পর্ব ১ । পর্ব ২ ।  পর্ব ৩ । পর্ব ৪  । পর্ব ৫  । পর্ব ৬ । শেষ পর্ব ।  

(ঙ) আহলুল হাদীছ  (أهل الحديث) :

শাব্দিক অর্থ : الحديث শব্দটি حَدَث অথবা حُدُوْث মূলধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে। এটি একবচন। বহুবচনে أحاديث। অভিধানে শব্দটির দু’টি অর্থ দেখা যায়- (১) নতুন। (২) সংবাদ।[1] এর অপর একটি অর্থ হ’ল, কথা বা বাণী।[2] যেমন আল্লাহর বাণী, وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللهِ حَدِيثًا ‘আর কথায় আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী কে?’ (নিসা ৪/৮৭)

পারিভাষিক অর্থ : ইলমে হাদীছের পরিভাষায়, রাসূল (ছাঃ)-এর কথা, কর্ম, মৌন সম্মতি, সৃষ্টিগত গুণাবলী এবং চারিত্রিক গুণাবলীকে হাদীছ বলা হয়।[3]

ইবনু তায়মিয়াহ (মৃ. ৭২৮খ্রিঃ) বলেন, ‘সাধারণভাবে রাসূল (ছাঃ) হ’তে বর্ণিত তাঁর নবুঅত পরবর্তী সকল কথা, কর্ম এবং অনুমোদনকে হাদীছ বলা হয়। এই তিনটি মাধ্যম থেকেই রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত সাব্যস্ত হয়ে থাকে। এ মর্মে তিনি যা বলেছেন তা যদি সংবাদ বিষয়ক হয়, তবে তা সত্য বলে বিশ্বাস করা ওয়াজিব। আর যদি তা ওয়াজিব, হারাম, মুবাহ ইত্যাদি হুকুম-আহকাম বিষয়ক হয়, তবে তা অনুসরণ করা ওয়াজিব’।[4]

আর ‘আহলুল হাদীছ’ বা ‘আছহাবুল হাদীছ’ শব্দবন্ধটির অর্থ হাদীছ বিশেষজ্ঞ, মুহাদ্দিছ, হাদীছের অনুসারী প্রভৃতি। নিম্নে পরিভাষাটির ব্যবহার এবং আহলে সুনণাত ওয়াল জামা‘আতের সমার্থক হিসাবে পরিভাষাটির প্রয়োগ দেখানো হ’ল।

আহলুল হাদীছ অভিধাটির ব্যবহার : ‘আহলুল হাদীছ’ অভিধাটির দু’টি ব্যবহার রয়েছে। একটি সাধারণ ব্যবহার অপরটি বিশেষ ব্যবহার।

(ক) সাধারণ ব্যবহার (الإطلاق العام) : সালাফগণ ‘আহলুল হাদীছ’ বলতে এমন একটি সম্প্রদায়কে বুঝাতেন যারা কালাম তথা যুক্তিবাদী সম্প্রদায় (أهل الكلام)-এর বিপরীত। তারা ছিলেন ইসলামের মৌলিক আক্বীদাগত বিষয়ে কালামী তথা যুক্তিবাদী সম্প্রদায়ের নবাবিষ্কৃত গ্রীক দর্শনপুষ্ট মতবাদ ও চিন্তাধারার ঘোর বিরোধী। এই যুক্তিবাদী সম্প্রদায়ের উপজাত ছিলেন রায়পন্থীগণ (أهل الرأي), যারা কুরআন ও হাদীছকে শরী‘আতের প্রধান উৎস হিসাবে গ্রহণ করলেও অনেক ক্ষেত্রে স্বীয় মত, উছূল ও যুক্তিবিরোধী হাদীছ বর্জন করতেন কিংবা ব্যাখ্যাসাপেক্ষে এড়িয়ে যেতেন। এর বিপরীত ছিলেন আহলুল হাদীছগণ, যারা সর্বক্ষেত্রে হাদীছকে অগ্রাধিকার দিতেন এবং হাদীছের বর্তমানে যুক্তি ও ব্যক্তিমতকে সর্বতোভাবে বর্জন করতেন। এজন্য আহলুল কালাম ও আহলুর রায়ের বিপরীতে তাদেরকে আহলুল হাদীছ বলা হ’ত। রায়পন্থীরা ছিলেন কূফা বা ইরাকের অধিবাসী এবং হাদীছপন্থীরা ছিলেন হিজাযের অধিবাসী।[5]

প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ইবনু খালদূন (মৃ. ৮০২হিঃ) বলেন, ‘বিদ্বানদের মধ্যে ফিকহ দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে গেল। একটি হ’ল রায় ও কিয়াসপন্থীদের ধারা, যারা ছিলেন ইরাকের অধিবাসী। অপরটি হ’ল হাদীছপন্থীদের ধারা, যারা ছিলেন হিজাযের অধিবাসী। ইরাকীদের মধ্যে হাদীছ ছিল কম...। ফলে তারা কিয়াস বেশী করতেন এবং এতে ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করেন। আর একারণেই তারা আহলুর রায় বা রায়পন্থী হিসাবে অভিহিত হয়েছেন’।[6] 

ঐতিহাসিক আব্দুল করীম শাহরাস্তানী (মৃ. ৫৪৮হিঃ) বলেন, ‘উম্মতের মুজতাহিদ ইমামগণ দুই ভাগে বিভক্ত। আছহাবুল হাদীছ এবং আছহাবুর রায়। আছহাবুল হাদীছগণ হিজাযের অধিবাসী, যারা ইমাম মালেক, শাফেঈ প্রমুখের অনুসারী।.. তাদের এই নামকরণের কারণ হ’ল, তাদের মূল লক্ষ্যবস্ত্ত হাদীছ সংগ্রহ করা ও তা বর্ণনা করা। তারা দলীলের ভিত্তিতে শরী‘আতের হুকুম-আহকাম নির্ণয় করেন। হাদীছ বা আছার পেলে তারা কখনও স্পষ্ট কিংবা অস্পষ্ট ক্বিয়াসের আশ্রয় নেন না।.. অপরদিকে আহলুর রায়গণ হ’লেন ইরাকের অধিবাসী, যারা ইমাম আবূ হানীফা প্রমুখের অনুসারী।.. তাদের এই নামকরণের কারণ হ’ল, ক্বিয়াসের সূত্র অনুসন্ধানের প্রতি তাদের অত্যাধিক মনোযোগ। তারা হুকুম-আহকামের মূল মর্মার্থ উদঘাটন করার চেষ্টা করেন এবং তার উপর ভিত্তি করে অন্যান্য ঘটনাবলীর হুকুম নির্ণয় করেন। আর এটা করতে গিয়ে তারা কখনও খবর ওয়াহিদ হাদীছের উপরও প্রকাশ্য ক্বিয়াসকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন’।[7]

এই সম্প্রদায়ের নাম আহলুল হাদীছ রাখার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে হিবাতুল্লাহ লালকাঈ (মৃ. ৪১৮হিঃ) বলেন, ‘তাদের এই নামটি কিতাব ও সুন্নাতের সামষ্টিক অর্থ থেকে গৃহীত। কেননা এটি কিতাব ও সুন্নাত উভয়কেই শামিল করে এবং তারা এ দু’টি (শারঈ উৎস) ধারণের জন্য বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত’। অতঃপর তিনি দলটিকে হাদীছে উল্লেখিত বিজয়ী দল এবং নাজী ফের্কা আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এরাই হ’ল হেদায়াতপ্রাপ্ত সম্প্রদায় এবং ন্যায়নিষ্ঠ দল, যারা দৃঢ়ভাবে সুন্নাতকে ধারণকারী। তারা রাসূল (ছাঃ) ব্যতীত অন্য কাউকে কামনা করে না। তাঁর কোন কথার রদবদল পসন্দ করে না। তাঁর কোন সুন্নাত থেকে প্রত্যাবর্তন আশা করে না। যুগ-যামানার বিবর্তন তাদেরকে সুন্নাতের অনুসরণ থেকে দূরে ঠেলে দেয় না। ঘটনার দূর্বিপাক তাদেরকে সুন্নাতের পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে না। ইসলামবিরোধী যেসব ষড়যন্ত্রকারীরা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাতে বক্রতা সৃষ্টি করে এবং কুটতর্ক, মিথ্যাচার ও মিথ্যা সংশয় সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে বিপথগামী করে, সর্বোপরি আল্লাহর নূরকে যারা নির্বাপিত করতে চায়, তাদের আবিষ্কৃত নিত্য-নতুন পথ ও পন্থাও তাদেরকে সুন্নাতের অনুসরণ থেকে বিভ্রান্ত করতে পারে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর নূরকে পরিপূর্ণ করবেনই, যদিও অবিশ্বাসীরা তা অপসন্দ করে’।[8]

ইবনু রজব হাম্বলী (মৃ. ৭৯৫হিঃ) আহলুল হাদীছ ও আহলুর রায়ের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা করে বলেন, ‘রায়পন্থী ফকীহগণ নতুন নতুন মাসআলা উদ্ভাবন ও তার সমাধানে ব্যস্ত থাকেন এবং তা নিয়ে ঝগড়া-ফাসাদে লিপ্ত থাকেন...। অন্যদিকে হাদীছপন্থী ফকীহগণ তাদের মূল লক্ষ্য থাকে কুরআনের মর্মার্থ অনুধাবন করা এবং ছহীহ সুন্নাহে তার কি ব্যাখ্যা এসেছে তা অনুসন্ধান করা। তাঁরা ছাহাবী এবং তাঁদের অনুসারী তাবেঈদের বক্তব্য থেকে জ্ঞান আহরণ করেন। তাঁরা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের মধ্যে ছহীহ ও যঈফ বাছাই করার চেষ্টা করেন। অতঃপর তার মর্মার্থ বোঝা ও প্রকৃত অর্থ জানার চেষ্টা করেন’।[9]     

শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী (মৃ. ১১৭৬হিঃ) অনুরূপভাবে আহলুর রায় এবং আহলুল হাদীছের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তারা এমন একটি দল যারা মানুষের রায় বা মতামতের প্রতি মনোনিবেশ করতে অপসন্দ করেন। তারা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ফৎওয়া দিতে বা কোন মাসআলা নির্ণয় করতে ভয় করেন। (এর পরিবর্তে) রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ বর্ণনাতেই তাদের চূড়ান্ত আগ্রহ থাকেন’।[10]

সুতরাং মনীষীগণের উপরোক্ত বক্তব্যসমূহ থেকে এটাই সুস্পষ্ট হয় যে, আহলুল কালাম এবং আহলুর রায়ের বিপরীতে আহলুল হাদীছ সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব প্রাথমিক যুগ থেকেই ছিল, যারা রায়ের বিপরীতে হাদীছকে অগ্রাধিকার দিতেন এবং সুন্নাতের বিরোধিতা তথা বিদ‘আত থেকে সর্বদা বেঁচে থাকতেন। বিশুদ্ধ হাদীছ অনুসন্ধান ও তার প্রতি আমলই ছিল তাদের মূল বৈশিষ্ট্য। আক্বীদা ও আমলে সালাফে ছালেহীনের মানহাজ অনুসরণই ছিল তাদের ব্রত। এই দলটিই সাধারণ অর্থে ‘আহলুল হাদীছ’ নামে অভিহিত হ’তেন।

স্মর্তব্য যে, আহলুল হাদীছ পরিভাষাটি আহলুল কালাম তথা যুক্তিবাদী সম্প্রদায়ের বিপরীতে ব্যবহৃত হয়, যখন তা আক্বীদা সংক্রান্ত বিষয়ে হয় এবং আহলুর রায় তথা রায়পন্থী সম্প্রদায়ের বিপরীতে ব্যবহৃত হয়, যখন তা ফিকহ সংক্রান্ত বিষয়ে হয়।[11]

আহলুল হাদীছদের এই সুন্নাতমুখী অবস্থান ও হক্বের উপর অবিচলতা নীতির কারণে সালাফ বিদ্বানগণ এই দলটির ভুঁয়সী প্রশংসা করেছেন এবং তাদেরকে নাজী ফের্কা তথা মুক্তিপ্রাপ্ত দল হিসাবে অভিহিত করেছেন। যেমন-

(১) ইমাম বুখারীর শিক্ষক আলী ইবনুল মাদীনী (মৃ. ২৩৪হি.) বলেন,هُمْ أَهْلُ الْحَدِيثِ، وَالَّذِينَ يَتَعَاهَدُوْنَ مَذَاهِبَ الرَّسُولِ، وَيَذُبُّوْنَ عَنِ الْعِلْمِ، لَوْلَاهُمْ لَمْ تَجِدْ عِنْدَ الْمُعْتَزِلَةِ وَالرَّافِضَةِ وَالْجَهْمِيَّةِ وَأَهْلِ الْإِرْجَاءِ وَالرَّأْيِ شَيْئًا مِنَ السُّنَنِ ‘তারা হ’ল আহলুল হাদীছ, যারা রাসূল (ছাঃ)-এর গৃহীত মাযহাব বা নীতিমালাকে সংরক্ষণ করেছেন, যারা জ্ঞান তথা কুরআন ও হাদীছকে (ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র কিংবা বিকৃতির হাত থেকে) রক্ষা করেছেন। যদি তারা না থাকত, তাহ’লে মু‘তাযিলা, রাফেযী (শী‘আ), জাহমিয়া, মুরজিয়া ও আহলুর রায়দের নিকট থেকে আমরা সুন্নাতের কিছুই আশা করতে পারতাম না’।[12]

(২) খলীফা হারূণুর রশীদ (মৃ. ১৯৩ হি.) বলেন, ‘আমি মুসলমানদের চারটি দলের মধ্যে চারটি বস্ত্ত পেয়েছি। (ক) আমি কুফরী সন্ধান করেছি ও তা পেয়েছি জাহমিয়া (অদৃষ্টবাদী)-দের মধ্যে। (খ) কুটতর্ক ও ঝগড়া পেয়েছি মু‘তাযিলাদের মধ্যে। (গ) মিথ্যা খুঁজেছি ও তা পেয়েছি রাফেযী (শী‘আ)-দের মধ্যে। আর (ঘ) আমি হক খুঁজেছি এবং তা পেয়েছি ‘আহলেহাদীছ’দের মধ্যে।[13]

(৩) খত্বীব আল-বাগদাদী (মৃ. ৪৬৩হি.) বলেন, ‘বিশ্ব চরাচরের প্রভু এই বিজয়ী দল (আহলুল হাদীছ)-কে দ্বীনের পাহারাদার হিসাবে নিযুক্ত করেছেন। আর শরী‘আতকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ এবং ছাহাবী ও তাবেঈদের পদাংক অনুসরণের ফলস্বরূপ আল্লাহ তাঁদেরকে হঠকারীদের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করেছেন। ...তাঁদের কর্ম হ’ল রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাহসমূহ সংরক্ষণ করা এবং রাসূল (ছাঃ)-এর শরী‘আতের বিধি-বিধান সংগ্রহের জন্য আল্লাহর যমীনে পদব্রজে বিচরণ করা এবং বাহনযোগে জলে-স্থলে পরিভ্রমণ করা। তাঁরা রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছের পরিবর্তে কোন রায় বা স্বেচ্ছাচারিতার পথে পা বাড়ান না। তাঁরা রাসূল (ছাঃ)-এর শরী‘আতকে কথায় ও কাজে গ্রহণ করেন। তাঁর সুন্নাতকে আত্মস্থকরণ ও বর্ণনার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা দান করেন, যাতে সুন্নাতের মৌলিকত্বকে অক্ষুণ্ণ রাখা যায়। তাঁরা যথার্থই সুন্নাতের হক্বদার এবং অনুসারী’। অতঃপর তিনি বলেন,وَكَمْ مِنْ مُلْحِدٍ يَرُوْمُ أَنْ يَخْلِطَ بِالشَّرِيعَةِ مَا لَيْسَ مِنْهَا. وَاللهُ تَعَالَى يَذُبُّ بِأَصْحَابِ الْحَدِيثِ عَنْهَا. فَهُمُ الْحُفَّاظُ لِأَرْكَانِهَا وَالْقَوَّامُونَ بِأَمْرِهَا وَشَأْنِهَا. ‘কত অধার্মিক লোকই না চেয়েছিল শরী‘আতের মধ্যে এমন বস্ত্ত প্রবেশ করাতে যা এর অংশ নয়। আল্লাহ আছহাবুল হাদীছদের দ্বারা সেই অপচেষ্টা নিষ্ফল করে দিয়েছেন। সুতরাং তারাই হ’ল সুন্নাতের ভিত্তি হেফাযতকারী। তারাই হ’ল সুন্নাতসমূহ বাস্তবায়নকারী ও সুন্নাতের মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকারী’।[14]

(৪) ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, ‘যারা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তাদের একথা অজানা নেই যে, সকল মানুষের মধ্যে আহলুল হাদীছগণ হ’লেন রাসূল (ছাঃ)-এর বাণীসমূহ ও তাঁর (প্রচারিত) জ্ঞানসমূহের সর্বাধিক অনুসন্ধানী। তাঁরা তাঁর সুন্নাতের সর্বাধিক অনুসরণকারী। তাঁরা প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে সর্বাধিক দূরে অবস্থানকারী’। অতঃপর তিনি বলেন, فَهُمْ فِي أَهْلِ الْإِسْلَامِ كَأَهْلِ الْإِسْلَامِ فِي أَهْلِ الْمِلَلِ  ‘মুসলমানদের মধ্যে তাদের অবস্থান অনুরূপ (মর্যাদাপূর্ণ), যেরূপ সকল জাতির মধ্যে মুসলমানদের অবস্থান’।[15]      

(খ) বিশেষ ব্যবহার (الإطلاق الخاص): আহলুল হাদীছ শব্দটি বিশেষ অর্থে সেই সকল বিদ্বানদের জন্য নির্ধারিত, যারা হাদীছ শাস্ত্রের পঠন-পাঠন, সংকলন, অনুধাবন তথা হাদীছ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিযুক্ত থাকেন। তারা মুহাদ্দিছ হিসাবে পরিচিত। সুতরাং আহলুল হাদীছ শব্দটি যখন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচিতি হিসাবে ব্যবহৃত হবে তখন তার অর্থ হবে মুহাদ্দিছ। যেমনভাবে অন্যান্য শাস্ত্রবিদদের বলা হয় ফকীহ, মুফাস্সির, ক্বারী, দার্শনিক, ভাষাবিদ, কবি, বিজ্ঞানী প্রভৃতি। যেমন-

হুশাইম বিন বাশীর (মৃ. ১৮৩ হি.) বলেন,مَن لَمْ يَحْفَظِ الْحَدِيثَ فَلَيْسَ هُوَ مِنْ أَصْحَابِ الْحَدِيثِ ‘যে ব্যক্তি হাদীছ মুখস্থ করে না, সে আছহাবুল হাদীছ হ’তে পারে না’।[16] অর্থাৎ মুহাদ্দিছ হ’তে গেলে হাদীছ মুখস্থ করা আবশ্যক।

ওয়াকী ইবনুল জার্রাহ (মৃ. ১৯৭হি.) বলেন, لاَ يَكْمُلُ الرَّجُلُ حَتَّى يَكْتُبَ عَمَّنْ هُوَ فَوْقَهُ، وَعَمَّنْ هُوَ مِثْلَهُ، وَعَمَّنْ هُوَ دُوْنَهُ ‘কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ (আহলুল হাদীছ) হ’তে পারে না, যতক্ষণ না সে তার চেয়ে বড়, তার সমকক্ষ বা তার চেয়ে ছোট ব্যক্তির কাছ থেকে (হাদীছ) লিপিবদ্ধ করবে’।[17]

এই মুহাদ্দিছদের মধ্যে কেউ গ্রহণযোগ্য, কেউ গ্রহণযোগ্য ছিলেন। এমনকি কেউ বিদ‘আতী ও মিথ্যুকও ছিলেন। যেমন ইবনু আদী (মি. ৩৬৫হি.) বর্ণনা করেন, কিনানাহ বিন জাবালাহ নামক খোরাসানের জনৈক মুহাদ্দিছ সম্পর্কে ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন (মৃ. ২৩৩হি.)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি তার সম্পর্কে বলেন, ‘নিকৃষ্ট মিথ্যুক’।[18]

ইমাম আহমাদ (মৃ. ২৪১হিঃ) সাহল আল-আসওয়াদ নামক একজন রাবী সম্পর্কে বলেন, كَانَ من أصحاب الحديث، أَروَى الناس عَنْ شُعبة، ترك الناس حديثُه ‘তিনি আছহাবুল হাদীছ ছিলেন। তিনি শু‘বা থেকে সর্বাধিক হাদীছ বর্ণনাকারী রাবী। তবে মানুষ তাঁর হাদীছ পরিত্যাগ করেছে (বাতিল হাদীছ বর্ণনার কারণে)’।[19]

ইবনু তায়মিয়া (মৃ. ৭২৮হিঃ) বলেন, وَهَذَا الْوَجْه تختاره طَائِفَة من متكلمي أهل الحَدِيث المائلين إِلَى الإرجاء كالأشعري وَغَيره অর্থাৎ ‘এই মতটি গ্রহণ করেছে মুতাকাল্লিম আহলুল হাদীছদের মধ্যকার একটি শ্রেণী, যাদের আক্বীদা মুরজিয়াদের নিকটবর্তী, যেমন আল-আশ‘আরী এবং অন্যান্যরা’।[20] অর্থাৎ একজন মুহাদ্দিছ মুতাকাল্লিম (যুক্তিবাদী)-ও হ’তে পারে এবং আক্বীদাগতভাবে মুরজিয়াও হ’তে পারে।

সুতরাং প্রাতিষ্ঠানিক আহলুল হাদীছগণ হ’লেন হাদীছ বিশেষজ্ঞ তথা মুহাদ্দিছ। তারা হাদীছের পঠন-পাঠন এবং হাদীছ গবেষণাতে দিনাতিপাত করেন। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে এমন রয়েছেন যাদের হাদীছ গ্রহণযোগ্য নয়; বরং তারা মিথ্যুক হিসাবে সাব্যস্ত হয়েছেন। আবার অনেকে শী‘আ ও বিদ‘আতী পর্যন্ত ছিলেন। তদুপরি তারা মুহাদ্দিছ সম্প্রদায় থেকে বহির্ভূত নন। কেননা এটা তাদের পেশাগত পরিচিতি।  

সারকথা :

উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এটি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আহলুল হাদীছ শব্দটির দু’টি প্রয়োগ রয়েছে এবং পরিভাষাটি সাধারণ ও বিশেষ উভয় অর্থেই বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সেই সাথে এই দু’টি প্রয়োগ তথা প্রাতিষ্ঠানিক আহলুল হাদীছ বা মুহাদ্দিছ এবং আক্বীদা ও মানহাজগত আহলুল হাদীছের মধ্যে মোটাদাগে পার্থক্য রয়েছে। আর এই পার্থক্য হ’ল-

প্রথমতঃ মুহাদ্দিছ কখনও জাল হাদীছ বর্ণনাকারী হ’তে পারে; বিদ‘আতী হ’তে পারে; হ’তে পারে শী‘আ কিংবা মুরজিয়া। কিন্তু কোন ভ্রান্ত আক্বীদা ও মানহাজে বিশ্বাসী ব্যক্তির পক্ষে আক্বীদাগতভাবে আহলুল হাদীছ হওয়ার সুযোগ নেই।

যেমন খত্বীব বাগদাদী (মৃ. ৪৬৩হিঃ) বর্ণনা করেন, সমরকন্দের জনৈক বিদ্বান আবূবকর আন-নাসাফী বলেন, كان مشايخنا يسمون أبا بكر بن إسماعيل أبا ثمود، لأنه كان من أصحاب الحديث، فصار من أصحاب الرأي. يقول الله تعالى: «وأما ثمود فهديناهم فاستحبوا العمى على الهدى» ‘আমাদের মাশায়েখগণ আবূবকর বিন ইসমাঈলকে আবূ ছামূদ বলেন। কেননা তিনি আছহাবুল হাদীছ ছিলেন। অতঃপর আছহাবুর রায় হয়ে যান। (আর একারণেই তাকে ছামূদ বলা হয় যে) আল্লাহ বলেন, আমি ছামূদ জাতিকে হেদায়াত করেছিলাম। অতঃপর তারা হেদায়াতের পরিবর্তে অন্ধত্বকেই বেছে নিল (হামীম সাজদাহ ১৭)[21]

দ্বিতীয়তঃ প্রাতিষ্ঠানিক আহলুল হাদীছ হ’তে পারেন কেবল মুহাদ্দিছগণ। কিন্তু আক্বীদা ও মানহাজগত আহলুল হাদীছ হ’তে পারেন মুহাদ্দিছ, ফকীহ, মুজাহিদ, দাঈ নির্বিশেষে সর্বশ্রেণীর মানুষ।

যেমন ইমাম নববী (মৃ. ৬৭৬হি.) বলেন, وَيَحْتَمِلُ أَنَّ هَذِهِ الطَّائِفَةَ مُفَرَّقَةٌ بَيْنَ أَنْوَاعِ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُمْ شُجْعَانٌ مُقَاتِلُونَ وَمِنْهُمْ فُقَهَاءُ وَمِنْهُمْ مُحَدِّثُونَ وَمِنْهُمْ زُهَّادٌ وَآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفَ وَنَاهُونَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَمِنْهُمْ أَهْلُ أَنْوَاعٍ أُخْرَى مِنَ الْخَيْرِ وَلَا يَلْزَمُ أَنْ يَكُونُوا مُجْتَمَعِينَ بَلْ قَدْ يَكُونُونَ مُتَفَرِّقِينَ فِي أَقْطَارِ الْأَرْضِ ‘হ’তে পারে এই ফের্কা বিভিন্ন পর্যায়ের মুমিনদের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। যেমন মুজাহিদ, ফক্বীহ, মুহাদ্দিছ, যাহেদ বা দুনিয়াবিমুখ, ন্যায়ের আদেশদাতা ও অন্যায়ের নিষেধকারী ইত্যাদি বিভিন্ন পর্যায়ের মুমিন। এদের সবাইকে একস্থানে মওজূদ থাকা আবশ্যিক নয়। বরং তাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকতে পারেন’।[22]

ইবনু তায়মিয়া (মৃ. ৭২৮হিঃ) এ বিষয়টি আরও সুস্পষ্ট করে বলেন,وَنَحْنُ لَا نَعْنِي بِأَهْلِ الْحَدِيثِ الْمُقْتَصِرِينَ عَلَى سَمَاعِهِ أَوْ كِتَابَتِهِ أَوْ رِوَايَتِهِ بَلْ نَعْنِي بِهِمْ: كُلَّ مَنْ كَانَ أَحَقَّ بِحِفْظِهِ وَمَعْرِفَتِهِ وَفَهْمِهِ ظَاهِرًا وَبَاطِنًا وَاتِّبَاعِهِ بَاطِنًا وَظَاهِرًا وَكَذَلِكَ أَهْلُ الْقُرْآنِ. وَأَدْنَى خَصْلَةٍ فِي هَؤُلَاءِ: مَحَبَّةُ الْقُرْآنِ وَالْحَدِيثِ وَالْبَحْثِ عَنْهُمَا وَعَنْ مَعَانِيهِمَا وَالْعَمَلِ بِمَا عَلِمُوهُ مِنْ مُوجِبِهِمَا. فَفُقَهَاءُ الْحَدِيثِ أَخْبَرُ بِالرَّسُولِ مِنْ فُقَهَاءِ غَيْرِهِمْ وَصُوفِيَّتُهُمْ أَتَبَعُ لِلرَّسُولِ مِنْ صُوفِيَّةِ غَيْرِهِمْ وَأُمَرَاؤُهُمْ أَحَقُّ بِالسِّيَاسَةِ النَّبَوِيَّةِ مِنْ غَيْرِهِمْ وَعَامَّتُهُمْ أَحَقُّ بِمُوَالَاةِ الرَّسُولِ مِنْ غَيْرِهِمْ ‘আমরা আহলুল হাদীছ বলতে কেবল তাদেরকে বুঝি না যারা কেবল হাদীছ শ্রবণ, লিখন অথবা বর্ণনায় সীমাবদ্ধ। বরং প্রত্যেক যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে ও গোপনে হাদীছ সংরক্ষণ, হাদীছের জ্ঞানার্জন কিংবা হাদীছ অনুধাবনকর্মে নিরত রয়েছেন এবং প্রকাশ্যে ও গোপনে হাদীছের অনুসরণ করেন (তারা আহলুল হাদীছ)। এমনিভাবে যারা কুরআন বিশেষজ্ঞ তারাও। এদের সর্বনিম্ন বৈশিষ্ট্য হ’ল যে, তারা কুরআন ও হাদীছের প্রতি ভালবাসা রাখেন, এতদুভয়ের জ্ঞানান্বেষণে এবং মর্মার্থ অনুধাবনে চেষ্টিত থাকেন। তারা যে আমল করেন তা কুরআন ও হাদীছের ভিত্তিতেই করেন। ফলে আহলুল হাদীছ ফকীহগণ অন্যান্য ফকীহদের চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ সম্পর্কে অধিক অবগত। তাদের মধ্যকার ছূফী তথা দুনিয়াবিমুখগণ অন্যান্য ছূফীদের চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর অধিক অনুসরণ করেন। তাদের শাসকগণ অন্যান্যদের চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর রাজনীতি সম্পর্কে অধিক অবগত। তাদের সাধারণ লোকেরা অন্যদের চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর অধিকতর অনুসরণকারী’।[23]

এই পার্থক্য উপলব্ধি না করার কারণে বিশেষতঃ ভারত উপমহাদেশে একদল আলেমকে অজ্ঞতাপূর্ণভাবে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় যে, আহলুল হাদীছ অর্থ মুহাদ্দিছ। সুতরাং কোন সাধারণ মানুষ আহলুল হাদীছ হ’তে পারে না। অথচ এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং বিদ্বেষপ্রসূত। তারা নিছক অজ্ঞতার কারণে কিংবা জ্ঞাতসারেই সালাফে ছালেহীন কর্তৃক ‘আহলুল হাদীছ’ শব্দটির সাধারণ প্রয়োগ (الإطلاق العام)-টি গোপন রেখে কেবল শব্দটির বিশেষ সীমাবদ্ধ প্রয়োগ (الإطلاق الخاص)-এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং আহলুল হাদীছ সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভ্রান্ত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।[24] আল্লাহ তাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন- আমীন!  

(চলবে]


[1]. রাগেব আল-আস্ফাহানী, আল-মুফরাদাত ফি গারীবিল কুরআন, পৃ. ১০৮; মাজদুদ্দীন আল ফিরোযাবাদী, আল-কামূসুল মুহীত, পৃ. ২১৪।

[2]. ড. মারওয়ান মুহাম্মাদ শাহীন, তায়সীরুল লাত্বীফীল খাবীর ফি উলূমি হাদীছিল বাশীর আন নাযীর, পৃ. ১১।

[3]. মান্না আল কাত্ত্বান, মাবাহিছ ফি ঊলূমিল হাদীছ, পৃ. ৭; ড. মাহমূদ আত-ত্বহ্হান, তায়সীরু মুছত্বালাহিল হাদীছ, পৃ. ১৬ ।

[4]. ইবনু তায়মিয়া, মাজমু‘উল ফাতাওয়া, ১৮/৭ পৃ.।

[5]. ওছমান যুমায়রিয়া, মাদখাল লি দিরাসাতিল আক্বীদাহ আল-ইসলামিয়াহ, পৃ. ১৫৫; দ্র. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশসহ, পৃ. ৫২-৬২।

[6]. ইবনু খালদূন, তারীখু ইবনে খালদূন, ১/৫৬৪ পৃ.।

[7]. আব্দুল করীম শাহরাস্তানী, আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, ২/১১-১২ পৃ.।

[8]. হেবাতুল্লাহ লালকাঈ, শারহু উছূলিল ই‘তিকাদ, ১/২৪-২৬ পৃ.।

[9]وَأَمَّا فُقَهَاءُ أَهْلِ الْحَدِيثِ الْعَامِلُونَ بِهِ، فَإِنَّ مُعْظَمَ هَمِّهِمُ الْبَحْثُ عَنْ مَعَانِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَمَا يُفَسِّرُهُ مِنَ السُّنَنِ الصَّحِيحَةِ، وَكَلَامِ الصَّحَابَةِ وَالتَّابِعِينَ لَهُمْ بِإِحْسَانٍ، وَعَنْ سُنَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعْرِفَةِ صَحِيحِهَا وَسَقِيمِهَا، ثُمَّ التَّفَقُّهِ فِيهَا وَتَفَهُّمِهَا، وَالْوُقُوفِ عَلَى مَعَانِيهَا দ্র. ইবনু রজব, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম, ১/২৪৯ পৃ.। ইবনু রজব, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম, ১/২৪৯ পৃ.।

[10]. শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, ১/২৫৪ পৃ.।

[11]. ড. মুহাম্মাদ ইউসরী, ইলমুত তাওহীদ ইনদা আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ, পৃ. ৪৪।

[12]. খত্বীব আল-বাগদাদী, শারফু আছহাবিল হাদীছ, পৃ. ১০।

[13]. ঐ, পৃ. ৫৫।

[14]. ঐ, পৃ. ১০।

[15]. ইবনু তায়মিয়া, মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪/২৮৮ পৃ.।

[16]. ইবনু আদী, আল-কামিল ফী যুআফাইর রিজাল, ১/১৮১ পৃ.।

[17]. জামালুদ্দীন আল-মিয্যী, তাহযীবুল কামাল, ১/১৬৬ পৃ.।

[18]حدثنا عثمان سألت يحيى بن معين عن كنانة بن جبلة الذي كان يكون بخراسان من أهل الحديث قال ذلك كذاب خبيث দ্র. ইবনু আদী, আল-কামিল ফী যুআফাইর রিজাল, ৭/২১৫ পৃ.।

[19]. মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী, আত-তারীখুল কাবীর, ৪/১০৩ পৃ.।

[20]. ইবনু তায়মিয়া, আল-ইস্তিকামাহ, ১/১৫০ পৃ.।

[21]. শারফু আছহাবিল হাদীছ, পৃ. ৭৫।

[22]. নববী, শারহু মুসলিম, ১৩/৬৭ পৃ.।

[23]. মাজমুউল ফাতাওয়া, ৪/৯৫ পৃ.।

[24]. সম্প্রতি ঢাকা মাকতাবাতুল আসলাফ প্রকাশিত এবং আব্দুল্লাহ আল মাসউদ সংকলিত সালাফদের দৃষ্টিতে আহলে হাদীস নামক একটি পুস্তক আমাদের হস্তাগত হয়েছে। সেখানেও একই অপপ্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে।- লেখক। 





কুরআন মাজীদের অনুবাদ ও তাফসীরে ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা - ড. নূরুল ইসলাম
দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ ভেঙ্গে দিচ্ছে ভারত - আহমদ সালাহউদ্দীন
যাকাত ও ছাদাক্বা - আত-তাহরীক ডেস্ক
দ্বীনে হক্ব প্রচারে ‘আত-তাহরীক’-এর ভূমিকা - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (৫ম কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
লাইলাতুল মি‘রাজ : করণীয় ও বর্জনীয় - শেখ আব্দুছ ছামাদ
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন - মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান
পলাশীর ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণাম - আত-তাহরীক ডেস্ক
তাহরীকে জিহাদ : আহলেহাদীছ ও আহনাফ (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় - ডা. মুহাম্মাদ এনামুল হক
মানব জাতির প্রকাশ্য শত্রু শয়তান (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
জ্যোতির্বিজ্ঞানের নিরিখে যেলাসমূহের মাঝে সময়ের পার্থক্যের কারণ - তাহসীন আল-মাহী
আরও
আরও
.