গত কয়েক মাস ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন যেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানের মানুষ খাবার পানির তীব্র সঙ্কটে রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ। এমনকি অনেক স্থানে দৈনন্দিন ব্যবহারের পানিও পাচ্ছে না মানুষ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে নানা প্রচেষ্টা চলছে।

গত বছর ২০২০ সালে খাগড়াছড়ির জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল একটি বেসরকারী টেলিভিশন। ‘পানি বেঁচে জমিদার’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি দেখে আঁৎকে উঠা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। আসলে পাহাড়ের মানুষের পানি সঙ্কট মোকাবিলায় আসা কোটি কোটি টাকা কিভাবে হরিলুট হচ্ছে তার চিত্রই ফুটে উঠেছে প্রতিবেদনটিতে। এই অবস্থা কি শুধু খাগড়াছড়ির? বাকী দুই যেলাতে কি এই ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না? সেটা বিশ্বাস করা যায় কীভাবে? কারণ, বান্দরবান এবং রাঙামাটির বাসিন্দাদেরও একই সঙ্কট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সেখানেও তো পানির জন্য হাহাকার চলছে।

সম্প্রতি পানি সঙ্কটের সবচেয়ে করুণ চিত্রগুলি গণমাধ্যমে এসেছে আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও দীঘিনালা থেকে। একটি পাতকুয়া বা একটি টিউবওয়েলের পাশে শতাধিক পানির কলসির লাইন সত্যিই বেদনাদায়ক। এর প্রকৃত কারণ বের করতে হলে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন। তবে আপাত দৃষ্টিতে যা দেখা যায়, তাতে ধারণা করা যায় যে, নিম্নোক্ত কারণ সমূহের ফলে পাহাড়ে পানির সঙ্কট বাড়ছে। যেমন (১) পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়গুলি এখন অনেকটাই বৃক্ষহীন, যেদিকেই তাকানো যায় ন্যাড়া পাহাড় চোখে পড়ে। কোন কোনো স্থান থেকে অবাধে তোলা হচ্ছে পাথর। অথচ পাহাড়ের পরিবেশের আর্দ্রতা রক্ষায় বৃক্ষের কোন বিকল্প নেই। আর ঝর্ণার উৎস পাথরও আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। এর ফলে এখানকার পরিবেশ আজ চরম বিপর্যয়কর হয়ে উঠছে। তাই বর্ষায় অতি বৃষ্টি, গ্রীষ্মে অতি খরা পাহাড়ের নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। বাস্তবভিত্তিক ব্যাপক পরিকল্পনা ছাড়া এর থেকে উত্তরণের কোন উপায় নেই। (২) পাহাড়ের পানির সবচেয়ে বড় উৎস কাপ্তাই লেকও আজ বিপন্ন। বর্ষায় পাহাড়ী ঢলের সাথে আসা বিপুল পলিমাটি তলায় জমা হওয়ার কারণে লেকের গভীরতা প্রতিনিয়তই কমছে। ফলে লেকের পানি ধারণ ক্ষমতাও কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এই অবস্থায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প সচল রাখতে শুষ্ক মৌসুমে লেকের তলা পর্যন্ত শুকিয়ে ফেলতে হচ্ছে। এটাও এর চারপাশের পাহাড় বা সমভূমির স্বল্প গভীরের পানির স্তর মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আরও একটি কারণ হ’তে পারে। তাই কাপ্তাই লেকের গভীরতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। (৩) পাহাড়ের বিভিন্ন ঝর্ণা বা নালাগুলির পাশে বাঁধ দিয়ে বর্ষার পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহারের পরিকল্পনাও করা যেতে পারে। (৪) অবাধে পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। (৫) ব্যাপক ভিত্তিতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পাহাড়গুলিকে আবারও সবুজে ঢেকে দিতে হবে। (৬) রাঙ্গামাটি যেলার কাপ্তাই উপযেলা সহ পার্বত্য যেলাগুলির যেসব স্থানে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কোন ডীপ টিউবওয়েল বসেনি এবং যেখানকার মানুষ পানির অভাবে হাহাকার করছে, সেসব স্থানে অনতিবিলম্বে ডীপ টিউবওয়েল বসাতে হবে। (৭) সর্বোপরি সরকারী পরিকল্পনা এবং বরাদ্দের সুফল পেতে হলে ‘পানি বেঁচে জমিদার’ হওয়া চোরদের সরাতে হবে। কেননা দুর্নীতিবাজদের মাধ্যমে লক্ষ-কোটি টাকা খরচ করেও সুফল পাওয়ার আশা করা যায় না।

[উক্ত পরামর্শগুলি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন বলে আশা করি (স.স.)]।






স্পেনে ভূমিধস হ’লে আটলান্টিক জুড়ে সুনামির আশঙ্কা (ধ্বংস হয়ে যেতে পারে নিউইয়র্ক)
বিশ্বে ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ তৃতীয়
দেশে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, কমেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার
সাম্প্রতিক ভয়াবহ যত ভূমিকম্প
রাশিয়ায় ‘ঈশ্বর নেই’ বলায় জেলের মুখে!
করোনায় আটকেপড়া ছেলেকে আনতে স্কুটিতে ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন মা
চীনে মুসলিম শিশুদের বিশ্বাসের পরিবর্তনে পরিবার থেকে আলাদা করা হচ্ছে
মেডিকেলে চান্স পেল ৫ মাস বয়সে পিতৃহারা দরিদ্র পরিবারের জমজ তিন ভাই
বিশ্বজুড়ে তোলপাড়
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০৮ কোটি টাকা চুরি
হেফাজতে ইসলামের নতুন আমীর মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী
৩ থেকে ৭ দিনে যানজট মুক্ত হবে ঢাকা
১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ নির্মিত হ’ল সিঙ্গাপুরে
আরও
আরও
.