পর্ব ১ । পর্ব ২ । শেষ পর্ব ।

ঋণ গ্রহণকারীর আদব

১.  সূদের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ না করা :

সূদের উপর ঋণ গ্রহণ করা এবং সেই সূদী অর্থ দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করা জায়েয নয়। আল্লাহ তা‘আলা সূদখোরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৮-৭৯) এবং সূদগ্রহীতা ও সূদদাতা উভয়কে লা‘নত বা অভিসম্পাত করেছেন।[1] আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَمْحَقُ اللهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ ‘আল্লাহ সূদকে সংকুচিত করেন এবং ছাদাক্বাহকে প্রবৃদ্ধি দান করেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপিষ্ঠকে ভালবাসেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৭৬)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, إِنِ الرِّبَا وَإِنْ كَثُرَ فإِنَّ عاقبتَه تصيْرُ إِلَى قُلِّ، ‘সূদের দ্বারা সম্পদ যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, তার শেষ পরিণতি হ’ল নিঃস্বতা’।[2] সুতরাং কোন সূদী ব্যাংক, এনজিও এবং সূদখোরের কাছ থেকে সূদ প্রদানের শর্তে ঋণ গ্রহণ করা বৈধ নয়।

২. নির্ধারিত সময়ে যথাসম্ভব দ্রুত ঋণ পরিশোধ করা :

ঋণ পরিশোধের অন্যতম আদব হ’ল নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যথাসম্ভব দ্রুত ঋণ পরিশোধ করা। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, نَفْسُ الـمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ ‘মুমিনের আত্মা ঋণের সাথে ঝুলন্ত থাকে, যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করা হয়’।[3] সুতরাং ঋণের বোঝা থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দ্রুত ঋণ পরিশোধ করা কর্তব্য।

৩. ঋণ পরিশোধে আল্লাহর উপর ভরসা করা :

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কর্তব্য হ’ল ঋণ পরিশোধের ব্যপারে সর্বদা আল্লাহর উপর ভরসা করা। আল্লাহ বলেন,وَمَنْ يَتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا، ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট’ (ত্বালাক ৬৫/৩)। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ أَخَذَ أَمْوَالَ النَّاسِ يُرِيْدُ أَدَاءَهَا أَدَّى اللهُ عَنْهُ، وَمَنْ أَخَذَ يُرِيْدُ إِتْلاَفَهَا أَتْلَفَهُ اللهُ، ‘যে ব্যক্তি মানুষের মাল (ধার) নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা গ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে ধ্বংস করবেন’।[4] ক্বিয়ামতের দিন সে চোর হিসাবে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে।[5] অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ أَخَذَ دَيْنًا وَهُوَ يُرِيْدُ أَنْ يُؤَدِّيَهُ، أَعَانَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ، ‘যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের নিয়তে ঋণ গ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে ঋণ পরিশোধে সহযোগিতা করেন’।[6]

সুতরাং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে পরিশোধের নিয়তে ঋণ গ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে অবশ্যই সাহায্য করেন। তার অনুপম দৃষ্টান্ত রয়েছে নিমেণাক্ত হাদীছে।

রাসূল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘বনী ইসরাঈলের জনৈক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির নিকটে এক হাযার দীনার ঋণ চাইল। তখন সে (ঋণদাতা) বলল, কয়েকজন সাক্ষী নিয়ে আস, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। সে বলল, সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তারপর (ঋণদাতা) বলল, তাহ’লে একজন যামিনদার উপস্থিত কর। সে বলল, যামিনদার হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ঋণদাতা বলল, তুমি সত্যই বলেছ। এরপর নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাযার দীনার দিয়ে দিল। তারপর ঋণ গ্রহীতা সামুদ্রিক সফর করল এবং তার প্রয়োজন সম্পন্ন করে সে যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে সে নির্ধারিত সময়ে ঋণদাতার কাছে এসে পৌঁছতে পারে। কিন্তু সে কোন যানবাহন পেল না। তখন সে এক টুকরা কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করল এবং ঋণদাতার নামে একখানা পত্র ও এক হাযার দীনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্রটি বন্ধ করে সমুদ্র তীরে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো জান আমি অমুকের নিকট এক হাযার দীনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে যামিনদার চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহই যামিন হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে রাযী হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি বলেছিলাম সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট, তাতে সে রাযী হয়ে যায়। আমি তার ঋণ (যথাসময়ে) পরিশোধের উদ্দেশ্যে যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাইনি। তাই আমি তোমার নিকটে সোপর্দ করলাম, এই বলে সে কাষ্ঠখন্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করল। আর কাষ্ঠখন্ডটি সমুদ্রে প্রবেশ করল। অতঃপর লোকটি ফিরে গেল এবং নিজের শহরে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজতে লাগল।

ওদিকে ঋণদাতা এই আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয় তো ঋণগ্রহীতা কোন নৌযানে করে তার মাল নিয়ে এসেছে। তার দৃষ্টি কাষ্ঠখন্ডটির উপর পড়ল, যার ভিতরে সম্পদ ছিল। সে কাষ্ঠখন্ডটি তার পরিবারের জ্বালানীর জন্য বাড়ী নিয়ে গেল। যখন সে তা চিরল, তখন সে সম্পদ ও পত্রটি পেয়ে গেল। কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাযার দীনার নিয়ে এসে হাযির হ’ল এবং বলল, আল্লাহর কসম! আমি আপনার মাল যথাসময়ে পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে সর্বদা যানবাহনের খোঁজে ছিলাম। কিন্তু আমি যে নৌযানে এখন আসলাম, তার আগে আর কোন নৌযান পাইনি। ঋণদাতা বলল, তুমি কি আমার নিকট কিছু পাঠিয়েছিলে? ঋণগ্রহীতা বলল, আমি তো তোমাকে বললামই যে, এর আগে আর কোন নৌযান আমি পাইনি। সে বলল, তুমি কাঠের টুকরার ভিতরে যা পাঠিয়েছিলে, তা আল্লাহ তোমার পক্ষ হ’তে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে আনন্দচিত্তে এক হাযার দীনার নিয়ে ফিরে এল’।[7] সুবহানাল্লাহ। আল্লাহ এভাবেই তাঁর উপর ভরসাকারী বান্দাদের সহায্য করেন।

৪. ঋণ পরিশোধে টাল-বাহানা না করা :

ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা অন্যায়। পাওনাদার যদি ধনীও হয়, তবুও তার ঋণ পরিশোধ করা ওয়াজিব। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَطْلُ الغَنِيِّ ظُلْمٌ، فَإِذَا أُتْبِعَ أَحَدُكُمْ عَلَى مَلِيٍّ فَلْيَتْبَعْ، ‘ধনী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা যুলুম। যখন তোমাদের কাউকে (তার জন্যে) কোন ধনী ব্যক্তির হাওয়ালা করা হয়, তখন সে যেন তা মেনে নেয়’।[8] তবে ঋণ পরিশোধে অক্ষম ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির বিলম্ব করা যুলুমের অন্তর্ভুক্ত হবে না।[9]

৫. উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করা :

ঋণগ্রহীতার অন্যতম কর্তব্য হ’ল উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করা। একবার রাসূল (ছাঃ) এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি উটের বাচ্চা ধার নেন। এরপর যখন তার নিকটে বায়তুল মালের উট আসল, তিনি আবূ রাফি‘কে সেই ব্যক্তির উটের ধার শোধ করার নির্দেশ দেন। আবূ রাফি‘ রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে জানালেন যে, বায়তুল মালে সেই রকম উটের বাচ্চা দেখছি না। বরং তার চেয়ে উৎকৃষ্ট উট আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন,أَعْطِهِ إِيَّاهُ، إِنَّ خِيَارَ النَّاسِ أَحْسَنُهُمْ قَضَاءً، ‘ওটাই তাকে দিয়ে দাও। কেননা মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে’।[10]

জাবির (রাঃ) বলেন, ‘নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল। তিনি পরিশোধের সময় আমার প্রাপ্যের চেয়ে বেশী দিয়েছিলেন’।[11] অতএব ঋণগ্রহীতার কর্তব্য হ’ল উত্তমভাবে দেনা শোধ করে দেওয়া। আর ঋণগ্রহীতা সন্তুষ্টচিত্তে পাওনার বেশী কিছু প্রদান করলে তা গ্রহণ করাতে সমস্যা নেই। তবে ঋণদাতা যদি ঋণে কোন শর্তারোপ করে বা বেশী  পাওয়ার  সুপ্ত  কামনাও  রাখে,  তাহ’লে  তা  সূদে

পরিণত হবে।[12]

৬. পাওনাদারের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা :

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে তার ঋণ পরিশোধের জন্য তাঁকে কঠোর ভাষায় তাগাদা দিল। এমনকি সে তাঁকে বলল, আমার ঋণ পরিশোধ না করলে আমি আপনাকে নাজেহাল করব। ছাহাবীগণ তার উপর চড়াও হ’তে উদ্ধত হয়ে বললেন, তোমার অনিষ্ট হোক! তুমি কি জানো কার সাথে কথা বলছ? সে বলল, আমি আমার পাওনা দাবী করছি। তখন নবী করীম (ছাঃ) বলেন, هَلَّا مَعَ صَاحِبِ الْحَقِّ كُنْتُمْ؟ ‘তোমরা কেন পাওনাদারের পক্ষ নিলে না?’ অতঃপর তিনি কায়েসের কন্যা খাওলা (রাঃ)-এর নিকট লোক পাঠিয়ে তাকে বললেন,إِنْ كَانَ عِنْدَكِ تَمْرٌ فَأَقْرِضِينَا حَتَّى يَأْتِيَنَا تَمْرُنَا فَنَقْضِيَكِ، ‘তোমার কাছে খেজুর থাকলে আমাকে ধার দাও। আমার খেজুর আসলে তোমার ধার পরিশোধ করব’। খাওলা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাবী বলেন, তিনি তাঁকে ধার দিলেন। তিনি বেদুঈনের পাওনা পরিশোধ করলেন এবং তাকে আহার করালেন। সে বলল, আপনি পূর্ণরূপে পরিশোধ করলেন। আল্লাহ আপনাকে পূর্ণরূপে দান করুন। তিনি বলেন, أُولَئِكَ خِيَارُ النَّاسِ، إِنَّهُ لَا قُدِّسَتْ أُمَّةٌ لَا يَأْخُذُ الضَّعِيْفُ فِيْهَا حَقَّهُ غَيْرَ مُتَعْتَعٍ، ‘উত্তম লোকেরা এমনই হয়। যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোর-যবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না সেই জাতি কখনো পবিত্র হ’তে পারে না’।[13]

৭. ঋণদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও তার জন্য দো‘আ করা :

ঋণ প্রদান একটি বড় ধরনের সহযোগিতা। সেকারণ ঋণদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা বাঞ্ছনীয়। আব্দুল্লাহ ইবনু আবী রাবী‘আহ (রাঃ) বলেন যে, ‘হুনায়ন যুদ্ধের সময় নবী করীম (ছাঃ) তার কাছ থেকে ত্রিশ বা চল্লিশ হাযার দিরহাম ঋণ নিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে তার পাওনা পরিশোধ করলেন এবং তার জন্য দো’আ করে বললেন, بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ، ‘বা-রাকাল্লাহু লাকা ফী আহ্লিকা ওয়া মা-লিকা’ (মহান আল্লাহ তোমার ধন-সম্পদ ও পরিবার-পরিজনে বরকত দান করুন)। তারপর বললেন, إِنَّمَا جَزَاءُ السَّلَفِ الْوَفَاءُ وَالْحَمْدُ ‘নিশ্চয়ই ঋণের প্রতিদান হচ্ছে ঋণ পরিশোধ করা এবং ঋণদাতার প্রতি প্রশংসা করা’।[14]

ঋণ পরিশোধ না করার পরিণাম

ঋণের বোঝা মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। ঋণ পরিশোধ না করা হক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার নষ্ট করার নামান্তর। আল্লাহর হক নষ্ট করলে তওবার মাধ্যমে ক্ষমা হয়। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট করলে সংশ্লিষ্ট বান্দার নিকট থেকে ক্ষমা না পেলে ক্ষমা লাভের কোন উপায় নেই। যেকোন মূল্যে তার হক আদায় করতে হবে ঐদিন আসার পূর্বে যেদিন টাকা-পয়সা থাকবে না। সেদিন হকদারকে হক বিনষ্টকারীর নেকী দেওয়া হবে। নেকী শেষ হয়ে গেলে প্রাপকের পাপ হক বিনষ্টকারীর উপরে চাপানো হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, إِنَّ اللهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا، ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে এই মর্মে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানতকে তার প্রাপকের নিকটে অর্পণ করবে’ (নিসা ৪/৫৮)

উপরন্তু ঋণ পরিশোধ না করার ফলে তার দুনিয়া ও আখেরাতের যিন্দেগী যন্ত্রণার কালো আঁধারে ঢেকে যায়। নিমেণ ঋণ পরিশোধ না করার কঠিন পরিণতি আলোকপাত করা হ’ল-

১. নেক আমল বিসর্জন অথবা ঋণীর পাপ অর্জন :

ঋণ পরিশোধ না করা আত্মসাতের শামিল। যদি পাওনাদার ঋণগ্রহীতাকে মাফ না করে বা ঋণ মওকূফ না করে অথবা ঋণীর ওয়ারিছ সেই ঋণ পরিশোধ না করে, তাহ’লে ক্বিয়ামতের দিন নেক আমল দানের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবুও ঋণ পরিশোধ করতেই হবে। কারণ ঋণের পাপ আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ، فَلَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ، وَلَا دِرْهَمٌ، وَلَكِنَّهَا الْحَسَنَاتُ وَالسَّيِّئَاتُ، ‘কেউ ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা গেলে (ক্বিয়ামতের দিন) তার সেই ঋণ পরিশোধ করার জন্য কোন দীনার বা দিরহাম থাকবে না; বরং পাপ ও নেকীগুলোই অবশিষ্ট থাকবে’।[15] অর্থাৎ ক্বিয়ামতের ময়দানে নেকীর মাধ্যমে হ’লেও ঋণ পরিশোধ করতে হবে। যদি ঋণী ব্যক্তির কোন নেকী না থাকে, তাহ’লে ঋণ দাতার পাপ থেকে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ كَانَتْ عِنْدَهُ مَظْلِمَةٌ لِأَخِيهِ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهَا، فَإِنَّهُ لَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ، مِنْ قَبْلِ أَنْ يُؤْخَذَ لِأَخِيهِ مِنْ حَسَنَاتِهِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ أَخِيهِ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের উপর যুলুম করেছে, সে যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে নেয়, তার ভাইয়ের পক্ষে তার নিকট হ’তে পুণ্য কেটে নেওয়ার আগেই। কারণ সেখানে কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি পুণ্য না থাকে তবে তার (মাযলূম) ভাইয়ের গোনাহ্ এনে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে’।[16] সুতরাং মৃত্যুর আগেই এই ভয়াবহ ঋণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা অবশ্য কর্তব্য।

২. শহীদ হওয়া সত্ত্বেও ঋণের গোনাহ মাফ হবে না :

আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) ছাহাবীগণের মাঝে দন্ডায়মান হয়ে বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ও আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। এ কথা শুনে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি মনে করেন, যদি আমি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হই, তাহ’লে আমার পাপসমূহ মাফ করা হবে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ। যদি তুমি পশ্চাদ্ধাবন না করে ধৈর্যের সাথে ছওয়াবের আশায় অগ্রসর হও এবং আল্লাহর রাস্তায় নিহত হও তাহ’লে। তারপর (সে কিছু দূর চলে যাওয়ার পর তাকে ডেকে) বললেন, তুমি কি যেন বলছিলে? সে বলল, আপনি কি মনে করেন, যদি আমি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হই, তাহ’লে আমার পাপসমূহকে মাফ করা হবে? তখন রাসূল (ছাঃ) তাতে সম্মতি দিয়ে বললেন,

نَعَمْ وَأَنْتَ صَابِرٌ مُحْتَسِبٌ مُقْبِلٌ غَيْرُ مُدْبِرٍ إِلاَّ الدَّيْنَ فَإِنَّ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ لِى ذَلِكَ

‘হ্যাঁ, যদি তুমি পশ্চাদ্ধাবন না করে ধৈর্যের সাথে ছওয়াবের আশায় অগ্রসর হও এবং আল্লাহর পথে নিহত হও তাহ’লে। তবে ঋণের গোনাহ ব্যতীত (অর্থাৎ সকল গোনাহ ক্ষমা হ’লেও ঋণের গোনাহ ক্ষমা করা হবে না)। কারণ জিবরীল (আঃ) আমাকে এ কথাই বললেন’।[17] অন্যত্র তিনি বলেন, يُغْفَرُ لِلشَّهِيدِ كُلُّ ذَنْبٍ إِلاَّ الدَّيْنَ ‘শহীদ ব্যক্তির সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে। কিন্তু ঋণ ব্যতীত’।[18] অর্থাৎ আল্লাহর পথে জান-মাল বিলিয়ে দেয়া শহীদ ব্যক্তি ঋণের কারণে আল্লাহর কাছে ধরা খেয়ে যাবেন। তার সকল পাপ ক্ষমা করা হ’লেও ঋণের পাপ ক্ষমা করা হবে না। উল্লিখিত হাদীছদ্বয়ের মাধ্যমে ঋণের ভয়াবহতা উপলদ্ধি করা যায়।

৩. ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না :

মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনে জাহশ (রাঃ) বলেন, একদা আমরা মসজিদের চত্বরে অবস্থান করছিলাম, যেখানে জানাযা রাখা হ’ত। রাসূল (ছাঃ)ও আমাদের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি মাথা উঠালেন এবং আসমানের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন। অতঃপর দৃষ্টি অবনত করে ললাটের উপর হাত রেখে বললেন, سُبْحَانَ اللهِ سُبْحَانَ اللهِ مَاذَا نَزَلَ مِنَ التَّشْدِيدِ ‘সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! কী কঠোরতাই না অবতীর্ণ হ’ল!’ বর্ণনাকারী বলেন, আমরা সে দিন ও রাত এ ব্যাপারে চুপ থাকলাম। তবে আমরা একে কল্যাণকরই মনে করছিলাম। রাবী মুহাম্মাদ বলেন, পরের দিন সকালে আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে জিজ্ঞেস করলাম, কি কঠোরতা অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বললেন,فِى الدَّيْنِ وَالَّذِىْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ رَجُلاً قُتِلَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ ثُمَّ عَاشَ ثُمَّ قُتِلَ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ ثُمَّ عَاشَ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ مَا دَخَلَ الْجَنَّةَ حَتَّى يُقْضَى دَيْنُهُ- ‘ঋণের ব্যাপারে কঠোরতা অবতীর্ণ হয়েছে। ঐ সত্তার কসম! যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন। কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর পথে শহীদ হয়ে পুনরায় জীবন লাভ করে, আবার শহীদ হয়ে পুনরায় জীবন লাভ করে, আবার শহীদ হয়ে জীবিত হয়, অথচ তার উপর ঋণ থাকে। তাহ’লে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তার ঋণ পরিশোধ করা  হয়’।[19] ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন, ‘আমার জীবনে ঋণের ব্যাপারে এত কঠোর কথা আমি কখনো পাইনি’।[20]

সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে খুৎবারত অবস্থায় জিজ্ঞেস করেন, অমুক গোত্রের কোন লোক এখানে আছে কি? কিন্তু কেউ এতে সাড়া দিল না। এমনকি তৃতীয়বার একই প্রশ্ন করার পর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি উপস্থিত আছি। তখন তিনি বললেন,مَا مَنَعَكَ أَنْ تُجِيْبَنِيْ فِي الْمَرَّتَيْنِ الأُولَيَيْنِ أَمَا إِنِّي لَمْ أُنَوِّهْ بِكُمْ إِلاَّ خَيْرًا إِنَّ صَاحِبَكُمْ مَأْسُورٌ بِدَيْنِهِ، ‘প্রথম দু’দফায় কিসে তোমাকে সাড়া দিতে বাধা দিয়েছিল? জেনে রাখ! আমি তোমাদের কেবল কল্যাণই কামনা করি। তোমাদের অমুক ব্যক্তি ঋণের দায়ে আটকে আছে। সামুরা (রাঃ) বলেন, তখন আমি ঐ ব্যক্তিকে মৃত ব্যক্তির পক্ষে ঋণ পরিশোধ করতে দেখি। যার পর আর কেউ তার কাছে আর কোন পাওনা চাইতে আসেনি’।[21] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

إنَّ صاحبَكم حُبِسَ على بابِ الجَّنة بديْنٍ كان عليه، فإنْ شئتُم فافْدوهُ، وإنْ شئتُم فأسْلِموهُ إلى عذابِ الله.

‘তোমাদের অমুক সাথী ঋণগ্রস্ত হওয়ার কারণে জান্নাতের দরজায় আটকে আছে। তুমি চাইলে তাকে মুক্ত করতে পার। চাইলে তাকে আল্লাহর শাস্তি গ্রহণের জন্য সমর্পণ করতে পার। অতঃপর লোকটি তা পরিশোধ করল।[22]

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত  তিনি  বলেন,  রাসূল (ছাঃ)

বলেছেন, نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ ‘মুমিনের আত্মা তার ঋণের সাথে ঝুলন্ত থাকে, যতক্ষণ না তা পরিশোধ করা হয়’।[23]

৪. ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত রাসূল (ছাঃ) জানাযা পড়তেন না :

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট যখন কোন ঋণী ব্যক্তির জানাযা উপস্থিত করা হ’ত, তখন তিনি জিজ্ঞেস করতেন, هَلْ تَرَكَ لِدَيْنِهِ فَضْلاً ‘সে তার ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত মাল রেখে গেছে কি?’ যদি তাঁকে বলা হ’ত যে, সে তার ঋণ পরিশোধের মতো মাল রেখে গেছে। তখন তার জানাযার ছালাত আদায় করতেন। নতুবা বলতেন, صَلُّوْا عَلَى صَاحِبِكُمْ ‘তোমাদের সাথীর জানাযা আদায় করে নাও’।[24]

অপর বর্ণনায় জাবের (রাঃ) বলেন, كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُصَلِّي عَلَى رَجُلٍ عَلَيْهِ دَيْنٌ، ‘নবী কারীম (ছাঃ) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা ছালাত আদায় করতেন না’।[25] তবে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জাযানা ছালাত আদায় করা জায়েয। কারণ প্রথম পর্যায়ে রাসূল (ছাঃ) তাঁর উম্মতকে ঋণের ভয়াবহতা উপলব্ধি করানোর জন্য এটা করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা পড়েছেন। ইবনু মুনযিরী (রহঃ) বলেন, ‘এটা সঠিক যে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা পড়তেন না, কিন্তু এটা পরে রহিত হয়েছে’।[26]

ত্ববারানীতে ইবনু ওমর (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে, ঋণ দু’প্রকারঃ

ক. যে ব্যক্তি তার ওপর থাকা ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা নিয়ে মৃত্যুবরণ করল, আমি (রাসূলুল্লাহ) তার অভিভাবক।

খ. যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা না করে (আত্মসাৎ করার ইচ্ছায়) মৃত্যুবরণ করল। এর কারণে সেদিন তার নেকী হ’তে কর্তন করা হবে, যেদিন কোন দিরহাম ও দীনার থাকবে না।

আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, এমন অর্থবোধক অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। নবী করীম (ছাঃ) এটা বলেছেন, তবে ঋণী ব্যক্তির ওপর জানাযা নিষিদ্ধ হওয়ার পর যখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে অনেক দেশে বিজয় দান করলেন এবং প্রচুর সম্পদ অর্জিত হ’ল, তখন তিনি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা আদায় করতেন এবং বায়তুল মাল হ’তে তাদের ঋণ পরিশোধ করতেন। আর এটা যাকাত বণ্টনের আটটি খাতের একটি।[27]

(চলবে)


[1]. আবূদাঊদ হা/৩৫৮০; ইবনু মাজাহ হা/২৩১৩; মিশকাত হা/৩৭৫৩; সনদ ছহীহ।

[2]. ইবনু মাজাহ হা/২২৭৯; মিশকাত হা/২৮২৭, সনদ ছহীহ

[3]. তিরমিযী হা/১০৭৮; ইবনু মাজাহ হা/২৪১৩; সনদ ছহীহ।

[4]. বুখারী হা/২৩৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২৪১১।

[5]. ইবনু মাজাহ হা/২৪১০, সনদ ছহীহ।

[6]. নাসাঈ হা/৪৬৮৭, সনদ ছহীহ।

[7]. বুখারী হা/২২৯১।

[8]. বুখারী হা/২২৮৭; মুসলিম হা/১৫৬৪; মিশকাত হা/২৯০৭।

[9]. ফাৎহুল বারী ৪/৪৬৫; বুখারী হা/২২৮৭।

[10]. বুখারী হা/২৩৯২; মুসলিম হা/১৬০০; তিরমিযী হা/১৩১৮।

[11]. আবূদাঊদ হা/৩৩৪৭; মিশকাত হা/২৯২৫, সনদ ছহীহ।

[12]. বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৬, সনদ মওকূফ ছহীহ।

[13]. ইবনু মাজাহ হা/২৪২৬, সনদ ছহীহ।

[14]. ইবনু মাজাহ হা/২৪২৪; নাসাঈ হা/৪৬৮৩; মিশকাত হা/২৯২৬, সনদ ছহীহ।

[15]. হাকেম হা/২২২২, সনদ ছহীহ।

[16]. বুখারী হা/৬৫৩৪; তিরমিযী হা/২৪১৯।

[17]. মুসলিম হা/১৮৮৫; মিশকাত হা/৩৮০৫।

[18]. মুসলিম হা/১৮৮৬; মিশকাত হা/২৯১২।

[19]. আহমাদ হা/২২৫৪৬; মিশকাত হা/২৯২৯, ছহীহুত তারগীব হা/১৮০৪।

[20]. মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৫/১৯৬৫।

[21]. আবূদাঊদ হা/৩৩৪১, আহমাদ হা/২০২৪৪, সনদ হাসান।

[22]. হাকেম হা/২২১৩; বায়হাক্বী, কুবরা হা/১১৫১৯; আহমাদ হা/২০২৩৫, ছহীহুত তারগীব হা/১৮১০, সনদ ছহীহ।

[23]. তিরমিযী হা/১০৭৮, মিশকাত হা/২৯১৫।

[24]. বুখারী হা/২২৯৮; মুসলিম হা/১৬১৯; মিশকাত হা/২৯১৩।

[25]. নাসাঈ হা/১৯৬২; মুছান্নাফ আব্দুর রায্যাক হা/১৫২৫৭, সনদ ছহীহ।

[26]. ছহীহুত তারগীব ২/৩৭৮।

[27]. তুহফাতুল আহওয়াযী ৪/১৬৪; হা/ ১০৭৮ দ্রষ্টব্য।





এক হাতে মুছাফাহা : একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
আলেমগণের মধ্যে মতভেদের কারণ (২য় কিস্তি) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
যাকাত সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
কুরআন নিয়ে চিন্তা করব কিভাবে? - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
শরী‘আতের আলোকে জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
দ্বীন প্রচারে ওয়ায-মাহফিল : প্রাসঙ্গিক কিছু কথা - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
হাদীছ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পরিক্রমা (৪র্থ কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম (৮ম কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত পরিচিতি (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
বিবাহের গুরুত্ব ও পদ্ধতি (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
ইসলামের দৃষ্টিতে মাদকতা - ড. মুহাম্মাদ আলী
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
আরও
আরও
.