পাকিস্তানে স্কুলে হামলায় নিহত ১৪১
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পেশোয়ারের ওয়ারসাক রোডে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে একদল আত্মঘাতী চরমপন্থী। গত ১৬ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে যখন হামলা চালানো হয়, তখন ঐ স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। তাই ৫০০ শিক্ষার্থীর সকলেই উপস্থিত ছিল। হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১৪১ জন। তাদের মধ্যে শিশু ১৩২ জন। বাকি ৯জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। আহতের সংখ্যা ১২৫ এবং অনেকের অবস্থাই সংকটাপন্ন। পরে সেনাবাহিনী সামরিক অভিযান চালিয়ে অধিকাংশকেই বের করে আনে।
পাকিস্তানী কর্মকর্তারা জানান, হামলাকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরে অতর্কিতে স্কুলে হামলা চালায়। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় হামলাকারীরা সবাই। স্কুলভবনের ভেতর বোমা পেতে রাখায় স্কুলটির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ বেগ পেতে হয়। স্কুলের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী মুদাচ্ছির আওয়ান বলেন, ‘আমরা দেখলাম, ছয়জন লোক স্কুলের দেয়াল বেয়ে উঠছে। কিছুক্ষণ পরই দেখা গেল, তাদের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ গোলা ও অস্ত্রশস্ত্র। দেয়াল টপকে স্কুলে ঢুকেই তারা গুলি ছোড়া শুরু করে। আমরা দৌড়ে শ্রেণীকক্ষে ঢুকে পড়ি। এরপর তারা এক একটা শ্রেণীকক্ষে ঢুকে শিশুদের হত্যা শুরু করে। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, প্রাণে বাঁচতে তারা বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে পড়ে। কিন্তু যারাই নড়াচড়া করছিল, তাদেরই মাথা ও পায়ে গুলি করে হামলাকারীরা।
সেনাবাহিনীর বরাতে জানা যায়, এক শিক্ষকের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এক হামলাকারী। ঐ শিক্ষক জীবন্ত পুড়ে মারা যান। সেই দৃশ্য দেখতে বাধ্য করা হয় তাঁর ছাত্রদের।
হামলায় এত শিশুর প্রাণহানিতে দেশজুড়ে এক নযীরবিহীন শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানের ইতিহাসে এ রকম অমানবিক ও বর্বর হামলার নযীর আর নেই। বিশ্বেও এ ধরনের হামলা বিরল। স্কুলটির অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই সেনাসদস্যদের সন্তান।
হামলার দুই ঘণ্টা পরই দায় স্বীকার করে তাহরীক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। সংগঠনটির মুখপাত্র মুহাম্মাদ খোরাসানী বলেন, ‘উত্তর ওয়াযীরিস্তান ও খাইবার এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানের জবাবে এই হামলা। এতে আমাদের স্বজন হারানোর বেদনা তারাও বুঝতে পারবে’।
তবে এ বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়েছে আফগান তালেবান। নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা ইসলাম পরিপন্থী কাজ আখ্যায়িত করে তারা বলেন, সজ্ঞানে নিরপরাধ পুরুষ, নারী ও শিশুদের হত্যা ইসলামী নৈতিকতার বিরোধী। প্রত্যেক ইসলামী সরকার ও আন্দোলনকে মৌলিক এ নীতি মেনে চলতে হবে।
[আমরা এই বর্বরতম ও মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে হঠকারিতা পরিহারের আহবান জানাই (স.স.)]
তুরস্কে আবার আরবী বর্ণমালা বাধ্যতামূলক করা হবে
-এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান তার দেশের হাইস্কুলে পুনরায় আরবী বর্ণমালা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। মুছতফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্ককে কট্টর সেক্যুলার রাষ্ট্রে পরিণত করার অংশ হিসাবে ১৯২৮ সালে অটোম্যান যুগের আরবী বর্ণমালা বাতিল করে ল্যাটিন বর্ণমালার প্রবর্তন করেন। তবে এরদোগানের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে তুরস্কের সেক্যুলাররা। এর জবাবে এরাদোগান বলেছেন, তারা পসন্দ করুক আর না করুক, এদেশে অটোম্যান বর্ণমালা ও ভাষা শিক্ষা দেয়া হবেই। এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, অটোম্যান ভাষা বাতিল করে দিয়ে আতাতুর্ক তুরস্কের ঘাড় কেটে দিয়েছিলেন। ঐ সমাধিতে ইতিহাস এখন ঘুমাচ্ছে। এটা জানার চেয়ে বড় দুর্বলতা আর কি হতে পারে? তিনি বলেন, একজন জার্মান নাগরিকও যেখানে অটোম্যান ভাষা শিখতে পারেন, সেখানে এখানকার ব্যাপারটা অন্যরকম (অটোম্যান ভাষা নিষিদ্ধ)।
বাহরাইনে স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করছে ব্রিটেন
মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে ব্রিটেন বাহরাইনে একটি স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সৃষ্ট হুমকির প্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর ফলে ১৯৭০ দশকের পর এই প্রথম এ অঞ্চলে ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠিত হবে। বাহরাইনের রাজধানী মানামায় শনিবার অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে যে, ব্রিটেন বাহরাইনের মিনা সালমান বন্দরে স্থল স্থাপনা বৃদ্ধি করবে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন বলেন, তার দেশ এখন পুনরায় দীর্ঘমেয়াদে উপসাগরে অবস্থান করবে। বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ আল-খলীফা এ প্রসঙ্গে বলেন, এ চুক্তি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমাদের যৌথ সংকল্প পুনঃনিশ্চিত করেছে।
[খাল কেটে কুমীর ঢুকানোর পরিণাম ভাল হবেনা। অতএব হে বাহরাইনের নেতৃবৃন্দ! নিজেদের গদীর স্বার্থে দেশের ও ইসলামের ক্ষতি করবেন না (স.স.)]