পর্ব ১ । পর্ব ২ । শেষ পর্ব ।
ভূমিকা : মানুষ
সামাজিক জীব। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে।
আর এই সামাজিকতার এক অনস্বীকার্য বাস্তবতা হচ্ছে কোন মানুষ একা সবসময়
নিজের সব প্রয়োজন পূরণে সক্ষম হয় না। এজন্যই পরস্পরকে বিভিন্ন উপায় বা
লেনদেনের মাধ্যমে মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করে থাকে। এরকমই একটি বড় উপায়
হচ্ছে ঋণ। মানব জীবনের পথচলায় ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি
বিষয়। ইসলাম এ বিষয়ে মানুষকে উৎকৃষ্ট পদ্ধতি ও দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে।
মহান আল্লাহ মানবজাতিকে ঋণ গ্রহণ করার যেমন অনুমতি দিয়েছেন, তেমনি যথাসময়ে
সেই ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ প্রদান করেছেন। যাপিত জীবনের
বাঁকে-বাঁকে যেহেতু আমরা ঋণের সাথে জড়িত থাকি, সেহেতু ঋণের ক্ষেত্রে ইসলামী
শরী‘আতের দিক-নির্দেশনা ও বিধি-বিধান সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারণা থাকা
প্রয়োজন। তাছাড়া ঋণের ভয়াবহতার ব্যাপারে সম্যক ধারণা না থাকার কারণে আমরা
ঋণকে হালকা চোখে দেখি। যা পরকালীন জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। আলোচ্য
নিবন্ধে আমরা এই বিষয়ে কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
ঋণের পরিচয় : ঋণের আরবী প্রতিশব্দ قَرْض, যা বাংলা ভাষায় ‘কর্য’ নামে পরিচিত। এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে দেনা, ধার, হাওলাত ইত্যাদি। শরী‘আতের পরিভাষায়دَفْعُ مَالٍ إِرْفَاقًا لِمَنْ يَنْتَفِعُ بِهِ وَيَرُدُّ بَدَلَهُ، অর্থাৎ ‘ঋণ হ’ল সহযোগিতার জন্য অপরকে মাল-পণ্য প্রদান করা, যেন গ্রহীতা এর মাধ্যমে উপকৃত হয়, অতঃপর দাতাকে সেই মাল কিংবা তার অনুরূপ ফেরত দেওয়া’।[1] ইসলামী পরিভাষায় একে ‘কর্যে হাসানা’ বলা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়, ছওয়াবের নিয়তে বিনা শর্তে কাউকে কোন কিছু ঋণ দিলে তাকে ‘কর্যে হাসানা’ বা উত্তম ঋণ বলা হয়। এতে মানুষ দুনিয়া ও আখেরাতে উপকৃত হয় এবং পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় ও সামাজিক ঐক্য সুদৃঢ় হয়। আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় কর্যে হাসানার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। মহান আল্লাহ বলেন, مَنْ ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ ‘কোন সে ব্যক্তি যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দিবে, অতঃপর তিনি তার বিনিময়ে তাকে বহুগুণ বেশী প্রদান করবেন? বস্ত্ততঃ আল্লাহ্ই রূযী সংকুচিত করেন ও প্রশস্ত করেন। আর তাঁরই দিকে তোমরা ফিরে যাবে’ (বাক্বারাহ ২/২৪৫)। অন্যত্র তিনি বলেন,وَأَقْرَضُوا اللهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَاعَفُ لَهُمْ وَلَهُمْ أَجْرٌ كَرِيْمٌ ‘নিশ্চয় দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেয়, তাদেরকে দেওয়া হবে বহুগুণ বেশী। আর তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার’ (হাদীদ ৫৭/১৮)। এখানে আল্লাহকে ঋণ দেওয়া অর্থ আল্লাহর পথে দান করা এবং আল্লাহর বান্দাকে কর্য দেওয়া উভয় মর্ম বহন করে। কেননা হাদীছে কুদসীতে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, اسْتَقْرَضْتُ عَبْدِي فَلَمْ يُقْرِضْنِي ‘আমি আমার বান্দার কাছে ঋণ চেয়েছিলাম, কিন্তু সে আমাকে ঋণ দেয়নি’।[2] এতে বুঝা যায় যে, ইসলাম মানুষের নৈতিক ও অর্থনৈতিক দু’দিকেরই উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথ দেখিয়েছে।
ঋণ গ্রহণের বিধান : ইসলামে ঋণ আদান-প্রদান করা বৈধ। যা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত দ্বারা প্রমাণিত। কেননা রাসূল (ছাঃ) ঋণ গ্রহণ করেছিলেন,[3] ঋণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন[4] এবং তার উম্মতকে ঋণ মুক্তির দো‘আ শিখিয়েছেন[5]। এমনকি রাসূল (ছাঃ) অমুসলিমের কাছ থেকেও ঋণ গ্রহণ করেছেন। সুতরাং ইসলাম মুসলমানদেরকে বিপদে-আপদে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে অপরের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করার অনুমতি প্রদান করেছে। সঙ্গে সঙ্গে সঠিক সময়ে তা পরিশোধ করার প্রতি কঠোর নির্দেশও দিয়েছে।
ঋণ দান ব্যবসা নয়, সহযোগিতা : ইসলামে
ঋণের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্রেফ আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে মানুষকে
সাহায্য-সহযোগিতা করা ও তাদের প্রতি দয়া করা। কিন্তু এই সহযোগিতার আড়ালে
ব্যবসায়িক বা অন্য কোন সুবিধা অর্জন উদ্দেশ্য নয়। একজন মুমিনের জীবনে ঋণ
দানের উদ্দেশ্য আর্থিক প্রবৃদ্ধি নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
সেকারণ ঋণ গ্রহীতা ঋণ ফেরত দেয়ার সময় যা নিয়েছে তা কিংবা তার অনুরূপ ফেরত
দিতে আদিষ্ট, এর অতিরিক্ত নয়। ঋণ দাতা এর অতিরিক্ত নিলে তা সূদ হিসাবে গণ্য
হবে। আমরা সমাজিক জীবনে ঋণের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সূদের সাথে জড়িয়ে পড়ি।
যেমন- চাকরী বা অন্য কোন সহযোগিতার উদ্দেশ্যে কাউকে ঋণ দেওয়া অথবা কোন
হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বা দোকান-ঘর ভাড়া পাওয়ার জন্য ঋণ প্রদান
প্রভৃতি সহযোগিতা সূদের পর্যায়ভুক্ত। অনুরূপভাবে জমি বন্ধক প্রথাও একপ্রকার
সূদ। কারণ এভাবে জমি নিলে চাষের খরচ ব্যতীত বাকী শস্য জমির মালিককে ফেরত
দিতে হবে। কেননা এটা একটা কর্য। আর কর্যের লাভ ভোগ করা যায় না। ইবনে আববাস
(রাঃ) বলেন, যে ঋণের বিনিময় লাভ করা হয়, তা সূদ।[6]
আজকাল বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিওগুলো গ্রামে-গঞ্জে, নগর-বন্দরে সহযোগিতার নামে সূদী ঋণের কারবারী করছে এবং সূদী লেনদেনের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর গযবের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কেউ আবার সূদে ঋণ দানকে ব্যবসা হিসাবে গ্রহণ করেছে, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। ঋণ কখনো ব্যবসা হ’তে পারে না। কারণ যে ঋণের মাধ্যমে ব্যবসা করা হয়, তা মূলত সূদী ব্যবসা।
ঋণ গ্রহণে সতর্কতা : জান্নাত
পিয়াসী মুমিন বান্দাকে ঋণের ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকা যরূরী। ছাওবান (রাঃ)
হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ مَاتَ وَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ ثَلَاثٍ:
الكِبْرِ، وَالغُلُولِ، وَالدَّيْنِ دَخَلَ الجَنَّةَ، ‘যে ব্যক্তির মৃত্যু
হবে অহংকার, খিয়ানত এবং ঋণ থেকে মুক্ত হয়ে, সে জানণাতে প্রবেশ করবে’।[7]
অর্থাৎ ঋণগ্রস্ত হয়ে মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মৃত ব্যক্তির সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের মাঝে বণ্টনের
পূর্বে মৃতের ঋণ পরিশোধ করার ব্যাপারে জোর তাকীদ দিয়েছেন।[8] কারণ আল্লাহর পথে শহীদ হওয়া ব্যক্তিও তার ঋণের কারণে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।[9]
যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে তার ঋণ পরিশোধ করা হয়। সেকারণ রাসূল (ছাঃ)
বলেছেন, لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا يَسُرُّنِي أَنْ لاَ
يَمُرَّ عَلَيَّ ثَلاَثٌ، وَعِنْدِي مِنْهُ شَيْءٌ إِلَّا شَيْءٌ
أُرْصِدُهُ لِدَيْنٍ، ‘আমার কাছে যদি ওহোদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহ’লে
আমার পসন্দ নয় যে, তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমার কাছে তার কিছু অংশ
অবশিষ্ট থাকুক। তবে সেই পরিমাণ ব্যতীত, যা আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য রেখে
দেই’।[10]
ঋণের কারণে মানুষ সামাজে লাঞ্ছিত হয়। তাই প্রয়োজন ছাড়া ঋণ গ্রহণ থেকে সতর্ক থাকা উচিত। অপরদিকে পরিশোধ না করার উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করা আত্মসাতের শামিল, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
ঋণ দানের ফযীলত :
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে ঋণ বলতে ‘কর্যে হাসানাহ’ বুঝানো হয়েছে। আর কর্যে হাসানাহ প্রদানে রয়েছে অশেষ ফযীলত।
(ক) ঋণ দান ছাদক্বাহর ন্যায় ফযীলতপূর্ণ :
কাউকে নেকীর আশায় বা সহযোগিতার জন্য কর্যে হাসানা প্রদান করা আল্লাহর পথে
দান-ছাদাক্বাহ করার সমতুল্য। এমনকি ঋণ দানকে দান-ছাদাক্বার চেয়েও বেশী
মর্যাদাপূর্ণ বলা হয়েছে। আবূ উমামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ)
বলেছেন,دخل رجل الجنة، فرأى مكتوباً على بابها: الصدقةُ بعشرِ أمثالها،
والقرضُ بثمانية عشر ‘এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করে তার দরজায় একটি লেখা
দেখতে পেল যে, ছাদাক্বার নেকী দশ গুণ বৃদ্ধি করা হয় এবং ঋণ দানের নেকী
আঠারো গুণ বৃদ্ধি করা হয়’।[11]
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, كُلُّ قَرْضٍ صَدَقَةٌ ‘প্রত্যেক ঋণই ছাদক্বাহ’।[12]
অপর এক বর্ণনায় তিনি বলেন,مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُقْرِضُ مُسْلِمًا قَرْضًا
مَرَّتَيْنِ إِلَّا كَانَ كَصَدَقَتِهَا مَرَّةً ‘কোন মুসলিম অপর কোন
মুসলিমকে দুইবার ঋণ দিলে সে একবার ছাদক্বাহ করার নেকী পাবে’।[13]
(খ) দাস মুক্তির নেকী : কর্যে
হাসানা বা ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দাস মুক্ত করে দেওয়ার নেকী লাভ করা যায়।
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে
বলতে শুনেছি,مَنْ مَنَحَ مَنِيحَةَ لَبَنٍ أَوْ وَرِقٍ أَوْ هَدَى زُقَاقًا
كَانَ لَهُ مِثْلَ عِتْقِ رَقَبَةٍ ‘যে ব্যক্তি একবার দোহন করা দুধ দান
করে অধবা টাকা-পয়সা ধার দেয় অথবা পথহারা লোককে সঠিক পথের সন্ধান দেয়, তার
জন্য রয়েছে একটি গোলাম মুক্ত করার সমপরিমান ছওয়াব’।[14]
(গ) ফেরেশতাদের দো‘আ লাভের সৌভাগ্য : যারা আল্লাহর কোন বান্দাকে সহযোগিতার জন্য ঋণ দেয়, আকাশের ফেরেশতা তার জন্য বরকতের দো‘আ করে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيهِ إِلاَّ مَلَكَانِ يَنْزِلاَنِ فَيَقُولُ أَحَدُهُمَا اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا، وَيَقُولُ الآخَرُ اللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا ‘প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন। আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন’।[15] সুতরাং ঋণ দান এমন একটি ছাদাক্বাহ, যার মাধ্যমে ফেরেশতাদের দো‘আ লাভে ধন্য হওয়া যায়। আল্লাহর নিষ্পাপ ফেরেশতাদের দো‘আ লাভ করা কতইনা সৌভাগ্যের ব্যাপার!
(ঘ) বিপদ থেকে মুক্তি ও আল্লাহর সাহায্য লাভ : যখন কোন মুমিন বান্দা নিঃস্বার্থভাবে কারো দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তখন আল্লাহ এত খুশি হন যে, তিনি স্বয়ং সেই বান্দার সাহায্যকারী হয়ে যান এবং তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুমিনের দুনিয়ার বিপদসমূহের কোন একটি বিপদ দূর করে দিবে, আল্লাহ তার আখেরাতের বিপদসমূহের মধ্য হ’তে একটি (কঠিন) বিপদ দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত লোকের অভাব (সাহায্যের মাধ্যমে) সহজ করে দিবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তাকে সহজতা দান করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুমিনের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর বান্দাদেরকে সাহায্য করতে থাকেন, যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে’।[16] আর নিঃসন্দেহে ঋণ একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার বিপদাপদে তার পাশে দাঁড়ানো হয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে কর্যে হাসানা বা নিঃস্বার্থ ঋণ প্রদানের মাধ্যমে উক্ত ফযীলতগুলো হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!
ঋণ দানের আদব :
কাউকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে ঋণ দান করা নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর ঋণ দানের ক্ষেত্র ইসলাম কতিপয় শিষ্টাচার ও নীতিমালা বর্ণনা করেছে। যেমন-
(ক) ঘুষ গ্রহণ না করা : ঋণ দানের ক্ষেত্রে বিনিময় গ্রহণ করা এবং এর মাধ্যমে কোন উপকার হাছিল করা হারাম। ইবনু কুদামা বলেন,
وَكُلُّ قَرْضٍ شَرَطَ فِيهِ أَنْ يَزِيدَهُ، فَهُوَ حَرَامٌ، بِغَيْرِ خِلَافٍ. قَالَ ابْنُ الْمُنْذِرِ: أَجْمَعُوا عَلَى أَنَّ الْمُسَلِّفَ إذَا شَرَطَ عَلَى الْمُسْتَسْلِفِ زِيَادَةً أَوْ هَدِيَّةً، فَأَسْلَفَ عَلَى ذَلِكَ، أَنَّ أَخْذَ الزِّيَادَةِ عَلَى ذَلِكَ رَبًّا. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ، وَابْنِ عَبَّاسٍ، وَابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّهُمْ نَهَوْا عَنْ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً.
‘যে সকল ঋণে অতিরিক্ত কোন কিছু গ্রহণ করার শর্তারোপ করা হয়, তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন মতভেদ নেই। ইবনুল মুনযির বলেন, বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে একমত যে, যদি ঋণ দাতা ঋণ গ্রহীতার উপর কোন অতিরিক্ত লাভ বা উপঢৌকনের শর্তারোপ করে এবং ঋণী ব্যক্তি যদি সেটা তাকে প্রদান করে, তাহ’লে সেই অতিরিক্ত কিছু সূদ হিসাবে গণ্য হবে। উবাই ইবনে কা‘ব, ইবনু আববাস ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবী থেকে এমনটাই বর্ণিত হয়েছে যে, তারা ঋণে লাভ গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন’।[17] আজকের বিশ্ব এই সূদী ঋণের জাতাকলে পিষ্ট হয়ে অশান্তির দাবানলে পরিণত হয়েছে। আমাদের সামাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সূদী ব্যাংকগুলো সহযোগিতার ফাঁকা বুলি কপচিয়ে মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। সূদী ঋণের আগ্রাসী ছোবলে আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অশান্তির মূল কারণ হ’ল এই সূদ ভিত্তিক ঋণ ব্যবস্থা। তাই দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি পেতে হ’লে সার্বিক জীবনে সূদমুক্ত অর্থ ব্যবস্থা চালু করা আবশ্যক। কারণ সূদী ঋণ দান সহযোগিতা নয়; বরং মহাপাপ।
(খ) উপঢৌকন গ্রহণ না করা : ঋণ দানের অন্যতম আদব হ’ল ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে কোন উপঢৌকন গ্রহণ না করা। কারণ ঋণের বিনিময়ে হাদিয়া বা উপহার গ্রহণ করা হারাম। আবূ বুরদাহ ইবনে আবূ মূসা (রহঃ) বলেন, একবার আমি মদীনায় এসে আব্দুল্লাহ বিন সালামের সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি আমাকে বললেন,
إِنَّك بِأَرْض فِيْهَا الرِّبَا فَاش إِذا كَانَ لَكَ عَلَى رَجُلٍ حَقٌّ فَأَهْدَى إِلَيْكَ حِمْلَ تَبْنٍ أَو حِملَ شعيرِ أَو حَبْلَ قَتٍّ فَلَا تَأْخُذْهُ فَإِنَّهُ رِبًا.
‘তুমি এমন এলাকায় বসবাস করছ, যেখানে সূদের প্রচলন অত্যধিক। অতএব কারো কাছে যদি তোমার কোন পাওনা থাকে, আর সে যদি তোমাকে হাদিয়া বা উপহার হিসাবে এক বোঝা খড় অথবা এক বোঝা যব অথবা এক আঁটি ঘাসও দেয়; তুমি তা গ্রহণ করবে না। কারণ এটা সূদ হিসাবে গণ্য হবে’।[18] এই আছারের মর্মার্থ অন্যান্য ছাহবীদের ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। ইবনুল কাইয়িম (রহঃ) বলেন,
وَقَدْ تَقَدَّمَ عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَعْيَانِهِمْ كَأُبَيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُمْ نَهَوْا الْمُقْرِضَ عَنْ قَبُولِ هَدِيَّةِ الْمُقْتَرِضِ، وَجَعَلُوا قَبُولَهَا رِبًا.
‘উবাই বিন কা‘ব, ইবনে মাসঊদ,
আব্দুল্লাহ ইবনু সালাম, ইবনে ওমর এবং ইবনু আববাস (রাঃ)-এর মত উল্লেখযোগ্য
ছাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে এটা বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁরা ঋণদাতাকে
ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে উপঢৌকন গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। তাঁরা এই উপহার
গ্রহণকে সূদ হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন’।[19]
আল্লামা
শাওক্বানী (রহঃ) বলেন, ‘যদি কর্যের কারণে ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মাঝে হাদিয়া
বা উপঢৌকন আদান-প্রদান হ’লে এটা সূদ বা ঘুষ হিসাবে গণ্য হবে। যা স্পষ্ট
হারাম। তবে ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মাঝে যদি আগে থেকেই হাদিয়া আদান-প্রদানের
অভ্যাস থাকে তাহ’লে সেই উপহার প্রদান বা গ্রহণ করাতে কোন সমস্যা নেই’।[20]
যেমন একবার ইবনে ওমর (রাঃ) উবাই ইবনে কা‘বকে দশ হাযার দিরহাম ঋণ দিলেন।
অতঃপর উবাই বিন কা‘ব তাকে জমির কিছু ফল হাদিয়া দিলেন। কিন্তু ইবনু ওমর সেই
ফল গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দিলেন। তখন উবাই (রাঃ) বললেন, মাদীনাবসীরা জানে যে
আমি উৎকৃষ্ট ফল-মূল আবাদ করি। তাহ’লে আপনি এই ফল-মূল নিচ্ছেন না কেন? এরপর
তিনি আবার অনুরোধ জানালে ইবনু ওমার সেই হাদিয়া গ্রহণ করলেন। ইবনুল কায়্যিম
(রহঃ) বলেন, ইবনু ওমর প্রথমে মনে করেছিলেন, ঋণদানের কারণেই হয়তো এই হাদিয়া
তাকে দেওয়া হচ্ছে, সেকারণ তিনি প্রথমে তা গ্রহণ করেননি। কিন্তু যখন তিনি
নিশ্চিত হ’লেন যে, এই হাদিয়া তার ঋণ দানের কারণে নয়, তখন সেটা গ্রহণ
করলেন’।[21]
(গ) অক্ষম ঋণগ্রহীতার প্রতি কঠোর না হওয়া : ঋণী ব্যক্তি তার ঋণ পরিশোধ করতে অপারগ হ’লে তার উপর কঠোর হওয়া উচিৎ নয়। মা আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ طَلَبَ حَقًّا فَلْيَطْلُبْهُ فِي عَفَافٍ وَافٍ، أَوْ غَيْرِ وَافٍ، ‘কোন ব্যক্তি পাওনা আদায়ের তাগাদা দিলে, যেন বিনীতভাবেই তাগাদা দেয়। এতে তার ঋণ আদায় হোক বা না হোক’।[22] আল্লাহর রাসূলের এই হাদীছের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের মহানুভবতা ফুটে ওঠে। সুতরাং প্রকৃত অক্ষম ও দরিদ্র ঋণীদের প্রতি সদয় হওয়া উচিত।
অক্ষম ঋণগ্রহীতাকে ছাড় প্রদানের ফযীলত :
সমাজে যেমন কিছু লোক পাওয়া যায়, যারা সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও ঋণ শোধ করতে ঢিলেমি করে, তেমন সত্যিকারে এমন লোকও রয়েছে যারা নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম। এ রকম ব্যক্তিকে ইসলাম অতিরিক্ত সময় দিতে উদ্বুদ্ধ করে। যারা অক্ষম ঋণগ্রহীতাকে অবকাশ দেয় বা তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের মহা পুরস্কার। মহান আল্লাহ বলেন,وَإِنْ كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ وَأَنْ تَصَدَّقُوْا خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ، ‘আর ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি অভাবী হয়, তাহ’লে তাকে সচ্ছল হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও। আর যদি ঋণ মাফ করে দাও, তাহ’লে সেটা তোমাদের জন্য আরো উত্তম, যদি তোমরা তা জানতে’ (বাক্বারাহ ২/২৮০)।
(ক) দানের ছওয়াব অর্জন : ঋণদাতা
যদি অক্ষম ঋণীকে দেনা পরিশোধে ছাড় দেন, তাহ’লে তিনি এর মাধ্যমে আল্লাহর
পথে দান-ছাদাক্বাহ করার নেকী অর্জন করেন। বুরাইদা আল-আসলামী (রাঃ) হ’তে
বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَنْظَرَ مُعْسِرًا كَانَ لَهُ بِكُلِّ
يَوْمٍ صَدَقَةٌ، وَمَنْ أَنْظَرَهُ بَعْدَ حِلِّهِ كَانَ لَهُ مِثْلُهُ،
فِي كُلِّ يَوْمٍ صَدَقَةٌ. ‘যে ব্যক্তি (ঋণগ্রস্ত) অভাবী ব্যক্তিকে অবকাশ
দিবে, সে দান-খয়রাত করার ছওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শেষ
হওয়ার পরেও সময় বাড়িয়ে দিবে, সেও প্রতিদিন দান-খয়রাত করার নেকী লাভ করবে’।[23]
(খ) আল্লাহর রাসূলের দো‘আ লাভ : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সেই পাওনাদার ব্যক্তির জন্য রহমতের দো‘আ করেছেন, যে অভাবী কর্যগ্রহীতার প্রতি সহনশীল হয়। জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) ইরশাদ করেছেন,رَحِمَ اللهُ عَبْدًا سَمْحًا إِذَا بَاعَ، سَمْحًا إِذَا اشْتَرَى، سَمْحًا إِذَا اقْتَضَى، ‘আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যে বান্দা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় উদারচিত্ত হয় এবং (ঋণের) পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে সহনশীল হয়’।[24] ঋণীর প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনের মাধ্যমে যদি রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভ করা যায়, তাহ’লে এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কি হ’তে পারে!
(গ) আরশের নিচে ছায়া লাভের সৌভাগ্য : যারা
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য অক্ষম ঋণী লোকের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে
অথবা তার ঋণ মাফ করে দেয়, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদেরকে তাঁর আরশের
ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেছেন,مَنْ أَنْظَرَ مُعْسِرًا، أَوْ وَضَعَ لَهُ، أَظَلَّهُ اللهُ يَوْمَ
القِيَامَةِ تَحْتَ ظِلِّ عَرْشِهِ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ ‘যে
ব্যক্তি কোন অভাবী ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়,
ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাকে তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন।
যেদিন তার আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না’।[25]
(ঘ) আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভ : ক্বিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভ করার অন্যতম উপায় হ’ল অভাবী ও দরিদ্র ঋণগ্রস্তদের ঋণ মাফ করে দেওয়া। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
حُوسِبَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مِنَ الْخَيْرِ شَيْءٌ، إِلَّا أَنَّهُ كَانَ يُخَالِطُ النَّاسَ، وَكَانَ مُوسِرًا، فَكَانَ يَأْمُرُ غِلْمَانَهُ أَنْ يَتَجَاوَزُوا عَنِ الْمُعْسِرِ. قَالَ: قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: نَحْنُ أَحَقُّ بِذَلِكَ مِنْهُ، تَجَاوَزُوا عَنْهُ.
‘তোমাদের পূর্ববর্তী
লোকদের মধ্যে এক লোকের হিসাব গ্রহণ করা হয়, কিন্তু তার মধ্যে কোন প্রকার সৎ
আমল পাওয়া যায়নি। কিন্তু সে মানুষের সাথে লেন-দেন করত এবং সে ছিল সচ্ছল।
তাই দরিদ্র লোকদের মাফ করে দেওয়ার জন্য সে তার কর্মচারীদের নির্দেশ দিত।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ (ফেরেশতাদেরকে) বললেন, ‘এ ব্যাপারে (অর্থাৎ
তাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে) আমি তার চেয়ে অধিক যোগ্য। একে ক্ষমা করে দাও’।[26]
অপর এক বর্ণনায় তিনি বলেন,مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُنْجِيَهُ اللهُ مِنْ كُرَبِ
يَوْمِ الْقِيَامَةِ، فَلْيُنَفِّسْ عَنْ مُعْسِرٍ، أَوْ يَضَعْ عَنْهُ
‘যে ব্যক্তি এটা চায় যে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত দিবসের দুঃখ-কষ্ট থেকে
মুক্তি দিক, সে যেন অক্ষম ঋণগ্রস্ত লোকের সহজ ব্যবস্থা করে কিংবা ঋণ মওকূফ
করে দেয়’।[27]
(চলবে)
[1]. হাশিয়া ইবনিল আবিদীন ৪/১৭১; গৃহীত: আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ ৩৩/১১১।
[2]. মুসনাদে আহমাদ হা/১০৫৭৮, ৭৯৮৮, সনদ হাসান।
[3]. বুখারী হা/২৩০৬,২৩৯৪; মিশকাত হা/২৯০৬, ২৯২৬।
[4]. বুখারী হা/৬৩৬৯।
[5]. তিরমিযী হা/৩৫৬৩; মিশকাত হা/২৪৪৯; সনদ হাসান।
[6]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১০৭১৫; ইরওয়া হা/১৩৯৭, সনদ ছহীহ।
[7]. তিরমিযী হা/১৫৭২; ইবনু মাজাহ হা/২৪১২; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৮৯২; মিশকাত হা/২৯২১, সনদ ছহীহ।
[8]. আহমাদ হা/১৭২২৭; মিশকাত হা/২৯২৮, সনদ ছহীহ।
[9]. আহমাদ হা/২২৪৯৩; মুস্তাদরাক হাকেম হা/২২১২; ছহীহুত তারগীব হা/১৮০৪; মিশকাত হা/২৯২৯, সনদ ছহীহ।
[10]. বুখারী হা/২৩৮৯; মুসলিম হা/৯৯১।
[11]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৪০৭; ছহীহুত তারগীব হা/৯০০, সনদ হাসান।
[12]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৩২৮৫; তাবারাণী, আওসাত্ব হা/৩৪৯৮, হাদীছ হাসান।
[13]. ইবনু মাজাহ হা/২৪৩০; ইরওয়াউল গালীল হা/২৪৩০।
[14]. তিরমিযী হা/১৯৫৭; আহমাদ হা/১৮৫১৬; মিশকাত হা/১৯১৭, সনদ ছহীহ।
[15]. বুখারী হা/১৪৪২; মুসলিম হা/১০১০।
[16]. মুসলিম হা/২৬৯৯; মিশকাত হা/২০৪।
[17]. ইবনু ক্বুদামাহ, আল-মুগনী ৪/২৪০।
[18]. বুখারী হা/৩৮১৪; মিশকাত হা/২৮৩৩।
[19]. ই’লামুল মুওয়াক্কে’ঈন ৩/১৩৭।
[20]. নায়লুল আওত্বার ৫/২৫৭।
[21]. আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ ৩৩/১৩১-১৩২।
[22]. ইবনু মাজাহ হা/২৪২১; ইবনু হিববান হা/৫০৮০; সনদ ছহীহ।
[23]. ইবনু মাজাহ হা/২৪১৮, সনদ ছহীহ।
[24]. ইবনু মাজাহ হা/২২০৩, সনদ ছহীহ।
[25]. তিরমিযী হা/১৩০৬; সুনানে দারেমী হা/২৬৩০; আহমাদ হা/৪৭১১ সনদ ছহীহ।
[26]. মুসলিম হা/১৫৬১; তিরমিযী হা/১৩০৭।
[27]. মুসলিম হা/১৫৬৩; মিশকাত হা/২৯০২