পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । শেষ পর্ব ।

সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার, যিনি সৃষ্টিকুলের পালনকর্তা। ছালাত ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর, যিনি নবী ও রাসূলকুলের শ্রেষ্ঠ। সেই সঙ্গে ছালাত ও সালাম তাঁর পরিবারবর্গ ও ছাহাবীগণের সকলের উপর।

মনের হিসাব গ্রহণ মুমিনদের জীবন চলার পথ; আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসীদের চিহ্ন বা প্রতীক এবং আল্লাহর প্রতি বিনীতজনদের পরিচয়। ফলে যে মুমিন তার রবকে সমীহ করে চলে, নিজের কথা ও কাজের মুহাসাবা করে এবং তার গোনাহের জন্য নিজ রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে সে জানে মনের বিপদ ভয়ানক, তার রোগ-ব্যাধি মারাত্মক, তার চক্রান্ত ভয়াবহ এবং তার অনিষ্টতা ব্যাপক বিস্তৃত।

মন প্রতিনিয়ত মন্দের আদেশ দেয়, কুপ্রবৃত্তির দিকে ধাবিত করে, অজ্ঞতার দিকে ডাকে, ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে চলে এবং অসার ক্রীড়া-কৌতুকে মত্ত করে। তবে আল্লাহ যার উপর দয়া করেন সে তার খপ্পর থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে। সুতরাং মনকে তার প্রবৃত্তির হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। তাহ’লে সে তাকে আল্লাহর অবাধ্যতার পথে ঠেলে দিবে। যে প্রবৃত্তির দাসত্ব করে প্রবৃত্তি তাকে কুপথে নিয়ে যায়, কুরুচিপূর্ণ কাজের দিকে তাকে আহবান জানায় এবং নানা নিন্দনীয় কাজে তাকে লিপ্ত করে।

এজন্য মানুষের উচিত, আল্লাহর দরবারে ওযন হওয়ার আগে নিজেই নিজের ওযন করা, তার নিকট হিসাব দেওয়ার আগে নিজেই নিজের হিসাব নেওয়া এবং আল্লাহর সামনে নিজেকে তুলে ধরার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা। মানুষের নিজের হিসাব নিজে গ্রহণ সম্পর্কে যত কথা বলা হয়েছে আমরা এই পুস্তিকায় তার সামান্য কিছু তুলে ধরতে চেষ্টা করব ইনশাআল­াহ।

পুস্তিকাটি অন্তরের আমল সম্পর্কে আমার রচিত বারটি ছোট পুস্তিকার শেষ রচনা। মহান আল্লাহ একটি আলোচনা মাহফিলে আমাকে এগুলো আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আলোচনাগুলো তৈরিতে যাদ গ্রুপের একদল চৌকস জ্ঞানীজন আমাকে সহায়তা করেছিলেন। আল্লাহর রহমতে আজ তা ছাপার অক্ষরে বের হ’তে যাচ্ছে। ফালিল্লাহিল হাম্দ।

পরিশেষে আমরা আল্লাহর নিকট সদাচার, তাক্বওয়া এবং যা তিনি ভালোবাসেন ও যাতে রাযি-খুশী হন তার যোগ্যতা লাভের আবেদন জানাই- আমীন।

মুহাসাবার পরিচয় :

বাংলা ভাষায় হিসাব-নিকাশ দু’টি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। আরবীতে দুটি শব্দই মাছদার। বাংলায় মাছদারকে ক্রিয়ামূল বা ধাতু বলে। এই হিসাব শব্দেরই আরেকটি প্রতিরূপ মুহাসাবা। শব্দটি বাব (مفاعلة)-এর মাছদার। এটি ‘মাযীদ ফীহ’ বা অতিরিক্ত হরফ যোগে গঠিত ক্রিয়ার মাছদার। অভিধান অনুসারে ‘মুহাসাবা’ ও ‘হিসাব’ শব্দের অর্থ পূর্ণরূপে গণনা করা।[1] শব্দটির আরেকটি অর্থ, হিসাব যাচাই করা।[2]

মুজাররাদ বা মূল শব্দে গঠিত ‘হাসিবা-ইয়াহসাবু’ ক্রিয়া হ’লে তখন অর্থ হবে- গণনা করল, গুণল। ‘হুসবান’ ও ‘হিসাবাহ’ অর্থ গণনা করা।[3]

পরিভাষায় মুহাসাবা : মুহাসাবার আভিধানিক অর্থের সাথে পারিভাষিক শব্দের যোগ রয়েছে। সাধারণত নিজের গোনাহ-অপরাধ এবং দোষ-ত্রুটি হিসাব করাকে মুহাসাবা বলে।

মাওয়ার্দী বলেছেন, أن يتصفح الإنسان في ليله ما صدر من أفعال نهاره، فإن كان محمودًا أمضاه وأتبعه بما شاكله وضاهاه، وإن كان مذمومًا استدركه إن أمكن، وانتهى عن مثله في المستقبل،  ‘ব্যক্তি রাতের কোন সময়ে তার দিনের কাজগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখবে। যদি সেগুলি ভাল ও প্রশংসনীয় হয় তাহ’লে তা যথারীতি বহাল রাখবে এবং ভবিষ্যতে অনুরূপ কাজ সামনে এলে তা করে যাবে। আর যদি তার কাজগুলো নিন্দনীয় হয় তাহ’লে যথাসম্ভব তার প্রতিকার করবে এবং ভবিষ্যতে ঐ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকবে’।[4]

জনৈক বিদ্বান মুহাসাবার সংজ্ঞায় বলেছেন,قيام العقل على حراسة النفوس من الخيانة فيتفقد زيادتها ونقصانها، ويسأل عن كل فعل يفعله لمَ فعلته، ولمن فعلته؟ فإن كان لله مضى فيه، وإن كان لغير الله امتنع عنه، وأن يلوم نفسه على التقصير والخطأ، وإذا أمكن المعاقبة أو صرفها إلى الحسنات الماحية، ‘মুহাসাবা হ’ল, মানুষের মন যাতে দায়িত্বরূপী আমানতের খিয়ানত না করে সেজন্য বিবেককে মনের পাহারাদার নিযুক্ত করা। মন কোথায় বাড়াবাড়ি করছে এবং কোথায় ত্রুটি করছে বিবেক তা খতিয়ে দেখবে। সে তার প্রতিটি কাজ কেন করেছে, কার জন্য করছে তা তাকে জিজ্ঞেস করবে। যদি কাজগুলো আন্তরিকভাবে আল্লাহ তা‘আলার জন্য হয় তাহলে তা বহাল রাখবে। আর যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্যের উদ্দেশ্যে হয় তাহলে ভবিষ্যতে তা থেকে বিরত থাকবে। বর্তমান দোষ-ত্রুটির জন্য মনকে তিরস্কার করবে এবং ঐ দোষ-ত্রুটির প্রতিবিধান সম্ভব হলে কিংবা তা মোচনকারী কোন ছওয়াবের কাজ করতে পারলে তা করবে।

সুতরাং মুহাসাবা হ’ল, নিজের কথা ও কাজের ভাল-মন্দ হিসাব ও যাচাই করে মন্দ যা মিলবে তা সংশোধন করা এবং সৎ ও ভাল যা পাবে তা করে যাওয়া।

মুহাসাবার মূলভিত্তি :

আল্লাহ সুবহানাহু ত‘াআলা তার বান্দাদেরকে নিজের হিসাব নিজে গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ بِمَا تَعْمَلُوْنَ، وَلَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ نَسُوْا اللهَ فَأَنْسَاهُمْ أَنْفُسَهُمْ أُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُوْنَ، ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর প্রত্যেক ব্যক্তির উচিৎ এ বিষয়ে ভেবে দেখা যে, সে আগামী দিনের জন্য কি অগ্রিম প্রেরণ করছে? আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবহিত। আর তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা আল্লাহকে ভুলে গেছে। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে আত্মভোলা করে দিয়েছেন। ওরা হ’ল অবাধ্য’ (হাশর ৫৯/১৮-১৯)

এই আয়াতের তাফসীরে ইবনু সা‘দী (রঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তার মুমিন বান্দাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তারা যেন ঈমানের দাবী অনুযায়ী কি গোপনে কি প্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় তাক্বওয়া অবলম্বন করে, তিনি তাদেরকে শারী‘আহ, হুদূদ ও অন্যান্য যেসব বিষয়ে আদেশ-নিষেধ করেছেন তা যেন তারা খুব খেয়াল করে মেনে চলে, কোনটা তাদের পক্ষে আর কোনটা বিপক্ষে যাবে এবং তাদের অর্জিত আমল ক্বিয়ামতের দিন তাদের জন্য কতটা লাভজনক হবে ও কতটা ক্ষতিকর হবে তা যেন তারা ভেবে দেখে। কেননা তারা যখন আখিরাতকে তাদের জীবনের লক্ষ্য ও মনের কিবলা বানাবে এবং আখিরাতের অবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিবে, তখন যেসব আমলের দরুন তারা আখিরাতে একটি ভাল অবস্থান লাভ করতে পারবে তা করতে উঠেপড়ে লাগবে, আর যে সকল বাধা-বিপত্তি তাদের আখিরাতমুখী আমলের গতি রুদ্ধ করবে কিংবা গতিপথ পাল্টে দিবে তা থেকে তাদের আমল পরিচ্ছন্ন রাখতে তারা সচেষ্ট থাকবে। তদুপরি যখন তারা মনে রাখবে যে, আল্লাহ তাদের সব কাজের খবর রাখেন, তাদের কোন কাজই তার নিকট গোপন থাকে না, কোন কাজই তার কাছ থেকে নষ্ট হয়ে যায় না এবং কোন কাজকেই তিনি নগণ্য বা তুচ্ছ ভাবেন না তখন তারা আবশ্যিকভাবে তাদের কাজের গতি বাড়িয়ে দিবে।

এই পবিত্র আয়াত বান্দার নিজের হিসাব নিজে গ্রহণের মূলভিত্তি। বান্দার কর্তব্য নিজের কাজের খোঁজ-খবর রাখা। কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখতে পেলে তার প্রতিকার হিসাবে সে ভবিষ্যতে কাজটি থেকে পুরোপুরি বিরত থাকবে, ঐ কাজে প্ররোচিত হওয়ার পেছনে যেসব কারণ রয়েছে তা এড়িয়ে চলবে এবং খালেছ দিলে তওবা করবে। যদি সে নিজের মধ্যে আল্লাহর কোন আদেশ পালনে অমনোযোগ লক্ষ্য করে তাহ’লে সেই অমনোযোগ কাটাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে এবং আদেশটি যাতে অমনোযোগ কাটিয়ে দৃঢ়তার সাথে যথার্থরূপে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য স্বীয় রবের কাছে ব্যাকুল চিত্তে দো‘আ করবে।  আল্লাহর আদেশ পালনে তার অমনোযোগ-অবহেলা সত্ত্বেও তার উপর আল্লাহ পাক কত বেশী অনুগ্রহ ও দয়া করে যাচ্ছেন তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করবে। এতে তার মধ্যে অবশ্যই নিজের আমলের ঘাটতি দেখে লজ্জা অনুভূত হবে।

বান্দা যদি নিজের আমলের এভাবে হিসাব-নিকাশ ও যাচাই-বাছাই করা থেকে গাফিল ও উদাসীন হয়ে বসে থাকে তাহ’লে তার থেকে বদনছীব ও হতভাগা আর কেউ হয় না। সে তখন ঐ লোকদের শ্রেণীভুক্ত হয়ে যাবে যারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, তাকে স্মরণ করা ও তার হক আদায়ে গাফলতি করেছে এবং নিজেদের মন ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে তৎপর হয়েছে। ফলশ্রুতিতে তারা সফলতা লাভ করতে পারেনি এবং কোন সুবিধাও অর্জন করতে পারেনি। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাদের নিজেদের যা করা উচিৎ ছিল তা ভুলিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য যা উপকার ও মঙ্গল বয়ে আনত তার সম্পর্কে তাদেরকে বে-খবর ও উদাসীন করে দিয়েছেন। ফলে তাদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আত্মঘাতী ও বাড়া-বাড়িমূলক। দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিই এখন তাদের বিধিলিপি। তারা এতটাই প্রতারিত যে তার প্রতিকারের কোন উপায় তাদের হাতে নেই এবং তাদের ভগ্নদশা নিরাময়েরও কোন ব্যবস্থা নেই। কারণ তারা তো ফাসিক বা পাপাচারী।[5]

আল্লাহ তা‘আলা তার প্রিয় কিতাবে বলেছেন,إِنَّ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا إِذَا مَسَّهُمْ طَائِفٌ مِنَ الشَّيْطَانِ تَذَكَّرُوْا فَإِذَا هُمْ مُبْصِرُوْنَ، ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহকে ভয় করে, শয়তানের কুমন্ত্রণা স্পর্শ করার সাথে সাথে তারা সচেতন হয়ে যায় এবং তাদের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়’ (আ‘রাফ ৭/২০১)

মুত্তাকীদের বিষয়ে আল্লাহ বলছেন যে, তারা যখন শয়তানের ধোক­ায় পড়ে কোন পাপ কাজ করে বসে তখন আল্লাহকে মনে করে তার দিকে ফিরে আসে এবং তাওবা করে। মুত্তাক্বীরা যত কাজ করে মনে মনে তার হিসাব ব্যতীত এ তওবা ও আল্লাহকে মনে করা আদৌ সম্ভব নয়।

মুহাসাবা সম্পর্কে হাদীছের ভাষ্য :

শাদ্দাদ বিন আওস (রাঃ) কর্তৃক নবী করীম (ছাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللهِ، ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে নিজের মনের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর নির্বোধ সেই ব্যক্তি যে নিজের মনকে তার কামনা-বাসনার অনুগামী বানিয়ে দেয় এবং  আল্লাহর  কাছে  অহেতুক  আশা

করে’।[6] ইমাম তিরমিযী বলেছেন, دان نفسه অর্থ: ক্বিয়ামত দিবসে হিসাবের মুখোমুখি হওয়ার আগে কোন ব্যক্তি দুনিয়াতে নিজ মনের হিসাব নেয়।[7]

মুহাসাবার উপর ইজমা : 

আলিমদের সর্বসম্মত মতে, নিজ মনের হিসাব নেওয়া একটি যরূরী বা আবশ্যকীয় কাজ। ইয বিন আব্দুস সালাম (রহঃ) বলেন, ‘মনের উপর অতীত ও ভবিষ্যতের আমলের যাচাই-বাছাই বা মুহাসাবা আবশ্যিক হওয়ার বিষয়ে আলেমগণ ইজমা করেছেন’।[8]

মন ও তার ব্যাধি :

মানব মনকে যদি মানুষ কুরআন ও সুন্নাহর নীতিমালা অনুযায়ী না চালায় তাহলে মনই চালকের আসনে বসে মানুষকে ধ্বংস ও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিবে। এই মনকে সোজা রাস্তায় চালাতে মনের প্রতিটি গতিবিধি ও বিপজ্জনক বাঁকের হিসাব গ্রহণ বা মুহাসাবার কোন বিকল্প নেই। জনৈক ব্যক্তি বলেছেন,النفس كالشريك الخوان، إن لم تحاسبه ذهب بمالك ‘মন একজন আত্মসাৎকারী শরীকের মতো। যদি তুমি তার হিসাব-নিকাশ না নাও তাহ’লে সে তোমার ধন-দৌলত আত্মসাৎ করবে’।[9]

মন যখন দূষিত হয়ে যায় তখন তাতে আত্মার ব্যাধি বাসা বাঁধে। এ সম্পর্কে ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘আত্মার যত রোগ হয় তার সবগুলোর উৎপত্তি মন থেকে। দূষিত উপকরণগুলো প্রথমে মনে বাসা বাঁধে, তারপর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাজত বা প্রয়োজনের জন্য প্রদত্ত খুতবায় বলতেন,وَنَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ شُرُوْرِ أَنْفُسِنَا وَمِنْ سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا، ‘আমরা আল্লাহর নিকট আমাদের মনের অপকারিতা ও আমাদের আমলের জঘন্যতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[10]

তিনি সাধারণভাবে মনের অপকার থেকে আশ্রয় তো চেয়েছেনই, সেই সঙ্গে মনের খেয়াল-খুশিতে করা কাজের ফলে যে ক্ষতি হয় এবং সেজন্য যে ঘৃণা ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তা থেকেও আশ্রয় চেয়েছেন।

আল্লাহর পথের পথিকগণ তাদের পথের ভিন্নতা ও সুলূক বা রীতি-নীতির পার্থক্য সত্ত্বেও এ কথায় একমত যে, আত্মা যাতে পরমাত্মার সান্নিধ্য লাভ করতে না পারে সেজন্য মন উভয়ের মাঝে বাধা তৈরি করে। কাজেই মনকে কাবু করতে না পারলে এবং তাকে মন্দ থেকে রুখতে না পারলে আল্লাহর সাক্ষাৎ ও তার নৈকট্য লাভ সম্ভব হবে না। মনের দিক দিয়ে মানুষ দুই প্রকার : এক প্রকার, যারা মনের হাতে বন্দী। মন তাদের গোলাম বানিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। নাকে বরশি পরিয়ে সে তাদেরকে যে দিকে চলতে বলে তারা সেদিকেই চলে।

আরেক প্রকার, যারা মনকে কাবু ও পরাভূত করে নিজেদের আয়ত্ববাধীন করে নিয়েছে। ফলে মন তাদের অনুগত, তারা মনকে যে আদেশ করে মন তা পালন করে। জনৈক আরেফ দরবেশ বলেছেন, আল্লাহর পথের সন্ধানীরা যখন তাদের মনকে নিজেদের বশীভূত করতে পারে তখনই কেবল তারা সফরের শেষ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। অনন্তর যে নিজের মনকে পরাজিত করবে সে সফল হবে, আর মন যাকে পরাজিত করবে সে বিফল ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,فَأَمَّا مَنْ طَغَى، وَآثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا، فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَى، وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى، فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى- ‘অনন্তর যে অবাধ্য হবে এবং দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর যে তার প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর ভয় করবে এবং মনকে প্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশীর অনুসরণ থেকে বিরত রাখবে তার ঠিকানা হবে জান্নাত’ (নাযিয়াত /৩৭-৪১)।[11]

বস্ত্তত মন অবাধ্যতা ও দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য প্রদানের দিকে ডাকে। অন্য দিকে রববুল আলামীন বান্দাকে তাঁর ভয় করতে এবং মনকে প্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশীর অনুসরণ থেকে বিরত রাখতে  বলেন। এ ক্ষেত্রে আত্মার অবস্থান হয় উভয় আহবানকারীর মাঝে। একবার সে মনের দিকে ঝোঁকে তো অন্যবার তার রবের দিকে ঝোঁকে। এভাবেই দুনিয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে মানুষ পরীক্ষা দিয়ে চলেছে।

কুরআনে মনের বিবরণ :

আল-কুরআনে আল্লাহ তিন প্রকার মনের কথা বলেছেন। যথা : প্রশান্ত মন (المطمئنة), ভৎর্সনাকারী মন (اللوامة) ও মন্দপ্রবণ মন (الأمارة بالسوء)।

প্রশান্ত মন :

মন যখন আল্লাহর জন্য আমলে আরাম বোধ করে, তার যিকিরে প্রশান্তি লাভ করে, তার দিকে নিবিষ্ট হয়, ক্বিয়ামত দিবসে তার সাক্ষাৎ লাভে আগ্রহী হয় এবং তার নৈকট্য প্রাপ্তির কাজে স্বস্তি পায় তখন তাকে প্রশান্ত মন বলে। আরবীতে বলে ‘নাফসে মুতমায়িন্নাহ’ (نفس مطمئنة)। এই মনের অধিকারীর জান কবয কালে আল্লাহর পক্ষ থেকে ডেকে বলা হয়,يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ، ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَرْضِيَّةً، فَادْخُلِي فِي عِبَادِي، وَادْخُلِي جَنَّتِي، ‘হে প্রশান্ত আত্মা! ফিরে চলো তোমার প্রভুর পানে, সন্তুষ্ট চিত্তে ও সন্তোষভাজন অবস্থায়। অতঃপর প্রবেশ কর আমার বান্দাদের মধ্যে এবং প্রবেশ কর আমার জান্নাতে’ (ফাজর ৮৯/২৭-৩০)

প্রশান্তির হাকীকত বা মূল তাৎপর্য :

আরবী الطمأنينة (তুমানাহ) অর্থ আরাম ও স্থিরতা। যেহেতু বান্দা আল্লাহর আনুগত্য করে, তার যিকির ও স্মরণে লিপ্ত থাকে এবং তারই আদেশ-নিষেধ মেনে চলে সেহেতু সে তার কাছেই আরাম পায়, তাকে ছেড়ে অন্য কারও কাছে সে আরাম বোধ করে না। সে শান্তি পায় আল্লাহকে ভালবেসে, তার ইবাদত করে, তার দেয়া খবরে ও তার দর্শন লাভের উপর ঈমান রেখে। শান্তি পায় আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর তাৎপর্য বুঝে সেগুলোর উপর অন্তর থেকে বিশ্বাস স্থাপন করে। সে শান্তি পায় আল্লাহকে তার প্রভু, ইসলামকে তার দ্বীন বা ধর্ম এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে রাসূল হিসাবে মেনে নিয়ে তাতে রাযী-খুশী থাকতে। তার স্বস্তি মেলে আল্লাহর ফায়ছালা ও তাক্বদীরে, তাকেই যথেষ্ট ও পর্যাপ্ত মনে করাতে। সে খুবই আশ্বস্ত থাকে যে, আল্লাহ তাকে সকল প্রকার মন্দ থেকে দূরে রাখবেন; প্রত্যেক চক্রান্তকারীর চক্রান্ত হিংসুকের হিংসা ও শত্রুর শত্রুতা থেকে রক্ষা করবেন। সে এতে পরিতৃপ্তি পায় যে, এক আল্লাহই তার প্রতিপালক, তার ইলাহ, তার মা‘বূদ, তার উপাস্য, তার মালিক, তার মুখতার। অন্য কারও তার উপর কোন ভাগ নেই। তার কাছেই তার ফিরে যাওয়ার জায়গা। এক পলকের জন্যও তাকে ছাড়া তার চলে না। এই মনই হল প্রশান্ত মন বা ‘নাফসে মুতমায়িন্নাহ’।

মন্দপ্রবণ মন :

প্রশান্ত মনের বিপরীত ও বিরোধী মন হ’ল মন্দপ্রবণ মন আরবীতে বলা হয় ‘নাফসে আম্মারা’। মন্দপ্রবণ মন মানুষকে খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করতে হুকুম করে এবং ভুল ও বাতিল পথে চলতে উৎসাহিত করে। সে সকল মন্দের আশ্রয়কেন্দ্র। সবাইকে সে বিশ্রী ও ঘৃণ্য কাজের দিকে টানে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوْءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي، ‘নিশ্চয়ই মানুষের মন মন্দপ্রবণ। কেবল ঐ ব্যক্তি ছাড়া যার প্রতি আমার প্রভু দয়া করেন’ (ইউসুফ ১২/৫৩)। আল্লাহ ‘আম্মারাহ’ বলেছেন, ‘আমেরাহ’ বলেননি। কেননা ‘আম্মারাহ’-এর মধ্যে অতিশয়তার অর্থ রয়েছে। এজন্যই এ ধরনের মন মন্দের বেশী বেশী হুকুম দেয়।

নাফস বা মন সহজাতভাবেই অত্যাচারী ও অজ্ঞ-মূর্খ (যালিম ও জাহিল)। ফলে মানুষের মন সদাই অন্যের ও নিজের উপর অত্যাচার করতে চায় এবং নিজের ভাল-মন্দ বিবেচনায় না নিয়ে মূর্খের মত কাজ করে। তবে আল্লাহ যাকে দয়া করে তার খপ্পর থেকে রক্ষা করেন তার কথা আলাদা।

আল্লাহ বলেন,وَاللهُ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ لَا تَعْلَمُونَ شَيْئًا، ‘আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে বের করে এনেছেন এমন অবস্থায় যে তোমরা কিছুই জানতে না’ (নাহল ১৬/৭৮)। إِنَّ الْإِنْسَانَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ ‘নিশ্চয় মানুষ অতিবড় যালেম ও অকৃতজ্ঞ’ (ইবরাহীম ১৪/৩৪)

হ্যঁা, জন্মকালে তার মধ্যে হক বা সত্য গ্রহণ করার যোগ্যতা তৈরি করে দেওয়া হয়। তাই তার সামনে হক বা সত্য তুলে ধরা হলে বাইরের কোন খারাপ প্রভাবে প্রভাবিত না হ’লে সে তা গ্রহণ করে।

আল্লাহ বলেন,فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا،  ‘অতএব তুমি নিজেকে একনিষ্ঠভাবে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। আল্লাহর ধর্ম, যার উপরে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন’ (রূম ৩০/৩০)। কিন্তু নাফস বা মনকে আল্লাহর দ্বীন শিক্ষা দেওয়া না হ’লে সে জাহিল-মূর্খই থেকে যায়, তার মধ্যে কুপ্রবৃত্তি গিজগিজ করে।

ফলে শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ না পেলে মন মানুষকে অবাধ্যতার দিকে ডাকে এবং মন্দ কাজে ঠেলে দেয়। সুতরাং আদল-ইনছাফ ও বিদ্যা-বুদ্ধি মানুষের মনের অর্জিত বিষয়, এগুলো সহজাত নয়।

মুমিনদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না হ’লে তাদের কেউই পূত-পবিত্র থাকতে পারত না। তিনি কোন মনের ভাল চাইলে তাকে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন এবং শরী‘আত মোতাবেক আমলের সক্ষমতা দান করেন।

মন্দপ্রবণ মনের অত্যাচারী হওয়ার কারণ :

মন হয়তো কোন জিনিস সম্পর্কে জানে না, কিংবা তাতে তার প্রয়োজন রয়েছে তাই সে তা ছলেবলে যে কোন অসদুপায়ে হাছিল করতে তার মালিককে সদাই প্ররোচিত করে। যেন তার তা না হলে চলবেই না। হ্যঁা আল্লাহর রহমতই কেবল মনকে এহেন দুর্দশা থেকে রক্ষা করতে পারে। এজন্যই বান্দা বুঝতে পারে যে, সে সদাই আল্লাহর মুখাপেক্ষী। তার মনের অনিষ্ট ও ক্ষতি থেকে কেবল আল্লাহই তাকে বাঁচাতে পারেন। অতএব আল্লাহর প্রয়োজন মানুষের নিকট সকল প্রয়োজনের ঊর্ধ্বে; এমনকি তার খাদ্য-পানীয় ও শ্বাস-প্রশ্বাসের চাইতেও বেশী।

ভৎর্সনাকারী মন :

ভাল-মন্দের মিশেলে যে মন গড়ে ওঠে তাই ভৎর্সনাকারী মন। এ ধরনের মন ভাল কাজ কেন ছেড়ে দেওয়া হ’ল, মন্দ কাজ কেনই বা করা হ’ল তা বলে তার মালিককে ভৎর্সনা বা তিরস্কার করে। আরবীতে বলা হয় ‘নাফসে লাওয়ামা’। ‘লাওম’ মূল থেকে ‘লাওয়ামা’ শব্দ গঠিত। বাংলায় প্রচলিত ‘মালামত’ শব্দের মূলও লাওম। মালামত অর্থ ভৎর্সনা বা তিরস্কার।

হাসান বছরী (রহঃ) বলেন,إن المؤمن، والله، ما تراه إلا يلوم نفسه على كل حالاته؛ يستقصرها فى كل ما يفعل فيندم ويلوم نفسه، وإن الفاجر ليمضى قدما لا يعاتب نفسه ‘আল্লাহর কসম! তুমি মুমিনকে সর্বাবস্থায় নিজের মনকে তিরস্কার করতে দেখতে পাবে। তার সব কাজেই সে কিছু না কিছু ত্রুটি খুঁজে পায়। তাই কেন এ ত্রুটি হ’ল তা ভেবে সে লজ্জিত ও অনুশোচিত হয় এবং মনকে সে জন্য তিরস্কার করে। পক্ষান্তরে পাপাচারী দুষ্কৃতিকারী অসংকোচে অন্যায়-অপকর্ম করে, তা নিয়ে মনকে সে কদাচিৎই ভৎর্সনা করে’।[12]

ভৎর্সনাকারী মন এমনকি ক্বিয়ামত দিবসেও ব্যক্তিকে তিরস্কার করবে। যদি সে নেককার হয় তাহ’লে তার সামনে বিভিন্ন মানের জান্নাত দেখে সে কেন বেশী বেশী নেকী করল না সে কথা বলে তিরস্কার করবে। আর যদি বদকার হয় তাহ’লে তার সামনে জাহান্নাম দেখে সে দুনিয়াতে কেন বদ কাজ করেছে সে কথা বলে অনুতাপ করবে। সুতরাং এ মন দুনিয়াতেও তিরস্কার করবে, আখিরাতেও তিরস্কার করবে। সুতরাং মন কখনও মন্দপ্রবণ, কখনও ভৎর্সনাকারী এবং কখনও প্রশান্ত হয়।

মন্দপ্রবণ মনের অত্যাচারী হওয়ার কারণ :

মন প্রশান্ত হওয়া মনের একটি প্রশংসনীয় গুণ, আর মন্দপ্রবণ হওয়া মনের একটি নিন্দনীয় গুণ, আর ভৎর্সনাকারী মন হলে যে জন্য ভৎর্সনা করা হচ্ছে  তার গুণ অনুসারে তা কখনও প্রশংসনীয়, আবার কখনও নিন্দনীয় হবে।

এমন ভাবার কোনই অবকাশ নেই যে, কেউ প্রশান্ত মনের অধিকারী হ’লে চিরকালই সে প্রশান্ত মনের অধিকারী থাকবে। আবার কেউ মন্দপ্রবণ মনের অধিকারী হ’লে চিরকালই তার মন মন্দপ্রবণ থাকবে। বরং একসময় তা প্রশান্ত হ’লে অন্য সময় মন্দপ্রবণ হবে, আবার কখনও ভৎর্সনাকারী হবে। বরং একই দিনে, একই ঘণ্টায় তা পরিবর্তিত বা উলটপালট হ’তে পারে। তখন গুণ বিচারে তার মধ্যে কোন মন বিরাজ করছে তা হিসাব করতে হবে।

সুতরাং হে পাঠক, আপনি নির্জনে নিরিবিলি পরিবেশে নিজের মনের হিসাব নিজে করুন। জীবনের যে সময় পার হয়ে গেছে তা নিয়ে ভাবুন। ব্যস্ততার মুহূর্তে যে আমল করা সম্ভব হয়নি অবসর সময়ে তা করুন। কাজ করার আগে চিন্তা করুন যে এ কাজে আপনার আমলনামায় নেকী-বদী কোনটা লেখা হবে? লক্ষ্য করুন, আপনার শ্রম-সাধনায় আপনার মন কি আপনার পক্ষে, না বিপক্ষে? সে নিশ্চয়ই সৌভাগ্য অর্জন করবে, যে মনের হিসাব নিবে। যে মনের সাথে যুদ্ধ করবে, মনের কাছে তার পাওনাদি আদায় করে ছাড়বে, যখনই মন কোন অন্যায় করে বসবে তখনই তাকে গালমন্দ করবে, যখনই কোন ক্ষেত্রে সে একাত্মতা প্রকাশ করবে তখনই তাকে কাছে টেনে নিবে এবং যখনই মন খেয়াল-খুশির লোভে মত্ত হবে তখনই তাকে পরাভূত করবে। আল্লাহর কসম! জীবনে সে সফল হবে।

[চলবে]


[1]. আত-তাওকীফ আলা মুহিম্মাতিত তা‘আরীফ পৃ. ৬৪০।

[2]. মিছবাহুল লুগাত পৃ. ১৫২।

[3]. আল-ক্বামূসুল মুহীত ১/৯৪। 

[4]. আদাবুদ্দুনিয়া ওয়াদ্দীন পৃ. ৪৫৩-৪৫৪, ঈষৎ পরিবর্তিত

[5]. তায়সীরুল কারীমির রহমান, পৃ ৮৫৩।  

[6]. তিরমিযী হা/২৪৫৯, তিরমিযী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন; ইবনু মাজাহ হা/৪২৬০; মিশকাত হা/৫২৮৯।

[7]. ঐ। 

[8]. তাফসীরুছ ছা‘আলাবী ৪/৩৯৯

[9]. ইগাছাতুল লাহফান ১/৭৯।

[10]. তিরমিযী হা/১১০৫; নাসাঈ হা/১৪০৪; ইবনু মাজাহ হা/১৮৯২-৯৩; মিশকাত হা/৩১৪৯।

[11]. ইগাছাতুল লাহফান, পৃঃ ৭৪-৭৫।

[12]. ইগাছাতুল লাহফান ১/৭৭।





সমাজ সংস্কারে ইমামগণের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
তওবা (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
নববী চিকিৎসা পদ্ধতি (৩য় কিস্তি) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ছালাত পরিত্যাগকারীর ভয়াবহ পরিণতি (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
লজ্জাশীলতা উত্তম চরিত্রের ভূষণ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমান (৪র্থ কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
মানুষের সাথে আচার-ব্যবহারের আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
রাস্তার আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
রিয়া : পরিচয় ও প্রকারভেদ - ড. নূরুল ইসলাম
ক্বিয়ামতের আলামত সমূহ (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন : সাম্রাজ্যবাদের নতুন মন্ত্র !
আল্লাহর উপর ভরসা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
আরও
আরও
.