সিসাদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। বর্তমানে দেশে সাড়ে তিন কোটির অধিক শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কৌশল প্রণয়নে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, সাধারণত ভারী ধাতু বিশেষ করে সিসা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ওপর বেশী প্রভাব ফেলে। এই ক্ষতি চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। দুর্ভাগ্যবশত শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিকাশের সময়সীমা কমে যায় এবং প্রায় সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে হৃদরোগ দেখা দেয়, আর গর্ভবতী নারীদের অনাগত শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সুস্পষ্ট আইন ও সঠিক পদক্ষেপ দ্বারা এই দূষণ প্রতিরোধযোগ্য।
গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআর এবং (আইসিডিডিআরবি) সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ কয়েকটি যেলায় ৯৮০ জন এবং ঢাকায় ৫০০ শিশুকে পরীক্ষা করে সবার রক্তে সিসার উপস্থিতি পেয়েছে। এসব নমুনার মধ্যে চার যেলায় ৪০% এবং ঢাকায় ৮০% নমুনায় প্রতি ডেসিলিটার রক্তে পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশী সিসা পাওয়া যায়।
শিশুদের রক্তে সিসার উৎস হ’ল ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সোলার প্যানেলের ব্যাটারি। এসব ব্যাটারি মেয়াদ শেষে নষ্ট হ’লে তা পুড়িয়ে সেখান থেকে সিসা বের করে নতুন করে ব্যাটারিতে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু সিসা বের হয়ে প্রকৃতিতে মিশে যায়। যা আবার খাবারের সঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়া দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন পরিবেশে ভারী ধাতুর দূষণ বাড়ার কারণে শিশুদের বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেড়ে চলেছে।