জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করা এবং সম্পদ ভোগ করার অনুমতি ও নির্দেশ প্রত্যেক ধর্ম ও সভ্যতায় রয়েছে। কিন্তু অন্য কোন ধর্ম বা সভ্যতায় ইসলামের মত আয়-ব্যয়কে নিয়ম-নীতির ফ্রেমে আবদ্ধ করা হয়নি। ইসলাম একদিকে যেমন হালাল উপায়ে অর্থ উপার্জনের নির্দেশ দিয়েছে, অপরদিকে উপার্জিত অর্থ-সম্পদ বৈধ পথে ব্যয় করারও নির্দেশ দিয়েছে। মানব সমাজে অর্থ ও সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে অপচয় ও অপব্যয় আজ একটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। অথচ ইসলাম এটিকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করেছে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হ’ল।-
ইসরাফ ও তাবযীর-এর অর্থ :
আরবী ‘ইসরাফ’ (إسراف) শব্দের অর্থ হ’ল সীমালঙ্ঘন, অপচয়, অপব্যয়, অমিতব্যয়, বাড়াবাড়ি, মাত্রাতিরিক্ততা, অপরিমিতি।[1] কতিপয় বিদ্বান ‘ইসরাফ’ শব্দকে ব্যয় করা ও খাওয়ার সাথে নির্দিষ্ট করেছেন। বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ শরীফ আলী জুরজানী (৭৪০-৮১৬ হিঃ) ‘ইসরাফ’-এর সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে,
الإسراف هو إنفاق المال الكثير في الغرض الخسيس وتجاوز الحد في النفقة، وقيل: أن يأكل الرجل ما لا يحل له، أو يأكل مما يحل له فوق الاعتدال، ومقدار الحاجة-
‘ইসরাফ হ’ল কোন হীন উদ্দেশ্যে প্রচুর অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করা। কেউ কেউ বলেন, কোন ব্যক্তির অবৈধ বস্ত্ত ভক্ষণ করা অথবা তার জন্য যা কিছু হালাল তা অপরিমিত ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত আহার করা’।[2] এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
كُلُوا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ،
‘তোমরা এগুলির ফল খাও যখন তা ফলবন্ত হয় এবং এগুলির হক আদায় কর ফসল কাটার দিন। আর তোমরা অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না’ (আন‘আম ৬/১৪১)।
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,من أنفق درهما في غير حقه فهو سرف ‘যে ব্যক্তি অনর্থক কাজে এক দিরহামও খরচ করল সেটাই অপচয়’।[3]
আর ‘তাবযীর’ (التبذير) অর্থও অপচয়, অপব্যয়, বাজে খরচ, অমিতব্যয় ইত্যাদি।[4] এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হ’লالقاء البذر وطرحه অর্থাৎ বীজ ছিটানো ও নিক্ষেপ করা। এ থেকে শব্দটি রূপকভাবে অর্থ-সম্পদ অযথা ব্যয় করার অর্থে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।[5]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلَا تُبَذِّرْ تَبْذِيرًا، إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ، ‘তুমি অপব্যয় করবে না, নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই’ (বনী ইসরাঈল ১৭/২৬-২৭)।
ফক্বীহগণ ‘তাবযীর’-কে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে যে,عدم إحسان التصرف في المال وصرفه فيما لا ينبغي، ‘সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার না করা এবং তা অনুচিত কাজে ব্যয় করা’।[6]
অপচয় ও অপব্যয়ের কারণ :
অপচয় ও অপব্যয়ের বহু কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি মৌলিক কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।
১. দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা : ইসলাম মানুষকে বিভিন্নভাবে অপচয় ও অপব্যয় করতে নিষেধ করেছে। অজ্ঞতার বশবর্তী হয়েই মূলত মানুষ অপচয় করে থাকে। কোন ব্যক্তি কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানে পারদর্শী হ’লে তার দ্বারা অপচয় করা সম্ভব হ’ত না। মহান আল্লাহ বলেন,يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ، ‘হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর। তোমরা খাও ও পান কর। কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
অপচয়কারীকে দুনিয়াতে আফসোস ও লজ্জিত হ’তে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلَى عُنُقِكَ وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ فَتَقْعُدَ مَلُومًا مَحْسُورًا، ‘আর তুমি তোমার হাত গলায় বেড়ী করে রেখ না (অর্থাৎ কৃপণ হয়ো না) এবং তাকে একেবারে খুলেও দিয়ো না (অর্থাৎ অপচয় করো না)। তাহ’লে তুমি নিন্দিত ও নিঃস্ব হয়ে যাবে’ (বনী ইসরাঈল ১৭/২৯)।
অপচয়কারীর জন্য আখেরাতে রয়েছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ বলেন,وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ، فِي سَمُومٍ وَحَمِيمٍ، وَظِلٍّ مِنْ يَحْمُومٍ، لَا بَارِدٍ وَلَا كَرِيمٍ، إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُتْرَفِين، ‘আর বাম পাশের দল। কতই না হতভাগ্য তারা! তারা থাকবে উত্তপ্ত বায়ু ও ফুটন্ত পানির মধ্যে। যা শীতল নয় বা আরামদায়ক নয়। ইতিপূর্বে তারা ছিল ভোগ-বিলাসে মত্ত’ (ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৪১-৪৫)।
অপচয়কারীর দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতার ফলাফল হ’ল, বৈধ জিনিস গ্রহণ করতে সে সীমালংঘন করে। আর এটাই তাকে শারীরিক ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। এ কারণেই অলসতা তার উপর চেপে বসে। ওমর (রাঃ) বলেন,إياكم والبطنة في الطعام والشراب فإنها مفسدة للجسد مورثة للفشل مكسلة عن الصلاة وعليكم بالقصد فيهما فإنه أصلح للجسد وأبعد من السرف- ‘তোমরা সীমাতিরিক্ত পানাহার থেকে সাবধান থাক। কেননা অতিরিক্ত পানাহার শরীরের জন্য ক্ষতিকর, অকর্মন্যতা আনয়ন কারী ও ছালাত থেকে অলসকারী। তোমরা পানাহারের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর। কেননা পরিমিত পানাহার শরীরের জন্য উপকারী এবং অপচয় থেকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে’।[7]
২. পারিবারিক প্রভাব : মানুষ শিশুকালে তার পিতা-মাতার আচরণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতা যদি অপচয়কারী হয় তাহ’লে সন্তানও অপচয়ের শিক্ষা গ্রহণ করে। এজন্য এক্ষেত্রে অভিভাবকবৃন্দকে সচেতন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ، ‘প্রত্যেক নবজাতক ফিৎরাতের উপর তথা ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইহূদী বা নাছারা অথবা অগ্নি পূজক বানায়’।[8]
৩. অপচয়কারীদের সাহচর্য : অপচয়ের আরেকটি অন্যতম কারণ হ’ল অপচয়কারীদের সঙ্গ ও সাহচর্য। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ তার সঙ্গীর চরিত্র গ্রহণ করে থাকে। তাই সঙ্গী অপচয়কারী হ’লে তার অন্যান্য সঙ্গীরাও তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ، ‘প্রত্যেক ব্যক্তি তার সঙ্গীর দ্বীন গ্রহণ করে। সুতরাং তোমরা সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবে’।[9]
৪. পরিচিতি ও খ্যাতির আকাঙ্ক্ষা : অপচয়ের আরেকটি কারণ হ’ল সমাজে নিজের খ্যাতির আকাঙ্ক্ষা করা। মানুষ অন্যের সামনে নিজের বড়ত্ব প্রকাশের জন্য তার সম্পদ অকাতরে খরচ করতে থাকে। মূলতঃ এর মাধ্যমে সে অপচয়ে জড়িয়ে পড়ে, যা সম্পূর্ণ হারাম।
৫. বাস্তব জীবনের প্রয়োজন সম্পর্কে উদাসীনতা : অধিকাংশ মানুষ অর্থ-সম্পদ হাতে আসলেই বেহিসাব খরচ করে। সে একটিবারও ভেবে দেখে না যে, দুনিয়ার জীবন সর্বাবস্থায় সমান্তরাল গতিতে চলে না। আজকে হাতে অর্থ আছে কালকে নাও থাকতে পারে। তাই প্রত্যেকের উচিত, আল্লাহর দেয়া প্রতিটি নে‘মত যথাযথভাবে ব্যয় করা। আজকের অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় নির্বাহ করে বাকী অর্থ-সম্পদ ভবিষ্যতের জন্য জমা করে রাখা উচিত। যা তার বিপদের সময় কাজে আসতে পারে।
৬. ক্বিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে উদাসীনতা : অপব্যয়ের আরেকটি কারণ হচ্ছে ক্বিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা ও শাস্তি সম্পর্কে উদাসীনতা। যেকোন ব্যক্তি পরকালের কঠিন পরিণতির কথা চিন্তা করলে সে অবশ্যই অপব্যয় থেকে বেঁচে থাকবে।
* অপচয় ও অপব্যয়ের ক্ষতিকর দিক সমূহ :
অপচয় ও অপব্যয়ের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে, যেগুলো ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি আন্তর্জাতিক ভারসাম্যকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে। অযথা খরচ দুনিয়ার ব্যবস্থাপনাকে যেমন বিশৃঙ্খল করে, তেমনি ব্যক্তির আখেরাতকেও নষ্ট করে। নিম্নে অপচয় ও অপব্যয়ের কিছু ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হ’ল।-
১. অপব্যয় হারাম উপার্জনে উদ্বুদ্ধ করে : অপচয় ও অপব্যয়ের কারণে অনেক সময় মানুষ অর্থসংকটে পড়ে যায়। তখন সংসারের আবশ্যকীয় ব্যয় নির্বাহ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সে হারাম উপার্জনের দিকে ধাবিত হয়। অথচ হারাম খাদ্যে গঠিত দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,كُلُّ جَسَدٍ نَبَتَ مِنْ سُحْتٍ النَّارُ أَوْلَى بِهِ، ‘প্রত্যেক ঐ শরীর যা হারাম দ্বারা গঠিত তার জন্য জাহান্নামই উপযুক্ত স্থান’।[10]
২. অপচয়ের মাধ্যমে পাপের চর্চা হয় : অপচয়ের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে। সে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আল্লাহর অবাধ্যতায় ব্যবহার করে এবং তাঁর আনুগত্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ফলে সে হারাম পথে অর্থ ব্যয় করতে উদ্যত হয়। যেমন মদ, জুয়া, লটারী, ধূমপান সহ সকল ধরনের নেশাকর দ্রব্য পান, যাত্রা, আনন্দমেলা, সিনেমা দেখা ইত্যাদি। এর মাধ্যমে সময় ও অর্থের অপচয়ের সাথে সাথে পাপের চর্চা হয় অবারিত।
উপরন্তু ইসলামের নির্দেশনার বাইরে অতি ভোজনের মাধ্যমে বরং সে নিজেই নিজের ক্ষতিই ডেকে আনে। অথচ ইসলাম অপচয় না করে পরিমিত খাদ্য গ্রহণের সুন্দর নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا مَلأَ آدَمِىٌّ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ حَسْبُ الآدَمِىِّ لُقَيْمَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ غَلَبَتِ الآدَمِىَّ نَفْسُهُ فَثُلُثٌ لِلطَّعَامِ وَثُلُثٌ لِلشَّرَابِ وَثُلُثٌ لِلنَّفَسِ ‘আদম সন্তান তার পেটের তুলনায় অন্য কোন খারাপ পাত্র ভর্তি করে না। মানুষের জন্য তো কয়েক লোকমা খাদ্যই যথেষ্ট, যা তার মেরুদন্ডকে সোজা করে রাখবে। আর যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তাহ’লে পাকস্থলীর এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয় আর এক-তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য রাখবে’।[11]
৩. পরকালে সম্পদ সম্পর্কে হিসাব দিতে হবে : পরকালে মহান আল্লাহর সামনে প্রত্যেককে স্বীয় সম্পদের হিসাব দিতে হবে যে, সম্পদ কোথা থেকে সে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ، ‘ক্বিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসিত না হওয়া পর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় তার রবের নিকট হ’তে একটুকুও নড়বে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, কিভাবে তা অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে? তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হ’তে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় তা ব্যয় করেছে? আর সে যতটুকু জ্ঞানার্জন করেছিল সে অনুযায়ী আমল করেছে কি-না’।[12]
৪. অপচয় ও অপব্যয় সম্পদ বিনষ্টের নামান্তর : অপব্যয় ও অপচয়ের মাধ্যমে সম্পদ নষ্ট হয়। যা আল্লাহ অপসন্দ করেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ كَرِهَ لَكُمْ ثَلاَثًا قِيلَ وَقَالَ، وَإِضَاعَةَ الْمَالِ، وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ، ‘আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপসন্দ করেন- (১) অনর্থক কথাবার্তা বলা (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক প্রশ্ন করা’।[13]
৫. বরকতশূন্য হওয়া ও দারিদ্রের কবলে পড়া : অপচয়-অপব্যয় করার কারণে সম্পদে বরকত থাকে না। ফলে সম্পদ এক সময় নিঃশেষ হয়ে যায়। আর ঐ ব্যক্তি তখন ঋণ করতে থাকে। অবশেষে সে অভাব-অনটনের মধ্যে পতিত হয়।
অপচয় ও অপব্যয় : বাস্তবতা
ইসলামে হারাম খাদ্য গ্রহণ নিষেধ করা হয়েছে এবং খাদ্যের আদব রক্ষার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান যুগে পানাহারে অতিভোজন ও অপচয় যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে খাদ্য ও পানীয়ের কোম্পানীগুলো ভোক্তার অর্থ ধ্বংস করে চলেছে। অতিভোজনের জন্যই দু’দিন পরপর নানা রকমের বিলাসী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। বস্ত্তবাদী ধ্যান-ধারণায় পুষ্ট লোকদের অন্ধ অনুকরণের পিছনে মুসলিমরাও ছুটছে। অপচয় করাটাই যেন তাদের বদ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
ডাস্টবিনগুলোর অবস্থা থেকেই অনুমিত হয় দৈনিক কত খাদ্য আমরা অপচয় করে চলেছি। আর এভাবেই পশু চরিত্র আমাদের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করছে। অথচ গরীব-মিসকীনরা দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে গলদঘর্ম হচ্ছে। ক্ষুধার জ্বালায় তারা ধুঁকে ধুঁকে মরছে। আমরা প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ খাবার অপচয় করি, তা যদি দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হ’ত তাহ’লে অনেক অনাহারীর ক্ষুধার জ্বালা মেটানো সম্ভব হ’ত।
অপচয় ও অপব্যয়ের প্রতিকার :
ইসলামের মূল সৌন্দর্যই হ’ল মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। ইসলাম যেভাবে অপচয়কে নিষেধ করেছে তেমনি কৃপণতাকেও নিষেধ করেছে। এজন্যই পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে মুসলমানদের পানাহার, পোষাক-পরিচ্ছদ, বাসস্থান, সৌন্দর্য, যোগাযোগের মাধ্যম, বিবাহ-শাদী সবকিছুতেই সীমারেখা চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে। নিম্নে অপচয় ও অপব্যায়ের প্রতিকারে কতিপয় প্রস্তাবনা পেশ করা হ’ল।-
১. মধ্যপন্থা অবলম্বন : এটি হ’ল অপচয় ও কৃপণতার মাঝামাঝি অবস্থা। কিন্তু অধিকাংশ লোক এই নীতির প্রতিফলন ঘটায় না। অথচ ইসলাম মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদার বান্দাদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বলেন,وَالَّذِينَ إِذَا أَنْفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَلِكَ قَوَامًا ‘তারা যখন ব্যয় করে, তখন অপব্যয় করে না বা কৃপণতা করে না। বরং তারা এতদুভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থায় থাকে’ (ফুরকান ২৫/৬৭)।
মহানবী (ছাঃ) বলেন,كُلُوا وَاشْرَبُوا وَتَصَدَّقُوا وَالْبَسُوا غَيْرَ مَخِيلَةٍ وَلاَ سَرَفٍ ‘তোমরা খাও, পান কর, দান-ছাদাক্বাহ কর এবং পরিধান কর, তবে অহংকার ও অপচয় ব্যতীত’।[14]
২. সৌন্দর্য : সৌন্দর্য অবলম্বন করা অবশ্যই বৈধ। তবে এজন্য অপচয় করা বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,يَا بَنِي آدَمَ خُذُوْا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلَا تُسْرِفُوْا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ، ‘হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর। তোমরা খাও ও পান কর। কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
নবী করীম (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ يُحِبَّ أَنْ يُرَى أَثَرُ نِعْمَتِهِ عَلَى عَبْدِهِ، ‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে তাঁর দেয়া নে‘মতের প্রভাব দেখতে ভালবাসেন’।[15] তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষণীয় যে, তা যেন সীমা ছাড়িয়ে না যায়। যেন অপচয়ের পর্যায়ে না পড়ে।
৩. অহংকার না করা : অহংকার প্রদর্শনের জন্য সম্পদ ব্যয়কে ইসলাম অনুমোদন করে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْأَذَى كَالَّذِي يُنْفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلْدًا لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِمَّا كَسَبُوا وَاللهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ-
‘হে বিশ্বাসীগণ! খোটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানগুলিকে বিনষ্ট করো না। সেই ব্যক্তির মত, যে তার ধন-সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর জন্য এবং সে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে না। ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ প্রস্তরখন্ডের মত, যার উপরে কিছু মাটি জমে ছিল। অতঃপর সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হ’ল ও তাকে পরিষ্কার করে রেখে গেল। এভাবে তারা যা কিছু উপার্জন করে, সেখান থেকে কোনই সুফল তারা পায় না। বস্ত্ততঃ আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৬৪)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لاَ يَنْظُرُ اللهُ إِلَى مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ ‘যে ব্যক্তি অহংকারবশত তার কাপড়কে (টাখনুর নীচে) ঝুলিয়ে পরে (ক্বিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না’।[16] আর অপচয় ও অপব্যয়ের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অহংকার। কেননা সাধারণতঃ অহংকার বশেই মানুষ প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্যয় করে। যা অপচয়ের শামিল। কাজেই অহংকার পরিত্যাগ করতে পারলে অপচয় থেকে বেঁচে থাকাও সক্ষম হবে।
৪. বিলাসবহুল জীবন যাপন না করা : দুনিয়ার চাকচিক্য ও বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে না দেওয়া। বিলাসিতাকে ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَإِذَا أَرَدْنَا أَنْ نُهْلِكَ قَرْيَةً أَمَرْنَا مُتْرَفِيْهَا فَفَسَقُوْا فِيْهَا فَحَقَّ عَلَيْهَا الْقَوْلُ فَدَمَّرْنَاهَا تَدْمِيْرًا، ‘যখন আমরা কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি, তখন আমরা সেখানকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নির্দেশ দেই। তখন তারা সেখানে পাপাচারে মেতে ওঠে। ফলে তার উপর শাস্তি অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আমরা ওটাকে বিধ্বস্ত করে দেই’ (বনী ইসরাঈল ১৭/১৬)।
৫. দুনিয়া বিমুখতা : এটি একটি প্রশংসনীয় গুণ। খুব কম মানুষই এই গুণে গুণান্বিত হ’তে পারে। নবী-রাসূলগণ এ গুণের অধিকারী ছিলেন। আর এ গুণের অধিকারী হ’তে হ’লে অবশ্যই নিজের চাহিদাকে সংবরণ করতে হয় এবং নিজের উপরে অপরকে প্রাধান্য দিতে হয়। আর অর্থনীতির ক্ষেত্রে তা অনেক কল্যাণকর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَالَّذِيْنَ تَبَوَّءُوْا الدَّارَ وَالْإِيْمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّوْنَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُوْنَ فِيْ صُدُوْرِهِمْ حَاجَةً مِمَّا أُوتُوْا وَيُؤْثِرُوْنَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوْقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ، ‘আর যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে এ নগরীতে বসবাস করত এবং ঈমান এনেছিল। যারা মুহাজিরদের ভালবাসে এবং তাদেরকে (ফাই থেকে) যা দেওয়া হয়েছে, তাতে তারা নিজেদের মনে কোনরূপ আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে না। আর তারা নিজেদের উপর তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়, যদিও তাদেরই রয়েছে অভাব। বস্ত্ততঃ যারা হৃদয়ের কার্পণ্য হ’তে মুক্ত, তারাই সফলকাম’ (হাশর ৫৯/৯)।
৬. জীবিকা উপার্জনে সতর্কতা অবলম্বন করা : জীবিকা উপার্জন ভালভাবে বুঝে শুনে করা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, কিছু সংখ্যক আনছার ছাহাবী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট কিছু চাইলে তিনি তাদের দিলেন। পুনরায় তারা চাইলে তিনি তাদের দিলেন। এমনকি তার নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, مَا يَكُونُ عِنْدِى مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ أَدَّخِرَهُ عَنْكُمْ، وَمَنْ يَسْتَعْفِفْ يُعِفَّهُ اللهُ، وَمَنْ يَسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللهُ، وَمَنْ يَتَصَبَّرْ يُصَبِّرْهُ اللهُ، وَمَا أُعْطِىَ أَحَدٌ عَطَاءً خَيْرًا وَأَوْسَعَ مِنَ الصَّبْرِ. ‘আমার নিকট যে সম্পদ থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখি না। তবে যে যাচ্ঞা থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন। আর যে পরমুখাপেক্ষী হয় না, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্যধারণ করে আল্লাহ তাকে ছবর দান করেন। ছবরের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোন নে‘মত কাউকে দেওয়া হয়নি’।[17]
সুতরাং মনের দিক থেকে অল্পে তুষ্ট থাকা, কারো নিকটে হাত না পাতা, ধৈর্যধারণ করা কাম্য। আর শারীরিক দিক থেকে কাম্য হ’ল কাজ করে হালাল পথে জীবিকা উপার্জন করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,لأَنْ يَأْخُذَ أَحَدُكُمْ حَبْلَهُ فَيَأْتِىَ بِحُزْمَةِ الْحَطَبِ عَلَى ظَهْرِهِ فَيَبِيعَهَا فَيَكُفَّ اللهُ بِهَا وَجْهَهُ، خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَسْأَلَ النَّاسَ أَعْطَوْهُ أَوْ مَنَعُوْهُ، ‘তোমাদের কেউ তার রশি নিয়ে জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করে পিঠে বহন করে বাযারে যায়, তারপর সেখানে তা বিক্রি করে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাকে অমুখাপেক্ষী করবেন, এটা মানুষের কাছে তার হাত পাতার চেয়ে উত্তম। কারণ মানুষ তাকে কিছু দিতেও পারে, নাও দিতে পারে’।[18] এজন্যই মক্কার লোকেরা ব্যবসা করত, আর মদীনার লোকেরা চাষাবাদ করত।
৮. নিজস্ব আয়ের মধ্যেই ব্যয় সীমাবদ্ধ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেন,فِرَاشٌ لِلرَّجُلِ وَفِرَاشٌ لاِمْرَأَتِهِ وَالثَّالِثُ لِلضَّيْفِ وَالرَّابِعُ لِلشَّيْطَانِ ‘একটি বিছানা স্বামীর জন্য, আরেকটি স্ত্রীর জন্য, তৃতীয়টি মেহমানের জন্য আর চতুর্থটি শয়তানের জন্য’।[19] এর উদ্দেশ্য হ’ল খরচ কম করা, যাতে করে ঋণ করতে অন্যের দারস্থ হ’তে না হয়। নিজের সম্পদ দ্বারাই যেন নিজের ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হয়।
৯. দানের অভ্যাস করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السُّفْلَى، فَالْيَدُ الْعُلْيَا هِىَ الْمُنْفِقَةُ، وَالسُّفْلَى هِىَ السَّائِلَةُ ‘নিচের হাতের চেয়ে উপরের হাত উত্তম। উপরের হাত হচ্ছে দাতা আর নিচের হাত হচ্ছে গ্রহীতা’।[20] হাদীছের উদ্দেশ্য হ’ল, সামাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করা, যাতে দানকারীর সংখ্যা বেশী হয় এবং গ্রহণকারীর সংখ্যা হ্রাস পায়।
এছাড়া পরকালে হিসাব-নিকাশ সম্পর্কে চিন্তা করা, রাসূল (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের জীবন পরচালনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হওয়া, অপচয়কারীদের সাহচর্য পরিহার করা এবং মৃত্যু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে অপব্যয় ও অপচয় থেকে বিরত থাকা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
অপচয়ের বদঅভ্যাস আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। আমরা হরহামেশা এ জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়ে আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হচ্ছি। অথচ ইসলাম অপচয় ও অপব্যয়কে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছে। কোন মুসলিম কখনো তার অর্থ-সম্পদের সামান্য অংশও অপচয় কিংবা অপব্যয় করতে পারে না। অপচয়-অপব্যয় বন্ধ করতে হ’লে, শুরু করতে হবে নিজ থেকেই। ব্যক্তি যখন নিজে অপচয় ও অপব্যয় না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করে পরকালে জবাবদিহিতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে, তখনই কেবল অপচয় ও অপব্যয় বন্ধ হ’তে পারে, অন্যথা নয়। তাই ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত সকল স্তরেই এই অপচয় ও অপব্যয় থেকে বিরত থাকা আবশ্য কর্তব্য। আললাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন-আমীন!
মুহাম্মাদ আকবার হোসাইন
সহকারী অধ্যাপক, আরবী বিভাগ, হামিদপুর আল-হেরা কলেজ, যশোর।
[1]. ড. মুহাম্মাদ ফজলুর রহমান, আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা : রিয়াদ প্রকাশনী, ৫ম সংস্করণ, ২০০৮), পৃঃ ৭৮।
[2]. শরীফ আলী জুরজানী, কিতাবুত তা‘রীফাত (বৈরূত: দারুল কিতাবিল আরাবী, ১৪০৫ হি.), পৃঃ ৩৮।
[3]. ইমাম কুরতুবী, আল-জামি‘ লি আহকামিল কুরআন (বৈরূত : দারু ইহয়াইত তুরাছিল আরাবী, ১৯৮৫ খ্রি./১৪০৫ হি.), ১৩তম খন্ড, পৃঃ ৭৩।
[4]. আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান, পৃঃ ২০২।
[5]. রাগিব ইস্পাহানী, আল-মুফরাদাত, পৃঃ ৪০।
[6]. ইমাম নববী, তাহরীরু আলফাযিত তানবীহ (দামেশক : দারুল কলম, ১৪০৮ হি.), পৃঃ ২০০।
[7]. ইবনু মুফলিহ আল-মাক্বদিসী, আল-আদাবুশ শারইয়্যাহ (রিয়াদ : মাকতাবাতুর রিয়াদ আল-হাদীছাহ, ১৩৯১ হি.), ২য় খন্ড, পৃঃ ২০১।
[8]. বুখারী হা/১৩৮৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৫৫৯।
[9]. আবুদাঊদ হা/৪৮৩৩, ‘আদাব’ অধ্যায়।
[10]. ছহীহুল জামে‘ হা/৪৫১৯।
[11]. তিরমিযী হা/২৩৮০; ইবনু মাজাহ হা/৩৩৪৯; ছহীহাহ হা/২২৬৫।
[12]. তিরমিযী হা/২৪১৬; মিশকাত হা/৫১৯৭; ছহীহাহ হা/৯৪৬।
[13]. বুখারী হা/১৪৭৭; মুসলিম হা/৫৯৩।
[14]. আহমাদ হা/৬৬৯৫, সনদ হাসান।
[15]. তিরমিযী হা/২৮১৯; মিশকাত হা/৪৩৫০; ছহীহুল জামে‘ হা/১৭১২।
[16]. বুখারী হা/৫৭৮৩, ৫৭৮৮ ‘পোষাক’ অধ্যায়।
[17]. বুখারী হা/১৪৬৯, ‘যাকাত’ অধ্যায়; মিশকাত হা/১৮৪৪।
[18]. বুখারী হা/১৪৭১।
[19]. মুসলিম হা/৫৫৭৩।
[20]. বুখারী হা/১৪২৯, ‘যাকাত’ অধ্যায়; মিশকাত হা/১৮৪৩।