ভারতীয় প্রেস কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কেন্ডে কাটজু বলেছেন, গরু একটি প্রাণী মাত্র। আর কোন প্রাণী কখন মানুষের মা হ’তে পারে না। সম্প্রতি গরুর গোশত খাওয়ার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের দাদরিতে মুহাম্মাদ আখলাক নামে এক মুসলিম বৃদ্ধকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। কাটজু বলেন, গোটা বিশ্বের মানুষ গরুর গোশত খায়। শুধু আমাদের দেশেই এটা নিয়ে বিতর্ক হয়। আমি নিজে গরুর গোশত খাই। কই আমার তো কোনও ক্ষতি হয়নি। গরুর গোশত খেলে কেউ খারাপ হয়ে যায় না। আমি ভবিষ্যতেও গরুর গোশত খাব। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় দুঃখের ঘটনা হ’ল কেবল গুজবের জন্যই ঐ বৃদ্ধকে পিটিয়ে মারা হয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত। উল্লেখ্য, বহু হিন্দু গরুকে মায়ের দৃষ্টিতে দেখে থাকে। যদিও কথিত এই মাকে তার নিজের ঘরে স্থান না দিয়ে গোয়াল ঘরেই রাখে।
তবে এরূপ নিষ্ঠুরতার পরও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দাবী জানিয়ে নিহত আখলাকের ছেলে মুহাম্মাদ সরতাজ এখন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। পিতার নির্মম মৃত্যু এবং ভাই মারাত্মকভাবে আহত হওয়া সত্ত্বেও তিনি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে কোন তিক্ততার প্রকাশ না ঘটিয়ে বরং দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের আদর্শ কখনও পরস্পরের সঙ্গে শত্রুতার শিক্ষা দেয় না। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে একটি স্থানীয় মন্দিরে ঘোষণা করা হয়, আখলাকের পরিবার গরুর গোশত খেয়েছে। এরপরই আখলাকের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে টানতে টানতে বের করে নিয়ে যায় প্রায় ২০০ জন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর পিটিয়ে খুন করা হয় আখলাককে।
[যারা মেরেছে তারা গরুর চাইতে অধম। যাদের কাছে মানুষের চাইতে গরুর মূল্য বেশী, তারা মানুষ নামের অযোগ্য। আমরা ওদের ঘৃণা করি। ভারতের মোদি সরকার গরু সরকার না হয়ে মানুষ সরকার হবেন, এটাই আমরা কামনা করি (স.স.)]