ভূমিকা : আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। আর মানুষের কল্যাণেই পৃথিবীর অন্য সবকিছু সৃষ্টি করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৯)। সেই সাথে মানব দেহের জন্য যা উপকারী তা হালাল করা হয়েছে এবং যা ক্ষতিকর তা হারাম করা হয়েছে।

ঘোড়ার মাধ্যমে যেমন যুদ্ধ করা যায় তেমনি বাহন হিসাবেও ব্যবহার করা হয়। আবার ঘোড়াকে মনোরঞ্জনের জন্যও পোষা হয়। আর এর গোশত খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করার মাধ্যমে আমিষের চাহিদা মিটানো যায়। তবে ঘোড়া যুদ্ধে ব্যবহার হওয়ায় রাসূল (ছাঃ) সাময়িক এর গোশত খেতে নিষেধ করেছিলেন। ৭ম হিজরী সনে আবার ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দেন। ফলে ছাহাবায়ে কেরাম ঘোড়ার গোশত খেয়েছেন। বিভিন্ন হাদীছ গ্রন্থে ১৮টি হাদীছ বর্ণিত হওয়ায় মুহাদ্দিছগণ এর গোশতকে হালাল গণ্য করেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের পাবনা যেলার বেড়া উপযেলায় কয়েকজন লোক মিলে ঘোড়া যবহ করে গোশত খেলে এলাকার কিছু মানুষ ঘোড়ার গোশত হালাল না হারাম এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। এমনকি ঘোড়ার গোশত খাওয়া যুবকদের ঘর-বাড়ি ছাড়া করে। সেজন্য ঘোড়ার গোশত হালাল বা হারাম হওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনার দাবী রাখে। নিম্নে এ বিষয়ে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর আলোকে আলোচনা করা হ’ল।-

কুরআন থেকে দলীল : মুসলমানদের জন্য কেবল সে সকল প্রাণী হারাম যেগুলো হারাম হওয়ার বিষয়ে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) নির্দেশনা দিয়েছেন কিংবা শরী‘আতে হারাম হওয়ার যে সূত্র বর্ণিত হয়েছে তার আওতাভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। তদ্ভিন্ন সকল প্রাণীর গোশত মুসলমানদের জন্য হালাল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,قُلْ لَا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنْزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللهِ بِهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَإِنَّ رَبَّكَ غَفُورٌ رَحِيمٌ- ‘তুমি বলে দাও, আমার নিকট যেসব বিধান অহি করা হয়েছে, সেখানে ভক্ষণকারীর জন্য আমি কোন খাদ্য হারাম পাইনি যা সে ভক্ষণ করে, কেবল মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত ও শূকরের গোশত ব্যতীত। কেননা এগুলি নাপাক বস্ত্ত এবং ঐ প্রাণী ব্যতীত, যা অবাধ্যতা বশে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। তবে যে ব্যক্তি ক্ষুধায় কাতর হয়ে বাধ্যগত অবস্থায় (জীবন রক্ষার্থে) তা খায় কোনরূপ আকাঙ্ক্ষা ও সীমালংঘন ছাড়াই, (তার ব্যাপারে) আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আন‘আম ৬/১৪৫)

হাদীছ থেকে দলীল : ঘোড়ার গোশত খাওয়ার ব্যাপারে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে এখানে কয়েকটি উল্লেখিত হ’ল।-

1- عَنْ أَسْمَاءَ- قَالَتْ: نَحَرْنَا فَرَسًا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَكَلْنَاهُ وَنَحْنُ بِالْمَدِينَةِ-

(১) আসমা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া যবেহ করলাম এবং সেটি খেলাম। আর আমরা তখন মদীনায় ছিলাম।[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে,فَأَكَلْنَاهُ نَحْنُ وَأَهْلُ بَيْتِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘উক্ত গোশত আমরা খেলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পরিবারের সদস্যরাও খেয়েছিলেন।[2] আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে, আসমা (রাঃ) বলেন,أَكَلْنَا لَحْمَ فَرَسٍ لَنَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‘আমরা রাসূলুল্লাহর যুগে আমাদের একটি ঘোড়ার গোশত খেয়েছিলাম।[3] ব্যাখ্যা- কারগণ উল্লেখ করেন যে, মদীনায় হিজরতের পর ঘোড়ার গোশত খাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে কেউ যেন বলতে না পারে যে, জিহাদ ফরযের পর ঘোড়ার গোশত হারাম করা হয়েছে। আর নবীর যুগে বাক্যটি বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে কেউ যেন বলতে না পারে যে, ছাহাবায়ে কেরামের গোশত খাওয়ার বিষয়টি রাসূল (ছাঃ) জানতেন না।[4]

2- عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ، وَأَذِنَ فِي لُحُومِ الْخَيْلِ-

(২) জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের (যুদ্ধের) দিন গৃহপালিত গাধার গোশত হারাম করেছেন এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।[5] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, وَرَخَّصَ فِى الْخَيْلِ ‘আর ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে অনুমতি দেওয়া হয়েছে’।[6]

3- عن جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ، يَقُولُ: أَكَلْنَا زَمَنَ خَيْبَرَ الْخَيْلَ، وَحُمُرَ الْوَحْشِ، وَنَهَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْحِمَارِ الْأَهْلِيِّ،

(৩) জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বারে আমরা ঘোড়া এবং বন্য গাধার গোশত খেয়েছি। পক্ষান্তরে নবী করীম (ছাঃ) আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন’।[7]

4- عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ: ذَبَحْنَا يَوْمَ خَيْبَرَ الْخَيْلَ، وَالْبِغَالَ، وَالْحَمِيرَ، فَنَهَانَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ البِغَالِ، وَالْحَمِيرِ، وَلَمْ يَنْهَنَا عَنِ الْخَيْلِ-

(৪) জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বারের দিন আমরা ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা যবহ করেছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে খচ্চর ও গাধার গোশত খেতে বারণ করলেন, কিন্তু ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেননি।[8] আর খায়বারের যুদ্ধ হয়েছিল সপ্তম হিজরীতে। এরপরে যদি ঘোড়ার গোশত হারাম করা হ’ত তাহ’লে ছাহাবায়ে কেরাম অবশ্যই বর্ণনা করতেন।

ঘোড়ার গোশত সম্পর্কে তাবেঈগণের অভিমত : তাবেঈগণ থেকে ঘোড়ার গোশত হালাল হওয়ার ব্যাপারে বহু বর্ণনা পাওয়া যায়। তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।

1- عَنِ الْحَسَنِ قَالَ: كَانَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَأْكُلُونَ لُحُومَ الْخَيْلِ فِي مَغَازِيهِمْ-

(১) হাসান বছরী হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ যুদ্ধকালীন সময়ে ঘোড়ার গোশত খেতেন।[9]

2- عَنْ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: نَحَرَ أَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ فَرَسًا فَقَسَمُوهُ بَيْنَهُمْ

(২) ইবরাহীম নাখঈ বলেন, আব্দুল্লাহর সাথীরা ঘোড়া যবহ করেছিলেন এবং এর গোশত নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নিয়েছিলেন।[10]

3- عَنْ عَطَاءٍ قَالَ: بَلَغَنَا أَنَّ أَصْحَابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوا يَأْكُلُونَ الْخَيْلَ-

(৩) আত্বা বিন রাবাহ (রহঃ) বলেন, আমাদের নিকট হাদীছ পৌঁছেছে যে, নবী করীম (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ ঘোড়ার গোশত খেতেন।[11]

4- عَنْ عَطَاءٍ قَالَ لَمْ يَزَلْ سَلَفُكَ يَأْكُلُونَهُ قَالَ بن جُرَيْجٍ قُلْتُ لَهُ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ نَعَمْ-

(৪) আত্বা বিন রাবাহ (রহঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমার পূর্ব পুরুষেরা ঘোড়ার গোশত খেয়ে আসছেন। ইবনু জুরাইজ বলেন, আমি তাকে বললাম, রাসূলুল্লাহর ছাহাবীগণ? তিনি বললেন, হ্যাঁ।[12]

চার ইমামের অভিমত :

হানাফী মাযহাবের অবস্থান : হানাফী মাযহাবের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম আবু হানীফার নিকট ঘোড়ার গোশত মাকরূহ। তবে তার প্রধান দুই শীষ্য আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ) এবং অন্যান্যরা ঘোড়ার গোশতকে হালাল বলেছেন। ইমাম ত্বাহাবী (রহঃ) বলেন, ذَهَبَ أَبُو حَنِيفَةَ إلَى كَرَاهَةِ أَكْلِ الْخَيْلِ وَخَالَفَهُ صَاحِبَاهُ وَغَيْرُهُمَا. ‘ইমাম আবু হানীফা ঘোড়ার গোশত খাওয়াকে মাকরূহ হওয়ার পক্ষে গিয়েছেন। কিন্তু তার দুই সাথীদ্বয় (ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ) ও অন্যান্যরা বিরোধিতা করেছেন’।[13]

মালেকী মাযহাবের অবস্থান : মালেকী মাযহাবের বিদ্বানগণ তিনভাগে ভাগ হয়েছেন। একদল জায়েযের পক্ষে, আরেকদল মাকরূহের পক্ষে এবং অন্য দলটি হারামের পক্ষে। তবে ইমাম মালেক (রহঃ) ঘোড়ার গোশত না খাওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।[14]

মালেকী বিদ্বান ইমাম বাজী, হাত্তাব, খলীল ও অন্যান্যরা ঘোড়ার গোশত খাওয়াকে হালাল বলেছেন এবং যবহের ক্ষেত্রে গরুর মতই যবহ করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।[15]

শাফেঈ মাযহাবের অবস্থান: শাফেঈ মাযহাবের সকল বিদ্বান ঘোড়ার গোশতকে হালাল বলেছেন। ইমাম শাফেঈ (রাঃ) বলেন,كُلُّ مَا لَزِمَهُ اسْمُ الْخَيْلِ مِنْ الْعِرَابِ وَالْمَقَارِيفِ وَالْبَرَاذِينِ، فَأَكْلُهَا حَلَالٌ، ‘ঘোড়ার নামে যা কিছু আছে, যেমন ইরাব, মাক্বারীফ ও বিরযান খাওয়া জায়েয’।[16]

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন,اخْتَلَفَ الْعُلَمَاءُ فِي إِبَاحَةِ لُحُومِ الْخَيْلِ فَمَذْهَبُ الشَّافِعِيِّ وَالْجُمْهُورِ مِنَ السَّلَفِ وَالْخَلَفِ أَنَّهُ مُبَاحٌ لَا كَرَاهَةَ فِيهِ، ‘ঘোড়ার গোশতের বৈধতার ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতপার্থক্য করেছেন। শাফেঈ মাযাহাব এবং পূর্ব ও পরের জমহূর বিদ্বানগণ ঘোড়ার গোশতকে হালাল মনে করেন এবং এর মধ্যে কোন অপসন্দনীয় কিছু নেই বলে উল্লেখ করেন’।[17]

হাম্বলী মাযহাবের অবস্থান : হাম্বলী মাযহাবের সর্বসম্মত মত হচ্ছে ঘোড়ার গোশত খাওয়া হালাল। তারা বুখারী, মুসলিম ও মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হাদীছগুলো দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছেন। ইবনু কুদামাহ (রহঃ) বলেন,وَتُبَاحُ لُحُومُ الْخَيْلِ كُلُّهَا عِرَابُهَا وَبَرَاذِينُهَا نَصَّ عَلَيْهِ أَحْمَدُ، ‘সকল ঘোড়া ও তাদের বাচ্চাদের গোশত জায়েয। ইমাম আহমাদ (রহঃ)-এর উপরেই দলীল গ্রহণ করেছেন’।[18]

বিদ্বানগণের অভিমত :

১. ইমাম ইবনু হাযম (রহঃ) বলেন,وَأَمَّا فُتْيَا الْعُلَمَاءِ بِأَكْلِ الْفَرَسِ فَتَكَادُ أَنْ تَكُونَ إجْمَاعًا عَلَى مَا ذَكَرْنَا قَبْلُ وَمَا نَعْلَمُ عَنْ أَحَدٍ مِنْ السَّلَفِ كَرَاهَةَ أَكْلِ لُحُومِ الْخَيْلِ إلَّا رِوَايَةً عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ لَا تَصِحُّ؛ ‘ঘোড়ার গোশত খাওয়ার ব্যাপারে আলেমদের ফৎওয়াগুলো প্রায় সর্বসম্মতভাবে প্রমাণিত। আমরা আগে যা উল্লেখ করেছি তার উপর ভিত্তি করে এবং ইবনে আববাস (রাঃ) কর্তৃক একটি বর্ণনা ব্যতীত যা বিশুদ্ধ নয় পূর্বসূরীদের মধ্যে কেউ ঘোড়ার গোশত খাওয়াকে অপসন্দ করতেন বলে আমরা জানি না’।[19] তিনি অন্যত্র বলেন, وحلالٌ أكلُ الخَيلِ، ‘ঘোড়ার গোশত খাওয়া হালাল’।[20]

২. ইমাম নববী (রহঃ) ঘোড়ার গোশতের বৈধতার দীর্ঘ বর্ণনা শেষে বলেন, قَدْ ذَكَرْنَا أَنَّ مَذْهَبَنَا أَنَّهُ حَلَالٌ لَا كَرَاهَةَ فِيهِ ‘আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, আমাদের মাযহাব হচ্ছে এটা হালাল, এর মধ্যে কোন অপসন্দনীয় বিষয় নেই। এরপর তিনি বহু ছাহাবী ও তাবেঈর নাম উল্লেখ করেন, যারা ঘোড়ার গোশতকে হালাল সাব্যস্ত করেছেন’।[21]

৩. হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, وَقَدْ نَقَلَ الْحِلَّ بَعْضُ التَّابِعِينَ عَنِ الصَّحَابَةِ مِنْ غَيْرِ اسْتِثْنَاءِ أحد، ‘বেশ কিছু তাবেঈ ছাহাবীগণ থেকে কাউকে বাদ না দিয়ে সবার থেকে ঘোড়ার গোশত হালাল হওয়ার বিবৃতি বর্ণনা করেছেন’।[22]

৪. ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ولم يثبُتْ عن النبيِّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم أنَّه حَرَّم لحمَ الخَيلِ في حديثٍ صَحيحٍ، ‘কোন একটি ছহীহ হাদীছেও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে ঘোড়ার গোশত হারাম হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত হয়নি’।[23] ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,هِيَ حَلَالٌ عِنْدَ جُمْهُورِ الْعُلَمَاءِ: كَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَد وَصَاحِبَيْ أَبِي حَنِيفَةَ وَعَامَّةِ فُقَهَاءِ الْحَدِيثِ، ‘ইমাম শাফেঈ, আহমাদ ও আবু হানীফার সাথীদ্বয়সহ সকল হাদীছের ফক্বীহদের নিকট ঘোড়ার গোশত হালাল’।[24]

৫. ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,وَثَبَتَ عَنْهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ أَذِنَ فِي لُحُومِ الْخَيْلِ، وَنَهَى عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ، ‘রাসূলুল্লাহ থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন এবং গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। এরপর তিনি এ সংক্রান্ত দু’টি হাদীছ উল্লেখ করে বলেন, وَالْحَدِيثَانِ فِي حِلِّهَا صَحِيحَانِ لَا مُعَارِضَ لَهُمَا ‘হাদীছ দু’টি ঘোড়ার গোশত হালাল হওয়ার ব্যাপারে বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত। এ দু’টোর বিরোধী কোন বর্ণনা নেই’।[25]

৬. শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায (রহঃ) বলেন, لحم الخيل مباح هذا الذي عليه جمهور أهل العلم وهو الصحيح، والرسول صلى الله عليه وسلم أذن في لحوم الخيل،ُ ‘ঘোড়ার গোশত হালাল। এর উপরেই জমহূর বিদ্বানগণের ফৎওয়া। আর এটাই সঠিক। আর নবী করীম (ছাঃ) ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন’।[26]

শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) বলেন, শায়খকে ঘোড়ার গোশত হালাল হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি হালাল উত্তর দিয়ে হারামের পক্ষে উপস্থাপিত দলীলগুলোর কড়া জওয়াব দেন।[27]

ফাতাওয়া লাজনা দায়েমায় বলা হয়েছে,لا يخفى أن الخيل يباح أكلها على الصحيح من المذهب، وعليه الأصحاب ومن وافقهم من أهل العلم، ‘এটা কোন গোপন বিষয় নয় যে, মাযহাবের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েয এবং এটিই আমাদের সাথীগণ এবং আলেমদের মধ্যে যারা তাদের সাথে একমত তাদের মতামত’।[28]

ঘোড়ার গোশত হারাম হওয়ার পক্ষে পেশকৃত দলীল সমূহ ও তার জওয়াব :

১. আল্লাহর বাণী :وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ وَالْحَمِيرَ لِتَرْكَبُوهَا وَزِينَةً وَيَخْلُقُ مَا لاَ تَعْلَمُونَ، ‘তোমাদের আরোহণ ও শোভা বর্ধনের জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা (নাহল ১৬/৮)। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা সৃষ্টির দু’টি উদ্দেশ্য আলোচনা করেছেন আর তা হচ্ছে আরোহণ ও শোভাবর্ধন। আল্লাহ খাওয়ার জন্য ঘোড়া সৃষ্টি করেননি। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) খচ্চর ও গাধার গোশত হারাম করেছেন। আর ঘোড়ার কথা আল্লাহ ঐ দু’টির সাথেই উল্লেখ করেছেন।

জবাব :প্রথমত: সূরা নাহল মাক্কী আর ঘোড়ার গোশত হালালের বিষয়টি সপ্তম হিজরীতে সংঘটিত খায়বার যুদ্ধের সময় রুখছত দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত।

দ্বিতীয়ত : এই যুক্তি তখনই গ্রহণযোগ্য হ’ত যদি না স্পষ্ট হাদীছ থাকত। কারণ হাদীছ হচ্ছে কুরআনের তাফসীর। অতএব উক্ত যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।

তৃতীয়ত : বাহন হিসাবে উল্লেখ করার অর্থ এটা নয় যে, এ প্রাণীগুলো অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। বরং এর অর্থ হচ্ছে এগুলো সৃষ্টির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বাহন এবং শোভাবর্ধন। যেমন জনৈক লোক গরুকে বাহন হিসাবে ব্যবহার করলে গরু রাসূলের নিকট অভিযোগ করে। এমনকি গরুটি বলে ‘আমাকে তো এজন্য সৃষ্টি করা হয়নি, আমার সৃষ্টি তো হাল-চাষ করার জন্য’।[29] এরপরেও কিন্তু গরু যবহ করা, কুরবানী দেওয়া ইত্যাদি জায়েয। অনুরূপভাবে উট বাহন হ’লেও তার গোশত হালাল।

২. আল্লাহর বাণী,وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللهِ وَعَدُوَّكُمْ، ‘আর তোমরা কাফেরদের মুকাবিলার জন্য সাধ্যমত শক্তি ও সদা সজ্জিত অশ্ববাহিনী প্রস্ত্তত রাখ, যা দিয়ে তোমরা আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের ভীত করবে’ (আনফাল ৮/৬০)। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ঘোড়াকে যুদ্ধের পশু হিসাবে উল্লেখ করেছেন। অতএব ঘোড়া যবেহ করে খাওয়া যাবে না।

জবাব : প্রথমত: কোন পশুকে যুদ্ধের পশু হিসাবে উল্লেখ করা তার গোশত হারাম হওয়ার দলীল নয়। বরং ঘোড়াও অন্যতম গবাদি পশু, যার দ্বারা বহু উপকার গ্রহণ করা যায়। আল্লাহ বলেন, أُحِلَّتْ لَكُمْ بَهِيمَةُ الأَنْعَامِ إِلاَّ مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ আর তোমাদের জন্য গবাদিপশু হালাল করা হয়েছে। তবে যেগুলি (হারাম হওয়া) বিষয়ে তোমাদের উপর পাঠ করা হয়েছে (সেগুলি ব্যতীত)’ (মায়েদাহ ৫/০১)

দ্বিতীয়ত: আল্লাহ তা‘আলা যে প্রাণীর গোশত সরাসরি হারাম করেননি তা হারাম করার কারো অধিকার নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তুমি বলে দাও, আমার নিকট যেসব বিধান অহি করা হয়েছে, সেখানে ভক্ষণকারীর জন্য আমি কোন খাদ্য হারাম পাইনি যা সে ভক্ষণ করে, কেবল মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত ও শূকরের গোশত ব্যতীত। কেননা এগুলি নাপাক বস্ত্ত এবং ঐ প্রাণী ব্যতীত, যা অবাধ্যতা বশে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। তবে যে ব্যক্তি ক্ষুধায় কাতর হয়ে বাধ্যগত অবস্থায় (জীবন রক্ষার্থে) তা খায় কোনরূপ আকাঙ্ক্ষা ও সীমালংঘন ছাড়াই, (তার ব্যাপারে) আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান (আন‘আম ৬/১৪৫)

(৩) খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَكْلِ لُحُومِ الْخَيْلِ، وَالْبِغَالِ، وَالْحَمِيرِ. ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে ঘোড়া, খচ্চর ও গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন’।[30]

জবাব : প্রথমত : উক্ত হাদীছের সনদ নিতান্তই যঈফ।[31] যা আমলযোগ্য নয়। দ্বিতীয়ত : ইমাম আবূদাউদ (রহঃ) উক্ত হাদীছ বর্ণনার পর বলেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া দোষের কিছু নয় এবং উপরোক্ত হাদীছ মোতাবেক আমল করা হয় না।

তৃতীয়ত : এটি বুখারী ও মুসলিমের হাদীছ দ্বারা মানসূখ। ইমাম আবূদউদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীছ মানসূখ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর একদল ছাহাবী ঘোড়ার গোশত খেয়েছেন। ইবনু যুবায়র, ফাযালাহ ইবনু উবাইদ, আনাস ইবনু মালেক, আসমা বিনতু আবূবকর, সুওয়াইদ ইবনু গাফলাহ (রহঃ) ও আলকামাহ (রহঃ) তাদের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে কুরাইশগণ ঘোড়া যবহ করতেন।[32]

(৪) খালিদ ইবনুর ওয়ালিদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সঙ্গে খায়বার যুদ্ধে যোগদান করেছি। ইহুদীরা এসে অভিযোগ করল যে, লোকেরা তাড়াহুড়া করে তাদের বাঁধা পশুগুলো লুণ্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, সাবধান! যে কাফেররা তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ন্যায়সংগত অধিকার ছাড়া তাদের মাল আত্মসাৎ করা বৈধ নয়। তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে গৃহপালিত গাধা, ঘোড়া, খচ্চর, প্রত্যেক শিকারী দাঁতযুক্ত হিংস্র জন্তু এবং প্রত্যেক পাঞ্জাধারী শিকারী পাখী।[33]

জবাব: প্রথমত: হাদীছের সনদ যঈফ, যা গ্রহণযোগ্য নয়।[34]দ্বিতীয়ত: খালিদ বিন ওয়ালীদের ওপর এটা বড়ই অপবাদ। কারণ খালিদ বিন ওয়ালীদ খায়বার বিজয়েরও এক বছর পরে ইসলাম গ্রহণ করেন।[35] আল্লামা ওয়াক্বেদী বলেন,لَا يَصِحُّ هَذَا لِأَنَّ خَالِدًا أَسْلَمَ بَعْدَ فَتْحِ خَيْبَرَ،‘ ‘এটা ছহীহ নয়; কারণ খালিদ ইসলাম গ্রহণ করেছেন খায়বার বিজয়ের পর’।[36]

উপসংহার : হালাল বা হারাম নির্ণয়ের মানদন্ড হচ্ছে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ। সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহ যে বস্ত্ত বা প্রাণীকে হারাম করেছে কেবল সেগুলো হারাম। হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম হিসাবে জানা ঈমানের অন্যতম অংশ। অতএব ঘোড়ার গোশত খাওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অনুমতি দিয়েছেন এবং ছাহাবায়ে কেরাম খেয়েছেন। ফলে তাকে হারাম বলার কোন সুযোগ নেই। তবে যদি ঘোড়ার যোগান পর্যাপ্ত না থাকে বা যুদ্ধের জন্য ব্যাপক প্রয়োজন দেখা দেয় তাহ’লে সে অজুহাতে ঘোড়া যবেহ থেকে বিরত থাকা যায়। তাই বলে হালালকে হারাম বলার অধিকার কারো নেই। তবে এ কথাও সত্য যে, কোন জাতি কোন বিষয়ে অজানা থাকলে বা কোন বৈধ এবং যৌক্তিক কাজ করার ফলে সমাজে ফিৎনা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা থাকলে সে কাজ থেকে সাময়িক বিরত থাকা বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে কুরআন ও সুন্নাহ সঠিকভাবে বুঝার তাওফীক দান করুন- আমীন!


[1]. বুখারী হা/৫৫১১, ৫৫১৯; মুসলিম হা/১৯৪২

[2]. তাবারানী কাবীর হা/২৩২

[3]. আহমাদ হা/২৬৯৭৫, সনদ ছহীহ

[4]. ফাতহুল বারী ৯/৬৪৯

[5]. বুখারী হা/৫৫২০; মুসলিম হা/১৯৪১

[6]. বুখারী হা/৪২১৯

[7]. মুসলিম হা/১৯৪১

[8]. আবূদাউদ হা/৩৭৮৯; আহমাদ হা/১৪৮৮৩; ছহীহাহ হা/৩৫৯-এর আলোচনা

[9]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৪৩১২

[10]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৪৩১২; মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাক হা/৮৭৩২

[11]. মুছান্নাফে আব্দুর রাযযাক হা/৮৭৩৩

[12]. ফাতহুল বারী ৯/৬৫০; নায়লুল আওতার ৮/১২৬

[13]. কুদূরী ২/১৮৫; ফাতহুল বারী ৯/৬৫০

[14]. শরহুয যারকানী আলা মুয়াত্তা ৩/১৯৩

[15]. মাওয়াহিবুজ জলীল ৩/২২০

[16]. কিতাবুল উম্ম ২/২৭৫

[17]. শরহুন নববী ১৩/৯৫

[18]. আল-মুগনী ৯/৪১১

[19]. মুহাল্লা ৬/৮৩

[20]. মুহাল্লা ৬/৮৮

[21]. আল-মাজমূ‘ ৯/০৪

[22]. ফাতহুল বারী ৯/৬৫০

[23]. জামেউল মাসায়েল ৪/৩৪৩

[24]. মাজমূউল ফাতাওয়া ৩৫/২০৮

[25]. যাদুল মা‘আদ ৪/৩৪৩-৪৪

[26]. ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দারব

[27]. আশ-শারহুল মুমতে‘ ১৫/২৮,৩০

[28]. ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২৬/১৮৮

[29]. মুসলিম হা/২৩৮৮; তিরমিযী হা/৩৬৭৭

[30]. আবূদাউদ হা/৩৭৯০; মিশকাত হা/৪১৩০

[31]. যঈফুল জামে‘ হা/৬০৩৪

[32]. আবুদাউদ হা/৩৭৯০-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য

[33]. আবুদাউদ হা/৩৮০৬

[34]. যঈফাহ হা/৩৯০২

[35]. বুখারী হা/৫৫১১, ৫৫১৯; মুসলিম হা/১৯৪২

[36]. যঈফাহ ৮/৩৭৬






বিষয়সমূহ: হালাল-হারাম
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (৭ম কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
বিদায়ের আগে রেখে যাও কিছু পদচিহ্ন (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
হজ্জ : গুরুত্ব ও ফযীলত - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
মানুষের দো‘আয় শামিল হওয়ার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
ইসলামে তাক্বলীদের বিধান (শেষ কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
নফল ছিয়াম সমূহ - আত-তাহরীক ডেস্ক
ইসলামে পানাহারের আদব বা শিষ্টাচার - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
ইখলাছ মুক্তির পাথেয় (৩য় কিস্তি) - আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
ঈছালে ছওয়াব : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
পাপ বর্জনের শিষ্টাচার সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
যাকাত সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাক্বলীদ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আরও
আরও
.