করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানতে হবে।

সংস্থাটি বলছে, মাস্ক পরে শরীরচর্চা, প্রাতঃভ্রমণ বা জগিং করা যাবে না। মাস্ক পরে এসব কাজ করলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেন কমে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হ’তে পারে। এজন্য একেবারে নির্জন স্থানে এসব কাজ করতে হবে। যেখানে জীবাণু প্রবেশের সম্ভাবনা থাকবে না।

খুব ভারী কাজ ও অতিরিক্ত দৈহিক পরিশ্রম হয়, এমন কাজের সময় মাস্ক পরলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত হ’তে পারে।

শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হ’লে তখন অস্বাভাবিক ক্লান্তি দেখা দেয়। পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অংশের পেশিতে টান পড়া, খিঁচুনি, বমি ভাব, মাথা ঘোরানো, এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হ’তে পারে। তাই এসব কাজ করার সময় মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পেয়ারা

শীত হোক কী বর্ষা, শরীর সুস্থ রাখতে পেয়ারা দারুণ উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি, লাইকোপেন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের প্রতিটি অংশকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকালীন এই সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন একটি করে পেয়ারা খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এছাড়াও নিয়মিত পেয়ারা খেলে আরও যেসব উপকার পাওয়া যাবে-

সংক্রমণের আশঙ্কা কমে : এই ফলে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ক্ষতিকর জীবাণুদের ধ্বংস করতে শুরু করে। ফলে কোন ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত সব ধরনের বিষাক্ত উপাদানও বেরিয়ে যায়। এতে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে। নিয়মিত একটা করে পেয়ারা খাওয়া শুরু করলে দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে : প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ থাকার কারণে নিয়মিত পেয়ারা খেলে দৃষ্টিশক্তির দারুণ উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে ছানি, ম্যাকুলার ডিজঅনারেশন এবং গ্লুকোমার মতো রোগও দূরে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা মযবূত করে। ফলে ছোট-বড় কোন ধরনের রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। নানা ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : পেয়ারায় উপস্থিত ভিটামিন বি ৩ এবং বি ৬ মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের কগনেটিভ ফাংশন, অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি এবং মনোযোগের উন্নতি ঘটে।

ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে : পেয়ারায় থাকা লাইকোপেন, কুয়েরসেটিন, ভিটামিন সি এবং পলিফেনল শরীরে জমতে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমে : শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে থাকলে পেটের রোগ যেমন কমে, তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও দূরে থাকে।

যেভাবে রান্না করলে শাক-সবজির পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাবারের কোন বিকল্প নেই। এসব উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস রঙিন ও সবুজ শাকসবজি। তবে সঠিক পদ্ধতিতে রান্না না করলে শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শাকে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, তা দিয়েই আমাদের দৈনিক চাহিদা পূরণ সম্ভব। শাকসবজির ভিটামিন সি ধরে রাখার সর্বোত্তম উপায় হ’ল, ভাপে বা প্রেশার কুকারে রান্না করা। ভাপে অন্য পুষ্টি উপাদানেরও (ক্যারোটিন, বি ভিটামিন, ফাইটোকেমিক্যালস ইত্যাদি) অপচয় কম হয়। কাজেই পুষ্টি চাহিদা পূরণে শাকসবজি রান্নার ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

  • শাকসবজি যথাসম্ভব বড় বড় করে কাটতে হবে। এতে আলো ও বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিনের ক্ষয় কম হয়।
  • ভিটামিন বি ও সি-এর অপচয় রোধে সবজি খোসা ছাড়ানো ও টুকরা করার পর আবার ধোয়া যাবে না। পানিতে ভিজিয়েও রাখা যাবে না।
  • অল্প সময় ধরে রান্না করতে হবে। দীর্ঘ সময় ও উচ্চ তাপে রান্নায় শাকসবজির ভিটামিন সি নষ্ট হয়।
  • খোসাসহ সবজি রান্না করলে পুষ্টি উপাদান বেশী মাত্রায় ধরে রাখা যায়। বিশেষ করে আলু, মিষ্টি আলু, মূলা, গাজর ইত্যাদি মূল ও কন্দজাতীয় সবজি খোসাসহ রান্না করলে ভিটামিন সিসহ অন্য পুষ্টি উপাদান বেশী পরিমাণে অক্ষুণ্ণ থাকে। টমেটো, ব্রকলি, পেঁয়াজ, গাজর ইত্যাদি কাঁচা না খেয়ে রান্না করে খেলে রোগপ্রতিরোধকারী উপাদানগুলো বাড়ে।
  • শাকসবজি কাটার ক্ষেত্রে ধারালো ছুরি, বঁটি ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা ছুরি-বঁটিতে ভিটামিন সি নষ্ট হয়।
  • সূর্যের আলোয় রিবোফ্লাভিন নষ্ট হয় বলে শাকসবজি কেটে খোলা রাখা যাবে না। পুষ্টি উপাদানের অপচয় রোধ করতে রান্নার ঠিক আগ মুহূর্তে কাটতে হবে।
  • ঢাকনা দেওয়া পাত্রে রান্না করা ভালো। এতে রান্না দ্রুত হয়, খাবার অক্সিজেনের সংস্পর্শে কম আসে বলে ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন নষ্ট কম হয়।
  • রান্নায় যতটা সম্ভব কম পানি ব্যবহার করতে হবে।
  • সামান্য তেল দিয়ে শাকসবজি রান্না করলে ক্যারোটিন অক্ষুণ্ণ থাকে। সেই সঙ্গে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলোও সহজেই দেহে শোষিত হয়।
  • শাকসবজি রান্নায় বেকিং সোডা ব্যবহার করা যাবে না। এতে ভিটামিন সি, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন ও ফলিক অ্যাসিড নষ্ট হয়।
  • শাকসবজি রান্নার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে খেতে হবে।

\ সংকলিত \






বিষয়সমূহ: চিকিৎসা
আরও
আরও
.