লিবিয়ায় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নগ্ন হামলা

অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত ১৯ মার্চ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে আফ্রিকার মুসলিম দেশ লিবিয়ার ওপর ক্ষুধার্ত নেকড়ের ন্যায় হামলে পড়েছে তেলসম্পদ লুণ্ঠন করার জিঘাংসায়। এর আগে লিবিয়াকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা সংবলিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৯৭৩ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয় গত ১৭ মার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে বৃটেন, ফ্রান্স ও লেবানন জাতিসংঘে   প্রস্তাব উত্থাপন করে। জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ১০ ভোট পড়ে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের অপর পাঁচ সদস্যরাষ্ট্র ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে। এতে শুধু গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীর হাত থেকে লিবিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার জন্য লিবিয়ার বিরুদ্ধে যেকোন ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু গাদ্দাফি বাহিনী নো ফ্লাই জোন লঙ্ঘন করেছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে পশ্চিমা জোট বাহিনী গত ১৯ মার্চ শনিবার রাতে লিবিয়ার বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এমনকি গত ২০ মার্চ রাতে ত্রিপোলীতে ছয় বর্গকিলোমিটির এলাকা নিয়ে অবস্থিত গাদ্দাফির প্রধান সামরিক ঘাঁটি ও বাসভবন বাব আল-আযীযিয়া চত্বরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে তাঁর এক সন্তান নিহত হয়েছে ও বাসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে গাদ্দাফি তখন বাসায় ছিলেন না। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ১৯৮৬ সালেও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ বাসভবনে হামলা চালানো হয়। এতে তার এক মেয়ে নিহত হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

‘ওডেসি ডন’ নামের এ অভিযানে রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম স্টিলথ, বি-টু ও টর্নেডো বিমান, টমাহক, সাবমেরিন সহ অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। ২১ মার্চ রাতে তৃতীয় দফা হামলা চালানোর সময় একটি মার্কিন জঙ্গী বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। পরে একটি ফরাসি জঙ্গী বিমানও গুলী করে ভূপাতিত করার দাবী করেছে গাদ্দাফি বাহিনী। বৃটেন, ফ্রান্স ও ন্যাটো বাহিনীকে হামলায় সামনে ঠেলে দিয়ে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকরা  বলছেন, তৃতীয়বারের মতো আরো একটি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর দায় থেকে ওবামা যুক্তরাষ্ট্রকে বাঁচাতে এই কৌশল অবলম্বন করেছে। এদিকে গাদ্দাফি বাহিনীকে বিমান হামলায় পর্যুদস্ত করার পাশাপাশি ন্যাটো স্থল হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, গাদ্দাফি সরকার অস্ত্রবিরতি না ঘোষণা করলে নিরাপত্তা পরিষদ আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গাদ্দাফিকে দুর্বল করার জন্য লিবীয় তেল কোম্পানীগুলোর উপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

লিবিয়াতে হামলা শুরুর পর গত ২২ মার্চ রাতে বাব আযীযিয়া চত্বরে প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আসেন মুআম্মার গাদ্দাফি। সেখানে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোন উপায়ে পশ্চিমা শক্তিকে পরাজিত করব। কখনোই তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করব না। ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পশ্চিমাদের স্থান হবে’। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অবশ্যই জয়ী হব। যুদ্ধ স্বল্পমেয়াদী হোক বা দীর্ঘমেয়াদী হোক, তারা আমাদের পরাজিত করতে পারবে না’। গাদ্দাফি বলেন, ‘আমি আমার বাসভবনেই আছি। এখানেই থাকব... এখানে আমার থাকার অধিকার আছে’।

পশ্চিমা জোটের এ অভিযানে বৃটেন, স্পেন, ইতালী, কানাডা, ডেনমার্ক প্রভৃতি দেশ যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্রের যোগান দিচ্ছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে কাতার ও আরব আমিরাত এ হামলায় যৌথ বাহিনীকে সহযোগিতা করছে। এ হামলায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন নিহত ও ১৩০০ জন আহত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এ ন্যক্কারজনক হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উড়েছে। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাশিয়া, চীন, ভারত, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম, ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া, কিউবা, ইরান, আরব লীগ প্রভৃতি দেশ ও সংস্থা এ হামলার তীব্র প্রতিবাদ করেছে। রাশিয়া একে ‘মধ্যযুগীয় ধর্মযুদ্ধের আহবান’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন : এদিকে লিবিয়ায় বিদ্রোহীরা মাহমূদ জিবরীলকে প্রধানমন্ত্রী করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ক্ষমতায় আসেন কর্নেল গাদ্দাফি। এরপর থেকে প্রায় ৪২ বছর ধরে তিনি দোর্দন্ডপ্রতাপে দেশ শাসন করছেন। তাঁর শাসনের অবসানের দাবীতে গত ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি থেকে লিবিয়ায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিদ্রোহীরা বেনগাজি ও ত্রিপোলির পশ্চিমের শহর জাবিয়াসহ বেশ কিছু এলাকা দখল করে নেয়। গাদ্দাফির অনুগত সেনাদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কয়েক হাযার মানুষ নিহত হয়েছে।

আফগানিস্তানে বেসামরিক লোক হত্যা শতকরা ২৫ ভাগ বৃদ্ধি

আফগানিস্তানে গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০১০ সালে বেসামরিক লোক হত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর আফগানিস্তানে বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে ২,৭৭৭ জন। বেসামরিক লোক হত্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় শতকরা ২৫ ভাগ বেশী। এ লোক হত্যার কথা স্বীকার করেছে জাতিসংঘ মিশন।

ইসরাঈলী বোমার প্রভাব

গাযায় বেড়েছে ক্যান্সার রোগী

ইসরাঈলী বোমার  প্রভাবে ফিলিস্তীনের গাযা উপত্যকায় ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে ২২ দিনের আগ্রাসনের সময় ইহুদীবাদী ইসরাঈলী সেনারা গাযার উপর যে ইউরেনিয়াম বোমা ফেলেছিল তার কারণে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। ইসরাঈলী আগ্রাসনের পর সেখানে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা শতকরা ৩০ ভাগ বেড়ে গেছে। ইহুদীবাদীদের ঐ আগ্রাসনে অন্তত এক হাযার ৪০০ ফিলিস্তীনী নিহত হন। এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল নারী ও শিশু।

ফিলিস্তীনকে স্বীকৃতি দিল উরুগুয়ে

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে দক্ষিণ আমেরিকার আরেকটি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে ফিলিস্তীন। গত ১৫ মার্চ উরুগুয়ে এ স্বীকৃতি দেয়। তবে ফিলিস্তীন রাষ্ট্রের সীমানা বিষয়ে কোন মতামত দেয়নি দেশটি। উরুগুয়ের আগে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, বলিভিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ ১৯৬৭ সালে ইসরাঈল-জর্ডান যুদ্ধের আগে ফিলিস্তীনের তৎকালীন সীমানা অনুযায়ী দেশটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও চিলি, পেরুসহ আরও কয়েকটি দেশ কোন সীমানা নির্দেশ ছাড়াই রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে একে।

নতুন সংবিধান অনুমোদন

মিসরে দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট হওয়া যাবে না

গণভোটে মিসরের জনগণ সংশোধিত নতুন সংবিধান অনুমোদন করেছে। সংবিধান সংশোধনের ফলে মিসরে দুই মেয়াদের বেশী কেউ প্রেসিডেন্ট হ’তে পারবেন না। নির্বাচনের ৩০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্টকে একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। প্রেসিডেন্টের বয়স ৪০ বছরের বেশী হ’তে হবে এবং তাঁর স্ত্রী মিসরীয় হ’তে হবে। গত ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত এ গণভোটে মিসরের প্রায় সাড়ে চার কোটি ভোটারের ৪১ শতাংশ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ ভোটার সংবিধান সংশোধনের পক্ষে এবং ২২ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

অ্যামনেষ্টির প্রতিবেদন

কাশ্মীরে বিনাবিচারে আটক ২০ হাযার

মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল’ ভারতশাসিত কাশ্মীরের জননিরাপত্তা আইনের তীব্র সমালোচনা করেছে। সংগঠনটির দাবী, এ কাল-বর্বর আইন প্রয়োগ করে ২০ হাযার ব্যক্তিকে বিনাবিচারে আটক রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের গণসুরক্ষা আইন বা পিএসএ’র ক্ষমতাবলে পুলিশ রাষ্ট্রের জন্য হুমকি বলে মনে করলে যে কোন ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত বিনা অভিযোগে আটক রাখতে পারবে।






পাকিস্তানে দাড়ির স্টাইল নিষিদ্ধ করে প্রস্তাব পাস
শীর্ষ অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা সঊদী আরবের
আলজেরিয়ায় নির্মিত হচ্ছে আফ্রিকার বৃহত্তম মসজিদ
দুবাইয়ের রাস্তায় ২০৩০ সাল নাগাদ ২৫ শতাংশ চালকবিহীন গাড়ি চলবে
রোহিঙ্গাদেরকে নিজেদের ভাই-বোনের মতোই মনে করে আচেহবাসীরা
অবরুদ্ধ গাযায় আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে
মধ্যপ্রাচ্যের বৃহৎ যাতায়াত ব্যবস্থা ‘হারামাইন এক্সপ্রেস’
ইহূদীদের জন্য হিব্রু ভাষায় কুরআনের অনুবাদ করছে মিসর সরকার
ইসলামে উদারপন্থী বা বলে কিছু নেই, ইসলাম একটাই : এরদোগান
মুসলিম জাহান
সঊদী আরবের বড় ধরনের আয় হজ্জ থেকে
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন জার্মান এমপি ক্লাউন
আরও
আরও
.