ইসরাঈলকে ইহূদী রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবে না আরব লীগ
ইসরাঈলের দাবী অনুযায়ী ইসরাঈলকে ইহূদী রাষ্ট্র হিসাবে মেনে নিতে ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আববাসের অস্বীকৃতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে আরব লীগ। গত ২৩শে মার্চ মিসরের রাজধানী কায়রোয় এক বৈঠকে আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আববাসের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করার পরপরই এই আহবান জানান আরব লীগ প্রধান নাবীল আল- আরাবী।
আরব লীগ এমন এক সময় এ সিদ্ধান্ত নিল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আয়োজিত ইসরাঈল-ফিলিস্তীন শান্তি আলোচনার সময়সীমা ঘনিয়ে আসছে। আরব লীগ প্রধান ইসরাঈলকে একটি ইহূদী রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতিদানের দাবীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহবান জানিয়েছেন সব আরব দেশের প্রতি। ইসরাঈলের এই দাবীকে তিনি শান্তি আলোচনার জন্য নির্ধারিত ফ্রেমওয়ার্কের পরিপন্থী বলেও আখ্যায়িত করেন।
ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আববাস অভিযোগ করেন, এর আগে আর কোন আরব রাষ্ট্রের সাথে শান্তিচুক্তি করার সময় ইসরাঈল এ ধরনের দাবী করেনি। অথচ ফিলিস্তীনের সাথে শান্তি আলোচনা করতে গিয়েই ইসরাঈল এখন তাকে একটি ইহূদী রাষ্ট্র হিসাবে মেনে নেয়ার দাবী করছে। আববাস বলেন, তিনি কখনই ইসরাঈলকে ইহূদী রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবেন না।
মিসরের বরেণ্য লেখক মুহাম্মাদ কুতুব আর নেই
‘ইখওয়ানুল মুসলিমীন’ বা ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর সাবেক নেতা সাইয়িদ কুতুবের ভাই মিসরের বরেণ্য লেখক মুহাম্মাদ কুতুব (৯৫) আর নেই। গত ১১ এপ্রিল বাদ জুম‘আ সঊদী আরবের জেদ্দা হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি ২৬ এপ্রিল ১৯১৯ সালে মিসরের আসিউত শহরের মুয়াসসা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪০ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। পরে পি-এইচ.ডি করে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫৪ সালে মিসরের বিপ্লবের সময় বড় ভাই সাইয়িদ কুতুব ও বোন আমেনা বেগমের সাথে গ্রেফতার হন। দুই বছর কারাযাপন করে মুক্তি লাভ করলে আবার ১৯৬৫ সালে গ্রেফতার হন এবং ১৯৭২ সাল পর্যন্ত একাধারে সাত বছর কারাবরণ করেন। তিনি মুসলিম ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল-বান্নাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে রাজনীতি করেছেন। ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান এবং স্থায়ীভাবে সঊদী আরব চলে যান। দীর্ঘ দিন রিয়াদ ও জেদ্দাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান ও শিক্ষা সংস্কারে ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক স্কলার হিসাবেও তিনি ব্যাপকভাবে সমাদৃত। এ যাবৎ তিনি আরবী ও ইংরেজী ভাষায় ধর্ম, সমাজ, রাজনীতিসহ আধুনিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক বই লিখেছেন।
তার ইন্তেকালে আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলার ফোরামের চেয়ারম্যান ও সঊদী আরবের গ্র্যান্ড মুফতীসহ বিভিন্ন দেশের ওলামায়ে কেরাম শোক প্রকাশ করেছেন।
[আমরা তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করছি (স.স.)]
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে খ্রিষ্টান দম্পতির মৃত্যুদন্ড
ধর্ম অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের একটি যেলা আদালত এক খ্রিষ্টান দম্পতিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। এছাড়া তাদেরকে এক লাখ রূপি করে জরিমানাও করা হয়েছে।
গত ১১ই এপ্রিল শুক্রবার এই রায় দেয়া হয় বলে দ্য ডন পত্রিকা জানিয়েছে। গোজরার সেইন্ট ক্যাথিড্রাল স্কুলের নৈশপ্রহরী শাফকাত মাশেহ ও তার স্ত্রী সাগুফতা মাশেহকে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননামূলক মুঠোফোন বার্তা (টেক্সট মেসেজ) পাঠানোর অভিযোগ করেন স্থানীয় দোকানদার মালিক মোহাম্মাদ হুসেইন ও গোজরার তহসিল বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ার মানছূুর গোরায়া। অতিরিক্ত জেলা জজ আমীর হাবীব তাদের দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।
নাস্তিকদের সন্ত্রাসী ঘোষণা করল সঊদী আরব
সঊদী আরব এক নতুন আইনে নাস্তিকদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে। সম্প্রতি জারি করা ডিক্রিসমূহের একটি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনভাবে নাস্তিক্যবাদী চিন্তা প্রকাশ করলে কিংবা ইসলাম ধর্মের মৌলিক কোন বিধান নিয়ে প্রশ্ন তুললে সেটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হিসাবে বিবেচিত হবে।
নতুন রাজকীয় ফরমানগুলি জারি করা হয়েছে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায়। এর মাধ্যমে সঊদী বাদশাহ সব ধরনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিবাদ বন্ধ করতে চাইছেন।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নতুন সিরিজ আইনে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সঊদী নাগরিকদের (যারা রাজতন্ত্র উচ্ছেদের প্রশিক্ষণ নিয়েছে) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিশদ বিধান রাখা হয়েছে। বাদশাহ আবদুল্লাহর জারি করা ৪৪ নম্বর ডিক্রিতে সঊদী আরবের বাইরে কোন শত্রুতায় অংশগ্রহণ করলে তিন থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।
মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে মুসলিম গণহত্যা
খ্রিষ্টান অধ্যুষিত মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরেই খ্রিষ্টান ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে। তবে সম্প্রতি উগ্রপন্থী খ্রিষ্টান মিলিশিয়াদের নৃশংসতায় ঐ দেশটিতে শত শত মুসলমান নিহত হয়েছেন। প্রাণের ভয়ে কয়েক লাখ মুসলমান প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। উগ্রপন্থী খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের ঘরবাড়ি ও অসংখ্য মসজিদ মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। মুসলমানদের বিতাড়িত করে তারা মসজিদগুলোকে পানশালায় রূপান্তরিত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সাড়ে নয় লাখেরও বেশি মুসলমান শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে এবং দেশটির হাযার হাযার মুসলমান নিহত হয়েছে। গত বছরের মার্চ মাসে মুসলিম সেলেকা বিদ্রোহী সংগঠন খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল। আর সে সময় থেকেই উগ্রপন্থী খ্রিষ্টান মিলিশিয়ারা মুসলমানদের ওপর তাদের অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেলেকাদের বিদ্রোহের প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে বহু সাধারণ মুসলমানকে আজ নির্মমভাবে জীবন দিতে হচ্ছে। তবে দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ফ্রান্স ও আফ্রিকান ইউনিয়ন হাযার হাযার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে। কিন্তু তা তেমন কোন কাজে আসছে না।