পর্ব ১ । পর্ব ২। পর্ব ৩। পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬। পর্ব ৭ । পর্ব ৮ । পর্ব ৯। শেষ পর্ব।
বিষয় : আকাইদ ও ফিকহ
ইবতেদায়ি চতুর্থ শ্রেণি
(২১০/১১) পৃ. ৩৮ পাঠ-৪ সালাতের ওয়াজিবসমূহ
সাজদায়ে সাহু হলো-শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে অতিরিক্ত দু’টি সাজদা আদায় করা।
মন্তব্য : সিজদায়ে সহো-র পরে ‘তাশাহ্হুদ’ পড়ার বিষয়ে যে হাদীছটি এসেছে, সেটি ‘যঈফ’।[1] বরং শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ শেষে তাকবীর দিয়ে পরপর দু’টি ‘সিজদায়ে সহো’ দিয়ে সালাম ফিরাতে হয়।[2]
(২১১/১২) পৃ. ৩৮ পাঠ-৪ ...৭. তা’দিলে আরকান অর্থাৎ রুকু, সাজদা, কাওমা ও জলসায় কমপক্ষে এক তাসবীহ পরিমাণ স্থির থাকা।
মন্তব্য : এটি বানোয়াট কথা। বরং পুরা ছালাতটাই ধীরে-সুস্থে পূর্ণ খুশূ-খুযূ সহকারে আদায় করতে হবে।[3]
(২১২/১৩) পৃ. ৩৯ পাঠ-৫ বিতর সালাতের তৃতীয় রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবির বলে দোআ কুনুত পড়তে হয়। দোআ কুনুত পাঠ করা ওয়াজিব। আর তাকবির বলা ও কান পর্যন্ত হাত উঠানো সুন্নাত।
মন্তব্য : বিতর ছালাতের শেষ রাক‘আতে রুকূর পূর্বে অতিরিক্ত তাকবীর দিয়ে কুনূত পাঠের কোন বিশুদ্ধ দলীল নেই।[4] বরং তৃতীয় রাক‘আতের রুকূ শেষ করে দো‘আয়ে কুনূত শেষে মুছল্লী ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সিজদায় যাবে।[5] আর বিতরের জন্য কুনূত ওয়াজিব নয়।[6]
(২১৩/১৪) পৃ. ৩৯ পাঠ-৫ দোআ কুনুত
اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ...إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ
মন্তব্য : উপরোক্ত শব্দে বিতরে যে কুনূত পড়া হয়, সেটার হাদীছ ‘মুরসাল’ বা যঈফ।[7] অধিকন্তু এটি কুনূতে নাযেলাহ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে, কুনূতে রাতেবাহ হিসাবে নয়।[8]
বরং বিতরের কুনূতের জন্য ছহীহ হাদীছে বর্ণিত দো‘আটি হ’ল,اَللَّهُمَّ
اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ...وَصَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِىِّ- যা রাসূল
(ছাঃ) তাঁর স্বীয় নাতি হাসানকে শিক্ষা দেন।[9]
(২১৪/১৫) পৃ. ৪২ পাঠ-২ সাওমের নিয়ত
نَوَيْتُ أَنْ أَصُوْمَ غَدًا...إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
মন্তব্য : নিয়তের স্থান হ’ল অন্তরে। আর মুখে নিয়ত পাঠের প্রচলিত রেওয়াজটি ‘বিদ‘আত’- আর তা অবশ্যই ‘মন্দ’ ও পরিত্যাজ্য।[10]
(২১৫/১৬) পৃ. ৪২ ইফতারের দোআ :
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
মন্তব্য : হাদীছটি মুরসাল ও যঈফ।[11] বরং ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ইফতার করবে।[12]
(২১৬/১৭) পৃ. ৫৬ পাঠ-৯ দেশপ্রেম
দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ।
মন্তব্য : এটি হাদীছ নয় এবং ঈমানের অঙ্গ নয় বরং এটি স্বভাবজাত। এ বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণীর আকাইদ ও ফিকহ বইয়ের আলোচনা দ্রষ্টব্য ক্রমিক (১৯৬/১১)।
(২১৭/১৮) পৃ. ৬১ হাই উঠলে মুখের উপর হাত রাখবে এবং পড়বে- ‘লা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’
মন্তব্য : এ সময় ‘লা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’
বলার কোন প্রমাণ নেই এবং হাই উঠলে তার জন্য কোন দো‘আ নেই। বরং রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ‘হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। অতএব যখন তোমাদের কেউ হাই
তোলে, তখন সে যেন সাধ্যপক্ষে তা চাপা দেয়। কেননা তোমাদের কেউ হাই তুললে ও
‘হা’ করে মুখ খুলে শব্দ করলে শয়তান হাসে’।[13] অন্য বর্ণনায় এসেছে, মুখে হাত দিয়ে তা চেপে রাখবে। নইলে শয়তান সেখানে ঢুকে পড়বে।[14]
বিষয় : ENGLISH FOR TODAY
Ibtedaie Class Two
(২১৮/১) এই বইয়ের ২, ১০, ১৪ পৃষ্ঠায় ছেলে ও মেয়েদের পরস্পরে কথোপকথন রয়েছে। যা সহশিক্ষার প্রতি স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। যেমন, Hello, I'm Shuva.
What's your name?
Hi, Shuva. I'm Rafi.
(২১৯/২) পৃ. ৬ এক টেবিলে দু’জন মেয়ের মাঝখানে একজন ছেলেকে বসানোর ছবি।
মন্তব্য : এটি ইসলামী পর্দানীতির স্পষ্ট বিরোধী।
(২২০/৩) ২৬ পৃষ্ঠায় ৩জন শিক্ষিকার ছবি দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য : ছবিতে একজন নগ্ন মাথার শিক্ষিকা। বাকী দু’জন শর্ট-কাট স্কার্ফ ও শাড়ি পরিহিতা। দু’জনের একজনের পুরা হাত ঢাকা ও আরেক জনের খোলা। এর মাধ্যমে পর্দাহীনতার প্রতি বা অসম্পূর্ণ পর্দার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
(২২১/৪) পৃ. ৪৫ একটি বই একটি ছেলে ও একটি মেয়ে এক টেবিলে একসাথে পড়ছে।
মন্তব্য : এর দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? তাদের কি দুই টেবিলে পৃথকভাবে বসানো যেত না?
(২২২/৫) ৫০ পৃষ্ঠায় ছাত্রীর সকালের রুটিন উল্লেখ করে বলা হয়েছে : I get up in the morning. I wash my face. Then, I have breakfast. After breakfast, I brush my teeth. Then, I go to school.
মন্তব্য : এখানে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ওযূ করে ছালাত আদায় করার কথা নেই। যেটা মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য ফরয।
(২২৩/৬) পৃ. ৫১ শিক্ষার্থীর বিকাল-সন্ধ্যার রুটিনে বলা হয়েছে, Then, I read and watch TV.
মন্তব্য : বিকালে খেলাধুলা করা এবং আছর-মাগরিবের ফরয ছালাত সমূহ আদায় করার কথা নেই। বরং টিভি দেখার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য গড়ার বিপরীত এবং তাদের মনোযোগ অন্যদিকে ধাবিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। যাতে তারা অবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
(২২৪/৭) পৃ. ৫৫ বাঘ কর্তৃক জঙ্গলে হরিণ ধরার দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
মন্তব্য : এর দ্বারা ছেলে-মেয়েরা পরস্পরে হিংস্রতা শিখবে।
বিষয় : ENGLISH FOR TODAY
Ibtedaie Class Four
(২২৫/১) ২য় ও ৩য় পৃষ্ঠায় ছাত্র ও ছাত্রীর সংলাপ।
(২২৬/২) পৃ. ১৪ দোকানদার ও একটি মেয়ের কথোপকথন।
মন্তব্য : এগুলি ইসলামী পর্দারীতির বিরোধী।
(২২৭/৩) পৃ. ২৩ ৯ নম্বর খেলায় ৪ জন ছেলে ও মেয়ে পরস্পরকে ধরে ঘুরছে ও খেলছে।
(২২৮/৪) পৃ. ৭১ ছেলে-মেয়েরা একসাথে পিকনিক করছে ও খানাপিনা করছে।
মন্তব্য : এগুলি ইসলামী শালীনতার বিরোধী। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ছোটকাল থেকেই অশালীন হয়ে বেড়ে উঠবে।
বিষয় : ENGLISH FOR TODAY
Ibtedaie Class Five
(২২৯/১) পৃ. ৭ বইয়ের দোকানের সামনে জিন্সের প্যান্ট ও ইন করা গেঞ্জী ও বুক খোলা কোর্ট পরিহিতা সাবালিকা মেয়ে অন্যান্য পুরুষদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
মন্তব্য : এরূপ পোষাক ও পরিবেশ ইসলামী শালীনতার সম্পূর্ণ বিরোধী। এই অশালীন পোষাক ছেলেদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে।
(২৩০/২) পৃ. ১০ Mr. Rashidul Islam is a banker...He wants to improve his English, so he watches cartoons on TV everyday...He likes books about animals, especially tigers and loins.
মন্তব্য : মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কুরআন-হাদীছ পড়ে ব্যাংকার হয়না। আর তাদেরকে কুরআন-হাদীছের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে হয়। প্রতিদিন টিভিতে কার্টুন দেখাও ঠিক নয়। আর পশুদের বই-পত্র পড়ে শিক্ষার্থীরা মানবতা শিখবে না। বরং পশুত্ব শিখবে।
(২৩১/৩) পৃ. ১৪ Tamal, Simu, Nasreen, Biju এর কথপোকথন।
মন্তব্য : দুইজন ছেলে ও দুইজন মেয়ের নামের মধ্যে Nasreen নাম বাদে সবগুলিই অনৈসলামিক। কথোপকথন ছেলেরা ও মেয়েরা পৃথকভাবেও করতে পারত।
(২৩২/৪) পৃ. ১৬ ফ্যাশনে হিজাব পরিহিতা একজন মহিলার ছবি দেখানো হয়েছে।
মন্তব্য : মেয়েদের পোষাক হবে ঢিলাঢালা ও সর্বাঙ্গ আবৃতকারী। ফ্যাশনের নামে আঁটসাট পোষাক নয়।
(২৩৩/৫) পৃ. ২১ Jump! Clap! মেয়েটি এখানে Jump দিচ্ছে ও ছেলেটি হাততালি দিচ্ছে।
মন্তব্য : কি চমৎকার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা! ছেলেরা হাততালি দিবে ও মেয়েরা ঊর্ধ্বাকাশে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে লাফাবে। এ দৃশ্যের মাধ্যমে বেগানা ছেলে-মেয়েদের কোন দিকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে? এগুলি কি ইভটিজিং ও ধর্ষণের দিকে উৎসাহ দানকারী নয়?
(২৩৪/৬) পৃ. ২৯ Clap again.
Let's have some fun,
With our friends. (পুনরায় হাততালি দাও। এসো আমরা আমাদের বন্ধুদের সাথে কিছু কৌতুক করি)।
মন্তব্য : এই কথাগুলি কত বড় মারাত্মক। বিবেকবান পিতা-মাতা কখনোই এগুলি বরদাশত করতে পারে কি?
(২৩৫/৭) পৃ. ৩৫ হিজাব পরিহিতা একটি মেয়ের হাতে মাইক্রোফোন She sings. She is a singer. (সে গান গাইছে। সে একজন গায়িকা)
মন্তব্য : হিজাব পরিহিতা মেয়েরা ‘গায়িকা’ হয় না। হিজাব পরিয়ে গান গাওয়ানো অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করার একটি অপকৌশল মাত্র।
(২৩৬/৮) পৃ. ৫৮ HAPPY BIRTHDAY ছবিতে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের সামনে রক্ষিত বড় কেকের উপর জ্বলন্ত মোমবাতি স্থাপন করা হয়েছে। পাশে রয়েছে নানা বয়সের ছেলে-মেয়েরা।
মন্তব্য : জন্মদিবস পালন অমুসলিমদের রীতি, যা মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। এই সাথে মোমবাতি প্রজ্বলন প্রাচীন গ্রীকদের অনুকরণ। তারা তাদের ধারণা মতে চাঁদের দেবী ‘আর্তেমিসে’র জন্মদিন উপলক্ষে তার জন্য কেক তৈরি করত। অতঃপর তার গায়ে অনেকগুলো মোমবাতি জ্বালিয়ে বসিয়ে দিত। এরপর সবাই মিলে প্রার্থনা করে ফুঁ দিয়ে সেটি নিভিয়ে দিত। আর ভাবত যে সেই মোমবাতির ধোঁয়া তাদের প্রার্থনা নিয়ে দেবতার কাছে চলে যাচ্ছে।
এভাবে
মুসলমানদের মধ্যে যত প্রকারের দিবস, মাস ও বর্ষ পালন অনুপ্রবেশ করেছে, সবই
বিজাতীয় অপসংস্কৃতি। এসবের সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। রাসূল (ছাঃ)
বলেন, যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত
বলে গণ্য হবে’।[15]
(২৩৭/৯) পৃ. ৬০ The 21st of February, 1952 is the Language Martyrs' Day.
মন্তব্য : বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার জন্য যার যেভাবে অবদান রেখেছেন, সবাই স্মরণযোগ্য। কিন্তু এজন্য কোন নির্দিষ্ট দিবস পালন করা এবং নানাবিধ অনুষ্ঠান করা, যা পূজার পর্যায়ে চলে গেছে, তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। ইসলামে কোন দিবস পালনের রীতি নেই। তাছাড়া মাদ্রাসায় কোন হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি কাম্য নয়।
(২৩৮/১০) পৃ. ৬৬ হিজাব পরিহিতা ২জন মেয়ের ছবি দেওয়া হয়েছে। একজন ব্যাডমিন্টন ও অপরজন ফুটবল খেলছে।
মন্তব্য : এগুলি মাদ্রাসা ছাত্রীদের বেহায়াপনার দিকে ধাবিত করার অপকৌশল মাত্র।
বিষয় : ENGLISH FOR TODAY
Dakhil Classes Nine-Ten
(২৩৯/১) পৃ. ২৯ Events and festivals (ঘটনাবলি ও উৎসব)
এখানে শহীদ মিনার, স্মৃতি সৌধ, মে দিবস, পহেলা বৈশাখ ও মা দিবসের ছবি দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য : দুই ঈদ, হজ্জ, আইয়ামে তাশরীকের তিন দিন ও জুম‘আর দিন সহ বছরে মোট সাত দিন ইসলামে উৎসবের দিন হিসাবে অনুমোদিত। এর বাইরে সকল ধরনের দিবস পালন ইসলামী রীতির বহির্ভূত।
(২৪০/২) পৃ. ৩৮ পহেলা বৈশাখের গানের চিত্র রয়েছে।
মন্তব্য : রাজধানী ঢাকার রমনা বটমূলে বাসন্তী শাড়ী পরিহিতা মেয়েদের সমস্বরে গানের চিত্রটি দিয়ে বুঝানো হচ্ছে যে, এটি বাংলাদেশের অন্যতম উৎসব। অথচ এ উৎসবটি হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি থেকে আমদানীকৃত। সুকৌশলে এটি মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ে সংযোজন করা হয়েছে। (আলোচনা দ্রষ্টব্য : ক্রমিক (৪৯)।
বিজ্ঞান
ইবতেদায়ি পঞ্চম শ্রেণি
(২৪১/১) বিজ্ঞানের বিভিন্ন নিয়ম নীতি আলোচনা করতে গিয়ে এবং পাঠকের বোধগম্য করার উদ্দেশ্যে অনেক স্থানে ছাত্র-ছাত্রীর অবাধ আলাপচারিতা, এক সাথে হেঁটে চলা, পাশাপাশি বসে গল্প করা ও বিভিন্ন কাজে যৌথভাবে অংশগ্রহণ করা ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। যেমন- সূচিপত্র পৃষ্ঠায় জুঁই ও দিপুর কথোপকথন। ‘এসো আমরা এক সঙ্গে বিজ্ঞান শিখি’। এছাড়াও পৃষ্ঠা ২, ১২, ১৩, ১৫, ২১, ৩৬, ৫২, ৬২, ৬৩, ৭১, ৮৭, ৯৪-তে ছাত্র-ছাত্রীদের এক সাথে অবাধ চলাফেরার দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
মন্তব্য : এর মাধ্যমে উঠতি বয়সের শিক্ষার্থীদেরকে ভবিষ্যতে নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
(২৪২/২) পৃ. ২৬ বায়ুপ্রবাহের ব্যবহারে ভেজা বস্ত্ত শুকানোর দৃশ্য দেখানোর জন্য ড্রায়ারের মাধ্যমে একজন মহিলার চুল শুকানোর দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
মন্তব্য : বাংলাদেশী মহিলাদের মধ্যে ড্রায়ারের মাধ্যমে চুল শুকানোর প্রচলন নেই। এর পরেও প্রকাশ্য স্থানে বসে এরূপ করা ইসলামী পর্দা বিধানের পরিপন্থী। কেননা মহিলাদের মাথার চুলও সতরের অন্তর্ভুক্ত।
(২৪৩/৩) পৃ. ৩২ একটি মেয়ের পিছে একটা ছেলে জোরে দৌড়াচ্ছে। একই পৃষ্ঠায় দু’জন ছাত্র-ছাত্রী পাশাপাশি বসে টেলিভিশন দেখছে।
মন্তব্য : এর মাধ্যমে তাদেরকে ভবিষ্যতে অবাধ মেলামেশায় উৎসাহিত করা হয়েছে। যা পরিত্যাজ্য।
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
ইবতেদায়ি পঞ্চম শ্রেণি
(২৪৪/১) পৃ. ২২ ও ২৩ বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শন শিরোনামে উদ্ধারকৃত মূর্তির ছবি। পাথরে খোদাই করা বুদ্ধের দন্ডায়মান চিত্রটি লক্ষ কর। যারা এটা দেখেনি তাদের জন এটি সম্পর্কে বর্ণনা মূলক একটি রচনা লেখ।
মন্তব্য : ছবি-মূর্তি ইসলামে হারাম। অতএব বুদ্ধের পূর্ণদেহী চিত্রতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষণীয় কিছু নেই।
(২৪৫/২) পৃ. ৩৪-৩৮ আমাদের অর্থনীতি শিরোনামে, পাট, চা ও তামাক। এখানে তামাককে বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান সহ চা বাগানে নারী-পুরুষের যৌথ কর্ম বা শ্রম ছবিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মন্তব্য : তামাক হ’ল মাদক উৎপাদন কারী ফসল। এতে ‘নিকোটিন’ নামক বিষ রয়েছে। তামাকের মধ্যে প্রায় পঞ্চাশটির বেশী রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, যেগুলি মানব শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। একে ‘অর্থকরী ফসল’ হিসাবে মর্যাদা দিয়ে পাঠ্যপুস্তকে প্রচারণা চালানো শিক্ষার্থীদের ধূমপান ও মাদকতার প্রতি আহবান জানানোর শামিল। যা সিলেবাস থেকে প্রত্যাহার করা আবশ্যক।
(২৪৬/৩) পৃ. ৪০-৪৭ অধ্যায় ৫,
পুরা আলোচনাটাই করা হয়েছে অধিক জনসংখ্যার মন্দ দিক বর্ণনা করে।
মন্তব্য : এগুলি বলে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশবৃদ্ধিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অথচ বংশবৃদ্ধির উপরেই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ অগ্রগতি ও উন্নয়ন নির্ভর করে।
(২৪৭/৪) পৃ. ৫৪ অধ্যায় ৬ ভূমিকম্প শীর্ষক আলোচনায় ভূমিকম্পের কারণ, ভূমিকম্প মোকাবেলা ও সতর্কতা বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসাথে ভূমিকম্পকে সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
মন্তব্য : অথচ আলোচনায় কোথাও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কথা উল্লেখ করা হয়নি, যার হুকুমেই ভূমিকম্প হয়ে থাকে। যা মোকাবেলা করার ক্ষমতা কারু নেই। বরং ভুমিকম্পের সময় সতর্ক থাকতে হবে ও এর অনিষ্টকারিতা হ’তে বাঁচার জন্য আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।
(২৪৮/৫) পৃ. ৫৬ অধ্যায় ৭ মানবাধিকার : ১. সকলের অধিকার ২. অটিস্টিক শিশুর অধিকার ৩. শিশুদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ৪. নারী অধিকার লঙ্ঘন।
(২৪৯/৬) পৃ. ৬৪ অধ্যায় ৮ নারী-পুরুষ সমতা ১. নারী জাগরণের অগ্রদূত ২. আন্তর্জাতিক নারী দিবস ৩. নারী নির্যাতন।
(২৫০/৭) পৃ. ৭০ অধ্যায় ৯ আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ১. সমাজের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ২. বাড়িতে নিরাপত্তা রক্ষা ৩. রাস্তায় নিরাপত্তা রক্ষা ৪. রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের কর্তব্য।
(২৫১/৮) পৃ. ৭৮ অধ্যায় ১০ গণতান্ত্রিক মনোভাব ১. মাদরাসা (আমরা কিভাবে গণতান্ত্রিক আচরণ করতে পারি তার একটি উদাহরণ পড়ি) ২. বাড়ি ও কর্মক্ষেত্রে।
মন্তব্য : এইসব অধ্যায়গুলি পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠ্য তালিকায় রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই। সমাজের দায়িত্বশীলরাই এগুলি বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন।
গণিত
ইবতেদায়ি প্রথম শ্রেণি
(২৫২/১) বইয়ের শুরুতেই ‘চরিত্র ও প্রতীকের ব্যাখ্যা’তে বলা হয়েছে, ১) চরিত্র : পাঠ্য পুস্তকে রেজা ও মিনা দুইজনের কথোপকথন ছবিতে দেখানো হয়েছে। তাদের আলোচনা ও মতামতের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণিতের ধারণা স্পষ্ট হবে’।
মন্তব্য : এর দ্বারা ছেলে ও মেয়ের সহশিক্ষার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
(২৫৩/২) পৃ. ৪২ সংখ্যার তুলনা, চিত্রে শিশু বেশি নাকি টুপি বেশি? পৃ. ৪৫ ...খিসা ও তপুর বেলুনের সংখ্যার পার্থক্য কত?
মন্তব্য : যে টুপির ছবি দেওয়া হয়েছে, তা ইসলামী টুপি নয়। বরং বিগত ইংরেজ ছাহেবদের হ্যাট-এর অনুকরণ। ছেলের নাম দেওয়া হয়েছে তপু ও মেয়ের নাম খিসা। অর্থহীন এইসব নাম ইসলামী নয়।
(২৫৪/৩) ৫০ পৃষ্ঠায় ৪নং অংকে বলা হয়েছে- একটি শ্রেণিকক্ষে ৮ জন ছাত্র-ছাত্রী বসে আছে। তাদের মধ্যে ৩ জন ছাত্রী। শ্রেণিকক্ষে কতজন ছাত্র আছে?
মন্তব্য : গণিত শিখানোর আড়ালে ছেলে ও মেয়েদের সহশিক্ষা ও বেপর্দা শিখানো হচ্ছে। বরং প্রথম শ্রেণী থেকেই ছেলে ও মেয়েদের পৃথকভাবে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও পৃথক প্রতিষ্ঠান হওয়াই উত্তম।
গণিত
ইবতেদায়ি দ্বিতীয় শ্রেণি
(২৫৫/১) প্রতি পৃষ্ঠার উপরের দিকে ছেলে-মেয়ে ও বিড়ালের কার্টুনের ছবি। একজন ছেলের মাথায় ইংরেজদের অনুকরণে হ্যাট-এর এর ছবি। আর পৃষ্ঠার নীচের দুই দিকে দু’টি মেয়ের কার্টুন দেওয়া আছে। এখানেও চরিত্র ও প্রতীকের ব্যাখ্যায় রেজা ও মিনার কথোপকথন।
(২৫৬/২) পৃ. ১৩ ক্রমবাচক সংখ্যা লাইনে দশজন শিশু দাঁড়িয়ে আছে। সামনে আছে নাছিমা এবং পিছনে আছে শান্তি। ক্রমবাচক সংখ্যা ব্যবহার করে এই শিশুদের অবস্থান বলি।
মন্তব্য : দশজনের মধ্যে শান্তি, রতন, আকাশ, সবিতা নামগুলি অনৈসলামী নাম।
(২৫৭/৩) পৃ. ৩৯ কোনো শ্রেণিতে ৪টি বেঞ্চ আছে, প্রতিটি বেঞ্চে ৩ জন করে শিক্ষার্থী বসে। সেখানে কতজন শিক্ষার্থী আছে?
মন্তব্য : প্রত্যেকটি বেঞ্চের ৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন মেয়ে ও দুইজন ছেলে অথবা দুইজন মেয়ে ও একজন ছেলে। এভাবে শিশুদেরকে শুরুতেই বেপর্দা শিখানো হচ্ছে।
(২৫৮/৪) পৃ. ৪৩ ২ এর গুণ
ছেলে ও মেয়ে একজোড়া করে মোট চার জোড়া শিশু একত্রে খেলছে। প্রত্যেকের হাতে প্লাস্টিকের বল ও পুতুল।
মন্তব্য : এর দ্বারা যোগের গুণ শিখানোর আড়ালে শিশুদের কোন দিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে? দু’জন ছেলে ও দু’জন মেয়েকে নিয়ে কি পৃথক জোড়া করা যেত না?
গণিত
ইবতেদায়ি চতুর্থ শ্রেণি
(২৫৯/১) বইয়ের শুরুতে ‘চরিত্র ও প্রতীকের ব্যাখ্যা’য় বলা হয়েছে, ১) চরিত্র : পাঠ্যপুস্তকে ‘রেজা’ ও ‘মিনা’ নামের দুইজন শিক্ষার্থীর কথোপকথন দেখানো হয়েছে। তাদের আলোচনা ও মতামতের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণিতের ধারণা স্পষ্ট হবে।
মন্তব্য : এই বইয়ের অধিকাংশ স্থানে ছেলে ও মেয়ের ছবি দিয়ে সহশিক্ষার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
গণিত
ইবতেদায়ি পঞ্চম শ্রেণী
(২৬০/১) বইয়ের শুরুতেই ‘চরিত্র ও প্রতীকের ব্যাখ্যা’তে বলা হয়েছে, ১) চরিত্র : পাঠ্য পুস্তকে রেজা ও মিনা দুইজনের কথোপকথন ছবিতে দেখানো হয়েছে। তাদের আলোচনা ও মতামতের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণিতের ধারণা স্পষ্ট হবে’। একইভাবে প্রথম শ্রেণীতেও দেখানো হয়েছে।
(২৬১/২) পৃ. ৬১ হাবিব সাহেব তার সম্পত্তির ৪ ভাগের ১ অংশ নিজের জন্য রাখলেন এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি দুই সন্তানের মধ্যে ভাগ করে দিলেন। তার সম্পত্তির আর কত অংশ বাকী রইল?
মন্তব্য : মৃত্যুর পূর্বে সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা রীতি সম্মত নয় (নিসা ৪/১২)।
(২৬২/৩) পৃ. ৯৬ ৯.২. সরল মুনাফা
জসিম একটি ব্যাংক থেকে ৬% বার্ষিক মুনাফায় ২,০০০ টাকা ঋণ নিলে জসিমকে প্রতি বছর কত টাকা মুনাফা দিতে হবে?
(২৬৩/৪) পৃ. ৯৬ (১) সোহেল একটি ব্যাংক থেকে ৮০০ টাকা ঋণ নিয়ে এক বছর পর ৮৫৬ টাকা ফেরত দিল। বার্ষিক মুনাফার হার কত ছিল?
(২৬৪/৫) পৃ. ৯৬ (২) আমিনা কোন ব্যাংক থেকে বার্ষিক ৫% মুনাফায় কিছু টাকা ঋণ নিয়ে এক বছর পর ৩০ টাকা মুনাফা দিল। আসল টাকা কত ছিল?
(২৬৫/৬) পৃ. ৯৭ তনিমা ব্যাংক থেকে ৩ বছরের জন্য ২,০০০/- টাকা ঋণ নিলেন। বার্ষিক মুনাফার হার ৬%। ৩ বছর পর তাকে কত টাকা মুনাফা দিতে হবে?
মন্তব্য : এখানে সূদকে ‘সরল মুনাফা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সরল ও চক্রবৃদ্ধি সকল প্রকার সূদকে আল্লাহ হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)।
(২৬৬/৭) পৃ. ৯৯ ৯ম অধ্যায় অনুশীলনীর ৬নং অংকে রয়েছে, ব্যাংক থেকে ৫০,০০০/- টাকা ঋণ নিয়ে ৮ বছর পর মোট ৯৮,০০০/- টাকা পরিশোধ করা হলো। আসলের ওপর ব্যাংকের মুনাফার হার কত ছিল?
মন্তব্য : এখানে মূল টাকার উপর বাড়তি ৪৮,০০০ টাকা সূদ। এটিকে মুনাফা বলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে।
গণিত
শ্রেণী : ৮ম
(২৬৭/১) ২.১ পৃ. ১৯ অনুশীলনীর ৯নং অংকে বলা হয়েছে, রিয়াজ সাহেব কিছু টাকা ব্যাংকে জমা রেখে ৪ বছর পর ৪,৭৬০ টাকা মুনাফা পান। ব্যাংকের বার্ষিক মুনাফার হার ৮.৫০ টাকা হলে, তিনি ব্যাংকে কত টাকা জমা রেখেছিলেন?
(২৬৮/২) ২.২ পৃ. ২৭ অনুশীলনীর ৭নং অংকে বলা হয়েছে, বার্ষিক ১০% মুনাফায় ৮,০০০/- টাকার ৩ বছরের চক্রবৃদ্ধি মূলধন নির্ণয় কর।
মন্তব্য :
এখানে সূদকে মুনাফা বলে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। অথচ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূদ
গ্রহীতা, সূদ দাতা, সূদের লেখক এবং তার সাক্ষীদ্বয়কে অভিসম্পাত করেছেন।
তিনি বলেন, তারা সবাই সমান অপরাধী’।[16]
(২৬৯/৩) পৃ. ২৭ ২.২ অনুশীলনীর ১২নং অংকে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি একটি ঋণদান সংস্থা থেকে বার্ষিক ৮% চক্রবৃদ্ধি মুনাফায় ৫,০০০/- টাকা ঋণ নিলেন। প্রতিবছর শেষে তিনি ২,০০০/- টাকা করে পরিশোধ করেন। ২য় কিস্তি পরিশোধের পর তাঁর আর কত টাকা ঋণ থাকবে?
মন্তব্য : এখানেও শিক্ষার্থীদেরকে ‘ঋণদান সংস্থা’ থেকে ‘চক্রবৃদ্ধি মুনাফা’ বলে রক্তচোষা এনজিওদের দ্বারস্থ হয়ে শিক্ষার্থীদের স্বর্বস্ব খোয়ানোর কুশিক্ষা দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রত্যেক ঋণ, যা লাভ বয়ে আনে সেটাই হ’ল সূদ। সেটা চক্রবৃদ্ধি হারে হৌক বা না হৌক (দ্র. বায়‘এ মুআজ্জাল (বাকী বিক্রয়ে অধিক লাভ) বই পৃ. ১১)।
গণিত
দাখিল নবম শ্রেণি
(২৭০/১) পৃ. ৭৩ ৩.৫ অনুশীলনীর ৩১ নং অংকে বলা হয়েছে- ৫% হারে মুনাফায় ৪,০০০/- টাকার ও বছরের সরল মুনাফা ও চক্রবৃদ্ধি মুনাফার পার্থক্য নির্ণয় কর।
মন্তব্য : পূর্বের মতো সূদ না বলে মুনাফা বলা হয়েছে। যা হারামকে হালাল করার মহাপাপের শামিল (নাহল ১৬/১১৬)।
বিজ্ঞান
শ্রেণী : নবম-দশম
(২৭১/১) পৃ. ১০২ ও ১১২ জীবজগতের যে পরিবর্তন বা বিবর্তন ঘটেছে, তার সপক্ষে একাধিক প্রমাণ আছে। পৃথিবীর সব বিজ্ঞানীকে নিয়ে একবার একটা জরিপ নেওয়া হয়েছিল, জরিপের বিষয়বস্ত্ত ছিল পৃথিবীর নানা বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ কোনটি। বিজ্ঞানীরা রায় দিয়ে বলেছিলেন, বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ তত্ত্ব হচ্ছে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব।
মন্তব্য : এটি ডাহা মিথ্যা। পৃথিবীর সকল বিজ্ঞানীকে নিয়ে কখনোই এরূপ জরিপ করা হয়নি। বরং আধুনিক বিজ্ঞানীদের প্রায় সকলেই কথিত বিবর্তনবাদকে ভিত্তিহীন ‘কল্পনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিবর্তনবাদী শিক্ষা আল্লাহকে অস্বীকার করে ও মানুষকে বানরের বংশধর বলে মনে করে। অথচ আল্লাহই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে (সাজদাহ ৩২/৭; মুমিনূন ২৩/১২)।
জীববিজ্ঞান
শ্রেণী : নবম-দশম
(২৭২/১) ২৭৬ পৃ. বিবর্তনের বিপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। জীবজগৎ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান যতই সমৃদ্ধ হচ্ছে, বিবর্তনকে অস্বীকার করা ততই অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
মন্তব্য : এটিও নাস্তিক্যবাদের পক্ষে নগ্ন দালালী মাত্র। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখানো হচ্ছে যে, মানুষ কোন পৃথক সৃষ্টি নয়। বরং বানর বা বানরজাতীয় পশু থেকে লেজ খসে পড়ে ক্রমবিকাশের মাধ্যমে বিবর্তন লাভ করে শেষ পর্যায়ে মানুষের রূপ লাভ করেছে।
জীববিজ্ঞান
শ্রেণী : একাদশ-দ্বাদশ
(২৭৩/১) ২৮৭ পৃ. বিবর্তনের ক্ষেত্রে ডারউইনের মতবাদ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী ও সাড়া জাগানো অবদান। বিবর্তনের স্বপক্ষে প্রাপ্ত প্রমাণগুলো একত্র করলে কারও পক্ষে এর বিরুদ্ধে কোনো যুক্তি তৈরি বা উত্থাপন করা সম্ভব হবে না।
মন্তব্য : এটাও মিথ্যা দাবী। এভাবে নবম শ্রেণী থেকে শুরু করে মাস্টার্স পর্যন্ত বিবর্তনবাদ বিষয়ক পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে এইরূপ বদ্ধমূল ধারণা তৈরি করা হচ্ছে যে, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বলে কিছু নেই। মানব জাতিসহ সমগ্র প্রাণী জগত ও সমগ্র মহাবিশে^র বর্তমান অবয়ব বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই বর্তমান অবস্থায় এসেছে।
বাংলাদেশে ২০১২ সাল পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা ছিল না। ২০১৩ সালে একযোগে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, অনার্স ও মাস্টার্স স্তরের পাঠ্যবইয়ে বিবর্তনবাদের পাঠ যুক্ত করা হয়। দৃশ্যতঃ বুঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ ও পুঁজিবাদিদের চাপ ও প্ররোচণাতেই এটা করা হয়েছে। সংবিধান মতেও মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ঈমান-আক্বীদা বিরোধী কুফরী বিবর্তন মতবাদ শিক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই।
আধুনিক বিজ্ঞান বিবর্তনবাদের কল্পকাহিনীকে ছুঁড়ে ফেলেছে। যে কারণে উন্নত বিশে^র অনেক দেশে বিবর্তন শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই শিক্ষা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জাতীর চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাস থেকে ঈমান হরণের এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। এতে করে সমাজ ও ব্যক্তি জীবন থেকে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ উঠে যেতে শুরু করবে। বিবাহের বহুবিধ দায়বদ্ধতা ছাড়াই ছেলে ও মেয়েরা পাশ্চাত্যের অনুকরণে ‘লিভ টুগেদারে’ আগ্রহী হবে। জারজ সন্তানে দেশ ভরে যাবে। মা-বোন তারতম্য বোধ থাকবে না। মদ-জুয়ার বিধি-নিষেধ মানবে না। সমকামিতার বৈধতা নিয়ে আন্দোলন শুরু হবে। মানবতাবোধ হারিয়ে যাবে এবং ভোগবাদে মানুষ ডুবে যবে। আল্লাহ-রাসূল ও ইসলাম নিয়ে কটূক্তি এবং আলেম-ওলামা, ধর্মীয় শিক্ষা ও আল্লাহভীরু মানুষকে বাধা ও বিরক্তিকর ভাবতে শুরু করবে।
অতএব সরকারের প্রতি দাবী থাকবে, (১) ঈমান-আক্বীদা ও সমাজিক শৃঙ্খলাবিরোধী ডারউনের কুফরী ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা পাঠ্যপুস্তক থেকে বিলুপ্ত করতে হবে। (২) এটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। (৩) শিক্ষার সর্বস্তরে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ইসলাম ধর্ম’ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আকাইদ ও ফিকহ
দাখিল ৭ম শ্রেণি
(২৭৪/১) পৃ. ৩ তাই বলা হয়, إِهَانَةُ الرَّسُوْلِ كُفْرٌ (রাসূলকে হীন করা কুফরী)।
মন্তব্য : মর্ম সঠিক হ’লেও বক্তব্য সঠিক নয়।
(২৭৫/২) পৃ. ৮ সালাত, সাওম, যাকাত, হজ যেভাবে শিক্ষা করা ও আমল করা ফরযে আইন, একইভাবে ইলমুত্ তাযকিয়া ও তাসাউফের জ্ঞান অর্জন করা এবং আমলে পরিণত করাও ফরযে আইন।
মন্তব্য : ‘ইলমুত তাযকিয়া’ ও ‘তাছাউওফের জ্ঞান’ বলে কোন শাস্ত্র ইসলামে নেই। এর অন্তরালে ছূফীবাদের ভ্রান্ত বীজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বপন করা হয়েছে (আলোচনা দ্রষ্টব্য : ক্রমিক (৪৪)।
(২৭৬/৩) পৃ. ১১ সৃজনশীল প্রশ্ন আব্দুর রহমান সাহেব একজন হক্কানী পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে নিয়মিত যিকির আযকার করেন।
মন্তব্য : এগুলো বলে মানুষকে পীর পূজার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। আত্মার পরিশুদ্ধিতার জন্য খুশূ-খুযূর সাথে ফরয ও নফল ইবাদতই যথেষ্ট। যিকির-আযকারের জন্য পীরের হাতে বায়‘আত গ্রহণ করা শর্ত নয়।
(২৭৭/৪) পৃ. ৩০ أَنَا قَائِدُ الْمُرْسَلِينَ... (আমিই রসূলগণের নেতা...)
মন্তব্য : হাদীছটির সনদ আলবানী যঈফ বলেছেন।[17]
তবে দারেমীর মুহাক্কিক হোসাইন সালীম আসাদ বলেছেন, সনদ ‘জাইয়িদ’। বরং أَنَا
سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، ‘আমি কিবয়ামতের দিন আদম
সন্তানদের সর্দার’ শব্দে বর্ণিত হাদীছটি ছহীহ।[18]
(২৭৮/৫) পৃ. ৫৫ সাহাবীগণের মর্যাদাأَصْحَابِي كَالنُّجُومِ بِأَيِّهِمُ اقْتَدَيْتُمُ اهْتَدَيْتُمْ- (আমার সাহাবিগণ নক্ষত্রের মতো, অতএব তাদের যাকেই অনুসরণ করবে হেদায়েতের পথ পেয়ে যাবে)।
মন্তব্য : হাদীছটি জাল।[19] তবে ছাহাবীগণের উচ্চ মর্যাদা বিষয়ের ছহীহ হাদীছটি হ’ল,لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِى، فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ- ‘তোমরা আমার ছাহাবীদের গালি দিয়ো না। তোমাদের কেউ যদি ওহোদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তথাপি সেটি তাদের কারো এক মুদ্দ বা অর্ধ মুদ্দ ব্যয়ের সমান হবে না’।[20] [চলবে]
[1]. তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইরওয়াউল গালীল হা/৪০৩, ২/১২৮-২৯ পৃ.; দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪র্থ সংস্করণ ১৫২-৫৩ পৃ.।
[2]. মুসলিম হা/৫৭১; মিশকাত হা/১০১৫; বুখারী হা/৮২৯; মিশকাত হা/১০১৮ ‘সহো’ অনুচ্ছেদ-২০।
[3]. বুখারী হা/৭৫৭; মুসলিম হা/৩৯৭; মিশকাত হা/৭৯০।
[4]. ইরওয়াউল গালীল হা/৪২৭; মির‘আত ৪/২৯৯, ‘কুনূত’ অনুচ্ছেদ-৩৬; দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১৬৬-১৬৯ পৃ.।
[5]. আহমাদ, নাসাঈ হা/১০৭৪; আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী, ১৬০ পৃ.।
[6]. আবুদাঊদ হা/১৪৪৫; মিশকাত হা/১২৯১-৯২।
[7]. মারাসীলে আবুদাঊদ হা/৮৯; বায়হাক্বী ২/২১০; মিরক্বাত ৩/১৭৩-৭৪; মির‘আত ৪/২৮৫।
[8]. ইরওয়া হা/৪২৮-এর শেষে, ২/১৭২ পৃ.।
[9]. আবুদাঊদ হা/১৪২৫; মিশকাত হা/১২৭৩; দ্রষ্টব্য : ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪র্থ সংস্করণ ১৬৭ পৃ.।
[10]. দ্রষ্টব্য : ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪র্থ সংস্করণ ৮৩ পৃ.।
[11]. আবুদাঊদ হা/২৩৫৮; ইরওয়া হা/৯১৯।
[12]. মুসলিম হা/২৭৩৪; মিশকাত হা/৪২০০।
[13]. বুখারী হা/৬২২৩; মুসলিম হা/২৯৯২; মিশকাত হা/৪৭৩২।
[14]. মুসলিম হা/২৯৯৫; মিশকাত হা/৪৭৩৭।
[15]. আবুদাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬১৪৯।
[16]. মুসলিম হা/১৫৯৮; মিশকাত হা/২৮০৭।
[17]. দারেমী হা/৪৯; মিশকাত হা/৫৭৬৪; যঈফুল জামে‘ হা/১৩১৯।
[18]. মুসলিম হা/২২৭৮; মিশকাত হা/৫৭৬১।
[19]. রাযীন, মিশকাত হা/৬০০৯; যঈফাহ হা/৫৮।
[20]. বুখারী হা/৩৬৭৩; মিশকাত হা/৫৯৯৮।