গত ২৯শে ফেব্রুয়ারী কাতারের রাজধানী দোহায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তালেবান ও মার্কিন ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তানে মোতায়েনরত সৈন্যদের ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।  চুক্তির শর্ত মেনে আফগানিস্তানে তালেবান কোনও হামলা না চালালে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়াশিংটনের ন্যাটো মিত্ররা দেশটি থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে এবং আল-কায়েদা সহ অন্যান্য চরমপন্থী কোনও গোষ্ঠী তালেবান নিয়ন্ত্রিত ভূখন্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। দোহার শেরাটন হোটেলে ঐতিহাসিক এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আব্দুল গণী বারাদারের নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এছাড়া অংশ নেন ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর তালেবানের প্রতিনিধি মুহাম্মাদ নাঈম এই চুক্তিকে সম্মুখে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তালেবানের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আফগানিস্তানে দখলদারিত্বের অবসানে তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।

লাখ লাখ আফগান নাগরিকের আশা, এই চুক্তির ফলে দেশের ভেতরে আমেরিকার দীর্ঘদিনের যুদ্ধের অবসানের পথ তৈরি হবে। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে হামলার জের ধরে কয়েক সপ্তাহ পর দেশটিতে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৮ বছর ধরে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলায় লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দেড় যুগের আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২ হাযার ৪০০ সেনা নিহত হয়েছে।

এর ফলে দেশটির ক্ষমতা থেকে অপসারিত হ’লেও এখনও প্রায় ৪০ শতাংশ ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তালেবানের হাতে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে সৈন্যদের ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হ’লে তা তালেবান যোদ্ধাদের আন্তর্জাতিক বৈধতা দেবে।

আফগানিস্তানে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ হাযার সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ১৩৫ দিনের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহার সহ অন্যান্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া আগামী ২৯শে মে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিয়ে তালেবান সদস্যদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহবান জানাবে আফগান সরকার।

[আমরা এই শাস্তিটিকে স্বাগত জানাই। এই সাথে গত ১৮ বছর ধরে আফগানিস্তানে অবৈধ দখল ও রক্তপাতের জন্য আমেরিকাকে দায়ী করি। আল্লাহর পক্ষ হ’তে তাদের উপর লা‘নত কামনা করি (স.স.)]






আরও
আরও
.