কলোনির দেয়ালগুলো যেন ছবির মতো। বাহারি সবুজ গাছ, ফাঁকে ফাঁকে হরেক রঙের ফুল। দেয়ালের নান্দনিকতার সুরভি ছাড়াচ্ছে পুরো এলাকা। এ যেন অন্য এক ভুবন। অথচ ক’দিন আগেও কলোনির সড়কজুড়ে আবর্জনায় মানুষের চলা ছিল দায়। কিন্তু ছোট্ট একটি উদ্যোগ পাল্টে দিয়েছে ময়মনসিংহ নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশবাড়ি কলোনির চিত্র। স্থানীয়দের কাছে কলোনিটি এখন সবুজ কলোনি।
এই কলোনিতে নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। সম্প্রতি কলোনির ভেতরের ভাঙা সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করেছে সিটি কর্পোরেশন। সংস্কারের পর আবর্জনায় নোংরা হয়ে থাকা নতুন সড়ক ও ড্রেন ঝকঝকে হয়েছে। ঝকঝকে এলাকাটিকে টিকিয়ে রাখতে সড়কের এক হাযার ফুট এলাকাজুড়ে দেয়ালগুলোতে বাগান করার পরিকল্পনা শুরু করেন কয়েকজন বাসিন্দা। সড়কঘেঁষা বাগান থেকেই পুরো এলাকাটিকে নান্দনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু হয়।
গত তিন মাস আগের ছোট এই উদ্যোগে এখন ৮০০ ফুট সড়কের দু’পাশ হয়ে উঠেছে নান্দনিক। ঘরের অব্যবহৃত ও ভাঙা ঝুড়ি, বালতি, মগ নানা কিছুকে করা হয় টব। তার দিয়ে সেগুলোকে দেয়ালে আটকানোর ব্যবস্থা করে তাতে লাগানো হয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। গাছগুলোর কোনটির পাতায় সৌন্দর্য, কোনটি সুরভি ছড়াচ্ছে ফুলে। রাতের হাসনাহেনা মোহিত করে পুরো এলাকা।
কলোনির বাসিন্দারা জানান, গাছগুলোকে টিকিয়ে রাখতে ছোট-বড় সবাই খুবই উদ্যোগী। সবাই নিজেদের এলাকার বাগানকে বড় করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ইতিমধ্যে কয়েক হাযার গাছ ঝুলছে দেয়ালে দেয়ালে। অনুপ্রাণিত হয়ে প্রত্যেকেই এখন গাছ কিনে এনে ঘরের সামনে ও সড়কে লাগাচ্ছেন।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, এলাকাটির বাসিন্দারা মডেল হিসাবে নিয়ে দেয়ালগুলোকে বাগানে রূপ দিয়েছেন। এটি শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয়। ইচ্ছা থাকলেই চারপাশের পরিবেশ সুন্দর রাখা সম্ভব। আমরা আশা করব নগরীর বাসিন্দারা তাদের বাসা বা এলাকাকে সবুজ ও ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলবেন।