লাউ গাছের আগা, ডগা, ফল সবই অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। আমাদের দেশের গ্রাম কিংবা শহরের সকল মানুষের কাছে পরিচিত ও ব্যাপক জনপ্রিয় ও সুস্বাদু সবজি লাউ। এটা সর্বত্র সারা বছরই পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এ সবজি তাই আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। লাউ-এর আদি নিবাস আফ্রিকা। পরে তা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। লতানো জাতীয় উদ্ভিদ লাউয়ে ভিটামিন বি.সি. শর্করা ও খাদ্য শক্তি পাওয়া যায়। এর পাতায় এ.সি. ও ক্যালসিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বীজে থাকে ৪৫% ফ্যাট এসিড, প্রোটিন, অ্যামাইনোএসিড ইত্যাদি। বীজের তেল মাথাব্যথা দূর করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী লাউ গাছের পাতায় খাদ্য উপাদান হ’ল- প্রোটিন ২.৩ গ্রাম, শর্করা ৬.১ গ্রাম, চর্বি ০.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম, ৮০ গ্রাম, ক্যারোটিন ১৮৭ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন সি ৯০ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ৩৯ কিলোক্যালরি।
১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী লাউ-এ খাদ্য উপাদান হ’ল- জলীয় অংশ ৮৩.১ গ্রাম, প্রোটিন ১.১ গ্রাম, শর্করা ১৫.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৬ গ্রাম, লৌহ ০.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি, খনিজ পদার্থ ০.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২.৫ গ্রাম, ফসফরাস ১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ১০.০৩ মিলিগ্রাম, বি ২.০১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.০২ মিলিগ্রাম। তাছাড়া এতে ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ওমেগা ৬, ফ্যাটি এসিড আছে। এছাড়া লাউয়ের নানা ঔষধি গুণাগুণও রয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে নিয়মিত লাউ খেলে উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে আক্রান্ত হন। তারা লাউ খেয়ে উপকার পাবেন।
লাউ গাছের পাতা শাকও খুবই উপকারী। যাদের খাবার কম হজম হয় বা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে, তাদের জন্য লাউ খুবই উপকারী সবজি। নিয়মিত খেলে কর্মশক্তি বৃদ্ধি পায়। যাদের শরীর গরম বা মাথা গরম থাকে, তারা লাউ খেলে উপকার পাবেন। হৃদরোগে আক্রান্ত ও হাই-প্রেসারের রোগীরা নিয়মিত লাউ খেলে উপকার পাবেন। লাউ খেলে শরীরের চামড়ার আর্দ্রতা বজায় থাকে। ফলে শীতকালে চামড়ার টান টান ভাব কমে যায়।
কানের ব্যথায় লাউ গাছের নরম ডগার রস দিলে উপকার পাওয়া যায়। লাউ গাছের পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে জন্ডিস রোগে উপকার হয়। যাদের ঘুম কম হয় তারা রাতে লাউ খেলে রাত জাগার প্রবণতা কমে ঘুম আসতে পারে। যাদের সব সময় মাথা গরম থাকে তারা লাউ এর বীজ বেটে মাথার তালুতে রাখলে বা ভরণ দিলে উপকার পাবেন। খাওয়ায় অরুচি হ’লে লাউ-এর সবজি বা লাউ-এর বাকলের ভাজি খেলে সমস্যা কমে যাবে ইনশাআল্লাহ।
\ সংকলিত \