আমাদের দৈনন্দিন
জীবনের নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে হাঁটুতে আঘাত লাগতে পারে বা এর ক্ষতি হ’তে
পারে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ভালো কিংবা খারাপ যাই হোক না কেন, হাঁটুর ঝুঁকি
থেকেই যায়। এখানে হাঁটুর কিছু ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হ’ল।-
১. চেয়ারের উচ্চতা : বর্তমানে আগের তুলনায় বহু মানুষই চেয়ারে বসতে অভ্যস্ত। তাই এ কাজে এখন চেয়ারের উচ্চতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সারাদিন চেয়ারে বসে থাকতে হ’লে অবশ্যই চেয়ারের উচ্চতা লক্ষ্য করতে হবে। উরু যেন হাঁটু থেকে এক বা দুই ইঞ্চি উঁচুতে থাকে। এছাড়া পায়ের ওপর পা তুলে বসার অভ্যাসও ত্যাগ করতে হবে।
২. কয়েকটি অনুশীলন : হাঁটুর ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে কয়েকটি শারীরিক অনুশীলন বেশ কার্যকর। এগুলো হ’ল-
রেকটাস স্ট্রেচ : এজন্য এক পাশ হয়ে শুয়ে নিচের হাঁটু ও পা সোজা রাখতে হবে। এবার ওপরের পা হাঁটু মুড়িয়ে যথাসম্ভব পেছনে নিতে হবে। ওপরের পা টান টান করে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এরপর তা আবার স্বাভাবিক করে অন্য পা একই প্রক্রিয়ায় স্ট্রেচ করতে হবে।
কাফ স্ট্রেচ : দেয়াল থেকে এক বাহু সমান দূরত্বে দাঁড়িয়ে উভয় হাত দিয়ে দেয়াল ধরে দাঁড়িয়ে বাম পা সামনে এবং ডান পা পেছনে রাখতে হবে। এরপর বাম হাঁটু কিছুটা মুড়িয়ে ডান পায়ের পাতার ওপর চাপ দিতে হবে। ডান পা সোজা রেখে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্ট্রেচটি করুন। এরপর পা বদলে এ প্রক্রিয়া কয়েকবার করতে হবে।
হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ : সোজা হয়ে শুয়ে পড়ে বাম হাঁটু বুকের ওপর নিয়ে আসতে হবে। আর দুই হাত দিয়ে থাই টেনে ধরতে হবে। এ সময় হাঁটু যথাসম্ভব সোজা রাখার চেষ্টা করতে হবে। কিছুক্ষণ পর পা বদলে নিতে হবে।
৩. জগিং : জগিং হাঁটুর ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তবে এটি বেশী হয় যদি শক্ত রাস্তায় কিংবা ফুটপাথে জগিং করা হয়। তাই নরম ঘাসের ওপর জগিং করতে হবে। এমনকি ট্রেডমিলের ওপরের অংশ যদি শক্ত হয় তাহ’লে তাও হাঁটুর ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া জগিংয়ের পর স্ট্রেচ করা উচিত।
৪. ব্যথা হ’লে করণীয় : জগিং, শারীরিক অনুশীলন বা যে কোন ধরনের পরিশ্রমের পর যদি হাঁটুতে ব্যথা হয়ে যায় তাহ’লে সে কাজটি বন্ধ রাখতে হবে। অনেকেই বিষয়টি সঠিকভাবে মেনে না চলায় ব্যথা বেড়ে যায়।
৫. হাঁটার ভঙ্গি ঠিক করা : হাঁটার মূল শক্তি আসা উচিত পেলভিস থেকে। এছাড়া দেহ সামান্য সামনে ঝুঁকে থাকতে পারে। তাছাড়া হাঁটার সময় হাঁটু ও পায়ের আঙুল সোজা থাকতে হবে। বহু মানুষকে আঙ্গুলের ওপর ভর করে হাঁটতে দেখা যায়, যা পায়ের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। তাই হাঁটার ভঙ্গিতে যদি এসব ভুল থাকে তা ঠিক করে নিতে হবে।
৬. নিচু হয়ে না বসা : নিচু সোফা, চেয়ার কিংবা টুল দেখতে যতই ভাল হোক না কেন, বাড়িতে না রাখা ভাল। এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে হাঁটুর সমস্যা হ’তে পারে। এগুলো হাঁটুতে চাপ সৃষ্টি করে।
৭. ভাল জুতা ব্যবহার : নরম ও উন্নতমানের জুতা ব্যবহার করতে হবে। হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জন্য উপযুক্ত জুতার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
৮. মেনোপজের সময় সতর্ক থাকা : মেনোপজের সময় নারীদের দেহের নানা অংশে প্রচন্ড চাপ পড়ে। এ সময় হাড়ের ঘনত্বও কমে যায়। ফলে এ সময় শারীরিক অনুশীলনে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
৯. উপযুক্ত খাবার খাওয়া : হাঁটুর সুস্থতার জন্য উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত খাবার খেলে তা শরীরের অন্যান্য অংশের মতো হাঁটুরও ক্ষতির কারণ হ’তে পারে। এক্ষেত্রে হাঁটুর জন্য ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও বিভিন্ন মিনারেলের গুরুত্ব রয়েছে।
১০. সমস্যা নির্ণয় করা : হাঁটুর কোন সমস্যা হ’লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক সমস্যা নির্ণয় করতে হবে। হাঁটুতে সামান্য ব্যথা হ’লেও হেলাফেলা করা যাবে না।
যেসব খাবার শরীর বিষমুক্ত রাখবে
প্রতিটি মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য তার শরীর বিষমুক্ত রাখা একান্ত প্রয়োজন। নিয়মিত সহজলভ্য কিছু খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীর থেকে এই বিষাক্ত উপাদানগুলো দূর করা যায়।
তিতা খাবার : তিতা খাবার শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিরতার পানি অথবা করলা কিংবা নিমপাতার রসের জুড়ি নেই।
লেবু : লেবুতে আছে একগুচ্ছ ডিটক্স ডাইট যা টক্সিন নামক বিশেষ প্রকার জৈব, যা বিষ নির্মূলে সহায়তা করে। এছাড়া লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত ও ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। তাছাড়া লেবুর ক্ষারীয় প্রভাব শরীরে অম্লতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। প্রতিদিন এক ফালি লেবুর সাথে গরম পানি পানে শরীর থেকে বিষ নির্মূল করবে।
রসুন : সুস্থতার জন্য সবচেয়ে উপকারী খাদ্য রসুন। এতে রয়েছে এলিসিন নামক রাসায়নিক উপদান, যা রক্তে শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন ও টক্সিন নির্মূলে সাহায্য করে। রসুন কাচা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।
গ্রিন টি : শরীর থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক নির্মূলে গ্রিন-টি’র কোন বিকল্প নেই। তরল এই খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু চা নয়, একে ওযন কমানোর ঔষুধও বলা চলে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
টাটকা ফল : তাজা ফলে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও কম ক্যালোরি, যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো নির্মূলে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে চোখ ও ত্বককে উজ্বল করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।