
নওদাপাড়া, রাজশাহী ১৩ ও ১৪ই ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতি ও শুক্রবার : ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী ৩৫তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা ২০২৫ রাজশাহী যেলার পবা উপযেলাধীন এয়ারপোর্ট থানার নিকটবর্তী ময়দানে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফালিল্লা-হিল হাম্দ। ১ম দিন বাদ আছর তাবলীগী ইজতেমা’২৫-এর সভাপতি মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব-এর উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৫ ফেব্রুয়ারী শনিবার ফজর ছালাতের পর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলামের সমাপনী ভাষণ ও বিদায়ী দো‘আ পাঠের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হয়। ইজতেমায় প্রায় ৫০ জন আলোচক পূর্ব নির্ধারিত বিষয়ের উপর দলীলভিত্তিক বক্তব্য পেশ করেন।
এবারের ইজতেমায় দেশের সরকার ও প্রশাসনের নিকটে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা সমূহ পেশ করা হয়-
(১) ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হিসাবে বাংলাদেশে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। (২) দল ও প্রার্থীবিহীন নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। (৩) শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজের চলমান সিলেবাস থেকে নাস্তিক্যবাদ, বিবর্তনবাদ, লিঙ্গসমতাসহ সকল প্রকার ইসলাম বিরোধী বিষয়সমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
(৪) ইসলামী শরী‘আত অনুযায়ী দেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দেশের বিচার ব্যবস্থায় ইসলামী আইন কার্যকর করতে হবে। (৫) সূদভিত্তিক অর্থব্যবস্থা বাতিল করে ন্যায় ও ইনছাফভিত্তিক ইসলামী অর্থনীতি চালু করতে হবে। (৬) বিভিন্ন সরকারী অফিসে দুর্নীতি ও ঘুষ-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে এবং এর সাথে জড়িতদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। (৭) সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। (৮) দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। (৯) এ সম্মেলন ফিলিস্তীনে ইস্রাঈলী ও পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সেখানে নিহত-আহত মযলুম ফিলিস্তীনীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে। সেই সাথে গাযা থেকে ফিলিস্তীনীদের চূড়ান্তভাবে উচ্ছেদের পশ্চিমা নীল-নকশার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এই নির্মম পৈশাচিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার, ওআইসিসহ বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানাচ্ছে। (১০) দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী সকল বৈদেশিক চুক্তি বাতিল করতে হবে এবং সীমান্তে দৈনন্দিন বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ করতে হবে। (১১) ফারাক্কা ও গজলডোবা বাঁধের মাধ্যমে পদ্মা ও তিস্তার পানি প্রত্যাহারের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গকে শুকিয়ে মারার ভারতীয় চক্রান্তের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (১২) দেশের বিভিন্ন স্থানে আহলেহাদীছ মসজিদ ও মাদ্রাসা ভাংচুর করা, আহলেহাদীছ মসজিদ নির্মাণে বাধা দেয়া এবং আহলেহাদীছ সম্মেলন-সমাবেশকে বন্ধ করার জন্য যারা এখনও পর্যন্ত অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সাথে পিসটিভি সহ ইসলামপন্থী মিডিয়া ও এনজিওগুলোকে স্বাধীনভাবে ইসলাম প্রচারের সুযোগ দিতে হবে।
(বিস্তারিত রিপোর্ট পরবর্তী সংখ্যায়)।