উচ্চ আদালত থেকে খালাসের আদেশ হ’লেও সেই আদেশ কারাগারে না পৌঁছানোয় ১৩ বছর কারাভোগ করে অবশেষে বের হ’ল সাতক্ষীরার জবেদ আলী (৫৯)। গত ১৬ই মার্চ বুধবার বিকালে চাঞ্চল্যকর এই আদেশ জজ আদালত থেকে কারাগারে পৌঁছানোর পর যথাযথ কার্যক্রম শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আদালতের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালে সাতক্ষীরার তালা উপযেলার মানিকহার গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে মেয়ে লিলিকে (৮) বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে শ্যালক কাশেম সরদার কর্তৃক মামলা করার পর গ্রেফতার হয় জবেদ আলী। পুলিশ এই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করে। পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত যেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০০১ সালে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। জবেদ আলী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিলে ২০০৩ সালে তিনি খালাস পান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিম্ন আদালতে পৌঁছলেও দীর্ঘ ১৩ বছরে তা যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় এবং কারাগারে না পৌঁছানোয় মুক্তি পায়নি কৃষক জবেদ আলী।

অতঃপর সম্প্রতি সাতক্ষীরা জজ আদালতের আইনজীবী যিল্লুর রহমান-২ তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জবেদ আলীর বিষয়টি জানতে পেরে তার মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত যেলা জজ আশরাফুল হক শুনানি শেষে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন। এসময় আদালত বলেন, ‘যার ভুল অথবা অবহেলার কারণে তাকে এতদিন কারাভোগ করতে হ’ল আল্লাহ তাদেরও বিচার করবেন’।

মুক্তির পর জবেদ আলী বলেন, পৃথিবীতে কোনও বাবা তার মেয়েকে হত্যা করেছে এমনটা আমার জানা নেই। আমার সঙ্গে যে ভুল করা হয়েছে অন্য কোন মানুষের সঙ্গে যেন এমন আর না হয়। আমি কাউকে দোষারোপ করবো না। আল্লাহর উপর বিচার ছেড়ে দিলাম।

[আমরা আইনজীবী জনাব যিল্লুর রহমান-২-কে তাঁর সহৃদয়তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ যেন তাকে ইহকালে ও পরকালে এর উত্তম পুরস্কার দান করেন। সেই সাথে অন্যান্য আইনজীবী ও বিচারকগণকে গরীব বিচারপ্রার্থীদের প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল হওয়ার আহবান জানাচ্ছি (স.স.)]







বিষয়সমূহ: সমাজ-সংস্কার
আরও
আরও
.