ভূমিকা : ‘তাবলীগ’ অর্থ প্রচার বা পৌঁছে দেওয়া। আর ‘ইজতেমা’ অর্থ জমায়েত বা সমাবেশ। ‘তাবলীগী ইজতেমা’ অর্থ দাওয়াতী সমাবেশ। দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের লক্ষে যে সমাবেশের আয়োজন করা হয় তাকেই তাবলীগী ইজতেমা বলে। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে বিগত ২৮ বছর যাবত তাবলীগী ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। চলতি বছরের ইজতেমা হচ্ছে ২৯তম। রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় স্বল্প পরিসরে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু হ’লেও প্রতিনিয়ত তা ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হচ্ছে। ইজতেমার গুরুত্ব অনুধাবন করে ফী বছর মানুষের ঢল নামছে। দাওয়াতী অঙ্গনে এর প্রভাবও বৃদ্ধি পেয়েছে। কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের পরতে পরতে সংস্কারের ঢেউ লেগেছে। মানুষের আক্বীদায় ও আমলে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাবলীগী ইজতেমার গুরুত্ব তাই অপরিসীম। আলোচ্য নিবন্ধে সমাজ সংস্কারে তাবলীগী ইজতেমার ভূমিকা তুল ধরা হ’ল।-

দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব : দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ বলেন, وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ- وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ- ‘ঐ ব্যক্তির চাইতে কথায় উত্তম আর কে আছে, যে (মানুষকে) আল্লাহর দিকে ডাকে ও নিজে সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ভাল ও মন্দ কখনো সমান হ’তে পারে না। তুমি উত্তম দ্বারা (অনুত্তমকে) প্রতিহত কর। ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে যেন (তোমার) অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে যায়’ (ফুছ্ছিলাত ৪১/৩৩-৩৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَغَدْوَةٌ فِى سَبِيلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا  ‘আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল অথবা সন্ধ্যা ব্যয় করা দুনিয়া ও এর মধ্যস্থিত সবকিছু থেকে উত্তম’।[1] তাছাড়া দাওয়াত দানকারী দাওয়াত কবুলকারীর সমপরিমাণ নেকীর হকদার হবেন।[2]

দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যম : তাবলীগ বা প্রচার হবে একমাত্র এলাহী বিধানের। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন,يَاأَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ  ‘হে রাসূল! তোমার প্রতি তোমার প্রভুর পক্ষ হ’তে যা নাযিল হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন), তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি না দাও, তাহ’লে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছে দিলে না। আল্লাহ তোমাকে শত্রুদের হামলা থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (মায়েদা ৫/৬৭)

দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে রাসূল (ছাঃ)-এর আপোষহীন বক্তব্য উদ্ধৃত হয়েছে সূরা ইউসুফের নিম্নোক্ত আয়াতে।  আল্লাহ বলেন,قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ ‘তুমি বল এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র। আর আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)। সুতরাং দাওয়াত হ’তে হবে খালেছ অন্তরে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে। আর হবে সম্পূর্ণরূপে শিরক ও বিদ‘আত মুক্ত। তাবলীগ করতে হবে জেনে-বুঝে, মূর্খতার সাথে নয়। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ এই দু’টিই হবে দাওয়াতের উৎস। এর বাইরে কোন ভ্রান্ত কিচ্ছা-কাহিনী, পীর-মুরীদির উদ্ভট গল্প ও তথাকথিত ছূফীবাদের আক্বীদা বিধ্বংসী কোন প্রকার ভ্রান্ত তন্ত্র-মন্ত্রের দাওয়াত দেওয়া যাবে না। কেননা এ দু’টি উৎসই কেবল পথভ্রষ্টতা থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করতে পারে। বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী (ছাঃ) বলেন,تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا َمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ-  ‘তোমাদের মধ্যে আমি দু’টি জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি, যতক্ষণ এ দু’টিকে অাঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব কুরআন ও অপরটি তাঁর নবীর সুন্নাত তথা হাদীছ’।[3]

প্রচলিত ইজতেমা ও সভা-সমাবেশের সাথে তাবলীগী ইজতেমার পার্থক্য : অসংখ্য ইসলামী দলের দেশ বাংলাদেশ। প্রত্যেক দলেরই বিভিন্ন নামে বার্ষিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। ওয়ায মাহফিল, ইসলামী জালসা, ইসলামী সম্মেলন, মহা সম্মেলন, ইসলামী সভা, ইসলামী সমাবেশ, বার্ষিক কনফারেন্স, ইজতেমা, বিশ্ব ইজতেমা, বার্ষিক ওরস ও দোয়ার মাহফিল, সীরাত সম্মেলন, আশেকে রাসূল সম্মেলন ইত্যাদি। প্রত্যেক দলই তাদের দলীয় নীতি-আদর্শ প্রচারের জন্য এই আয়োজন করে থাকে। প্রচলিত এসব সভা-সমাবেশের সাথে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলনে’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তাবলীগী ইজতমা’র রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হ’ল।-

বিষয় ও আলোচক নির্বাচন : ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তাবলীগী ইজতেমার অন্তত দুই মাস আগেই বক্তব্যের বিষয় নির্ধারণ ও আলোচক নির্বাচন করা হয়। যেন নির্ধারিত বিষয়টির উপর আলোচকগণ পূর্ণ প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতে পারেন। আলোচক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলমী যোগ্যতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতা ও তাক্বওয়া বা পরহেযগারিতাকে আগ্রাধিকার দেওয়া হয়। নির্দেশনা প্রদান করা হয় পবিত্র কুরআন, ছহীহ হাদীছ ও বিশুদ্ধ ইতিহাস গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি পেশ পূর্বক বক্তব্য প্রদান করতে।

আলোচকদের প্রতি নির্দেশনা : আলোচক ও বিষয় নির্বাচনের পর তাবলীগী ইজতেমা ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক/যুগ্ম আহবায়কের স্বাক্ষরে বক্তব্যের বিষয় ও আমীরে জামা‘আত-এর পক্ষ থেকে নছীহতনামা উল্লেখপূর্বক আলোচক বরাবর লিখিত পত্র প্রেরণ করা হয়। প্রয়োজনে বিষয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপাত্তও সরবরাহ করা হয়। আমীরে জামা‘আতের বিশেষ নছীহতনামা হচ্ছে- ‘১. নিজেকে দ্বীনের একজন নিঃস্বার্থ দাঈ মনে করা এবং শ্রোতাদেরকে আখেরাতমুখী করা। ২. কাউকে কটাক্ষ না করা বা মনে আঘাত না দেওয়া এবং কোনক্রমেই কোন দলের নাম উল্লেখ করে তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন কথা না বলা। ৩. ভাষা গাম্ভীর্যপূর্ণ ও মাধুর্যমন্ডিত এবং বক্তব্য সারগর্ভ হওয়া। ৪. বক্তৃতার সারমর্ম হবে সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র বিধান পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যাওয়া। ৫. নির্ভরযোগ্য কিতাব ও সূত্র সমূহ হ’তে বিশুদ্ধ উদ্ধৃতি পেশ করা এবং কোন অবস্থায় যঈফ ও মওযূ হাদীছ না বলা বা অর্থহীন ও হাস্যকর গল্প না করা। ৬. কুরআন তেলাওয়াত ও হাদীছ পাঠ ছহীহ-শুদ্ধ হওয়া। ৭. বক্তৃতার মধ্যে কোন সঙ্গীত না বলা।’

গাম্ভীর্যপূর্ণ ও দলীলভিত্তিক আলোচনা : তাবলীগী ইজতেমার আলোচকদের ভাষা হয় গাম্ভীর্যপূর্ণ, বক্তব্য হয় দলীল ভিত্তিক। হাদীছ বলার ক্ষেত্রে তারা হাদীছের শুদ্ধাশুদ্ধির প্রতি খেয়াল রাখেন। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপরে মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়’।[4] আলোচকগণ কুরআনের আয়াত ও হাদীছ নম্বর উল্লেখ করে থাকেন। নির্ধারিত বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। যা শ্রোতাদের জন্য হয় ফলদায়ক ।

জাল-যঈফ বর্ণনা ও কিচ্ছা-কাহিনী বলে সময় নষ্ট না করা : কয়েক বছর আগের কথা। ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাচ্ছি। রামাযানের সাংগঠনিক সফর। বাসে চেপে বসতেই সুপারভাইজার বাসের এলসিডি মনিটরে একটি বক্তব্য চালু করে দিল। বেশ নামকরা বক্তা। ‘ত’ আদ্যাক্ষরের ঐ বক্তাকে নিজ যেলার সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হয়। শুনেছি একদিনের বক্তব্যের জন্য ৫০/৬০ হাযার টাকা গুনতে হয় আয়োজকদের। কণ্ঠও সুমধুর। রামাযান বিবেচনায় সুপারভাইজার হয়ত গান না দিয়ে ওয়ায লাগিয়েছে। সেকারণ বন্ধ করতে না বলে বরং শুনতে লাগলাম। বক্তব্যের বিষয় হচ্ছে ‘কবরের আযাব’। শ্রোতাদের হাসিয়ে-কাঁদিয়ে বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। কুরআন-হাদীছের কোন উল্লেখ নেই। উদ্ভট সব কিচ্ছা-কাহিনী ও পীর-মুরীদির ফায়েয বিবৃত হচ্ছে লাগামহীনভাবে। এক পর্যায়ে তিনি কবরের সওয়াল-জওয়াবের একটি ঘটনা তুলে ধরলেন। অবাক বিস্ময়ে শুনতে লাগলাম। জনৈক পীরের মুরীদদের মর্যাদা ও ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘ঐ পীরের একজন ভক্ত মুরীদ মৃত্যুবরণ করলে তাকে কবরস্থ করা হ’ল। দাফন কার্য শেষ করে সকলে ফিরে আসার পর মুনকার-নাকীর প্রশ্ন করার জন্য উপস্থিত হয়েছেন। অতঃপর প্রশ্ন করতেই কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি মুনকার-নাকীরকে দুই থাপ্পড় লাগিয়ে দিলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় মুনকার-নাকীর আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করলেন, হে আল্লাহ! তুমি তোমার কোন বান্দার নিকটে আমাদেরকে পাঠিয়েছ যে, প্রশ্ন করতেই আমাদের উপর আক্রমণ করে বসল। আল্লাহ তখন জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি কোন বেআদবী করেছিলে? তারা বলল, জি না। আল্লাহ বললেন, তোমরা কি তাকে সালাম দিয়েছিলে? তারা বলল, না। আল্লাহ বললেন, সে আমার খাছ বান্দা। তাকে সালাম না দিয়ে তোমরা চরম বেআদবী করেছ। থাপ্পড় মেরেছ তো ঠিকই করেছে। দ্রুত সালাম দিয়ে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নাও।’ প্রিয় পাঠক! আপনারাই মন্তব্য করুন। দুর্ভাগ্য, প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তব্যে কোথাও তাকে কবরের আযাব সম্পর্কিত একটি কুরআনের আয়াত বা একটি হাদীছ পাঠ করতে শুনলাম না। এই হচ্ছে এদেশের তথাকথিত খ্যাতিমান বক্তাদের বক্তব্যের হালচিত্র।

কিন্তু তাবলীগী ইজতেমা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এখানে কোন আলোচকই বানাওয়াট কিচ্ছা-কাহিনী তো দূরের কথা হাদীছ বলার ক্ষেত্রে জাল বা যঈফ হাদীছ বলারও দুঃসাহস দেখান না। তাছাড়া বিষয়ের উপরে কুরআন-হাদীছের আলোচনা করেই তো শেষ করা যায় না, অতিরিক্ত কথা বলার সময় কোথায়?

আখেরী মুনাজাত নয়; মজলিস শেষের দো‘আ : প্রচলিত বিশ্ব ইজতেমার মূল আকর্ষণ হচ্ছে ‘আখেরী মুনাজাত’। যে মুনাজাতের জন্য সেদিন রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমও শিথিল থাকে। এমনকি এ বছর (২০১৯) এসএসসি/দাখিল পরীক্ষা পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। অনেক বেসরকারী/আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানও ছুটি ঘোষণা করে। অবিশ্বাস্য গেদারিং হয় ইজতেমাস্থল ও পাশ্ববর্তী এলাকা সমূহে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই সেখানে গমন করেন এই মুনাজাতে শরীক হওয়ার জন্য। ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করার ফলে অনেকে স্ব স্ব বাসা/প্রতিষ্ঠান বা অফিস থেকেও মুনাজাতে অংশ নিচ্ছেন। অথচ এর কোন শারঈ ভিত্তি নেই। বিশ্ব ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ইবাদত হজ্জ-এর ক্ষেত্রেও এমনটি কল্পনা করা যায় না। বিশ্বনবীর জীবদ্দশায় এরকম দো‘আর কোন দৃষ্টান্ত নেই। এটি স্রেফ একটি বিদ‘আতী আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। মা আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ  ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই শরী‘আতে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত’।[5] যার পরিণাম হচেছ জাহান্নাম।[6]

পক্ষান্তরে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলনে’র তাবলীগী ইজতেমায় আখেরী মুনাজাত হয় না, তবে মজলিস শেষের সুন্নাতী দো‘আ ও বিদায়কালীন দো‘আ পাঠ করা হয়। যে দো‘আ রাসূল (ছাঃ) পাঠ করেছেনে এবং শিক্ষা দিয়েছেন। রাসূল (ছাঃ)  মজলিস শেষে পড়তেনسُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ ‘মহা পবিত্র হে আল্লাহ! আপনার প্রশংসার সাথে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার দিকেই ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি’।[7] এর কারণ সম্পর্কে মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘কোন ব্যক্তি ভাল কথা বললে ঐ ভাল-র উপরে ক্বিয়ামত পর্যন্ত মোহরাংকিত করা হয়। আর কোন ব্যক্তি মন্দ কিছু করলে এই দো‘আ তার জন্য কাফ্ফারা হয়ে যায়’।[8]

তাছাড়া কাউকে বিদায় দেওয়ার সময় রাসূল (ছাঃ) বলতেন, أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَ آخِرَ عَمَلِكَ وَفِيْ رِوَايَةٍ وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ ‘অর্থ : ‘তোমার দ্বীন, তোমার আমানত এবং তোমার শেষ আমল আল্লাহর নিকট সোপর্দ করলাম’।[9] অন্য বর্ণনায় এভাবে এসেছে, أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكُمْ وَأَمَانَتَكُمْ وَخَوَاتِيمَ أَعْمَالِكُمْ- অর্থ: ‘তোমাদের দ্বীন, তোমাদের আমানত এবং তোমাদের শেষ আমল আল্লাহর নিকট সোপর্দ করলাম’।[10] অন্য বর্ণনায় এসেছে, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট দো‘আ চাইলে তিনি বলেন, زَوَّدَكَ اللهُ التَّقْوَى وَغَفَرَ ذَنْبَكَ وَيَسَّرَ لَكَ الْخَيْرَ حَيْثُمَا كُنْتَ অর্থ : ‘আল্লাহ আপনাকে তাক্বওয়ার পুঁজি দান করুন! আপনার গোনাহ মাফ করুন এবং আপনি যেখানেই থাকুন আপনার জন্য কল্যাণকে সহজ করে দিন’।[11] সুতরাং আহলেহাদীছ আন্দোলনের তাবলীগী ইজতেমা উপরোক্ত সুন্নাতী দো‘আ পাঠের মাধ্যমে শেষ হয় এবং সারাদেশ থেকে সমবেত মেহমানদের উদ্দেশ্যে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বিদায়ী দো‘আ পাঠের মাধ্যমে বিদায় জানান।

সমাজ সংশোধনে তাবলীগী ইজতেমা : ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর তাবলীগী ইজতেমা কোন গতানুগতিক ইজতেমা নয়। মানব রচিত কোন থিওরী প্রচার ও প্রসারের জন্যও এই আয়োজন নয়। এ ইজতেমার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই সমাজকে অহি-র বিধানের আলোকে সংশোধন করা। দিকভ্রান্ত মানবতাকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া এবং এর মাধ্যমে নিজেদের মুক্তির পথকে সুগম করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ، قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَنِ الْغُرَبَاءُ قَالَ: الَّذِيْنَ يُصْلِحُوْنَ مَا أَفْسَدَ النَّاسُ- ‘ইসলাম নিঃসঙ্গভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। সত্বর সেই অবস্থায় ফিরে যাবে। অতএব সুসংবাদ হ’ল সেই অল্পসংখ্যক লোকদের জন্য। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! ‘গুরাবা’ বা স্বল্পসংখ্যক কারা? তিনি বলেন, আমার পরে যারা লোকেরা (ইসলামের) যে বিষয়গুলি ধ্বংস করে, সেগুলিকে পুনঃ সংস্কার করে’।[12] মূলতঃ এই সংস্কারের লক্ষ্যেই প্রতি বছরের এই বিশাল আয়োজন। শিরক-বিদ‘আত ও কুসংস্কারের অতল গহবরে নিমজ্জিত ঘুণেধরা এই সমাজকে আল্লাহপ্রেরিত অভ্রান্ত সত্যের উৎস পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের স্বচ্ছ সলিলে অবগাহন করানোর মাধ্যমে সমাজ সংশোধনই এই ইজতেমার মূল প্রতিপাদ্য। তাই সমাজ সংশোধনে এই ইজতেমার গুরুত্ব অপরিসীম।

শিরকমুক্ত ছহীহ আক্বীদা গঠনে : ‘শিরক’ শব্দের অর্থ শরীক করা। পারিভাষিক অর্থে আল্লাহর সত্তা অথবা গুণাবলীর সাথে অন্যকে শরীক করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدّاً وَهُوَ خَلَقَكَ ‘আল্লাহর জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করা, অথচ তিনি (আল্লাহ) তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’।[13]

শিরক এমন এক জঘন্য পাপ, যা আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। শিরক বান্দার পূর্বের আমল সমূহও বিনষ্ট করে দেয় (আন‘আম ৬/৮৮; যুমার ৩৯/৬৫)। শিরকের পরিণতি জাহান্নাম (মায়েদা ৫/৭২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ لَقِىَ اللهَ لاَيُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَقِيَهُ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’।[14] অথচ মুসলমানদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ শিরকী আক্বীদা বিষবাষ্পের ন্যায় ছড়িয়ে আছে। মুসলমানদের উন্নত ললাট আজ অবনমিত হচ্ছে কবরে-মাযারে-দরগাহে। গায়রুল্লাহর নামে পশু যবহ হচ্ছে নিত্য। নযর-নিয়ায ও মানতের ক্ষেত্রেও চলছে একই অবস্থা। গাছের প্রথম ফল বা ফসলের প্রথম অংশ চলে যাচ্ছে মাযারে বা বাবার দরবারে। এমনকি বিবাহ-শাদী, ছেলে-মেয়ের পরীক্ষায় ভাল ফলাফল, রোগমুক্তি, সন্তানহীনের সন্তান সবই চাওয়া হচ্ছে গায়রুল্লাহর নিকটে। অথচ এসবকিছু দেওয়ার একচ্ছত্র অধিকারী হচ্ছেন আল্লাহ। তাবলীগী ইজতেমায় শিরকের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয় এবং প্রচলিত শিরক সমূহ উল্লেখপূর্বক শ্রোতাদেরকে সাবধান করা হয়। ফলে তারা শিরক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করে তা থেকে নিজ পরিবার ও সমাজকে বাঁচাতে পারে।

বিদ‘আতমুক্ত ছহীহ আমলের ক্ষেত্রে : ‘বিদ‘আত’ অর্থ নতুন সৃষ্টি। ইবাদতের মধ্যে নেকীর উদ্দেশ্যে যা অতিরিক্ত করা হয়, যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই বা যা কোন ছহীহ দলীলের উপরে ভিত্তিশীল নয়, সেটিই বিদ‘আত। অন্য অর্থে সুন্নাতের বিপরীতটাই হ’ল বিদ‘আত। আমল কবুলের জন্য অবশ্যই আমলটি বিদ‘আত মুক্ত হ’তে হবে। কিন্তু বর্তমান সমাজে বিদ‘আতকে বিদ‘আত মনে করা হয় না। বরং সুন্নাত মনে করে করা হয়। এমনকি বিদ‘আতকে এক অভিনব কায়দায় ‘হাসানাহ’ ও ‘সাইয়্যেআহ’ এই দুই ভাগে ভাগ করে হাসানার চোরাগলি দিয়ে সবধরনের বিদ‘আতকে বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। অথচ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সমস্ত বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা, আর সমস্ত ভ্রষ্টতার পরিণতিই জাহান্নাম’।[15] মীলাদ-ক্বিয়াম, শবেবরাত, কুলখানী, চেহলাম ছাড়াও ইসলামের মৌলিক সকল ইবাদতের মধ্যেই মারাত্মকভাবে বিদ‘আতের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ভাল-র দোহাই দিয়ে দলীলের কোনরূপ তোয়াক্কা না করে একশ্রেণীর অসাধু আলেম-ওলামা এগুলি সমাজে চালু করেছে। প্রকারান্তরে এরা রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া স্বচ্ছ দ্বীনকে নিজেদের খেয়াল-খুশী মত বিকৃত করেছে এবং হাশরের ময়দানের কঠিনতম সময়ে রাসূলের সুফারিশ ও হাওযে কাওছারের পানি পান থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنِّيْ فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ، مَنْ مَرَّ عَلَىَّ شَرِبَ، وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا، لَيَرِدَنَّ عَلَىَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُوْنِيْ، ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُمْ فَأَقُوْلُ إِنَّهُمْ مِنِّيْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِيْ مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ فَأَقُوْلُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِيْ- ‘আমি তোমাদের পূর্বে হাউযের (হাউযে কাউছার) নিকটে পৌঁছে যাব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে হাউযের পানি পান করবে। আর যে একবার পান করবে সে কখনও পিপাসিত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার ও তাদের মাঝে আড়াল করে দেওয়া হবে। আমি তখন বলব, এরাতো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি জান না তোমার (মৃত্যুর) পরে এরা কি সব নতুন নতুন কথা ও কাজ সৃষ্টি করেছিল। তখন আমি বলব, দূর হও দূর হও, যারা আমার পরে দ্বীনের ভিতর পরিবর্তন এনেছে’।[16] প্রতি বছর তাবলীগী ইজতেমায় সুন্নাত ও বিদ‘আত সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়। বিদ‘আতের ক্ষতিকর দিক সমূহ তুলে ধরে সারগর্ভ বক্তব্য পেশ করা হয়। ফলে সাধরণ মানুষ পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন বিদ‘আতের ক্ষেত্রে বহুগুণ বেশী সচেতন।

কুসংস্কারমুক্ত বিশুদ্ধ পরিবার ও সমাজ গঠনে : তাবলীগী ইজতেমার বক্তব্য এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সর্বত্র প্রচারিত হয়। সেইসব বক্তব্য শ্রবণ করে প্রতিনিয়ত বিপুলসংখ্যক দেশী ও প্রবাসী দ্বীনদার ভাই তাদের লালিত ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল পরিবর্তন করে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলে ফিরে আসছেন। সেই সাথে তারা স্ব স্ব পরিবারে ও সমাজে এই দাওয়াত পৌছে দেন। ফলে এই বিশাল দাওয়াতী সমাবেশের মাধ্যমে এক নীরব বিপ্লব সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বাঁধ সাধে স্থানীয় মাযহাবী ও পীরপন্থী একশ্রেণীর অন্ধ আলেম-ওলামা। তারা নানাভাবে তাদের উপর নির্যাতন করে। এমনকি পরিবারকর্তা বা সমাজপতিদের উস্কে দেয়। ফলে ছহীহ দ্বীন গ্রহণ করার কারণে একপর্যায়ে তাদেরকে পরিবার ও সমাজ থেকে বিতাড়িত হ’তে হয়। কিন্তু এর পরও তারা একচুল পরিমাণও ছহীহ আমল থেকে বিচ্যুত হন না। কেননা তারা দুনিয়ার উপর আখেরাতকে প্রাধান্য দেন। যেকোন মূল্যে কুসংস্কারমুক্ত বিশুদ্ধ পরিবার ও সমাজ গঠনে তারা বদ্ধপরিকর।

উপসংহার : ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ এদেশে শিরক-বিদ‘আত ও কুসংস্কারমুক্ত একটি জান্নাতী সমাজ গড়তে চায়। আর সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের নিমিত্তেই ‘আন্দোলন’-এর ১ম দফা কর্মসূচীর অংশ হিসাবে প্রতি বছর এই তাবলীগী ইজতেমার আয়োজন করা হয়। অতএব পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে স্ব স্ব পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে এই ইজতেমার গুরুত্ব ও ভূমিকা অপরিসীম। আল্লাহ আমাদেরকে তাবলীগী ইজতেমার জ্ঞানগর্ভ দলীলভিত্তিক আলোচনা থেকে শিক্ষা লাভ করে তা নিজ পরিবার ও সমাজ জীবনে বাস্তবায়নের তাওফীক দান করুন-আমীন!


[1]. বুখারী হা/২৭৯২; মুসলিম হা/১৮৮০; মিশকাত হা/৩৭৯২ ‘জিহাদ’ অধ্যায়।

[2]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৮, ২০৯ ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।

[3]. মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৩৩৮; মিশকাত হা/১৮৬

[4]. বুখারী হা/৩৪৬১; মিশকাত হা/৩৯৮

[5]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০ ‘কিতাব ও সন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।

[6]. নাসাঈ হা/১৫৭৮

[7]. তিরমিযী হা/৩৪৩৩, নাসাঈ কুবরা হা/১০১৪০; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩১৬৪; মিশকাত হা/২৪৩৩

[8]. তিরমিযী, নাসাঈ, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/২৪৩৩, ২৪৫০

[9]. তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৪৩৫

[10]. আবুদাঊদ সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৪৩৬

[11]. তিরমিযী, মিশকাত হা/২৪৩৭, ‘বিভিন্ন সময়ের দো‘আ’ অধ্যায়

[12]. আহমাদ হা/১৬৭৩৬; মিশকাত হা/১৫৯, ১৭০; ছহীহাহ হা/১২৭৩।

[13]. বুখারী হা/৪৪৪৭

[14]. মুসলিম হা/২৬৬৩

[15]. নাসাঈ হা/১৫৭৮

[16]. বুখারী হা/৬৫৮৩-৮৪; মুসলিম হা/২২৯০; মিশকাত হা/৫৫৭১





রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আয় শামিল হওয়ার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
শারঈ ঝাড়-ফুঁক : একটি পর্যালোচনা - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
ইসলামে ভ্রাতৃত্ব (২য় কিস্তি) - ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ
ইসলামে তাক্বলীদের বিধান (৪র্থ কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
ইসলামী বাড়ীর বৈশিষ্ট্য - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর উপর নির্যাতন - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
আল্লাহর উপর ভরসা - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
যাকাত সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
মানব জাতির সাফল্য লাভের উপায় (৪র্থ কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
আল্লাহর সতর্কবাণী - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
মানবাধিকার ও ইসলাম (৪র্থ কিস্তি) - শামসুল আলম
আদর্শ পরিবার গঠনে করণীয় (৫ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.