আমাদের সমাজ বর্তমানে এত দ্রুত বদলে যাচ্ছে যে, বহমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাই এখন দায় হয়ে পড়েছে। সনাতন যৌথ পরিবার ভেঙ্গে গড়ে উঠেছে একক পরিবার, সে একক পরিবারও যেন অর্থোপার্জনের চাপে বিচ্ছিন্ন পরিবারে রূপ নিচ্ছে। আয়-উপার্জনের স্বার্থে হয়তো মাতা-পিতার কোন একজন অবস্থান করছে বিদেশে কিংবা দেশের ভিতরে অন্য কোন স্থানে। হয়তো তাদের কারও একজনের কাছে ছেলে-মেয়েরা থাকছে। মাতা-পিতা দূরে থাকুন কিংবা এক সাথে থাকুন দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো যেন এখন বড় দায় হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা কেন যেন বইমুখী হ’তে চাইছে না।

রুটিন মাফিক তারা স্কুলে আসে-যায়, অনেকে প্রাইভেটও পড়ে, কিন্তু জ্ঞান অর্জনে তাদের অনীহা উপেক্ষা করার মতো নয়। পাঠ্যবইই যে জ্ঞান অর্জনে যথেষ্ট নয়, সে কথা আমরা স্বীকার করি, কিন্তু পাঠ্যবইয়ের বাইরে যে বিশাল জ্ঞানের জগৎ সেখানে আমাদের বিচরণ খুবই কম। আমরা লাইব্রেরীর সাথে যোগাযোগের মানসিকতা একরকম হারিয়ে ফেলেছি। পারস্পরিক দোষারোপের মানসিকতায় আমরা আজ আচ্ছন্ন। অভিভাবকগণ দোষ দেন যে, শিক্ষালয়ে এখন আর কোন লেখা-পড়া হয় না। শিক্ষকরা স্কুলে আসেন আর যান। শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে মনোযোগী নয়। তারা বাড়ি থেকে পড়া তৈরি করে আসে না। অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাদের কথা গ্রাহ্য করে না। অভিভাবকগণ তাদের ঠিকমতো দেখভাল করেন না। ফলে পঠন-পাঠনের সুষ্ঠু ধারা এখন শিক্ষালয়ে ধরে রাখা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষকদের প্রতি অভিযোগ কম নয়। ক্লাসে শিক্ষকরা পড়ান না, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, পড়া না নিয়ে শুধু রিডিং পড়িয়ে সময় পার করেন, কেউ হয়তো এতো পৃষ্ঠা থেকে এতো পৃষ্ঠা পড়ে আসবে বলে নির্দেশ দিয়ে ক্ষান্ত হন, আবার অনেকেই তাদের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য প্ররোচনা দেন ইত্যাদি অনেক অভিযোগ শিক্ষার্থীদের রয়েছে।

সকলের কথার মধ্যে সত্যতা যে নেই তা জোর করে বলা চলে না। ভেতরে-বাইরে অবশ্যই কিছু একটা সমস্যা আছে। আমাদের মনে হয় শিক্ষাকে সার্বিকভাবে ফলপ্রসূ করতে চাইলে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমন্বিত ভূমিকা খুবই যরূরী। প্রত্যেকে যদি নিজের দায়িত্ব পালন করি এবং মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের সমস্যা সমাধান করি তাহ’লে আমাদের শিক্ষার মান বাড়বে। শিক্ষার জাতীয় লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনে আমাদের ত্রুটি কোথায় তা খুঁজে বের করে সমাধানে এগিয়ে আসা যাবে।

আমরা মনে করি, শিক্ষার সাথে চারটি পক্ষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সরকার, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে। শিক্ষানীতি প্রণয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ, প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ, শিক্ষকদের বেতন প্রদান, প্রশিক্ষণ দান, পাঠ্যবই প্রণয়ন ও বিতরণ এবং প্রয়োজনীয় তদারকির কাজ সরকার করে থাকে। শিক্ষার সার্বিক অগ্রগতি ঘটলে সরকারের সুনাম বৃদ্ধি পায়।

শিক্ষকদের ভূমিকা : বিদ্যালয়ের প্রাণ হচ্ছেন সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ। শিক্ষক ছাড়া কোন শিক্ষালয় কল্পনা করা যায় না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত নানামুখী প্রতিভা বিকাশে শিক্ষকের ভূমিকা অনন্য। শিক্ষার্থীকে শিক্ষার পথ দেখানো, শিক্ষার বিষয়কে সহজসাধ্য ও আনন্দঘন করে তোলা শিক্ষকের অন্যতম কাজ। শিক্ষক শিক্ষার্থীর মাঝে ‘তুমিই পারবে’, ‘তোমার দ্বারাই হবে’, ‘লেখা পড়ায় লেগে থাকো’, ‘হতাশ হয়ো না’ ইত্যাদি প্রেরণা ও সাহস যোগানিয়া কথা বলবেন। ‘তুমি পারবে না’, ‘তোমার দ্বারা হবে না’- এ জাতীয় কথা শিক্ষার্থীদের তিনি কখনই বলবেন না। শিক্ষার্থীর কোন বিষয়ে ঝোঁক ও প্রবণতা বেশী তা শিক্ষক লক্ষ করবেন এবং ভাল হ’লে তাকে তা অর্জনে সহযোগিতা করবেন, আর খারাপ হ’লে শিক্ষক তা থেকে তাকে ফেরানোর চেষ্টা করবেন। একজন আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ-শিখনে নিজেকে দায়বদ্ধ ভাবেন। শ্রেণীকক্ষের ভেতরে ও বাইরে তিনি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন, দক্ষতার বিকাশ সাধন ও নীতিবান মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। ক্লাস রুটিনে তার উপর বিভিন্ন শ্রেণীর যে যে বিষয় পড়ানোর দায়িত্ব অর্পিত হয় তিনি তার অর্জিত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আলোকে শিক্ষার্থীদের তা শিখাতে তৎপর থাকেন।

শিক্ষার্থীদের মাঝে সাধারণত উচ্চ মেধা, মাঝারি মেধা ও স্বল্প মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থী থাকে। তিনি সবারই মানোন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা যাতে পড়ার বিষয় আয়ত্ত করে জীবনের নানাক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করতে পারে সে কৌশল তিনি তাদের শিখিয়ে দেন। তারা যেন তার বিষয়সহ অন্যান্য শিক্ষকদের বিষয়ে কৃতিত্ব অর্জনে সক্ষম হয় সেজন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তার বিষয়ে যদি কোন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয় তবে তার মধ্যে যেন একটা দায়বোধ কাজ করে।

তিনি চান, তার কোন ছাত্র যেন কোন পরীক্ষাতেই তার বিষয়ে অকৃতকার্য না হয় বরং কৃতিত্বের সাথে পাশ করে। শিক্ষার্থী সদাচারী ও চরিত্রবান হবে, তাদের মাঝে মানবিকতা বিকশিত হবে, তারা দেশের সুনাগরিক হবে, অপরাধ প্রবণতা, নেশা, দুর্নীতি ইত্যাদি হ’তে তারা দূরে থাকবে- প্রত্যেক শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসব গুণের বিকাশ কামনা করেন। শুধু কামনাই নয় শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তুলতে তারা চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীর নানামুখী দক্ষতার বিকাশ সাধন এবং ভবিষ্যৎ জীবনে যাতে সে তার পেশায় ও সামাজিক নানাক্ষেত্রে সেই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সফল মানুষ হ’তে পারে সেজন্য শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তবে দায়সারা গোছের শিক্ষাদানকারী শিক্ষকও যে বিদ্যালয়ে থাকেন না তা নয়। তারা সাধারণত কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সামনে রেখে পাঠদান করেন না। শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম কতটুকু সঞ্চারিত হচ্ছে তারা তা যাচাই করার গরয তেমন একটা অনুভব করেন না। গতানুগতিক নিয়মে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের থেকে পড়া জেনে লেকচার মেথডে তারা পড়িয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাতে খুব একটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে না। শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে কি-না এবং পরীক্ষায় তারা যথেষ্ট কৃতিত্ব দেখাতে পারবে কি-না তা তারা খুব একটা ভাবেন না। কোন বিদ্যালয়ে এমন শিক্ষকের সংখ্যাধিক্য ঘটলে সেখানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটার আশা বৃথা।

অভিভাবকের ভূমিকা : শিক্ষার্থীর শিক্ষা অর্জনে অভিভাবকের ভূমিকা অসামান্য। অভিভাবক হ’তে পারেন মাতা-পিতা কিংবা তাদের একজন। আর তাদের অবর্তমানে ভাই-বোন, চাচা-চাচী, মামা বা অনুরূপ কেউ। শিক্ষার পিছনে অল্প-বিস্তর যে অর্থের প্রয়োজন হয় তা সাধারণত অভিভাবকই যুগিয়ে থাকেন। ফলে শিক্ষার্থী নিশ্চিন্তে পড়তে পারে। শিক্ষার্থীর শিক্ষার পরিবেশ আনন্দঘন করতে তাকে প্রয়োজনীয় সেণহ-মমতা ও ভালবাসা দিয়ে লেখা-পড়ার প্রতি আগ্রহী করতে পিতা-মাতা বড় ভূমিকা পালন করেন। বই, খাতা, কলম, ব্যাগ, স্কুলড্রেস ও অন্যান্য জিনিস তারাই ব্যবস্থা করেন। শিক্ষার্থী ভাল মানুষ হয়ে গড়ে উঠুক, সচ্ছল জীবনের অধিকারী হোক- প্রত্যেক অভিভাবকই তা প্রত্যাশা করে। কিন্তু তার এতটুকু দায়িত্বই শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। মাতা-পিতাকে মনে রাখতে হবে, তার সন্তান বিদ্যালয়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অবস্থান করে। অবশিষ্ট সময়ে সে বিদ্যালয়ের বাইরে থাকে। কাজেই বিদ্যালয়ের পরিবেশ থেকে বাইরের পরিবেশ দ্বারা তার প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। এ সময়ে তার সাথে সঙ্গ দেওয়া, তার মনের ইচ্ছা, অন্যান্য চাহিদা ও আবদার জানার চেষ্টা করা এবং ইতিবাচক চাহিদাগুলো যথাসময়ে পূরণ করা দরকার। প্রাইভেট পড়া, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ইত্যাদির নামে সে কোথায় কি করে তার খোঁজ রাখা একান্ত প্রয়োজন।

বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েরা বাড়ির চৌহদ্দিতে আবদ্ধ থাকতে চায় না। তারা চায় সমবয়সী বন্ধুদের সাথে ঘুরতে, আড্ডা দিতে, খেলতে এবং সময় কাটাতে। এক্ষেত্রে সকল সাথী-বন্ধুই যে ভাল মানুষ হবে এমন আশা করা ভিত্তিহীন। অনেকে অসৎ সাথী-বন্ধু হ’তে পারে। চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, নেশা করা, স্কুল পালানো ও বাজে আড্ডা দেওয়ার মতো কাজে লিপ্ত সাথী-বন্ধুও বর্তমানে প্রচুর মেলে। শিক্ষার্থী এমন কোন বন্ধুর পাল্লায় পড়লে তার জীবনে ধ্বংস অনিবার্য।

পক্ষান্তরে পাঠে মনোযোগী, সহপাঠক্রমিক কাজে তৎপর ও ধার্মিক সঙ্গী মিললে অভিভাবক তার সন্তানের বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ঘরের পরিবেশে মাতা-পিতাকে অবশ্যই সন্তানদের সঙ্গে সময় দেওয়ার মন-মানসিকতা তৈরি করতে হবে। খাবার টেবিলে একসাথে খেতে পারলে পরস্পরে আলাপ-আলোচনা করা যায়। এতে একে অপরের কাছে আসা সম্ভব হয়। শুধুই যে উপদেশ বিতরণ আর খবরদারি করতে হবে এমন নয়; বরং নিজেদের কাজকর্ম-সম্পর্কে পরস্পরে ধারণা বিনিময় এবং জানাজানির মাধ্যমেও অভিজ্ঞতা অর্জিত হ’তে পারে। যেহেতু আমরা সবাই এ সমাজের সদস্য সেহেতু সমাজের নানা অবক্ষয় থেকে আমাদের চোখ বন্ধ করে থাকার উপায় নেই। একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই দেখা যাবে, আজকের সমাজ ভীষণভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা যারা মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া করে তাদের মাঝেও মাদকের প্রসার ঘটছে। রাস্তায় রাস্তায়, মোড়ে মোড়ে এবং নানা স্পটে বসে আড্ডা দেওয়া কিশোর-যুবকদের সংখ্যা কিন্তু আমাদের নযরে কম পড়ে না। তারা আমাদের কারও না কারও সন্তান। আমার সন্তানও যে তাদের সাথে যোগ দেয় না এবং অপরাধমূলক কাজে জড়িত হয় না তা জোর গলায় বলা যায় না।

মাদকাসক্তি ও বাজে আড্ডা শিক্ষার্থীদের পাঠে অমনোযোগিতা ও স্কুল পালানোর বড় কারণ। কাজেই সন্তান কোথায় যায় কী করে তা অভিভাবককে অবশ্যই খোঁজ নিতে হবে। নিজেদের পেশাগত দায়িত্বের দোহাই দিয়ে কিংবা নানা ব্যস্ততার অজুহাতে সন্তানের সাথে সময় দিতে পারছি না কিংবা তার খোঁজখবর রাখা সম্ভব হচ্ছে না এমন কথা আমরা হরহামেশাই বলি। তাতে কিন্তু সন্তানের সর্বনাশ ঠেকানো সম্ভব হয় না। সন্তানকে তাই ধর্মীয় বিধি-বিধান শেখানো, চারিত্রিক গুণাবলি সম্পর্কে অবগত করা এবং সদাচারী হিসাবে গড়ে তোলা মাতা-পিতার প্রথম কাজ হিসাবে বিবেচ্য। চারিত্রিক দৃঢ়তা সন্তানদের মধ্যে গড়ে উঠলে সহপাঠী বন্ধুরা ভাল বন্ধুতে পরিণত হবে। তখন তারা অন্যায়-অপকর্মে যুক্ত হবে না বলে আশা করা যায়। অসৎ সঙ্গীরা তাদের নিজেদের দলে ভিড়াতে তেমনটা সক্ষম হবে না।

ক্ষমতা ও অর্থলিপ্সা : সমাজে ক্ষমতার দাপট দেখানো এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হওয়া কিশোর মনকে কম আকর্ষণ করে না। তারাও ক্ষমতার দাপট দেখাতে চায় এবং অর্থবিত্তের মালিক হ’তে চায়। এজন্য তারা কিশোর বয়সেই ছাত্ররাজনীতির ছত্রছায়ায় ঢুকে পড়ছে। দিন দিন এ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। লেখাপড়া করা থেকে ক্ষমতাচর্চা তাদের কাছে অনেক ক্ষেত্রে বেশী প্রিয় মনে হচ্ছে। কিন্তু সবার ভাগ্যে ক্ষমতার ভাগ জোটে না। ফলে ক্ষমতার পথ থেকে অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকদের এজন্য অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে যে, তারা তাদের সন্তানদের ছাত্রাবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিতে দেবে, নাকি তাদের লেখাপড়ায় আরও মনোনিবেশ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। যেভাবেই হোক সন্তানের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে অভিভাবকদের সচেষ্ট হ’তে হবে। কিন্তু আমাদের অভিভাবকদের মাঝে কাঙিক্ষত মানের সচেতনতা লক্ষ্য করা যায় না। সন্তান ঠিক মতো স্কুলে যায় কি-না, লেখাপড়া করে কি-না, স্কুল পালিয়ে অসৎ সঙ্গীদের সাথে আড্ডা দেয় কি-না তার খোঁজ-খবর তারা খুব একটা নেন না। কোনভাবে জানলেও খুব একটা গুরুত্ব দেন না। ফলে সন্তান আরও অবাধ স্বাধীনতার অধিকারী হয়। অনেক পিতা তো এমন সন্তানের জন্য গর্ব করে বলেন, ‘জানিস আমি অমুকের বাবা, কিংবা আমার সন্তান অমুক’ এতে সন্তান আরও বেশী প্রশ্রয় পায়।

শিক্ষার্থীর দায়িত্ব : শিক্ষার সাথে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক থাকা দরকার অত্যন্ত নিবিড়। বলা হয়েছে, ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত বিদ্যা অন্বেষণ কর’। সংস্কৃততে একটা কথা আছে, ‘ছাত্রানং অধ্যয়নং তপঃ’ অর্থাৎ অধ্যয়ন বা লেখা-পড়াই হচ্ছে ছাত্রদের তপস্যা ও প্রধান কর্তব্য। তবে লেখাপড়া করতে হবে একটা পদ্ধতি মেনে। স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি রেখে পানাহার, ঘুম, গোসল ইত্যাদি নিয়মিত ও সময়মতো করতে হবে। সাধারণত সরকারের শিক্ষা বিভাগের নির্দেশিত কারিকুলাম মেনে প্রত্যেক শিক্ষালয়ের একটি সিলেবাস বা পাঠ্যতালিকা থাকে। কোন পাঠ্যবই বছরের কোন সময়ে কতটুকু পড়াতে হবে তার উল্লেখ থাকে সিলেবাসে। পরীক্ষায় আগত প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বিভাজনও তাতে উল্লেখ থাকে। প্রতিটি শিক্ষালয়ের থাকে নিজস্ব ক্লাস রুটিন। এসব অনুসরণ করে শিক্ষকগণ পাঠদান করে থাকেন, আর শিক্ষার্থীরা তা গ্রহণ করে থাকে। সিলেবাসভিত্তিক পাঠ্যবইয়ের বাইরে পড়া ও শেখার জন্য রয়েছে জ্ঞানজগতের এক বিশাল ভান্ডার।

মানুষ হাওয়া খেয়ে বাঁচে না, ভাত-রুটি খেয়ে বাঁচে। তবে ভাত-রুটি হজম করতে রীতিমত ‘হাওয়া’ খাওয়ার দরকার হয়। এখানে পাঠ্যবই ভাত-রুটি, আর অন্য সকল বই হাওয়া। কাজেই শিক্ষার্থীকে পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ার অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকগণ এক্ষেত্রে বই নির্বাচন ও বই হাতে তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারেন। তবে শিক্ষার্থীর মূল কাজ হবে তার বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমের ভিত্তিতে নিজের পড়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তার হাতে থাকবে বিদ্যালয়ের সিলেবাস ও ক্লাস রুটিন। ক্লাস রুটিন অনুযায়ী প্রতিদিন যেসব পাঠ্য রয়েছে এবং শিক্ষক বইয়ের যে অংশ পড়া দিয়েছেন তা সে ভালভাবে আয়ত্ত করতে চেষ্টা করবে। পড়া আয়ত্তে না আসা পর্যন্ত অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাবে। কোন প্রকার অলসতার প্রশ্রয় দেবে না। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন করবে। মনে করবে আমি প্রতিদিন পরীক্ষা দিচ্ছি বা পরীক্ষার প্রস্ত্ততি নিচ্ছি। পরীক্ষা এলে পড়ব বা তার প্রস্ত্ততি নেব, তার আগে প্রস্ত্ততি নেব না-এমন ভাবলে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা যায় না। যারা বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেবে, যেমন ৮ম শ্রেণী বা ১০ম শ্রেণী-তারা পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন বোর্ডের প্রশ্ন সামনে রেখে পড়বে। মনে রাখবে ঐসব প্রশ্নের আলোকে তার পরীক্ষার প্রশ্ন হবে। কাজেই সেগুলো আয়ত্ত করতে পারলে তার পরীক্ষা ভাল হবে। বোর্ড পরীক্ষার ৪-৫ মাস আগেই নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করতে হবে। পরে শুধু রুটিন মাফিক পুনরাবৃত্তি ও সংশোধন-সংযোজন করলেই হবে।

মনে করা হয় যে, পরীক্ষা ভিত্তিক পড়ালেখায় সার্বিক জ্ঞান অর্জিত হয় না। কথাটির মধ্যে সত্যতা আছে। কিন্তু দিন শেষে তো পরীক্ষার সনদই মূল্যায়িত হয়। আর যিনি সনদ লাভের জন্য পড়েন তিনি যে সার্বিক জ্ঞান অর্জনের কথা ভাবেন না এমন ভাবনা সর্বাংশে সত্য নয়। পরীক্ষা পাশের পড়ার জন্যও তো তাকে অবশ্যই অন্য অনেক বিষয় পড়তে ও জানতে হয়। পরিবর্তনশীল কারিকুলামে পরীক্ষার ধরন ও পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। শিক্ষার্থীকে সর্বদাই এ পরিবর্তনের সাথে অভিযোজিত হ’তে হবে। তাকে সিলেবাস সামনে রেখে পাঠ্যবই যথাযথভাবে আয়ত্ত করতে হবে। যে শ্রেণীতে সে অধ্যয়ন করে ঐ শ্রেণীর যোগ্য যে কোন বিষয়ের যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং শ্রেণীর যোগ্য সমস্যার সমাধানে তাকে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। পড়ার সময় পরীক্ষায় আসার মতো অংশ বা তথ্য পাঠ্যবইয়ে আন্ডার লাইন করতে হবে। প্রয়োজনে পাশে নোট রাখতে হবে। শিক্ষকদের কোন কথা প্রয়োজনবোধে বইয়ের কোন ফাঁকা স্থানে লিখে রাখতে হবে। বইয়ে মোটেও দাগ না দেওয়া কিংবা পুরো অধ্যায় আন্ডার লাইন করা কোন ভাল শিক্ষার্থীর লক্ষণ নয়।

পরীক্ষা পদ্ধতি : ২০১০ সাল থেকে দেশে সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়। এ পদ্ধতির উপর দেশব্যাপী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এ পদ্ধতি সম্পর্কে ভাল ধারণা আছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরের জন্য বাজার থেকে প্রাপ্ত সৃজনশীল গাইড, সহায়ক বই ইত্যাদি নামের নোট বইয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। আসলে ঐসব নোট, গাইড ও সহায়ক বই শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশে মোটেও সহায়ক নয়, বরং তা সৃজনশীল প্রতিভা ধ্বংসে সহায়ক। শিক্ষার্থীর উচিত হবে তার শিক্ষক অথবা অভিজ্ঞ কারও সাহায্যে হাতে কলমে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার কলাকৌশল আয়ত্ত করা। তাকে প্রথমে সৃজনশীল প্রশ্নের ধাপসমূহ যেমন জ্ঞান/স্মরণ, অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতর দক্ষতা কাকে বলে তা ভালভাবে জানতে, বুঝতে ও মনে রাখতে হবে। উচ্চতর দক্ষতার মধ্যে তিনটি বিষয় নিহিত রয়েছে- বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত প্রদান। প্রশ্নের শেষে ‘বিশ্লেষণ কর’, ‘মূল্যায়ন কর’, ‘যথার্থতা নিরূপণ কর’, ‘মতামত দাও’, ইত্যাদি শব্দগুচ্ছ লেখা থাকে। এগুলোর সংজ্ঞা জানা যেমন যরূরী তেমনি কিভাবে লিখলে বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্তদান হয় তার একটা নিয়ম আছে। সে নিয়ম জানাও যরূরী। নিয়ম মেনে লিখতে পারলে বা বুঝিয়ে বলতে পারলে উচ্চতর দক্ষতা অর্জিত হয়েছে বলে বুঝা যাবে। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখা যথাযথ হচ্ছে কি-না তা সৃজনশীল প্রশ্নে দক্ষ শিক্ষকদের দিয়ে মূল্যায়ন করাতে হবে। তারা লেখার মান যাচাই করে যথার্থ নম্বর দিবেন। যখন ১০-এ ১০ কিংবা ৯ পাওয়া যাবে তখন আশা করা যায় মানসম্মত সৃজনশীলতার দক্ষতা বিকশিত হচ্ছে।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখায় পারদর্শী শিক্ষার্থী তার উত্তর লেখা সঠিক হয়েছে কি-না তা এক সময়ে নিজেই বুঝতে ও মূল্যায়ন করতে পারে। শিক্ষক কোন প্রশ্নে নম্বর কম দিলে সে বুঝতে পারে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতার সর্বোচ্চ ধাপের উত্তর তার সঠিক হয়নি কিংবা হয়তো পুরো প্রশ্নের উত্তর সঠিক হয়নি। এক্ষেত্রে শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে সে তার প্রশ্নের যথার্থ উত্তর আয়ত্ত করতে পারে। আর এখানেই শিক্ষক হবেন ফেসিলিটেটর বা সহযোগী।

যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি : বর্তমান যুগ যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক উন্নয়নের যুগ। প্রতিযোগিতার এ যুগে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হ’লে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কাজে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প কিছু নেই। ফেসবুক চালিয়ে, গেম খেলে কিংবা ইউটিউব দেখে সময় নষ্ট করার নাম তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন নয়। কিন্তু আমাদের যুবসমাজকে দেখা যায়, এন্ড্রয়েড ফোন হাতে এগুলোতে মজে থাকতে। ফলে প্রকৃত কাজের কাজ তাদের দ্বারা হয়ে উঠছে না। তবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনেকেই যে তথ্য-প্রযুক্তিতে বিশেষ দক্ষ হয়ে উঠছে এবং আগামীতে তারা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে এ কথা অনস্বীকার্য।

নৈতিক শিক্ষা : বৈষয়িক উন্নতি ও সম্পদের বৃদ্ধি যতই ঘটুক না কেন মানুষ যদি চারিত্রিক সদগুণে বিভূষিত না হয় এবং মানুষের সাথে সদাচরণ না করে তবে তার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগবে না। মানুষের পরিচয় তো তার মনুষ্যত্বে। শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটানো। বিবেক মানুষের মধ্যে ভাল ও মন্দের তারতম্য বুঝতে ব্যাপক সহায়তা করে। কোন কথা কিংবা কাজ ভাল না মন্দ তা বিবেকই বলে দেয়। ইসলাম ধর্মে ভাল ও মন্দের আলোচনা সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এজন্য ‘শিষ্টাচার’ ও ‘সদাচরণ’ নামে প্রত্যেক হাদীছ গ্রন্থে স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ কোনটা করণীয় এবং কোনটা বর্জনীয় তা বুঝতে পারে। কিসে ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ হয় এবং কিসে অকল্যাণ হয় শিক্ষা মানুষকে তা বলে দেয়।

তবে ধর্মে কিংবা শিক্ষায় যতই চরিত্র ও সদাচারের নিয়ম-নীতি ও বিধি-বিধান উল্লেখ থাক না কেন পরিবার ও সমাজ থেকে শিক্ষার্থী যদি সেগুলো না শেখে এবং আচার-আচরণে তা চর্চা না করে তবে তার মধ্যে সদাচরণের দিক নাও ফুটে উঠতে পারে। এজন্য মাতা-পিতাসহ পরিবারের বয়জ্যেষ্ঠদের কর্তব্য, ছোটদের সদগুণাবলীর তালীম দেওয়া। কোথায় কোন কথা কিভাবে বলতে হবে, কেমন আচরণ করতে হবে পরিবারের লোকেরা ছোট থেকে সেসব বলে বুঝাবেন। কিভাবে পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে মিশতে হবে, আত্মীয়-স্বজন কিংবা পরিচিত কেউ বাড়িতে আসলে তাদের সামনে কিভাবে এগিয়ে যেতে হবে, কুশল বিনিময় করতে হবে তা তাদের শিখাতে হবে। শিক্ষক ও বয়স্কদের কথা মান্য করার শিক্ষা শিশুদের পরিবার থেকে শিখতে হবে।

বিদ্যালয়ে সহপাঠীরা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। তাদের সাথেই তাদের পড়ালেখা, খেলাধুলা, ঘোরাফেরা, আড্ডা দেওয়া, ভ্রমণ ইত্যাদি ঘটে থাকে। বলতে গেলে মাতা-পিতা ও পরিবার থেকে শিক্ষার্থীরা এখন সহপাঠী বন্ধুদের দ্বারা বেশী প্রভাবিত। এসব সহপাঠী ভাল চরিত্রের হ’লে তো খুবই ভাল। কিন্তু তারা যদি মন্দ চরিত্রের হয় তাহ’লে তাদের হাতে শিক্ষার্থীদের সর্বনাশ হ’তে কিছু বাকি থাকবে না। আমরা অভিভাবকরা যে এসব কথা জানি না তা নয়, কিন্তু ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে তাদের সাথে সঙ্গদানের সময় মেলে না, কিংবা কার সাথে মিশে খারাপ হচ্ছে তার খোঁজ রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে আমরাই তাদের সর্বনাশের পথে এগিয়ে দিচ্ছি। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষের সন্তানসংখ্যা কম। কিন্তু তারপরও তারা নানা কারণে পিতা-মাতা থেকে চারিত্রিক গুণ অর্জনের শিক্ষা কমই পাচ্ছে।

আজ ফেসবুক, ইউটিউব, টিভি ও পশ্চিমা সংস্কৃতির বন্যায় প্লাবিত হয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব সংস্কৃতি ও সভ্যতা ভুলতে বসেছে। ফলে আমাদের সন্তানরা এখন অস্থিরমতি, অসহিষ্ণু ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তারা মারামারি, চুরি, ছিনতাই, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ইত্যাদি জঘন্য কাজে জড়িয়ে পড়ছে। না তারা মাতা-পিতাকে খুব একটা মান্য করছে, না শিক্ষক ও বয়স্কদের শ্রদ্ধা করছে। বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের যেখানে মিলেমিশে পাঠ গ্রহণ করার কথা সেখানে তারা নানাভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। শ্রেণীকক্ষে ও শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষার্থীদের মাঝে মারামারি, হাতাহাতি এখন প্রায়শ ঘটছে। স্কুলড্রেস না পরা, স্কুল পালানো, বাড়ি থেকে পড়া না করে আসা, নিয়মিত বই না পড়া, কাউকে গ্রাহ্য না করা, এখন যেন কিশোর-কিশোরীদের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে এসব নেতিবাচক দিক মোটেও কাম্য নয়। শিক্ষক হই, আর অভিভাবক হই আমাদের সন্তানদের এহেন নেতিবাচক প্রবণতা থেকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে।






বিষয়সমূহ: শিক্ষা-সংস্কৃতি
ইখলাছ - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপনের আবশ্যকতা - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
তাহরীকে জিহাদ : আহলেহাদীছ ও আহনাফ (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
ঈছালে ছওয়াব : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ইসলামে ভ্রাতৃত্ব (২য় কিস্তি) - ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ
ইসলামী ভ্রাতৃত্বের আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
অশ্লীলতার পরিণাম ঘাতক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব - লিলবর আল-বারাদী - যশপুর, তানোর, রাজশাহী
আলেমের গুরুত্ব ও মর্যাদা - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
তাহরীকে জিহাদ : আহলেহাদীছ ও আহনাফ (৮ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
জান্নাতের পথ - ড. নূরুল ইসলাম
বর্তমান পরিস্থিতিতে ইমামদের দায়িত্ব ও কর্তব্য - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
সমাজ সংস্কারে ইমামগণের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
আরও
আরও
.