এ যেন এক রূপকথার গ্রাম। নেই চুরি, ডাকাতি বা মাদকের ছোবল। নেই কোন ঝগড়া-বিবাদ। নেই রাজনৈতিক বিরোধ। এমনকি স্বাধীনতার আগে-পরে এ গ্রামের কেউ কখনও মামলা করতে থানায় গেছে বলে জানা যায় না। সুখে-দুঃখে একে অন্যের পাশে থাকেন গ্রামের সবাই। বিস্ময়কর এ গ্রামের নাম হুলহুলিয়া। এটি নাটোরের সিংড়া উপযেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৩টি পাড়া নিয়ে গঠিত চলনবিল বেষ্টিত গ্রামটির আয়তন গ্রায় দুই বর্গকিলোমিটার। জানা যায়, এখানে শিক্ষার হার ও স্যানিটেশন-ব্যবস্থা প্রায় শতভাগ। শীতে এ গ্রামে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। কিন্তু পাখি মারার প্রবণতা নেই গ্রামবাসীর। ব্রিটিশ আমল থেকে স্বশাসন ব্যবস্থা চলে আসছে এখানে। সবাই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসচেতন। এর প্রতিফলন দেখা যায় এ গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসা মেধাবীদের পরিসংখ্যানে। গ্রামের দেড় শতাধিক সন্তান প্রকৌশলী, শতাধিক চিকিৎসক। আছেন কৃষিবিদ, আইনবিদ, প্রতিরক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও।

জানা গেছে, ১৯১৪-১৫ সালের দিকে একবার প্রবল বন্যায় ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গ্রামে অভাব দেখা দেয়। গ্রামের অনেক চাষী ধানবীজের অভাবে জমি ফেলে রাখতে বাধ্য হন। সবার মনে কষ্ট ও হতাশা। বিষয়টি গ্রামের মাতববর মছির উদ্দিন মৃধার মনে দাগ কাটে। একদিন গ্রামের প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে লোক ডেকে সভায় বসেন তিনি। সিদ্ধান্ত হয়, যাদের ঘরে অতিরিক্ত ধানবীজ আছে, তারা বিনাশর্তে অন্যদের ধার দিবেন। সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, খালি জমি ফসলে ভরে ওঠে। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামের উন্নয়নে ১৯৪০ সালে ‘হুলহুলিয়া সামাজিক উন্নয়ন পরিষদ’ নামে একটি পরিষদ গঠিত হয়। এই পরিষদ গ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বিচার ব্যবস্থা পরিচালনা করে। গ্রামে কোন বিরোধ হ’লে এই প্যানেল আলোচনার মাধ্যমেই তা মীমাংসা করে। বিচারক প্যানেল ও পরিষদের ওপর গ্রামবাসীর আস্থা আছে বলে তারা পরিষদের উপরই নির্ভর করে। পরিষদের উদ্যোগে স্কুল, মাদ্রাসা, কবরস্থান, চলাচলের রাস্তা সবই তৈরী করা হয়েছে। এ সংগঠন ছাড়াও হুলহুলিয়ায় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে আসছে ‘শেকড়’ ও ‘বটবৃক্ষ’ নামের দু’টি সামাজিক সংগঠন। এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য সবাই চাকুরিজীবী। তাদের অনুদানে গ্রামের অভাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, অসহায় মানুষকে সহায়তা ও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়।

চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, পরিষদ থাকায় হুলহুলিয়া গ্রামে কোন বিবাদ বা সংঘর্ষ হয় না বললেই চলে। সিংড়া থানার ওসি (তদন্ত) নে‘আমুল হক বলেন, থানার পরিসংখ্যানই বলে, হুলহুলিয়া গ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। জমিজমা নিয়ে বিরোধ হ’লেও গ্রামের পরিষদই তা সমাধান করে।






স্বদেশ-বিদেশ
দেশের প্রতিটি আইনই ত্রুটিপূর্ণ -প্রধান বিচারপতি
বিআইডিএসের গবেষণা : ২০-৩০% মানুষ এখনো ১৪৫% সূদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নেয়
দূষণে ভারতে সাড়ে ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু ২০১৭ সালে
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পেশকৃত ৪টি প্রস্তাব
করোনায় মৃত্যুর চেয়ে আত্মহত্যা দ্বিগুণ
দুবাই বিশ্ব কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেয ত্বরীকুল ইসলামের ১ম স্থান লাভ
মানুষের শেখা উচিত কুকুরের কাছ থেকে
স্বদেশ-বিদেশ
জন্মহার বাড়াতে জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় চালু করল দক্ষিণ কোরিয়া
মসজিদ ডট লাইফ : সূদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের আদর্শ এক প্রতিষ্ঠান
সিঙ্গাপুরে দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ আত্মহত্যা ২০২২ সালে
আরও
আরও
.