হাদীছ গ্রহণে ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর শর্তাবলী :

১. ছহীহ হাদীছের প্রধান দু’টি গ্রন্থ বুখারী ও মুসলিমে যেসব হাদীছ সন্নিবেশিত হয়েছে সেসব সনদসূত্রে বর্ণিত হাদীছ অবশ্যই গ্রহণযোগ্য।

২. প্রধান হাদীছ গ্রন্থদ্বয়ে হাদীছ গ্রহণের যে শর্ত অনুসৃত হয়েছে তাতে উত্তীর্ণ সকল হাদীছই গ্রহণযোগ্য।

৩. যেসব হাদীছ সর্বসম্মতভাবে ও মুহাদ্দিছীনের ঐক্যমতের ভিত্তিতে পরিত্যক্ত তা গ্রহণীয় নয়। পক্ষান্তরে হাদীছের যেসব সনদ ‘মুত্তাছিল’ তথা ধারাবাহিক বর্ণনা পরম্পরাসূত্রে কোন বর্ণনাকারীই উহ্য নয়, তা অবশ্যই গ্রহণীয়। মূল হাদীছ ছহীহ হ’লে এবং ‘মুরসাল’ (مُرْسَلٌ) কিংবা ‘মুনকাতি‘ (مُنْقَطِعٌ) না হ’লে তাও গ্রহণযোগ্য।

৪. চতুর্থ পর্যায়ের বর্ণনাকারীদের মধ্যে উত্তম বর্ণনাকারী হ’তে বর্ণিত হাদীছও গ্রহণযোগ্য। এসব শর্ত ইমাম নাসাঈ (রহঃ) ও ইমাম আবূদাঊদ (রহঃ)-এর নিকট সমভাবে গৃহীত। কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর আরোপিত শর্ত ইমাম আবূদাঊদ অপেক্ষাও অধিক শক্তিশালী। ইমাম নাসাঈ (রহঃ) হাদীছ গ্রহণের ব্যাপারে বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। তাদের অবস্থা সম্পর্কে অধিকতর খোঁজ-খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেছেন। এ কারণেই ইমাম নাসাঈ (রহঃ) এমন অনেক বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদীছ গ্রহণ করেননি, যাদের নিকট থেকে ইমাম আবূদাঊদ (রহঃ) ও ইমাম তিরমিযী (রহঃ) হাদীছ গ্রহণ করেছেন।[1]

এ সম্পর্কে হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, ‘এমন অনেক বর্ণনাকারী আছেন, যাদের নিকট থেকে ইমাম আবুদাঊদ ও তিরমিযী (রহঃ) হাদীছ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইমাম নাসাঈ (রহঃ) তাঁদের বর্ণিত হাদীছ গ্রহণ করা হ’তে বিরত থেকেছেন; বরং বুখারী ও মুসলিমের একদল বর্ণনাকারীর নিকট থেকে হাদীছ বর্ণনা থেকেও ইমাম নাসাঈ (রহঃ) বিরত থেকেছেন।[2] হাফেয আবু আলী আন-নিসাপুরী বলেন,للنسائي شرط في الرجال أشد من شرط البخاري ومسلم ‘হাদীছ গ্রহণে ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর শর্ত ইমাম বুখারী ও মুসলিম (রহঃ)-এর শর্তের চেয়েও কঠিন’।[3]

ড. আবু জামীল আল-হাসান বলেছেন, ‘এটা সুস্পষ্ট যে, আবু আলী আন-নিসাপুরীর উক্ত কথা অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ি। কেননা হাদীছ গ্রহণে ইমাম বুখারী ও মুসলিমের শর্তাবলী শীর্ষস্থানীয়’।[4]

আল্লামা হাযেমী (রহঃ) বলেন, ‘ইমাম আবুদাঊদ ও নাসাঈ (রহঃ) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের রাবীদের হাদীছ গ্রহণ করেছেন। তবে তাঁরা চতুর্থ স্তর অতিক্রম করেননি’।[5]

সুনানে নাসাঈর বৈশিষ্ট্য :

সুনানে নাসাঈর এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাকে অপরাপর হাদীছ গ্রন্থ থেকে পৃথক স্বাতন্ত্র্য দান করেছে। নিম্নে সুনানে নাসাঈর কতিপয় বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হ’ল।-

১. প্রায় তাকরার বা দ্বিরুক্তিমুক্ত : কুতুবুস সিত্তার অন্যান্য গ্রন্থের ন্যায় সুনানে নাসাঈতে তাকরার তথা পুনঃউল্লিখিত হাদীছের সংখ্যা কম। এতে তাকরার হাদীছ নেই বললেই চলে।[6]

২. হাদীছের দুর্বোধ্য শব্দের ব্যাখ্যা : এ গ্রন্থে কোন কোন স্থানে হাদীছের দুর্বোধ্য শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেমন একটি হাদীছ উল্লেখ করার পর তিনি বলেন,الركس : طعام الجن ‘আর-রিকসু’ অর্থাৎ জিনের খাদ্য।[7] অনুরূপভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী, لاَ تُزْرِمُوْهُ  ‘তার পেশাবে বাধা দিও না’। এর অর্থে তিনি বলেন, لاَ تَقْطَعُوْا عَلَيْهِ অর্থাৎ তার পেশাব বন্ধ করে দিও না।[8]

৩. অধিক রাবী সম্বলিত হাদীছ : ইমাম নাসাঈ স্বীয় গ্রন্থে শক্তিশালী ও ছহীহ সনদের ভিত্তিতে হাদীছ সন্নিবেশিত করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি দশজন রাবী বিশিষ্ট হাদীছও উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি একটি হাদীছ উল্লেখ করে বলেন,ما أعرف إسنادا أطول من هذا ‘এর চেয়ে দীর্ঘ সনদ বিশিষ্ট হাদীছ আমার জানা নেই।[9]

৪. ফিক্বহী বিন্যাস : এ গ্রন্থের হাদীছগুলো ফিক্বহী তারতীব অনুযায়ী সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।[10] এ গ্রন্থ শুরু হয়েছে ‘পবিত্রতা’ অধ্যায় দ্বারা এবং শেষ হয়েছে ‘পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা’ দ্বারা। অধ্যায় বিন্যাসে মৌলিক অর্থের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

৫. সকল বিষয়ের হাদীছের সন্নিবেশ : ইমাম নাসাঈ (রহঃ) এ গ্রন্থে জীবনের সকল দিক সম্পর্কিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখা-প্রশাখায় হাদীছ সন্নিবেশিত করেছেন।[11]

৬. ইলালুল হাদীছ বর্ণনা : এ গ্রন্থে ইমাম নাসাঈ (রহঃ) পৃথকভাবে শিরোনাম নির্ধারণ করে হাদীছের ইল্লত (ত্রুটি) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।[12] হাদীছের ত্রুটি বর্ণনার পর তিনি সঠিকটা উল্লেখ করেছেন। মতানৈক্যের ক্ষেত্রে অধিক প্রাধান্যযোগ্য বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

৭. অনুচ্ছেদ রচনা : সুনানে নাসাঈর হাদীছের অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-পরিচ্ছেদগুলো ধারাবাহিকভাবে বিন্যস্ত। এ গ্রন্থের অনুচ্ছেদ-পরিচ্ছেদের শিরোনাম অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য। হাদীছ ও শিরোনামের মধ্যে সাযুজ্য বিদ্যমান। এ গ্রন্থে তরজমাতুল বাব সংযোজনে ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর ফিক্বহী ধারাকে অনুসরণ করা হয়েছে।[13]

৮. স্বল্পসংখ্যক তা‘লীক হাদীছ : এ গ্রন্থে ইমাম নাসাঈ (রহঃ) অতি স্বল্প সংখ্যক তা‘লীক হাদীছ[14] উল্লেখ করেছেন। এ গ্রন্থে প্রায় ১৮০টি তা‘লীক হাদীছ উল্লিখিত হয়েছে।

৯. হাদীছের মান ও স্তর বর্ণনা : এ গ্রন্থে কখনো কখনো হাদীছের স্তর ও মান বর্ণিত হয়েছে। যেমন একটি হাদীছ উল্লেখ করে তিনি বলেন, هذا حديث منكر ‘এ হাদীছটি মুনকার বা প্রত্যাখ্যাত’।[15] অনুরূপভাবে আরেকটি হাদীছ উল্লেখ করে তিনি বলেন, حديث يحيى بن سعيد هذا إسناده حسن، وهو منكر وأخاف أن يكون الغلط من محمد بن فضيل. ‘ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ বর্ণিত এই হাদীছের সনদ হাসান। কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যাত। আমি আশংকা করছি যে, মুহাম্মাদ ইবনে ফুযাইলের ভ্রান্তি রয়েছে’।[16]

কখনো তিনি রাবীর ত্রুটি বর্ণনা করেছেন। যেমন তিনি বলেন, الأوزاعي لم يسمع هذا الحديث من الزهري وهذا حديث صحيح قد رواه يونس، عن الزهري. ‘আওযাঈ (রহঃ) এই হাদীছ যুহরী থেকে শুনেননি। এই হাদীছটি ছহীহ, যা ইউনুস যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন’।[17]

১০. সনদের অবস্থা বর্ণনা : এতে মুত্তাছিল, মুনকাতি‘, মুরসাল ইত্যাদি অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন একটি হাদীছ উল্লেখ করে তিনি বলেন, مخرمة لم يسمع من أبيه شيئا ‘মাখরামাহ তার পিতা থেকে কিছুই শুনেনি’।[18] অন্যত্র একটি হাদীছ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, الحسن، عن سمرة كتابا، ولم يسمع الحسن من سمرة إلا حديث العقيقة، ‘হাসান সামুরা (রাঃ)-এর সংকলন থেকে হাদীছটি গ্রহণ করেছেন। আর হাসান সামুরা থেকে কেবল আক্বীক্বা সম্পর্কিত হাদীছটিই শুনেছেন’।[19]

১১. অধিক সনদ উল্লেখ : ইমাম নাসাঈ (রহঃ) কোন হাদীছের একাধিক সনদ কিংবা একই হাদীছের বিভিন্ন সনদ থাকলে তাও উল্লেখ করেছেন।

১২. আহকাম সম্বলিত হাদীছ : ইমাম নাসাঈ (রহঃ) স্বীয় সুনান গ্রন্থে আহকাম সম্বলিত হাদীছ সন্নিবেশিত করেছেন।[20] ড. তাকীউদ্দীন নাদভী বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে আহকাম সম্বলিত যে সকল হাদীছ ছহীহ সাব্যস্ত হয়েছে সে সকল হাদীছ স্বীয় সুনানে নাসাঈতে একত্রিত করা ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর উদ্দেশ্য ছিল। যাতে সেগুলো দ্বারা ফক্বীহগণ দলীল গ্রহণ করতে পারেন। এভাবে তিনি হাদীছ ও ফিক্বহের মাঝে সমন্বয় সাধন করেছেন’।[21]

১৩. নসবনামা উল্লেখ :

সুনানে নাসাঈতে রাবীর নাম উল্লেখের সাথে সাথে কখনো কখনো তার বংশপরিক্রমাও উল্লেখ করা হয়েছে।

১৪. কুরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি :

এ গ্রন্থে ‘অনুচ্ছেদ’-এর অনুকূলে কুরআনুল কারীমের কোন আয়াত থাকলে তা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। যেমন ‘তাহারাত’ অধ্যায়ে ‘ওযূ অনুচ্ছেদে’ ওযূর ফরয সমূহ বর্ণনায় সূরা মায়েদার নিম্নোক্ত আয়াত উল্লেখ করেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَاغْسِلُوْا وُجُوْهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوْا بِرُءُوْسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা ছালাতের জন্য প্রস্ত্তত হও, তখন তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় কনুইসহ ধৌত কর এবং তোমাদের মাথা মাসাহ কর এবং পদযুগল টাখনু সহ ধৌত কর’ (মায়েদাহ ৫/৬)।[22]

১৫. নাসিখ-মানসূখ দৃষ্টিকোণে অনুচ্ছেদ প্রণয়ন :

ড. তাকীউদ্দীন নাদভী বলেন, ‘ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর অন্যতম একটি রীতি হ’ল অনুচ্ছেদ রচনা করে তথায় মানসূখ হাদীছ সন্নিবেশিত করা। অতঃপর অপর বাবে তার নাসিখ (রহিতকারী) হাদীছ উল্লেখ করা। যেমন ‘আগুনে পাকানো খাদ্য খেয়ে ওযূ করা অনুচ্ছেদ’-এ আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে হাদীছ এনেছেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘আগুনে পাকানো খাদ্য খেয়ে তোমরা ওযূ করবে’।[23] অতঃপর আরেক বাব রচনা করেছেন এভাবে ‘আগুনে পাকানো খাদ্য খেয়ে ওযূ না করা অনুচ্ছেদ’। অত্র অনুচ্ছেদে তিনি উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীছ এনেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) (আগুনে পাকানো) রান খেলেন। অতঃপর বেলাল (রাঃ) আসলে তিনি ছালাতের জন্য বেরিয়ে গেলেন, পানি স্পর্শ করলেন না’।[24] এতে আগুনে পাকানো খাদ্য খেয়ে ওযূ না করার ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লামা সিন্ধী বলেন, هذا نص في النسخ، ‘এ হাদীছটি নাসিখ বা রহিতকারী হওয়ার প্রমাণ বহন করে’।[25]

কুতুবে সিত্তায় সুনানে নাসাঈর স্থান :

সুনানে নাসাঈ কুতুবে সিত্তার অন্যতম গ্রন্থ। এ সম্পর্কে হাজী খলীফা স্বীয় ‘কাশফুয যুনূন’ গ্রন্থে লিখেছেন, وهو أحد الكةب السةة ‘এটা কুতুবে সিত্তার অন্যতম গ্রন্থ’।[26] তবে এটা কুতুবে সিত্তার কততম কিতাব এ ব্যাপারে বিস্তর মতভেদ আছে। যেমন খ্যাতনামা বিদ্বান আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) ‘মিরক্বাত’ গ্রন্থে লিখেছেন, إِذَا قَالُوا: الْكُتُبُ الْخَمْسَةُ، أَوْ أُصُولُ الْخَمْسَةِ فَهِيَ: الْبُخَارِيُّ، وَمُسْلِمٌ، وَسُنَنُ أَبِي دَاوُدَ، وَجَامِعُ التِّرْمِذِيِّ، وَمُجْتَنَى النَّسَائِيِّ. ‘যখন বলা হবে কুতুবিল খামসা বা উছূলিল খামসা তখন এর মধ্যে পরিগণিত হবে যথাক্রমে বুখারী, মুসলিম, সুনানে আবু দাঊদ, জামে আত-তিরমিযী ও মুজাতাবা আন-নাসাঈ তথা সুনানে নাসাঈ।[27]

ড. সুবহী ছালেহ স্বীয় ‘উলূমুল হাদীছ’ গ্রন্থে কুতুবুস সিত্তার ধারাক্রম লিখেছেন এভাবে, أماكتب الصحاح فهي تشمل الكتب الستة البخاري ومسلم وأبي داوود والترمذي والنسائي وابن ماجة ‘ছহীহ হাদীছ গ্রন্থের মধ্যে পরিগণিত হ’ল বুখারী, মুসলিম, সুনানে আবুদাঊদ, জামে তিরমিযী, সুনানে নাসাঈ এবং সুনানে ইবনে মাজাহ’।[28]

مَعَارِفُ السُّنَن প্রণেতা বলেন, أن أول مراتب الصحاح منزلة صحيح البخاري ثم صحيح مسلم وأبي داود والترمذي والنسائي وابن ماجة- ‘ছহীহ গ্রন্থের প্রথম স্তরে রয়েছে ছহীহ বুখারী, অতঃপর ছহীহ মুসলিম, অতঃপর সুনানে আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ।[29] উল্লেখ্য যে, প্রচলিত ‘ছিহাহ সিত্তাহ বলা ঠিক নয়। কারণ বুখারী ও মুসলিম সুনানে আরবা‘আতে অনেক যঈফ বা দুর্বল হাদীছ রয়েছে। এর পরিবর্তে ‘কুতুবে সিত্তাহ’ বলা যেতে পারে।

আবু যাহু স্বীয় اَلْحَدِيْثُ وَالْمُحَدِّثُوْنَ গ্রন্থে লিখেছেন, ودرجته في الحديث بعد الصحيحين فهو مقدم على سنن أبي داود وسنن الترمذي ‘হাদীছশাস্ত্রে সুনানে নাসাঈর অবস্থান ছহীহায়নের পরে এবং এটা সুনানে আবু দাঊদ ও তিরমিযীর উপর অগ্রগন্য।[30] অর্থাৎ তৃতীয়।

ড. তাকীউদ্দীন নাদভী বলেন, وإن سنن النسائي ثالث الستة عند العلامة الكشميري وكذا الحازمي- ‘আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী ও হাযেমীর মতে, কুতুবে সিত্তায় সুনানে নাসাঈর স্থান তৃতীয়’।[31]

যঈফ ও মাওযূ প্রসঙ্গ :

সুনানে নাসাঈতে কিছু যঈফ হাদীছ রয়েছে। তবে তা অন্যান্য সুনান গ্রন্থের তুলনায় কম। এ সম্পর্কে আললামা আবু যাহু ‘আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন’ গ্রন্থে লিখেছেন,كتاب المجتبى أقل السنن حديثا ضعيفا ورجلا مجروحا- ‘কিতাবুল মুজতাবা তথা সুনানে নাসাঈতে যঈফ হাদীছ এবং সমালোচিত রাবী কর্তৃক বর্ণিত হাদীছ নিতান্তই কম’।[32] ইবনে হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, وفي الجملة فكتاب النسائي أقل الكتب بعد الصحيحين حديثاً ضعيفاً ورجلاً مجروحاً ويقاربه كتاب أبي داود وكتاب الترمذي ‘মোদ্দাকথা হল, নাসাঈ ছহীহাইনের পরে সবচেয়ে কম যঈফ হাদীছ ও সমালোচিত বর্ণনাকারী সম্বলিত গ্রন্থ। যা আবুদাঊদ ও তিরমিযীর নিকটবর্তী।[33]

আল-বুকাঈ شرح الألفية গ্রন্থে আল্লামা ইবনে কাছীর থেকে বর্ণনা করেছেন, إن في النسائي رجلا مجهولين أما عينا أو حالا وفيهم المجروح وفيه أحاديث ضعيفة ومعللة ومنكرة- ‘সুনানে নাসাঈতে অপরিচিত রাবী রয়েছে। সে রাবী প্রকৃতই অজ্ঞাত বা অবস্থার দিক দিয়ে অজ্ঞাত। অনুরূপভাবে এতে সমালোচিত রাবীও রয়েছে। এতে যঈফ, মু‘আল্লাল (ত্রুটিযুক্ত) ও মুনকার হাদীছ রয়েছে।[34]

ইমাম শাওকানী, ইমাম যাহাবী ও আল্লামা তাকীউদ্দীন সুবকী বলেন, ‘ছহীহাইনের পরে সুনানে আরবা‘আর অন্যান্য গ্রন্থের তুলনায় নাসাঈর সুনানগ্রন্থে যঈফ হাদীছ কম’।[35]

আল্লামা নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) স্বীয় ‘যঈফ সুনানে নাসাঈ’ গ্রন্থে সুনানে নাসাঈর ৪৪০টি হাদীছকে যঈফ ও মাওযূ সাব্যস্ত করেছেন।[36]

আল্লামা ইবনুল জাওযী (রহঃ) সুনানে নাসাঈর দশটি হাদীছকে মাওযূ সাব্যস্ত করেছেন।[37]

ইমাম নাসাঈ (রহঃ) রচিত অন্যান্য গ্রন্থ :

ইমাম নাসাঈ (রহঃ) সুনানে নাসাঈ ছাড়াও কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। যেমন- ১. আস-সুনানুল কুবরা, ২. আস-সুনানুছ ছুগরা, ৩. মুসনাদে আলী (রাঃ), ৪. কিতাবুল আসমা ওয়াল কুনা, ৫. কিতাবুল মুদাল্লিসীন, ৬. কিতাবুয যু‘আফা ওয়াল মাতরূকীন, ৭. ফাযায়িলুছ ছাহাবা, ৮. কিতাবুত তাফসীর, ৯. মুসনাদে ইমাম মালেক, ১০. কিতাবুল জুম‘আ, ১১. কিতাবুল খাছায়িছ ফী ফাযলে আলী ইবনি আবী তালিব ওয়া আহলিল বায়ত, ১২. কিতাবু আমালিল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ১৩. তাসমিয়াতু ফুকাহাইল আমছার মিন আছহাবি রাসূলিল্লাহ (ছাঃ) ওয়া মান বা‘দাহুম মিন আহলিল মাদীনা, ১৪. তাসমিয়াতু মান লাম ইয়ারবী আনহু গায়রু রাজুলিন ওয়াহিদিন।[38]

চরিত্র ও তাক্বওয়া :

ইমাম নাসাঈ (রহঃ) নির্মল চরিত্র মাধুর্যের অধিকারী মুত্তাক্বী-আল্লাহভীরু মুহাদ্দিছ ছিলেন। তিনি সদাসর্বদা আল্লাহ তা‘আলার ভয়ে ভীতবিহবল থাকতেন। একদিন পরপর তিনি সারা বছর নফল ছিয়াম পালন করতেন। তিনি দিনের বেলায় ছিয়াম পালন করতেন এবং রাতে তাহাজ্জুদ ছালাতে নিমগ্ন থাকতেন। তাঁর চারজন স্ত্রী ছিল। তিনি চার স্ত্রীর মধ্যে সর্বদা সমতা বিধান করে চলতেন। পালাক্রমে তাঁদের সাথে রাত যাপন করতেন। আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত-বন্দেগীতে তিনি সদা মশগূল ছিলেন। তিনি একাধিকবার হজ্জব্রত পালন করেছেন। হামযাহ ইবনে ইউসুফ আস-সাহমী বলেন, ولم يكن في الورع مثله- ‘আল্লাহভীরুতায় তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিলেন না’।[39]

ইমাম দারা-কুতনী (রহঃ) আরো বলেন,وكان في غاية من الورع والتقى ‘তিনি আল্লাহভীরুতা ও পরহেযগারিতায় চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছিলেন’।[40]

ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-এর অনুপম চরিত্র মাধুর্য সম্পর্কে ড. আবু জামীল লিখেছেন, ইমাম নাসাঈ (রহঃ) মিসরে গমন করে জীর্ণ-শীর্ণ পোশাকে গোপনে শায়খ হারিছ ইবনু মিসকীনের দরবারে প্রবেশ করেছিলেন। হারিছ ইবনু মিসকীন তাকে শাসনকর্তার গুপ্তচর মনে করে তাকে তাড়িয়ে দেন। অতঃপর তিনি (ইমাম নাসাঈ) হারিছ ইবনু মিসকীনের মজলিসে এসে এমন দূরত্বে অবস্থান করতেন যাতে শায়খ তার কথা-বার্তা ও আগমন বুঝতে না পারেন। তাই তিনি হারিছ ইবনু মিসকীন থেকে হাদীছ বর্ণনার ক্ষেত্রে أخبرنا বা حدثنا শব্দ ব্যবহার না করে هكذا قرئ عليه وأنا أسمع অর্থাৎ ‘এভাবেই তাঁর নিকট পড়া হয়েছে। আর এমতাবস্থায় আমি তা শুনি’ বাক্য ব্যবহার করেছেন। আর এটি তার অনন্য সাধারণ তাক্বওয়ার পরিচয়।[41]

ড. তাকীউদ্দীন নাদভী বলেন,كان على مكانة رفيعة من الورع والتقوى والإنابة والتضرع إلى الله فأوصله الله بذلك إلى المكانة العالية من العز والشرف- ‘তিনি আল্লাহভীরুতা, পরহেযগারিতা, তওবা ও বিনয়-নম্রতায় উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাই আল্লাহ রাববুল আলামীন তাঁকে সম্মান ও মর্যাদায় শীর্ষস্থানে উপনীত করেছিলেন।[42]

উসামা রাশাদ ওয়াছফী বলেন, ‘ইমাম নাসাঈ (রহঃ) ইবাদত-বন্দেগীতে চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছিলেন। রাতের বেলায় তাঁকে নফল ছালাতে দন্ডায়মান, দিনের বেলায় নফল ছিয়াম পালনকারী ব্যতীত পাওয়া যেত না। তিনি ছিলেন নিয়মিত হজ্জব্রত পালনকারী। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে সাড়া দানের জন্য সদা প্রস্ত্তত, সুন্নাতের পাবন্দ এবং তার সমস্ত কাজে মুত্তাকী ও মনোযোগী’।[43]

ড. তাকীউদ্দীন নাদভী বলেন, ‘তিনি ছিলেন সুন্নাহ প্রেমিক ও তার প্রচার-প্রসারে আগ্রহী এবং বিদ‘আত ও এতদসংশ্লিষ্ট যাবতীয় কিছু অপসন্দকারী। তাঁর কষ্ট-ক্লেশ ও শাহাদত বরণ ছিল এ বিষয়ের উত্তম দলীল। এটা তাঁর সাহসিকতা ও হক প্রকাশে দৃঢ়তার প্রমাণ। এটাই আল্লাহর মুত্তাক্বী বান্দাদের নিদর্শন।[44]

আক্বীদা :

ইমাম নাসাঈ (রহঃ) নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। আক্বীদাগত দিক থেকে তিনি আহলেহাদীছ তথা কুরআন-সুন্নাহর একনিষ্ঠ অনুসারী বিশুদ্ধ আক্বীদায় বিশ্বাসী ছিলেন।

উসামা রাশাদ ওয়াছফী লিখেছেন, ‘ইমাম নাসাঈ (রহঃ) আক্বীদা ও মানহাজে আহলেহাদীছ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সুনানে কুবরা ও মুজতাবা তথা সুনানে নাসাঈতে উক্ত আক্বীদার প্রতিফলন ঘটেছে’।[45]

তাঁর বিশুদ্ধ আক্বীদার দৃষ্টান্ত স্বরূপ মুহাম্মাদ ইবনু আইয়ুন (রহঃ) বলেন, ‘আমি আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ)-কে বললাম, অমুক ব্যক্তি বলে থাকেন, যে ব্যক্তি ধারণা করে, আল্লাহ তা‘আলা বাণী,إِنَّنِيْ أَنَا اللهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدْنِيْ وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِيْ ‘আমিই আল্লাহ, আমি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। অতএব আমার ইবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে ছালাত কায়েম কর’ (ত্ব-হা ২০/১৪) এটি মাখলূক তথা সৃষ্ট সে ব্যক্তি কাফের। তখন আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) বললেন, সে সত্য বলেছে। ইমাম নাসাঈ (রহঃ) বলেন, ‘আমিও এমনটিই বলি’। আল্লাহর ছিফাতের বিষয়ে তাঁর এ মন্তব্য তাঁর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সাক্ষ্য দেয়। যে ব্যক্তি তাঁর প্রণীত كتاب النعوت সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখবে সে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাবে’।[46]

অনুসৃত মাযহাব :

ইমাম নাসাঈ (রহঃ) কোন নির্দিষ্ট মাযহাবের অনুসারী ছিলেন, নাকি একজন মুজতাহিদ ছিলেন এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে। শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী (রহঃ) স্বীয় ‘বুস্তানুল মুহাদ্দিছীন’ গ্রন্থে, নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী ‘আল-হিত্তাহ ফী যিকরিছ ছিহাহ সিত্তাহ’ গ্রন্থে এবং আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী স্বীয় ‘ফায়যুল বারী’ গ্রন্থে ইমাম নাসাঈ (রহঃ)-কে শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী বলে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন’।[47]

আল্লামা ইবনুল আছীর ‘জামেঊল উছূল’ গ্রন্থে লিখেছেন, وكان شافعيا، له مناسك على مذهب الشافعي، ‘তিনি শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। শাফেঈ মাযহাবের নিয়ম অনুযায়ী তাঁর হজ্জ রয়েছে।[48]

কতিপয় হানাফী আলেম বলেন,أما أبوداود والنسائي فالمشهور أنهما شافعيان ولكن الحق أنهما حنبليان- ‘ইমাম আবুদাঊদ ও ইমাম নাসাঈ (রহঃ) শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। কিন্তু সত্য কথা হ’ল, তাঁরা দু’জন হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন’।[49]

আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (রহঃ) তুহফাতুল আহওয়াযী গ্রন্থে লিখেছেন, لم يثبت أيضا بدليل صحيح كون الامام أبي داود والنسائي مقلدين للإمام أحمد بن حنبل في الاجتهاديات وانما هو ظن من هذا البعض وإن الظن لا يغني من الحق شيئا- ‘ছহীহ দলীলের আলোকে এ কথা সাব্যস্ত হয় না যে, ইজতেহাদী মাসআলাসমূহে ইমাম আবুদাঊদ ও নাসাঈ (রহঃ) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর মুক্বাল্লিদ বা অনুসারী ছিলেন। এটা কতিপয় ব্যক্তির ধারণামাত্র। আর ধারণা সত্যের কোন কাজে আসে না’।[50]

আল্লামা মুবারকপুরী আরো বলেন, كما ان البخاري رحمه الله تعالى كان متبعا للسنة عاملا بها مجتهدا غير مقلد لأحد من الأئمة الأربعة وغيرهم كذلك مسلم والترمذي وأبو داود والنسائي وابن ماجة كلهم كانوا مةبعين للسنة عاملين بها مجتهدين غير مقلدين لأحد- ‘ইমাম বুখারী (রহঃ) যেমন ছিলেন সুন্নাতের অনুসারী, তদনুযায়ী আমলকারী এবং মুজতাহিদ। ইমাম চতুষ্টয় বা অন্য কারো মুক্বাল্লিদ ছিলেন না। অনুরূপভাবে ইমাম মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাঊদ, নাসাঈ এবং ইবনু মাজাহ (রহঃ) প্রত্যেকেই সুন্নাতের অনুসারী, তদনুযায়ী আমলকারী এবং মুজতাহিদ ছিলেন। তাঁরা কারো মুক্বাল্লিদ ছিলেন না’।[51]

সুনানে নাসাঈর আধুনিক ব্যাখ্যাকার মুহাম্মাদ বিন আগা বিন আদম (ইথিওপিয়া) বলেন, ৪২ খন্ডে সমাপ্তكان رحمه الله تعالى سالكا مسلك أهل الحريث عقيرة ومزحبا غير سقلد لأحد، كسائر أئمة الحديث، ‘ইমাম নাসাঈ (রহঃ) আক্বীদা ও মাযহাবগতভাবে আহলেহাদীছ মাসলাকের অনুসারী ছিলেন। সকল মুহাদ্দিছের ন্যায় তিনিও কারো তাক্বলীদকারী ছিলেন না’।[52]

[চলবে]

কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী

প্রধান মুহাদ্দিছ, বেলটিয়া কামিল মাদরাসা, জামালপুর।


[1]. হাদীস সংকলনের ইতিহাস, পৃঃ ৪৪৮; মুক্বাদ্দামাতু যাহরির রুবা আলাল মুজতাবা, পৃঃ ৩।

[2]. আবু যাহূ, আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন, পৃঃ ৪১০।

[3]. মুক্বাদ্দামাতু তুহফাতিল আহওয়াযী, ১/১০৫ পৃঃ; কাশফুয যুনূন, ১/১০০৬ পৃঃ; মুক্বাদ্দামাতু যাহরির রিবা আলাল মুজতাবা, পৃঃ ৪।

[4]. উম্মাহাতুল কুতুবিল হাদীছ, পৃঃ ১২২।

[5]. ঐ, পৃঃ ১২৪।

[6]. আত-তুহফাতু লিতালিবিল হাদীছ, পৃঃ ৩০।

[7]. নাসাঈ হা/২৪।

[8]. নাসাঈ হা/৫৩।

[9]. নাসাঈ হা/৯৯৬।

[10]. আত-তুহফাতু লিতালিবিল হাদীছ, পৃঃ ৩০।

[11]. ইসলামী বিশ্বকোষ, ১৪/৩৯ পৃঃ।

[12]. মুকাদ্দামাতু যাহরির রুবা আলাল মুজতাবা, ৪ পৃঃ।

[13]. আত-তুহফাতু লিতালিবিল হাদীস, পৃঃ ৩০, ৩১, ৬০।

[14]. কোন কোন গ্রন্থকার কোন হাদীছের পূর্ণ সনদকে বাদ দিয়ে কেবল মূল হাদীছটিই বর্ণনা করেছেন। এরূপ করাকে তালীক বলে। কখনো কখনো তালীকরূপে বর্ণিত হাদীছকেও ‘তালীক’ বলে।

[15]. নাসাঈ হা/১৭৮২।

[16]. নাসাঈ হা/২১৫১।

[17]. নাসাঈ হা/৩২১৫।

[18]. নাসাঈ হা/৪৩৮।

[19]. নাসাঈ হা/১৩৮০।

[20]. উম্মাহাতু কুতুবিল হাদীছ, পৃঃ ১২১।

[21]. আ‘লামুল মুহাদ্দিছীন, পৃঃ ২৬৩।

[22]. ঐ, পৃঃ ২৬৫।

[23]. নাসাঈ হা/১৭১, ১৭২, ১৭৩।

[24]. নাসাঈ হা/১৮২, ১৮৪।

[25]. আ‘লামুল মুহাদ্দিছীন, পৃঃ ২৭৩-২৭৪।

[26]. কাশফুয যুনূন, ১/১০০৬ পৃঃ।

[27]. মুকাদ্দামাতু তুহফাতিল আহওয়াযী, ১/৮৯ পৃঃ।

[28]. উলূমুল হাদীছ ওয়া মুছতালাহু, পৃঃ ১১৭-১৮।

[29]. মা‘আরিফুযু সুনান, ১/১৬ পৃঃ।

[30]. আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন, পৃঃ ৪১০।

[31]. আলামুল মুহাদ্দিছীন, পৃঃ ২৬২।

[32]. আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন, পৃঃ ৪১০।

[33]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, আন-নুকাত আলা কিতাবি ইবনিছ ছালাহ, ১/৭৬; মাতার আয-যাহরানী, তাদবীনুস সুন্নাহ ১/১৪২।

[34]. কাশফুয যুনূন, ১/১০০৬ পৃঃ; আল-হিত্তাহ ফী যিকরিছ ছিহাহ সিত্তাহ, পৃঃ ২১৯।

[35]. মুকাদ্দামাতু তুহফাতিল আহওয়াযী, ১/১০৫ পৃঃ; আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন, পৃঃ ৩৫৮; মুকাদ্দামাতু হাশিয়ায়ে নাসাঈ, পৃঃ ৬।

[36]. মাসিক আত-তাহরীক, এপ্রিল ২০০০ সংখ্যা, পৃঃ ১৭।

[37]. উম্মাহাতু কুতুবিল হাদীছ, পৃঃ ১২৩।

[38]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৪/১৩৩ পৃঃ; শাযারাতুয যাহাব ফী আখবারি মান যাহাব, ২/২৪০, ২৪৯ পৃঃ।

[39]. তাহযীবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল, ১/৩৩৫ পৃঃ।

[40]. আল-হিত্তাহ ফী যিকরিছ ছিহাহ সিত্তাহ, ২৫৩ পৃঃ; মুকাদ্দামাতু হাশিয়ায়ে নাসাঈ, ৬ পৃঃ; মিফতাহুল উলূম ওয়ালফুনূন, ৬৬ পৃঃ।

[41]. উম্মাহাতু কুতুবিল হাদীছ, পৃঃ ১১৯।

[42]. আ‘লামুল মুহাদ্দিছীন, পৃঃ ২৫৩।

[43]. রুবাঈয়্যাতুল ইমাম নাসাঈ, পৃঃ ২০।

[44]. আ‘লামুল মুহাদ্দিছীন, পৃঃ ২৫৪।

[45]. রুবাঈয়্যাতুল ইমাম নাসাঈ, পৃঃ ১৫।

[46]. ঐ, পৃঃ ১৫।

[47]. বুস্তানুল মুহাদ্দিছীন, ২৪৪ পৃঃ; মুকাদ্দামাতু হাশিয়ায়ে নাসাঈ, পৃঃ ৬।

[48]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৪/১৩০ পৃঃ; মুকাদ্দামাতু হাশিয়ায়ে নাসাঈ, (দেওবন্দ : মাকতাবাতুল আশরাফিয়া)।

[49]. মুকাদ্দামাতু তুহফাতুল আহওয়াযী, ১/২৭৯ পৃঃ।

[50]. ঐ, ১/২৭৯ পৃঃ।

[51]. ঐ, ১/২৭৯ পৃঃ।

[52]. যাখীরাতুল উকবা ফী শারহিল মুজতাবা, পৃঃ ১৭, ভূমিকা দ্রঃ।






মাওলানা আব্দুস সালাম মুবারকপুরী : মুবারকপুরের এক ইলমী নক্ষত্র - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (৩য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর (৩য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) (জুলাই’১৮ সংখ্যার পর) - ড. নূরুল ইসলাম
ইবনু মাজাহ (রহঃ) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ইবনু মাজাহ (রহঃ) (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (শেষ কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা অহীদুয্যামান লক্ষ্মৌভী : তাক্বলীদের বন্ধন ছিন্নকারী খ্যাতিমান মুহাদ্দিছ - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব মুহাদ্দিছ দেহলভী (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
আরও
আরও
.