পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । শেষ পর্ব ।

নিন্দিত নারী :

মানুষকে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন (ইসরা ১৭/৭০)। কিন্তু তাদের বিভিন্ন স্বভাব-প্রকৃতির কারণে কেউ নন্দিত হয়, কেউ নিন্দিত হয়। আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যারাও তাদের কিছু অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্যের কারণে সমাজে নিগৃহীত ও নিন্দিত হয়। পরিবার ও সমাজে তাদের নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা বিবাদ-বিসম্বাদ, ঘটে যায় বহু বিপর্যয় ও অপ্রীতিকর ঘটনা। ঐসব নিন্দিত নারী থেকে রাসূল (ছাঃ) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন এভাবে-

اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ جَارِ السُّوْءِ، وَمِنْ زَوْجٍ تَشَيِّبَنِيْ قَبْلَ الْمَشِيْبِ، وَمِنْ وَلَدٍ يَكُوْنُ عَلَيَّ رَبًّا، وَمِنْ مَالٍ يَكُوْنُ عَلَيَّ عَذَاباً، وَمِنْ خَلِيْلٍ مَاكِرٍ عَيْنَهُ تَرَانِيْ، وَقَلْبُهُ يَرْعَانِيْ؛ إِنْ رَأَى حَسَنَةً دَفَنَهَا، وَإِذَا رَأَى سَيِّئَةً أَذَاعَهَا.  

‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি মন্দ প্রতিবেশী থেকে; এমন স্ত্রী থেকে যে বার্ধক্য আসার পূর্বেই আমাকে বৃদ্ধ করে দেয়; এমন পুত্র সন্তান থেকে যে আমার মনিব স্বরূপ হয়ে যায়; এমন সম্পদ থেকে যা আমার আযাবের কারণ হয় এবং এমন ধোঁকাবাজ বন্ধু থেকে যার চোখ আমাকে দেখে আর তার অন্তর আমাকে পর্যবেক্ষণ করে। যদি সে ভাল কিছু দেখে, তাহ’লে তা গোপন করে। আর মন্দ কিছু দেখলে তা প্রচার করে’।[1]

এখানে নিন্দনীয় নারীদের কিছু দোষ-ত্রুটি উল্লেখ করা হ’ল-

ক. স্বামীর অবাধ্যতা করা :

স্ত্রী স্বামীর অনুগত ও বাধ্যগত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন কোন স্ত্রী স্বামীর কথা শুনতে চায় না। স্বামীকে বাধ্য করে তার কথা মত চলতে। কখনো নিজের একরোখা মেজায ও গোঁড়ামির কারণে, কখনও নিজের আর্থিক সচ্ছলতার কারণে, কখনও পিতামাতার প্রভাব-প্রতিপত্তি ও অর্থনৈতিক সচ্ছল অবস্থার কারণে এরূপ হয়ে থাকে। যে কারণেই হোক না কেন স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হ’লে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,اِثْنَانِ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمَا رُءُوْسَهُمَا عَبْدٌ آبِقٌ مِنْ مَوَالِيْهِ حَتَّى يَرْجِعَ وَامْرَأةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا حَتَّى تَرْجِعَ-  ‘দুই ব্যক্তির ছালাত তাদের মাথা অতিক্রম করে না। ১. মনিবের নিকট থেকে পলাতক গোলাম যতক্ষণ সে ফিরে না আসে। ২. ঐ মহিলা যে তার স্বামীর অবাধ্যতা করে, যতক্ষণ সে তার আনুগত্যে ফিরে না আসে’।[2] তবে এ আনুগত্য হবে শারঈ সীমারেখার মধ্যে। কেননা স্রষ্টার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই।[3] কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর কথামত চলতে গিয়ে বিভিন্ন পাপে জড়িয়ে পড়ে। শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয়। আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক বিভিন্ন কাজ করে বসে, যা আদৌ ঠিক নয়। এভাবে আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে মানুষের সন্তুষ্টি কামনা করার পরিণতি ভয়াবহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنِ الْتَمَسَ رِضَا اللهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَا النَّاسِ بِسَخَطِ اللهِ وَكَلَهُ اللهُ إِلَى النَّاسِ ‘যে ব্যক্তি মানুষের অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে, মানুষের দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচাতে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে মানুষের সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ তাকে মানুষের দায়িত্বে ছেড়ে দেন’।[4]

খ. স্বামীকে রাগান্বিত করা :

অনেক মহিলা স্বামীর অপসন্দনীয় কাজগুলি বেশী বেশী করে স্বামীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বা তাকে রাগান্বিত করার জন্য। স্বামী তার প্রয়োজনীয় সবকিছু যথাযথভাবে প্রদান করলেও সে যেন খুশি হ’তেই চায় না। কোন কিছুর বিনিময়েই ঐসব মহিলা তাদের বদঅভ্যাস ত্যাগ করে না। বরং স্বামীকে রাগানো ও তাকে কষ্ট দেওয়াই যেন তার  মূল কাজ। তার মাথায় যেন এ চিন্তাই সদা ঘুরপাক খেতে থাকে যে, কোন কাজ করলে স্বামী রেগে যাবে ও কষ্ট পাবে, সেটাই সে করে থাকে। এসব নারীদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,ثَلاَثَةٌ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ آذَانَهُمُ الْعَبْدُ الآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُوْنَ- ‘তিন ব্যক্তির ছালাত তাদের কান অতিক্রম করে না। ১. পলায়নকারী গোলাম যতক্ষণ সে ফিরে না আসে। ২. এমন মহিলা, যে রাত্রি যাপন করে অথচ তার স্বামী তার উপরে রাগান্বিত থাকে। ৩. ঐ ইমাম, জনগণ যাকে অপসন্দ করে’।[5]

গ. বিনা কারণে স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া :

কোন কোন মহিলা স্বামীর দুরবস্থার কারণে বা পরপুরুষের প্রতি ঝুকে পড়ায় স্বামীর সাথে ঘর-সংসার করতে চায় না। ফলে সে স্বামীর কাছে তালাক চায়। অথচ কেবল শারঈ কারণ ব্যতীত কোন মহিলা স্বামীর কাছে তালাক চাইতে পারে না। এরপরেও কোন মহিলা বিনা কারণে তালাক চাইলে, সে জান্নাত থেকে মাহরূম বা বঞ্চিত হবে। এ ধরনের মহিলাদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلاَقًا فِى غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ. ‘যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’।[6]

ঘ. পর্দাপ্রথা পরিহার করা :

পর্দা ইসলামে ফরয। ছালাত-ছিয়াম পালন না করলে যেমন আল্লাহর কাছে জওয়াবদিহি করতে হবে, তেমনি পর্দা পালন না করলেও আল্লাহর কাছে জওয়াবদিহি করতে হবে। কিন্তু বহু মহিলা পর্দা না মেনে নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে রাস্তা-ঘাটে চলাফেরা করে। ফলে তারা ধর্ষণ-অপহরণ ও উত্যক্তকরণের শিকার হয়। এরপরও তারা পর্দা করে না। এদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,

صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُوْنَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيْلاَتٌ مَائِلاَتٌ رُءُوْسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَجِدْنَ رِيْحَهَا وَإِنَّ رِيْحَهَا لَيُوْجَدُ مِنْ مَسِيْرَةِ كَذَا وَكَذَا.

‘দুই শ্রেণীর লোক জাহান্নামী, যাদেরকে এখনও আমি দেখিনি। ১. এমন সম্প্রদায় যাদের হাতে গরু তাড়ানোর লাঠি থাকবে, যা দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। ২. নগ্ন পোষাক পরিধানকারী নারী, যারা পুরুষদেরকে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধ বিশিষ্ট উটের ন্যায় হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি তারা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি এত এত দূর হ’তে পাওয়া যায়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, এক মাসের পথের দূরত্ব হ’তে পাওয়া যায়’।[7] এ হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, তারা হচ্ছে ঐসব মহিলা যারা পর্দা করে না। বরং নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে রাস্তা-ঘাটে চলাফেরা করে। তাদের পরিণতি সম্পর্কে অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,وَشَرُّ نِسَائِكُمُ الْمُتَبَرِّجَاتُ الْمُتَخَيِّلاَتُ وَهُنَّ الْمُنَافِقَاتُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْهُنَّ إِلاَّ مِثْلُ الْغُرَابِ الأَعْصَمِ- ‘তোমাদের নারীদের মধ্যে নিকৃষ্ট হ’ল যারা পর্দাহীনা অহংকারিণী। আর তারা হ’ল মুনাফিক নারী। তাদের মধ্য হ’তে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না কেবল সাদা পা বিশিষ্ট কাকের ন্যায় ব্যতীত’।[8]

অনেক মহিলা স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়ায়। তাদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,ثَلاَثَةٌ لاَ تَسْأَلْ عَنْهُمْ ... وَامْرَأَةٌ غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا قَدْ كَفَاهَا مُؤْنَةَ الدُّنْيَا فَتَبَرَّجَتْ بَعْدَهُ، ‘(ধ্বংসে নিপতিত) তিন ব্যক্তি সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস কর না।... আর ঐ নারী যার স্বামী অনুপস্থিত। কিন্তু সে (স্বামী) তার দুনিয়াবী ভোগ্য সামগ্রী যথেষ্ট পরিমাণে প্রদান করে। অথচ সে (স্ত্রী) তার স্বামীর পরে (অনুপস্থিতিতে) বেপর্দায় চলে’।[9] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘ঐ মহিলা, যে তার স্বামীর সাথে খেয়ানত করে।[10]

বর্তমানে আমাদের দেশের লোকেরা অন্যের বাড়ীতে স্বাভাবিকভাবেই ঢুকে পড়ে। কোন অনুমতির তোয়াক্কা করে না। অথচ সে বাড়ীতে মহিলারা কোন কোন সময় অপ্রস্ত্তত থাকে। অনেকে আবার অন্যের বাড়ীতে ঢুকে সে বাড়ীর মহিলাদের সাথে নিঃসংকোচে কথাবার্তা বলেও খোশগল্প করতে থাকে। মহিলারাও তাদেরকে এসবের সুযোগ দেয়। ইসলামে এসব নিষেধ। আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تَدْخُلُوْا بُيُوْتًا غَيْرَ بُيُوْتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوْا وَتُسَلِّمُوْا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যদের গৃহে প্রবেশ করো না। যতক্ষণ না তোমরা তাদের অনুমতি নাও এবং গৃহবাসীদের প্রতি সালাম কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। সম্ভবতঃ তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে (তা মেনে চলার মাধ্যমে)’ (নূর ২৪/২৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِإِمْرَأَةٍ إِلاَّ كَانَ ثَالِثُهُمَا الشَّيْطانُ. ‘অবশ্যই কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হ’লে তৃতীয় জন হবে শয়তান’।[11] মহিলাদের সাথে খোশগল্প নিষেধ করে আল্লাহ বলেন,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِيْنَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانْتَشِرُوْا وَلَا مُسْتَأْنِسِيْنَ لِحَدِيْثٍ-

‘হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া না হ’লে তোমরা আহার্য প্রস্ত্ততির জন্য অপেক্ষা না করে ভোজনের জন্য নবী-গৃহে প্রবেশ কর না। তবে তোমাদেরকে আহবান করলে তোমরা প্রবেশ কর এবং ভোজনশেষে তোমরা চলে যাও; তোমরা কথাবার্তায় মশগূল হয়ে পড়ো না’ (আহযাব ৩৩/৫৩)। রাসূলের ব্যাপারে বলা হ’লেও মুসলমানদের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য।

আবার সমাজে দেবর-ভাবির, হাসি-তামাশা, অবাধ চলাফেরা যেন সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। অথচ রাসূল (ছাঃ) এসব থেকে মানুষকে সাবধান করেছেন। উক্ববা ইবনু আমের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ يَا رَسُولَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ، قَالَ الْحَمْوُ الْمَوْتُ. ‘তোমরা নারীদের নিকট প্রবেশ করা থেকে সাবধান থাক। একজন আনছার ছাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! দেবর সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেন, ‘দেবর মৃত্যু সমতুল্য’।[12]

প্রকৃত পর্দা : আমাদের দেশের মানুষ প্রকৃত পর্দা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নয়। তারা মনে করে কেবল বোরক্বা পরে বাইরে গেলেই পর্দা রক্ষা হয়ে যায় এবং বাড়ীর অভ্যন্তরে এর কোন প্রয়োজন নেই। অথচ সেটা প্রকৃত পর্দা নয়। বরং পর্দা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوْبِهِنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُوْلَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُوْلَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِيْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِيْ أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِيْنَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِيْنَ لَمْ يَظْهَرُوْا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاءِ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّ وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ-

‘আর তুমি মুমিন নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান হেফাযত করে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তবে যেটুকু স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ পায় সেটুকু ব্যতীত। আর তারা যেন তাদের মাথার কাপড় স্বীয় বক্ষদেশের উপর রাখে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজ পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগিনীপুত্র, নিজেদের বিশ্বস্ত নারী, অধিকারভুক্ত দাসী, কামনামুক্ত পুরুষ এবং শিশু যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অবহিত নয়, তারা ব্যতীত। আর তারা যেন এমনভাবে চলাফেরা না করে যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়। আর হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে যাও যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (নূর ২৪/৩১)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্তমানে মহিলারা দেবর-ভাসুর, চাচাত, মামাতো, খালাতো, ফুফাত ভাই, বেয়াই, বোনাই সবার সাথে খোশ-গল্প, হাসি-তামাশা, করে থাকে। এগুলোকে তারা কিছু মনে করে না। অথচ এসব পর্দার পরিপন্থী। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلاَ تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى- ‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন যুগের মত নিজদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না’ (আহযাব ৩৩/৩৩)। আল্লাহ এ আয়াতে মহিলাদের বাড়ীর মধ্যে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে বাইরে যেতে হ’লে যথাযথ পর্দা পালন করেই যেতে হবে।

আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلاَبِيبِهِنَّ- ‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলে দেও, তারা যেন নিজেদেরকে চাদর দিয়ে আবৃত করে’ (আহযাব ৩৩/৫৯)। এ নির্দেশ রাসূল (ছাঃ)-এর মাধ্যমে সকল মুমিন নারীদেরকে দেওয়া হয়েছে।

পর্দার পোষাক :

পোষাক-পরিচ্ছদ মানুষের লজ্জাস্থান আবৃত করার জন্য আল্লাহ দান করেছেন। তিনি বলেন,يَا بَنِيْ آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِيْ سَوْآتِكُمْ وَرِيْشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آيَاتِ اللهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُوْنَ- ‘হে আদম সন্তান! আমরা তোমাদের উপর পোষাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি বেশভূষার উপকরণ সমূহ। তবে আল্লাহভীতির পোষাকই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম। যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে’ (আ‘রাফ ৭/২৬)

বস্ত্তত শয়তান মানুষের দেহ থেকে তার আবরণ খুলে নিয়ে মানুষকে নগ্ন-অর্ধনগ্ন করতে চায়, যেমনভাবে সে প্রথম মানব-মানবী আদম ও হাওয়া (আঃ)-এর দেহ থেকে পোষাক খুলে নিয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَا بَنِي آدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِيْنَ أَوْلِيَاءَ لِلَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ- ‘হে আদম সন্তান! শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে। যেমন সে তোমাদের আদি পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল। সে তাদের থেকে তাদের পোষাক খুলে নিয়েছিল যাতে সে তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখাতে পারে’ (আ‘রাফ ৭/২৭)

শয়তানের ঐ নীল নক্সা বাস্তবায়নে সে সদা তৎপর। কিন্তু আদম সন্তান সেটা বুঝতে না পেরে এর বিপরীত কাজ করে। যেমন মহিলারা নিজেদের সৌন্দর্য বিকাশের নামে পাতলা ও আঁটসাঁট পোষাক পরিধান করে বাইরে বের হয়। এতে তাদের শরীরের বিশেষ অঙ্গ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। আসমা বিনতে আবী বকর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে প্রবেশ করলেন। আর রাসূল (ছাঃ) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, إِنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا بَلَغَتْ الْمَحِيْضَ لَمْ تَصْلُحْ أَنْ يُرَى مِنْهَا شيء إِلاَّ هَذَا وَهَذَا وَأَشَارَ إِلَى وَجْهِهِ وَكَفَّيْهِ- ‘যখন কোন নারী যৌবনে পদার্পণ করে তখন তার জন্য এটা ওটা ছাড়া অন্য কিছু প্রকাশ করা বৈধ হবে না। তিনি চেহারা ও দু’কব্জির দিকে ইঙ্গিত করলেন।[13] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

دَخَلَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَلَى عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَعَلَى حَفْصَةَ خِمَارٌ رَقِيقٌ فَشَقَّتْهُ عَائِشَةُ وَكَسَتْهَا خِمَارًا كَثِيفًا-

‘হাফছা বিনতু আব্দির রহমান নবী করীম (ছাঃ)-এর স্ত্রী আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট প্রবেশ করলেন, তখন তার মাথায় একটা পাতলা ওড়না ছিল  (অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যা থেকে তার ললাট দেখা যাচ্ছিল)। আয়েশা (রাঃ) তার ওড়নাটি ছিড়ে ফেলে একটি মোটা ওড়না তাকে পরিয়ে দিলেন’।[14] অপর এক বর্ণনায় আছে, আয়েশা (রাঃ) তার উপর থেকে পাতলা ওড়নাটি সরিয়ে দিয়ে বললেন, আল্লাহ তা‘আলা সূরা নূরে যা নাযিল করেছেন তা কি তুমি জান না? অতঃপর তিনি আরেকটি মোটা ওড়না তাকে পরিধান করালেন।[15]

ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) লোকদের ক্বাবাত্বী কাপড় (মিসরীয় পাতলা সাদা কাপড়) পরতে দিয়ে বললেন,لاَ تُدَرِّعُهَا نِسَاؤَكُمْ فَقَالَ رَجُلٌ: يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ قَدْ أَلْبَسْتُهَا إِمْرَأْتِي فَأَقْبَلَتْ فِي الْبَيْتِ وَأَدْبَرَتْ فَلَمْ أَرَهُ يَشِفُّ. فَقَالَ عُمَرُ: إِنْ لَمْ يَكُنْ يَشِفُّ فَإِنَّهُ يَصِفُّ- ‘এ কাপড়গুলো তোমাদের স্ত্রীদেরকে পরাবে না। তখন একজন লোক বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! আমি আমার স্ত্রীকে তা পরিয়েছিলাম। অতঃপর বাড়িতে সে আমার সামনে ঘোরাঘুরি করেছে। কিন্তু তা এত পাতলা মনে হয়নি যার উপর থেকে ভিতর দেখা যায়। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, যদি তা অতি পাতলা নাও হয়, কিন্তু তা দেহের আকৃতি প্রকাশ করবে’। [16] অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন,لاَ تُلْبِسُوْا نِسَاءَكُمَ الْقَبَاطِيَّ، فَإِنَّهُ إِلاَّ يَشِفَّ يَصِفُ- ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের ক্বাবাত্বী কাপড় পরিধান করাবে না। কেননা যদিও সেটার উপর থেকে ভিতর প্রকাশ না পায়, কিন্তু তা দেহের আকৃতি প্রকাশ করে’।[17] অরেকটি বর্ণনায় এসেছে,    

أَنَّ الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ قَدِمَ مِنَ الْعِرَاقِ فَأَرْسَلَ إِلَى أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِيْ بَكْرٍ بِكَسْوَةٍ مِنْ ثِيَابِ مَرْوَيَّةٍ وَقُوهِيَّةٍ رِقاقٍ عِتَاقٍ بَعدَمَا كَفَّ بَصَرُهَا، قالَ: فَلَمَسَتْها بِيَدِهَا، ثُمَّ قَالَتْ: أُفٍّ رَدُّوْا عَلَيْهِ كِسْوَتَهُ، قَالَ: فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْهِ وَقَالَ: يَا أُمَّه إِنَّهُ لاَ يَشِفُّ. قَالَتْ: إِنَّهَا إِنْ لَمْ تَشِفُّ فَإِنَّهَا تَصِفُ-

‘মুনযির ইবনু যুবায়ের ইরাক থেকে ফিরে আসমা বিনতু আবী বকর (রাঃ)-এর নিকট কিছু পুরাতন পাতলা মারবীহ অকূহিয়াহ কাপড় পাঠালেন। তখন তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। রাবী বলেন, তিনি কাপড়গুলো হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে বললেন, আফসোস! তোমরা তার কাপড় ফেরৎ দাও। রাবী বলেন, এটা মুনযিরের কাছে পীড়াদায়ক হ’লে তিনি বললেন, হে মা! এটা (শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ পাওয়ার মত) অতি পাতলা নয়। তখন তিনি বললেন, যদি এটা অতি পাতলা নাও হয়, তবুও এটা শরীরের আকৃতি প্রকাশ করে দেয়’।[18]

উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كَسَانِى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قُبْطِيَّةً كَثِيْفَةً كَانَتْ مِمَّا أَهْدَاهَا دِحْيَةُ الْكَلْبِىُّ، فَكَسَوْتُهَا امْرَأَتِىْ، فَقَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، مَا لَكَ لَمْ تَلْبَسِ الْقُبْطِيَّةَ؟ قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! كَسَوْتُهَا امْرَأَتِى. فَقَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: مُرْهَا فَلْتَجْعَلْ تَحْتَهَا غِلاَلَةً، إِنِّىْ أَخَافُ أَنْ تَصِفَ حَجْمَ عِظَامِهَا-

‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে একটা গাঢ় ঘন কুবতী পোষাক পরিয়েছিলেন যেটা তাঁকে দেহিয়া কালবী উপহার দিয়েছিলেন। অতঃপর আমি সেটা আমার স্ত্রীকে পরালাম। একদা রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, তোমার কি হ’ল তুমি কুবতী পোষাকটি পরিধান করছ না? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি ওটা আমার স্ত্রীকে পরিধান করিয়েছি। তখন রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, ‘তুমি তাকে নির্দেশ দাও সে যেন তার নিচে গিলালাহ (সেমিজ) পরিধান করে। কেননা আমি তার হাড়ের (দেহের) আকৃতি প্রকাশের আশংকা করছি’।[19] অথচ আজকাল মহিলারা এমন পাতলা ও টাইট ফিটিং পোষাক পরিধান করে যাতে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ সুস্পষ্টরূপে ফুটে ওঠে। মুমিন নারীদের এ ধরনের পোষাক পরিধান করা থেকে বিরত থাকা অতি যরূরী।

সাজসজ্জা করে ও সুগন্ধি মেখে বাইরে যাওয়া পর্দার পরিপন্থী : বর্তমানে অনেক মহিলা কোথাও যাওয়ার প্রাক্কালে সুসজ্জিত হয়ে এবং সুগন্ধি মেখে বের হয়। নিজ বাড়ীতে স্বামীর সামনে সাধারণ পোষাক পরিধান করলেও অন্যত্র যায় সেজেগুজে। কড়া পারফিউম, চড়া মেকাপ মেখে আর জিপসী টাইপের পোষাক পরে নিজেকে ডানাকাটা পরি সদৃশ সাজিয়ে পেটের ভাজ ও শরীরের খাজ প্রদর্শন করে রাস্তায় হেলে-দুলে চলে। এদের না আছে লজ্জা-শরম, না আছে পরকালের ভয়। জান্নাত এসব নারীদের জন্য নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, سَيَكُوْنُ فِىْ آخِرِ أُمَّتِىْ نِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُتَمَيِّلَاتٌ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ، وَلَا يَجِدْنَ رِيْحَهَا، وَرِيْحُهَا تُوْجَدُ مِنْ مَسِيْرَةِ خَمْسِ مِائَةِ عَامٍ- ‘আমার উম্মতের শেষ সময়ে নারীরা নগ্ন-উলঙ্গ পোষাক পরিধান করবে। তারা নিজেরা অন্যকে তাদের প্রতি আকর্ষণ করবে (নিজেরাও তাদের প্রতি আকর্ষিত হবে)। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। যদিও এর সুঘ্রাণ পঞ্চাশ হাযার বছর পথের দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়’।[20] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘তাদের মাথা হবে হেলে দুলে পড়া দুর্ভাগা উটের কুজের ন্যায়। অবশ্যই তারা অভিশপ্ত’।[21]

যারা সেন্ট, বডি স্প্রে, আতর ইত্যাদি মেখে বাইরে যায়, এদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَيُّمَا امْرَأَةٍ اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ عَلَى قَوْمٍ لِيَجِدُوْا مِنْ رِيْحِهَا فَهِىَ زَانِيَةٌ ‘যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করল অতঃপর লোকদের পাশ দিয়ে এ উদ্দেশ্যে অতিক্রম করল যে, তারা যেন তার সুঘ্রাণ পায়, তাহ’লে সে ব্যভিচারী’।[22]

মহিলারা ছালাত আদায় করার জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় তাদের জন্য সুগন্ধি মেখে যাওয়া নিষিদ্ধ। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,

أَنَّ امْرَأَةً مَرَّتْ بِهِ تَعْصِفُ رِيْحُهَا فَقَالَ: يَا أَمَةَ الْجَبَّارِ الْمَسْجِدُ تُرِيْدِيْنَ؟ قَالَتْ: نَعَمْ. قَالَ: وَلَهُ تَطَيَّبْتِ؟ قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ فَارْجِعِى فَاغْتَسِلِىْ فَإِنِّىْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ: مَا مِنِ امْرَأَةٍ تَخْرُجُ إِلَى الْمَسْجِدِ تَعْصِفُ رِيْحُهَا فَيَقْبَلُ اللهُ مِنْهَا صَلاَتَهَا حَتَّى تَرْجِعَ إِلَى بَيْتِهَا فَتَغْتَسِلَ-

‘একজন মহিলা তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিল এবং তার থেকে তীব্র সুগন্ধি বের হচ্ছিল। তখন আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে বললেন, হে শক্তিধর আল্লাহর বান্দী! তুমি মসজিদে যাওয়ার ইচ্ছা করছ? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমি তার জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করেছ? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমি (বাড়িতে) ফিরে গিয়ে গোসল কর। কেননা আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে নারী মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হ’ল, আর তার থেকে সুঘ্রাণ বের হ’তে থাকল, আল্লাহ তা‘আলা তার ছালাত কবুল করবেন না যতক্ষণ না সে বাড়িতে গিয়ে গোসল করবে’।[23] অন্যত্র নবী করীম (ছাঃ) মহিলাদেরকে সুগন্ধি মেখে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,أَيَّتُكُنَّ خَرَجَتْ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَلاَ تَقْرَبَنَّ طِيْبًا- ‘তোমাদের মধ্যে যে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হ’ল সে যেন অবশ্যই সুগন্ধি ব্যবহার না করে’।[24]

ঙ. অন্যের গৃহে স্বীয় বস্ত্র উন্মোচনকারিণী :

অনেক মহিলা আছে যারা স্বামীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে না। অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তার কাছে যায়। পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আর তার দ্বারা নিজের মনোবাসনা পূর্ণ করে। তাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَزَعَتْ ثِيَابَهَا فِىْ غَيْرِ بَيْتِ زَوْجِهَا هَتَكَتْ سِتْرَ مَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ رَبِّهَا. ‘যে মহিলা স্বামীর গৃহ ব্যতীত অন্যের গৃহে পোশাক খোলে (ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে), তাহ’লে সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দাকে ছিন্ন করে ফেলল’।[25]

এমনকি স্বামীর গৃহ ব্যতীত অন্যের গৃহে রাত্রি যাপন করাও নিষেধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,أَلَا لَا يَبِيتَنَّ رَجُلٌ عِنْدَ امْرَأَةٍ ثَيِّبٍ. إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ نَاكِحًا أَوْ ذَا مَحْرَمٍ- ‘সাবধান! কোন পুরুষ যেন কখনও কোন অকুমারী (গায়ের মাহরাম) নারীর সাথে রাত্রি যাপন না করে। তবে যদি সে বিবাহিত হয় (এবং তার স্ত্রী সাথে থাকে) বা সে মাহরাম হয় তাহ’লে ভিন্ন কথা’।[26]

চ. অন্যকে স্বামীর বাড়ীতে প্রবেশের অনুমতি দানকারিণী :

নারী নিজে যেমন স্বামীর সম্পদ হেফাযত করবে তেমনি নিজের ইয্যত-আব্রু রক্ষা করবে। সাথে সাথে সে স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কোন পুরুষকে বাড়ীতে প্রবেশ করতে দিবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُوْمَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلَّا بِإِذْنِهِ، وَلاَ تَأْذَنَ فِيْ بَيْتِهِ إِلَّا بِإِذْنِهِ، وَمَا أَنْفَقَتْ مِنْ نَفَقَةٍ عَنْ غَيْرِ أَمْرِهِ فَإِنَّهُ يُؤَدَّى إِلَيْهِ شَطْرُهُ- ‘স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত স্ত্রীর নফল ছিয়াম পালন করা বৈধ নয় এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতীত অন্যকে তার গৃহে প্রবেশ করতে দিবে না। যদি কোন স্ত্রী স্বামীর নির্দেশ ব্যতীত তার কোন সম্পদ থেকে খরচ করে, তাহ’লে স্বামী তার অর্ধেক ছওয়াব পাবে’।[27] 

ছ. ব্যভিচারিণী :

যেনা-ব্যভিচার এক জঘন্য ও ঘৃণিত পাপাচার। এতে যারা লিপ্ত হয় তারা যেমন সমাজে নিগৃহীত হয়, তেমনি পরকালে তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। মুমিন সাধারণত ব্যভিচারী মহিলাকে বিবাহ করবে না। আল্লাহ বলেন,الزَّانِيْ لَا يَنْكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لَا يَنْكِحُهَا إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ وَحُرِّمَ ذَلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ ‘ব্যভিচারী পুরুষ বিয়ে করতে পারে না ব্যভিচারিণী বা মুশরিক নারীকে ব্যতীত। (অনুরূপভাবে) ব্যভিচারিণী নারী বিয়ে করতে পারে না ব্যভিচারী বা মুশরিক পুরুষ ব্যতীত (যে ব্যভিচারকে হারাম মনে করে না)। মুমিনদের উপর এটা হারাম করা হয়েছে’ (নূর ২৪/৩)। সাধারণ মুমিনদের উপর উক্ত বিবাহ হারাম করা হয়েছে, যতক্ষণ তারা তওবা না করে। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, যদি তওবা করে তাহ’লে উক্ত নারী বা পুরুষের সাথে সাধারণত মুমিন পুরুষ বা নারীর সাথে বিবাহ সিদ্ধ হবে, অন্যথা বৈধ নয়।[28]

জ. পুরুষের বেশ ধারণকারিণী :

নারী-পুরুষকে আল্লাহ তা‘আলা আলাদা আকার-আকৃতি ও অবয়বে সৃষ্টি করেছেন। এটা আল্লাহর সৃষ্টি কৌশল। কিন্তু কোন কোন মহিলা চুল ছোট করে এবং পুরুষের পোষাক পরিধান করে পুরুষের বেশ ধারণ করে। পরকালে এদের পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنْ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنْ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ ‘রাসূল (ছাঃ) সেসব মহিলাদের উপর অভিশাপ করেছেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং সে সকল পুরুষদের উপর অভিশাপ করেছেন, যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে’।[29] অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন,أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَعَنَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لُبْسَةَ الْمَرْأَةِ وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لُبْسَةَ الرَّجُلِ ‘রাসূল (ছাঃ) সেই পুরুষের ওপর অভিশাপ করেছেন, যে মহিলার পোষাক পরিধান করে এবং সে মহিলার উপর অভিশাপ করেছেন, যে পুরুষের পোষাক পরিধান করে’।[30] অপর একটি বর্ণনায় এসেছে, ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَعَنَ الْمُخَنَّثِيْنَ مِنْ الرِّجَالِ وَالْمُتَرَجِّلاَتِ مِنْ النِّسَاءِ. ‘নবী করীম (ছাঃ) হিজড়ার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারীর উপর অভিশাপ করেছেন’।[31]

আবূ মুলায়কা (রাঃ) বলেন, একদা আয়েশা (রাঃ)-কে বলা হ’ল-إِنَّ امْرَأَةً تَلْبَسُ النَّعْلَ فَقَالَتْ لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَةَ مِنْ النِّسَاءِ- ‘একটি মেয়ে পুরুষের জুতা পরে। তখন আয়েশা (রাঃ) বললেন, রাসূল (ছাঃ) পুরুষের বেশধারী নারীর প্রতি অভিশাপ করেছেন’।[32]

এধরনের মহিলা জান্নাতে যেতে পারবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,ثَلاَثَةٌ لاَ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ الْعَاقُّ لِوَالِدَيْهِ وَالدَّيُّوْثُ وَرَّجُلَةَ النِّسَاء- ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান (২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী বা দাইয়ূছ (৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী’।[33]

ঝ. পরচুলা ব্যবহারকারিণী ও উল্কিকারিণী :

এক শ্রেণীর মহিলা নিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে নিজ দেহে উল্কী করায় এবং নিজের অল্প চুলের সাথে নকল চুল বা পরচুলা ব্যবহার করে, যাতে চুল বেশী ও লম্বা দেখা যায়। এ ধরনের কাজ ইসলামে নিষিদ্ধ। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন,أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَعَنَ اللهُ الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ. ‘নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে নারী চুলে জোড়া লাগায় এবং অন্যদের দ্বারা লাগিয়ে নেয়, যে নারী দেহে কিছু অংকন করে এবং অন্যের দ্বারা করিয়ে নেয় উভয়ের প্রতি আল্লাহ অভিশাপ করেছেন’।[34] অন্য বর্ণনায় এসেছে,لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُسْتَوْشِمَاتِ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ تَعَالَى.  ‘আল্লাহ তা‘আলা ঐসব নারীদের প্রতি অভিশাপ করেছেন, যারা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে দেহে উল্কি (সুচিবিদ্ধ করে চিত্র অংকন) করে বা অন্যের মাধ্যমে করিয়ে নেয়। যারা ভ্রূ উপড়িয়ে চিকন করে, যারা দাঁত সমূহকে শানিত ও সরু বানায়। কারণ তারা আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টির বিকৃতি ঘটায়’।[35]

ঞ. গান-বাজনায় অভ্যস্ত নারী :

কোন কোন নারী গান-বাজনায় আসক্ত। গান শুনে নিজেও গুনগুন করে গাইতে থাকে। কেউবা গানের তালে নাচতে থাকে। গান-বাজনা না শুনে তারা থাকতে পারে না। ইসলামের দৃষ্টিতে এসব নারী নিকৃষ্ট। এদের সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,لَيَكُوْنَنَّ مِنْ أُمَّتِيْ أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّوْنَ الْحِرَ وَالْحَرِيْرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ ‘অবশ্যই আমার পরে এমন কিছু লোক আসবে যারা যেনা, রেশম, নেশাদার দ্রব্য ও গান-বাজনা বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে’।[36] অথচ আল্লাহ তা‘আলা এগুলোকে হারাম করেছেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ تَعَالَى حَرَّمَ الْخَمْرَ وَالْمَيْسِرَ والكُوْبَةَ. ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মদ, জুয়া ও সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন’।[37]

[চলবে]


[1]. তাবারানী, ছহীহাহ হা/৩১৩৭।

[2]. তাবারাণী, ছাগীর; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৮৮৮, ১৯৪৮; ছহীহাহ হা/২৮৮।

[3]. ছহীহুল জামে‘ হা/৭৫২০।

[4]. তিরমিযী হা/২৪১৪; ছহীহাহ হা/২৩১১; ছহীহুহল জামে‘ হা/৬০৯৭।

[5]. তিরমিযী হা/৩৬০; মিশকাত হা/১১২২; ছহীহ আত-তারগীব হা/৪৮৭, সনদ হাসান।

[6]. আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।

[7]. মুসলিম হা/২১২৮; মিশকত হা/৩৫২৪।

[8].  বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা হ/১৩৮৬০; ছহীহাহ হা/১৮৪৯।

[9].  আহমাদ,  ছহীহাহ হা/৫৪২; ছহীহুল জামে‘ হা/৩০৫৮।

[10]. ছহীহ আত-তারগীব হা/১৮৮৭

[11]. তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৩১৮।

[12]. বুখারী হা/৫২৩২; মুসলিম হা/২১৭২; মিশকাত হা/৩১০২ ‘বিবাহ’ অধ্যায়।

[13]. আবুদাউদ হা/৪১০৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৮৪৭; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩২১৫; মিশকাত হা/৪৩৭২।

[14]. বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/৩০৮২; মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/১৪২০; মিশকাত হা/৪৩৭৫, সনদ ছহীহ।

[15]. জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমা ১/১২৬; ত্বাবাকাতুল কুবরা ৮/৪৬, সনদ ছহীহ।

[16]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৩০৮০; ইবনু আবী শায়বা হা/২৫২৮৮; জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমা ১/১২৮, সনদ ছহীহ।

[17]. ইবনু আবী শায়বা হা/২৫২৮৯; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১২১৪২; ইবনুল আছীর, আন-নিহায়াতু ফি গারীবিল আছার ৪/১০; কানযুল উম্মাল হা/৪২০৩১, সনদ ছহীহ।

[18]. ত্বাবাকাতুল কুবরা ৮/২৫২; ইউসুফ কান্ধালুবী, হায়াতুছ-ছাহাবা ৪/১০৩; ইবনু আসাকের,তারীখু দিমাশ্ক ৬০/২৯০; জিলবাবুল মারআতিল মুসলিমা ১/১২৭, ছহীহ।

[19]. আহমাদ হা/২১৮৩৪; মু‘জামুল কাবীর হা/৩৭৬; জিলবাব ১/১৩১, সনদ হাসান।

[20]. মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৩৮৪; বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৮০০, সনদ ছহীহ।

[21]. মুসলিম হা/২১২৮; ছহীহাহ হা/১৩২৬; মিশকাত হা/৩৫২৪, সনদ ছহীহ।

[22]. নাসাঈ হা/৫১২৬; ছহীহুল জামে‘ হা/২৭০১।

[23]. সুনানুল কুবরা হা/৫১৫৮; আবু ইয়া‘লা হা/৬৩৮৫; জিলবাব ১/১২৭, সনদ ছহীহ।

[24]. নাসাঈ হা/৫১৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৫০১; ছহীহাহ হা/১০৯৪।

[25]. মুসনাদ আহমাদ হা/২৬৬১১; ছহীহুল জামে‘ হা/২৭০৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৭১।  

[26]. মুসলিম হা/২১৭১; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৫৯৯; ছহীহাহ হা/৩০৮৬।

[27]. বুখারী হা/৫১৯৫; মুসলিম হা/১০২৬; মিশকাত হা/২০৩১।

[28]. মুহাম্মাদ জামালুদ্দীন আল-কাসেমী, মাহাসীনুত তাবীল, ৭/৩২৪।

[29]. বুখারী, মিশকাত  হা/৪৪২৯।

[30]. আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৬৯, হাদীছ ছহীহ।

[31]. বুখারী, মিশকাত হা/৪৪২৮।

[32]. আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৭০, হাদীছ ছহীহ।

[33]. নাসাঈ হা/২৫৬২; ছহীহাহ হা/১৩৯৭।

[34]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩০; ‘পোশাক’ অধ্যায়।

[35]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩১।

[36]. বুখারী হা/৫৫৯০।

[37]. বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৫০৩, হাদীছ ছহীহ। 





দাঈর সফলতা লাভের উপায় - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত (৮ম কিস্তি) - মুযাফফর বিন মুহসিন
পেরেনিয়ালিজম এবং ইসলাম - প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভূঁইয়া
মানবাধিকার ও ইসলাম (২য় কিস্তি) - শামসুল আলম
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
আল-কুরআনে বিজ্ঞানের নিদর্শন - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
পেরেনিয়ালিজম এবং ইসলাম (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভূঁইয়া
মুহাসাবা - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
পবিত্রতা অর্জন সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আক্বীদা ও আহকামে হাদীছের প্রামাণ্যতা (৪র্থ কিস্তি) - মীযানুর রহমান মাদানী
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল (পূর্বে প্রকাশিতের পর) - আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রাযযাক
হজ্জের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.