জীবনীশক্তির জন্য খাদ্য গ্রহণের বিকল্প নেই। তবে খাওয়ার পরে যে ভুলগুলো আমরা হরহামেশই করি, সেগুলো পরিত্যাগ করা যরূরী। ভুলগুলোর মধ্যে কতিপয় নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।-

১. ভরা পেটে ফল খাওয়া : ‘খালি পেটে জল, ভরা পেটে ফল’ এ পুরাতন প্রিবাদ ঠক। কিন্তু খাওয়ার পরই ফল খাওয়া অনুচিত। কারণ ফল খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়। কিন্তু খাওয়ার পরেই খেলে সেই ফল দীর্ঘ ক্ষণ পেটে থেকে যায় এবং তা নষ্ট হয়ে গ্যাস ও ক্ষতিকারক টক্সিন তৈরী করে। তাই খাদ্য গ্রহণের অন্তত দুই ঘণ্টা পরে ফল খেতে হবে।

২. খেয়ে উঠেই চা পান করা : খেয়ে উঠে চা পান করার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। চায়ে ক্যাফেইন থাকে, যা শরীরে হজম প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। অ্যানিমিয়া রোগীদের পক্ষে এটা অতি মারাত্মক। খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টা পরে চা পান করতে হবে।

৩. গোসল করা বা সাঁতার কাটা : খাওয়ার পর গোসল করা বা সাঁতার কাটা ভীষণ খারাপ অভ্যাস। খাওয়ার পর শরীরের সমস্ত রক্ত পাকস্থলিমুখী হয়। কিন্তু গোসল করলে বা সাঁতার কাটলে শরীরে তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন হয়। এতে করে রক্ত আবার শরীরের সব অংশে পৌঁছাতে চেষ্টা করে। ফলে হজমশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ দিন এই অভ্যাস থাকলে হজমশক্তি নষ্ট হয়েও যেতে পারে।

৪. কোমর দোলানো : খেয়ে উঠেই অনেকে কোমরের ব্যায়াম শুরু করেন। তাদের ধারণা, এতে মেদ জমতে পারে না। এ ধারণা ঠিক নয়। কেননা খাওয়ার পর কোমরের ব্যায়ামে ওযন বাড়ে। উপরন্তু এতে বৃহদান্ত্র বেড়ে যেতে পারে, যাতে ভবিষ্যতে হজমশক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে।

৫. কসরত বন্ধ : রাতের খাবার গ্রহণের পর এক মাইল ধীরে হাঁটা যায়। তবে দৌড়ানো যাবে না। খাওয়ার পর দ্রুত হাঁটলে খাদ্যগুণ শরীরে ঢোকার আগেই বেরিয়ে যাবে। পক্ষান্তরে ধীর গতিতে হাঁটা উপকারে আসবে।

৬. খাদ্য গ্রহণের পরেই ঘুমানো : খাওয়ার পরই ঘুমানোর অভ্যাস অবিলম্বে ত্যাগ করা উচিত। ঘমানো তো দূরে থাক, খেয়ে উঠে শোয়াও খুব খারাপ। এতে ভবিষ্যতে পাকস্থলির সমস্যায় ভুগতে হ’তে পারে।

কোমল পানীয় হজমে বাধা সৃষ্টি করে

কোমল পানীয় সম্পর্কে আমরা যে ধারণা পোষণ করি, তা আদৌ ঠিক নয়। কোমল পানীয় মোটেই হজমে সহায়ক নয়। এটা সাময়িক কিছুটা শান্তি দিলেও মানবদেহের জন্য এটি অশান্তিরই বার্তা বয়ে আনে বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকদের মতে, কোমল পানীয় হজমে বাধা সৃষ্টি করে এবং শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ হ্রাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. ফ্রান্সিসকো কন্টারাইজ এ সম্পর্কে জানান, ক্যান্সার একটি বৃক্ষের মতো এবং অক্সিজেনবিহীন টিস্যু কোষ হ’ল এর পৃষ্ঠপোষক। তাই অত্যধিক কোমল পানীয় সেবনের ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসে। যা মানব দেহের জন্যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কোমলপানীয় ভর্তি ৫০০ গ্রামের একটি বোতলে কার্বন, ১৭০ ক্যালোরি সোডা এবং ১৫ চামচ চিনি ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্ষুধামন্দা, অবসাদ, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, দাঁতের ক্ষয়, বন্ধ্যাত্বের মতো রোগের ঝুঁকিও এই কোমল পানীয়তে বিদ্যমান।

বাগান পরিচর্যায় কিডনীর পাথরের ঝুঁকি কমে

প্রতিদিন বাগানে একটু কাজেই কিডনীতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। সম্প্রতি ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের মতে, সপ্তাহে মাত্র ৪ ঘণ্টা হালকা বাগান পরিচর্যা করলে ঘণ্টায় দুই মাইল বেগে ৩ ঘণ্টা হাঁটা বা ১ ঘণ্টা মাঝারি মাত্রার জগিংয়ের সমান উপকারিতা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে দৈনিক ২২০ ক্যালরির বেশি খাদ্য গ্রহণ কিডনীতে পাথরের ঝুঁকি ৪২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। এত দিন কিডনীতে পাথরের ঝুঁকি কমাতে পর্যাপ্ত পানি পান, ক্যালসিয়াম ও আমিষ গ্রহণে পরিমিতি এবং যথাসম্ভব সোডিয়াম ও অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করার কথা বলা হ’ত। কিন্তু এ গবেষণা প্রমাণ করে, স্বাভাবিক কায়িক শ্রমের মাধ্যমে ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে সঠিক ওযন বজায় রাখাও কিডনীতে পাথরের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

ওযন কমাতে সুস্বাদু খাবার

ওযন কমাতে কিংবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাতের খাবারের বদলে নিম্নের স্যুপটি বেশ কার্যকর। এতে ক্যালোরি খুব সামান্য, অথচ পেট ভরা রাখে বহুক্ষণ। নানান পুষ্টি উপাদান আছে বিধায় দেহও থাকবে সুন্দর।

উপকরণ : (ক) চিকেন/ভেজিটেবল স্টক ১ কাপ (খ) সিদ্ধ নুডুলস ১/২ কাপ (গ) সিদ্ধ সবজি পসন্দ মত (ঘ) রশুন কুচি (ঙ) লেবুর রস ২ টেবিল চামচ (চ) সিদ্ধ ডিম ১ টা (ছ) অল্প ধনিয়া পাতা কুচি (জ) লেমন গ্রাস স্টিক (থাই পাতা ) কয়েকটা (ঝ) লবণ প্রয়োজন মত (ঞ) অল্প অলিভ অয়েল।

প্রস্ত্তত প্রণালী :

১. এই স্যুপের প্রধান উপকরণ হ’ল চিকেন/ভেজিটেবল স্টক। এজন্য ৩ কাপ পানিতে ২ কাপ পরিমাণ মুরগির গোশত সহ হাড্ডি (হাড্ডিগুলো একটু ছেঁচে দেওয়া ভাল), পেয়াজ টুকরো, রশুন কয়েক কোয়া, আদা টুকরা, আস্ত গোলমরিচ, অল্প লবণ দিয়ে কম অাঁচে রান্না করতে হবে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা।

২. পানিটা শুকিয়ে ১ কাপের একটু বেশি থাকা অবস্থায় নামিয়ে নিতে হবে এবং শুধু পানিটা ছেঁকে নিতে হবে। গোশতগুলো অন্য যেকোন খাবারে ব্যবহার করা যাবে। ভেজিটেবল স্টকও একইভাবে বানাতে হবে।

৩. এবার একটা হাড়িতে ১ কাপ স্টক দিয়ে সাথে সিদ্ধ সবজি, রশুন কুচি, লেবুর রস, ধনিয়া পাতা কুচি, লেমন গ্রাস স্টিক (থাই পাতা), লবণ দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করতে হবে। এরপর সিদ্ধ নুডুলস দিয়ে রান্না করতে হবে আরও ২ মিনিট। এভাবে তৈরি হবে স্যুপ।

৪. নামিয়ে বাটিতে নিয়ে উপরে হাল্কা অলিভ অয়েল ছিটিয়ে দিতে হবে। (অলিভ ওয়েল হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে) উপরে সিদ্ধ ডিম এবং টালা গোল মরিচ দিয়ে গরম গরম এই স্যুপ পরিবেশন করতে হবে।

\ সংকলিত \






আরও
আরও
.