মধ্যপ্রাচ্যের
দুই দেশ ইহুদীবাদী ইসরাঈল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ‘শান্তি চুক্তি’
সম্পন্ন হয়েছে। গত ১৩ই আগস্ট বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের
ফলে তৃতীয় আরব দেশ হিসাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরাঈলের সঙ্গে সম্পূর্ণ
স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছে। এর আগে মিসর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডান
১৯৯৪ সালে দেশটির সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। এর ফলে দু’দেশে তৈরি হবে
দূতাবাস। স্থাপিত হবে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিমান যোগাযোগ ও
টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি।
চুক্তি সম্পন্নের পর ইসরাঈলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘এই চুক্তি ইসরাঈলকে একটি ঐতিহাসিক দিন উপহার দিয়েছে’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আজ বিরাট সাফল্য! আমাদের দুই দারুণ বন্ধু ইসরাঈল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি হয়েছে’।
আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আনওয়ার কারকাশ বলেছেন, ইসরাঈলকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তার দেশ সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ এর মাধ্যমে পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার যে পরিকল্পনা নিয়ে ইসরাঈল এগুচ্ছিল, সেই ‘টাইম বোমা’ থামিয়ে দেওয়া গেছে। তবে এর জবাবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তীনের পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখলের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখলেও তা বাতিল করা হয়নি। ঐ পরিকল্পনা এখনও ইসরাঈলের রয়েছে।
ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আববাস এর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘এটি যেরুযালেম, আল-আক্বছা এবং ফিলিস্তীনীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’। দেশটি এরই মধ্যে আরব আমিরাত থেকে ফিলিস্তীনী দূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মুহাম্মাদ বলেছেন, এ চুক্তি মুসলিম বিশ্বকে বিভক্ত ও রক্তাক্ত করে তুলবে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ফিলিস্তীনীদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ সহ্য করা যায় না। আমিরাতের এই ভন্ডামী ইতিহাস কখনও ক্ষমা করবে না। ইরান বলেছে, ফিলিস্তীনীদের সঙ্গে এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমিরাত কখনোই ক্ষমা পাবে না। মিসর, জর্ডান, বাহরায়েন ও ওমান এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সঊদী আরবের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে প্রকাশ্য কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের বিখ্যাত কলামিস্ট টমাস এল ফ্রিডম্যান চুক্তি সম্পর্কে লিখেছেন ‘একটি ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে মধ্যপ্রাচ্যে’।
[আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা ইহূদী-নাছারাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, তারা তাদের মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না (সূরা মায়েদাহ ৫/৫১) (স.স.)]