীতে যাদ গ্রুপের একদল চৌকস জ্ঞানী-গুণী আমাকে সহযোগিতা করেছে। আজ তা ছাপার অক্ষরে বের হ’তে যাচ্ছে।

অন্তরের এই আমল সমূহের প্রথমেই রয়েছে ‘ইখলাছ’। ইখলাছই সকল ইবাদতের সার ও প্রাণ। কোন ইবাদত কবুল হওয়া না হওয়া ইখলাছের উপর নির্ভর করে। এটি অন্তরের আমল সমূহের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সবার উপরে এবং সকলের মূলভিত্তি। যুগে যুগে আগত নবী-রাসূলদের দাওয়াতের চাবিকাঠি ছিল ইখলাছ। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ ‘অথচ তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে’ (বাইয়েনাহ ৯৮/৫)। তিনি আরও বলেন,أَلاَ لِلَّهِ الدِّيْنُ الْخَالِصُ، ‘সাবধান, খালেছ দ্বীন বা ইবাদত কেবল আল্লাহর’ (যুমার ৩৯/৩)

আমাদের নিয়ত খালেছ হোক, আমাদের মন পাপের কালিমা মুক্ত হোক এবং আমাদের আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হোক মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের এটাই বিনীত প্রার্থনা। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও দো‘আ কবুলকারী।

আভিধানিক অর্থে ইখলাছ :

ইখলাছ শব্দটি আরবী أَخْلَصَ ক্রিয়া থেকে গঠিত। এর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়াবাচক শব্দ يُخْلِصُ এবং মাছদার বা ক্রিয়ামূল إخْلاَصًا। যার অর্থ কোন জিনিস পরিশুদ্ধ করা, অন্য কোন কিছুর সাথে তাকে না মেশানো। আরবীতে أَخْلَصَ الرَّجُلُ دِيْنَهُ لِلّهِ অর্থাৎ লোকটি তার দ্বীনকে শুধুই আল্লাহর জন্য নির্ভেজাল করেছে; তার দ্বীনের মধ্যে আল্লাহর সাথে আর কাউকে মেশায়নি।

আল্লাহ বলেন, إِلاَّ عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِيْنَ ‘তবে তাদের মধ্য থেকে তোমার নির্বাচিত বান্দারা ব্যতীত’ (হিজর ১৫/৪০)

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ছা‘লাব (রহঃ) বলেছেন, আল-মুখলিছীন তারাই যারা নির্ভেজালভাবে আল্লাহর জন্য ইবাদত

করে। আর আল-মুখলাছীন তারা, যাদেরকে আল্লাহ খালেছ, নির্ভেজাল ও নিষ্কলুষ করেছেন।

আল্লাহর বাণী,وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مُوسَى إِنَّهُ كَانَ مُخْلَصًا- ‘তুমি এই কিতাবে মূসার বৃত্তান্ত বর্ণনা কর। নিশ্চয়ই সে ছিল নির্বাচিত’ (মারিয়াম ১৯/৫১)। এখানে ‘মুখলাছ’ শব্দ সম্পর্কে যুজাহ বলেছেন, মুখলাছ সেই, যাকে আল্লাহ খালেছ করেছেন; সকল আবিলতা বা পাপ থেকে তাকে মুক্ত করেছেন। আর মুখলিছ সেই, যে নিরেট নির্ভেজালভাবে আল্লাহর একত্ববাদ তথা তাওহীদে বিশ্বাসী। এজন্য (قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ) সূরাকে সূরাতুল ইখলাছ বলা হয়।

ইবনুল আছীর (রহঃ) বলেছেন, এই সূরা ইখলাছে নির্ভেজালভাবে কেবলই মহামহিম আল্লাহর গুণ বর্ণিত হয়েছে। তাই সূরাটির নাম হয়েছে ইখলাছ। অথবা এই সূরাটি পড়ে সে খালেছ বা নির্ভেজালভাবে আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেয় বলে সূরাটির নাম ইখলাছ। কালেমায়ে তাওহীদকে এজন্য ‘কালেমায়ে ‘ইখলাছ’ও বলা হয়।       

আবার খালেছ জিনিস (الشيئ الخالص) বলতে,الصّافِي الَّذِيْ زَالَ عَنْهُ شَوْبُه الَّذِيْ كانَ فِيْه- ‘খাঁটি জিনিসকে বুঝায়, যার থেকে সব রকম মিশ্রণ দূরীভূত করা হয়েছে’।[1] আল্লামা ফীরোযাবাদী (রহঃ) বলেছেন, أَخْلَصَ لِلَّهِ: تَرَكَ الرِّياءَ ‘লৌকিকতা বর্জন করে কোন কাজ আল্লাহর জন্য করা’।[2] জুরজানী (রহঃ) বলেছেন, الإخلاص في اللغة ترك الرياء في الطاعات ‘আভিধানিক অর্থে ইখলাছ হ’ল, সৎকাজে লৌকিকতা পরিহার করা’।[3]

পারিভাষিক অর্থে ইখলাছ :

আলেমগণ ইখলাছের বেশ কয়েকটি সংজ্ঞা দিয়েছেন। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সংজ্ঞা নিম্নে প্রদত্ত হ’ল :

ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেছেন,الإخلاص : هو إفراد الحق سبحانه بالقصد في الطاعة- ‘স্বেচ্ছায় একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত নিবেদনকে ইখলাছ বলে’।[4] জুরজানী (রহঃ) বলেছেন, ‘অন্তরকে পরিস্কার করার জন্য সকল দূষিত পদার্থের মিশ্রণ থেকে মুক্ত করা। বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- প্রত্যেক বস্ত্তর সাথেই কোন না কোন কিছু মিশে আছে বলে ধারণা করা হয়। সুতরাং যখন তা মিশ্রণ থেকে পরিস্কার ও মুক্ত হয় তখন তাকে ‘খালেছ’ বা খাঁটি বলে। আবার পাপ-পঙ্কিলতামুক্ত কাজকে বলে ইখলাছ। আল্লাহ বলেছেন,نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِيْ بُطُوْنِهِ مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِيْنَ- ‘আমরা তোমাদেরকে তাদের থেকে বিশুদ্ধ দুধ পান করাই, যা পানকারীদের জন্য অতীব উপাদেয়। যা নিঃসৃত হয় উক্ত পশুর উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হ’তে’ (নাহল ১৬/৬৬)। এখানে দুধের নির্ভেজালতা বা পিওরিটি অর্থ- তাতে গোবর ও রক্তের মিশ্রণ না থাকা।[5] কেউ কেউ বলেছেন,الإخلاص تصفية الأعمال من الكدورات، ‘আমল বা কাজকে দূষণমুক্ত করাই ইখলাছ’।[6]

হুযায়ফা আল-মার‘আশী (রহঃ) বলেছেন,الإخلاص استواء أفعال العبد في الظاهر والباطن- ‘বান্দার কাজ ভেতর-বাহির থেকে এক রকম হওয়াকে ইখলাছ বলে’।[7] কেউ কেউ বলেছেন, الإخلاص أن لا تطلب على عملك شاهدا غير الله ولا مجازيا سواه- ‘নিজের আমলের উপর আল্লাহ ছাড়া কাউকে সাক্ষী এবং প্রতিদানদাতা হিসাবে না মানার নাম ইখলাছ’।[8]

সালাফে ছালেহীন থেকে ইখলাছের আরো কিছু অর্থ বর্ণিত হয়েছে। যেমন-

(১) আমল শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য হবে, তাতে আল্লাহ ছাড়া অন্যের কোন অংশ থাকবে না। (২) সৃষ্টিকুলের মনঃস্ত্তষ্টি সাধন থেকে আমলকে মুক্ত করা। (৩) সবরকম কলুষ-কালিমা থেকে আমলকে মুক্ত রাখা।[9]

আর মুখলেছ সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্ক তৈরী হওয়ার কারণে জনগণের অন্তরে তার প্রতি যত রকম শ্রদ্ধা-ভক্তি জন্মে সে তার কোন পরোয়া করে না এবং তার আমলের বিন্দু-বিসর্গও মানুষ টের পাক তা সে পসন্দ করে না। শরী‘আতে যেমন তেমনি মানুষের কথাতেও বহু ক্ষেত্রে ইখলাছের স্থলে নিয়ত শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ফকীহদের মতে নিয়ত হ’ল ইবাদতকে অভ্যাস থেকে এবং এক ইবাদতকে অন্য ইবাদত থেকে পৃথক করা।[10] ইবাদতকে অভ্যাস থেকে আলাদা করার উদাহরণ যেমন দেহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য গোসল একটি অভ্যাসমূলক আমল। অপরদিকে জানাবাত বা দৈহিক অপবিত্রতা জনিত গোসল ইবাদতমূলক আমল। এখানে জানাবাতের গোসলের নিয়ত করলে তা অভ্যাসমূলক গোসল থেকে পৃথক হয়ে যাবে।

আবার এক ইবাদত থেকে অন্য ইবাদত পৃথক করার উদাহরণ যেমন, যোহর ছালাত থেকে আছর ছালাত পৃথক করা। উক্ত সংজ্ঞানুসারে নিয়ত ইখলাছের অন্তর্ভুক্ত নয়। কিন্তু যখন শর্তহীন ভাবে নিয়ত শব্দ উল্লেখ করা হবে এবং তা দ্বারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদিত ইবাদতকে পৃথক করা বুঝাবে যেমন ইবাদত কি অংশীদারমুক্ত এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে নাকি অন্যের উদ্দেশ্যে- তখন অবশ্য নিয়ত ইখলাছের অর্থে আসবে।

ইবাদতে ইখলাছ আর ইবাদতে সত্য উভয়ই কাছাকাছি অর্থবোধক। অবশ্য উভয়ের মধ্যে কিছু তফাৎও রয়েছে। প্রথম পার্থক্য : সত্য মূল এবং ইখলাছ তার শাখা ও অনুগামী। দ্বিতীয় পার্থক্য : কাজে মশগূল না হওয়া পর্যন্ত ইখলাছ আছে কি-না তা বুঝা যায় না। কিন্তু কাজে নামার আগেও কখনো কখনো সত্য উদ্ভাসিত হয়।[11]

ইখলাছ অবলম্বনের আদেশ

ইখলাছ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী :

আল্লাহ তাঁর গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে তাঁর বান্দাদেরকে ইখলাছ অবলম্বনের আদেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন,وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوْا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ، ‘অথচ তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে’ (বাইয়েনাহ ৯৮/৫)

নবী করীম (ছাঃ) নিজে যে ইখলাছের সাথে আল্লাহর ইবাদত করে থাকেন সে কথা মানুষকে জানিয়ে দিতে তিনি তাঁকে আদেশ দিয়েছেন। এ মর্মে তিনি বলেন,قُلِ اللهَ أَعْبُدُ مُخْلِصًا لَهُ دِيْنِيْ- ‘বল, আমি আল্লাহর ইবাদত করি তাঁর জন্য আমার আনুগত্যকে একনিষ্ঠ করার মাধ্যমে’ (যুমার ৩৯/১৪)

তিনি আরো বলেন,قُلْ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ- لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ- ‘বল, আমার ছালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ, সবই বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই। আর এ ব্যাপারেই (অর্থাৎ শরীক না করার ব্যাপারে) আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম’ (আন‘আম ৬/১৬২-১৬৩)

আল্লাহ নিজে জন্ম-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, মানুষের মাঝে কে অধিকতর ভাল কাজ করে তা দেখার জন্য। তিনি বলেছেন, الَّذِيْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفُوْرُ- ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য, কে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সুন্দর আমল করে। আর তিনি মহা পরাক্রান্ত ও ক্ষমাশীল’ (মুল্ক ৬৭/২)

ফুযায়েল বিন ইয়ায (রহঃ) সুন্দর আমল সম্পর্কে বলেছেন, সুন্দর আমল তাই যা অধিকমাত্রায় ইখলাছপূর্ণ এবং অধিকমাত্রায় সঠিক। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আবু আলী! অধিকমাত্রায় ইখলাছপূর্ণ এবং অধিকমাত্রায় সঠিক আমল কী? তিনি বললেন, আমল ইখলাছপূর্ণ হ’লেও যদি সঠিক নিয়মে না হয়, তবে তা কবুল হবে না; আবার সঠিক নিয়মে হ’লেও যদি ইখলাছপূর্ণ না হয় তবে তাও কবুল হবে না। ইখলাছপূর্ণ ও সঠিক হ’লেই কেবল তা কবুল হবে। যা আল্লাহর জন্য করা হয় তাই ইখলাছপূর্ণ এবং যা সুন্নাত অনুযায়ী হয় তাই সঠিক। ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) তাঁর কথার সাথে যোগ করে বলেছেন, এ যেন ঠিক আল্লাহর বাণী,فَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا- ‘অতএব যে ব্যক্তি তার প্রভুর সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (কাহফ ১৮/১১০)-এর প্রতিধ্বনি।[12] কবি আমীর ছান‘আনী বলেছেন, তোমার জীবনের সময়গুলো কেটে গেছে আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া। তুমিতো তোমার মনপসন্দ কাজে বিভোর ছিলে- যা কিনা শুধুই মরীচিকা। যখন তোমার কাজ শুধুই আল্লাহর জন্য না হবে তখন যত কিছুই তুমি বানাও না কেন তা সবই বরবাদ হবে। আমল কবুলের জন্য ইখলাছ থাকা শর্ত, সে সঙ্গে তা হ’তে হবে কুরআন ও সুন্নাহ মাফিক।

মহান আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সন্তুষ্টির জন্য ইহসানের পথে নিবেদিত আমলকে সর্বোত্তম দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন,وَمَنْ أَحْسَنُ دِيْنًا مِمَّنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ، ‘তার চাইতে উত্তম দ্বীন কার আছে, যে তার চেহারাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করেছে ও সৎকর্ম করেছে’ (নিসা ৪/১২৫)। আল্লাহর কাছে সমর্পণ হ’ল ইখলাছ আর ইহসান বজায় রাখা অর্থ সুন্নাতের অনুসরণ।

আল্লাহ তাঁর নবীকে এবং সেই সাথে তাঁর উম্মতকে মুখলেছ বান্দাদের সাথে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَهُ، ‘আর তুমি নিজেকে ধরে রাখো তাদের সাথে যারা সকালে ও সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে আহবান করে তাঁর চেহারা কামনায়’ (কাহফ ১৮/২৮)

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কাজ করে তিনি তাদের সফল বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেন,فَآتِ ذَا الْقُرْبَى حَقَّهُ وَالْمِسْكِيْنَ وَابْنَ السَّبِيْلِ ذَلِكَ خَيْرٌ لِلَّذِيْنَ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللهِ وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ- ‘অতএব নিকটাত্মীয়কে তার প্রাপ্য দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকে। এটা তাদের জন্য উত্তম, যারা আল্লাহর চেহারা কামনা করে। আর তারাই হ’ল সফলকাম’ (রূম ৩০/৩৮)

ইখলাছওয়ালাদের প্রতি আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন সন্তুষ্ট থাকার এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন,وَسَيُجَنَّبُهَا الْأَتْقَى- الَّذِيْ يُؤْتِيْ مَالَهُ يَتَزَكَّى- وَمَا لِأَحَدٍ عِنْدَهُ مِنْ نِعْمَةٍ تُجْزَى- إِلاَّ ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْأَعْلَى-وَلَسَوْفَ يَرْضَى- ‘সত্বর এ থেকে দূরে রাখা হবে আল্লাহভীরু ব্যক্তিকে। যে তার ধন-সম্পদ দান করে আত্মশুদ্ধির জন্য এবং কারু জন্য তার নিকটে কোনরূপ অনুগ্রহ থাকে না যা প্রতিদান যোগ্য। কেবলমাত্র তার মহান পালনকর্তার চেহারা অন্বেষণ ব্যতীত। আর অবশ্যই সে অচিরেই সন্তোষ লাভ করবে’  (লায়েল ৯২/১৭-২১)

আল্লাহ জান্নাতবাসীদের গুণাবলী বলতে গিয়ে দুনিয়াতে তাদের ইখলাছ অবলম্বনের কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللهِ لاَ نُرِيْدُ مِنْكُمْ جَزَاءً وَلاَ شُكُوْرًا- ‘(এবং তারা বলে) শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমরা তোমাদের খাদ্য দান করে থাকি এবং তোমাদের নিকট থেকে আমরা কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না’ (দাহর ৭৬/৯)। তিনি ইখলাছ ওয়ালাদের পরকালে মহাপুরস্কার দানের ঘোষণা দিয়ে বলেন, لاَ خَيْرَ فِيْ كَثِيْرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلاَّ مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوْفٍ أَوْ إِصْلاَحٍ بَيْنَ النَّاسِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيْهِ أَجْرًا عَظِيْمًا- ‘তাদের অধিকাংশ শলা-পরামর্শে কোন মঙ্গল নেই। কিন্তু যে পরামর্শে তারা মানুষকে ছাদাক্বা করার বা সৎকর্ম করার কিংবা লোকদের মধ্যে পরস্পরে সন্ধি করার উৎসাহ দেয় সেটা ব্যতীত। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের  উদ্দেশ্যে সেটা করে, সত্বর আমরা তাকে মহা পুরস্কার দান করব’ (নিসা ৪/১১৪)। তিনি আরও বলেন,مَنْ كَانَ يُرِيْدُ حَرْثَ الْآخِرَةِ نَزِدْ لَهُ فِيْ حَرْثِهِ وَمَنْ كَانَ يُرِيْدُ حَرْثَ الدُّنْيَا نُؤْتِهِ مِنْهَا وَمَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ نَصِيْبٍ- ‘যে কেউ পরকালের ফসল কামনা করে, আমরা তার ফসল বাড়িয়ে দেই। আর যে ব্যক্তি ইহকালের ফসল কামনা করে, আমরা তাকে সেখান থেকে কিছু দিয়ে থাকি। কিন্তু পরকালে তার কোনই অংশ থাকবে না’ (শূরা ৪২/২০)

ইখলাছ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাণী :  

নবী করীম (ছাঃ) ইখলাছের গুরুত্ব ও নিয়তে সততার কথা বর্ণনা করেছেন। তিনি এ দু’য়ের উপর সকল আমলের ভিত্তি রেখেছেন। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، ‘নিশ্চয়ই প্রতিটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পায়’।[13] এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদীছ। কেননা এতে শরী‘আতের এমন একটি মূলনীতি বিধৃত হয়েছে যার আওতায় সকল ইবাদত এসে পড়ে। কোন ইবাদতই তার থেকে বাদ যায় না। সুতরাং ছালাত, ছিয়াম, জিহাদ, হজ্জ, যাকাত, দান-ছাদাক্বা ইত্যাদি প্রত্যেক ইবাদত সৎ নিয়ত ও ইখলাছের মুখাপেক্ষী। রাসূল (ছাঃ) মানুষের জন্য শুধু এই মূলনীতি বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হননি; বরং তিনি বেশ কিছু আমলও উল্লেখ করেছেন এবং তাতে নিয়তের গুরুত্ব হেতু তা বিশুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এমন কিছু আমল নিম্নে তুলে ধরা হ’ল-

তাওহীদ : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,مَا قَالَ عَبْدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ قَطُّ مُخْلِصًا إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ حَتَّى تُفْضِىَ إِلَى الْعَرْشِ مَا اجْتَنَبَ الْكَبَائِرَ- ‘যে ব্যক্তি একনিষ্ঠচিত্তে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলবে, তার জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হবে। এমনকি আরশ পর্যন্ত এর নেকী পৌঁছানো হবে; যদি সে কাবীরা গোনাহ সমূহ থেকে বিরত থাকে’।[14]

মসজিদে যাওয়া : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,صَلاَةُ الرَّجُلِ فِى الْجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلَى صَلاَتِهِ فِىْ بَيْتِهِ وَفِىْ سُوقِهِ خَمْسًا وَعِشْرِيْنَ ضِعْفًا، وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ لاَ يُخْرِجُهُ إِلاَّ الصَّلاَةُ، لَمْ يَخْطُ خَطْوَةً إِلاَّ رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ، وَحُطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيْئَةٌ، فَإِذَا صَلَّى لَمْ تَزَلِ الْمَلاَئِكَةُ تُصَلِّى عَلَيْهِ مَا دَامَ فِى مُصَلاَّهُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ، اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ. وَلاَ يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِى صَلاَةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلاَةَ-  ‘ব্যক্তির নিজ বাড়ীতে কিংবা বাজারে ছালাত আদায় অপেক্ষা জামা‘আতে ছালাত আদায়ে ২৫ গুণ বেশী ছওয়াব হয়। কেননা সে যখন উত্তমরূপে ওযূ করে মসজিদ পানে বের হয় এবং ছালাত আদায় ব্যতীত তার অন্য কোন উদ্দেশ্য না থাকে তখন প্রতি পদক্ষেপে তার একটি পদমর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং একটি গোনাহ বিদূরিত হয়। তারপর যখন সে ছালাত শেষ করে তখন ছালাতের স্থানে তার অবস্থান করা অবধি ফেরেশতারা তার জন্য এই বলে দো‘আ করতে থাকে যে, হে আল্লাহ! তাকে তুমি শান্তি দাও এবং তাকে দয়া কর। আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ (মসজিদে) জামা‘আতে ছালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ সে ছালাত আদায়ে রত বলে গণ্য হ’তে থাকে’।[15]

ছিয়াম : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ- ‘যে ব্যক্তি রামাযানে ঈমানের সাথে ও ছওয়াব লাভের আশায় ছিয়াম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গোনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়’।[16] তিনি আরো বলেন,مَنْ صَامَ يَوْمًا فِى سَبِيلِ اللهِ بَعَّدَ اللهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি ছিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন হ’তে সত্তর বছরের পথ দূরে রাখবেন’।[17]

রাতের ছালাত : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ- ‘যে ব্যক্তি রামাযানের রাত্রিতে ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় রাত্রির ছালাত আদায় করে, তার বিগত সকল গোনাহ মাফ করা হয়’।[18]

ছাদাক্বা ও আল্লাহকে স্মরণ : আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেছেন,

سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ تَعَالَى فِى ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ إِمَامٌ عَادِلٌ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِى عِبَادَةِ اللهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِى الْمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِى اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّى أَخَافُ اللهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ-

‘সাত শ্রেণীর লোকদের আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন তাঁর বিশেষ ছায়ার নিচে স্থান দিবেন। যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক ২. ঐ যুবক যে তার প্রভুর আনুগত্যে যৌবনকে অতিবাহিত করেছে ৩. সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে লটকানো থাকে ৪. সেই দুই ব্যক্তি যারা পরস্পরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ভালবাসে এবং তারা সেকারণে পরস্পরে মিলিত হয় এবং পরস্পর পৃথকও হয়। ৫. সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত বংশের সুন্দরী নারী (ব্যভিচারের জন্য) আহবান করে আর সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৬. সেই ব্যক্তি যে গোপনে এমনভাবে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে তা বাম হাত জানে না। ৭. সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার দুই চক্ষু অশ্রু বিসর্জন করে’।[19]

জিহাদ : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ غَزَا فِى سَبِيلِ اللهِ وَلَمْ يَنْوِ إِلاَّ عِقَالاً فَلَهُ مَا نَوَى- ‘যে ইকাল (রশি) লাভের আশা ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে জিহাদ করে না তার জন্য তাই মিলবে যার সে নিয়ত করবে’।[20]

জানাযায় অংশগ্রহণ : রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنِ اتَّبَعَ جَنَازَةَ مُسْلِمٍ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا، وَكَانَ مَعَهُ حَتَّى يُصَلَّى عَلَيْهَا، وَيَفْرُغَ مِنْ دَفْنِهَا، فَإِنَّهُ يَرْجِعُ مِنَ الأَجْرِ بِقِيرَاطَيْنِ، كُلُّ قِيرَاطٍ مِثْلُ أُحُدٍ، وَمَنْ صَلَّى عَلَيْهَا ثُمَّ رَجَعَ قَبْلَ أَنْ تُدْفَنَ فَإِنَّهُ يَرْجِعُ بِقِيرَاطٍ- ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় কোন মুসলমানের জানাযার গমন করে এবং তার জানাযার ছালাত আদায় ও দাফন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সঙ্গে থাকে, সে দুই ক্বীরাত ছওয়াব নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। প্রতিটি ক্বীরাত হ’ল ওহোদ পর্বতের মতো। আর যে ব্যক্তি শুধু তার জানাযা আদায় করে, তারপর দাফন সম্পন্ন হবার পূর্বেই চলে আসে, সে এক ক্বীরাত ছওয়াব নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে’।[21]

[চলবে]


[1]. ইবনু মানযূর, লিসানুল আরব ৭/২৬; তাজুল ‘আরাস, পৃঃ ৪৪৩৭

[2]. ফীরোযাবাদী, আল-কামূসুল মুহীত্ব, পৃঃ ৭৯৭

[3]. জুরজানী, আত-তা‘রীফাত, পৃঃ ২৮

[4]. ইবনুল ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালিকীন, ২/৯১ পৃঃ

[5]. আত-তা‘রীফাত, পৃঃ ২৮।  

[6].

[7]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আত-তিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন, পৃঃ ১৩

[8]. মাদারিজুস সালিকীন ২/৯২

[9]. ঐ, ২/৯১-৯২

[10]. ইবনু রজব, জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম, ১/১১ পৃঃ।

[11]. আত-তা‘রীফাত, পৃঃ ২৮

[12]. মাজমূ ফাতাওয়া ১/৩৩৩

[13]. বুখারী হা/১; মুসলিম হা/১৯০৭; মিশকাত হা/১

[14]. তিরমিযী  হা/৩৫৯০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৬৪৮, সনদ হাসান

[15]. বুখারী হা/৬৪৭; মিশকাত হা/৭০২

[16]. বুখারী হা/৩৮; মুসলিম হা/৭৬০; মিশকাত হা/১৯৫৮

[17]. বুখারী হা/২৮৪০; মুসলিম হা/১১৫৩; মিশকাত হা/২০৫৩

[18]. বুখারী হা/৩৭; মুসলিম হা/৭৫৯; মিশকাত হা/১২৯৬

[19]. বুখারী হা/৬৬০; মুসলিম হা/১০৩১; মিশকাত হা/৭০১

[20]. নাসাঈ হা/৩১৩৮; মিশকাত হা/৩৮৫০

[21]. বুখারী হা/৪৭; মিশকাত হা/১৬৫১





মানবাধিকার ও ইসলাম (২য় কিস্তি) - শামসুল আলম
ইসলামে তাক্বলীদের বিধান (২য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
তাক্বলীদের বিরুদ্ধে ৮১টি দলীল (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
আধুনিক বিজ্ঞানে ইসলামের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
কুরবানীর মাসায়েল - -আত-তাহরীক ডেস্ক
ইখলাছ মুক্তির পাথেয় - আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
অনুভূতির ছাদাক্বাহ - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
ওযূতে ঘাড় মাসাহ করা সুন্নাত নাকি বিদ‘আত
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
প্রাক-মাদ্রাসা যুগে ইসলামী শিক্ষা (শেষ কিস্তি) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
দাওয়াত ও সংগঠন (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.