স্বাধীনতার প্রায় সাত দশক পর ত্রিপুরায় বসবাসরত চাকমা জনগোষ্ঠীর নেতারা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবী করেছে। চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া ও চাকমা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের নেতারা গত ১৭ই আগস্ট ত্রিপুরায় আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এই দাবী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে জাতিগত নিপীড়নের বিচার চেয়েছে।

২০১৬ সাল থেকে ১৭ই আগস্টকে কালো দিবস হিসাবে উদযাপন করে আসছে সংগঠন দু’টি। সংগঠনের ত্রিপুরা শাখার মহাসচিব উদয় জ্যোতি চাকমা বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে হস্তান্তরের ঐতিহাসিক অন্যায়ের প্রতিবাদে এই কালো দিবস উদযাপন করা হয়।

চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার ত্রিপুরা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিরুদ্ধ চাকমা বলেন, ‘আমরা মনে করি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালত ইন্টারন্যাশন্যাল কোর্ট অব জাস্টিসের কাছে ন্যায়বিচার এবং সহানুভূতি কামনা করছি। ঐতিহ্যগতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা, মারমা, তিপেরাস, চাক, মুরং, খুমি, লুসাই, বোম, পাঙ্খ এবং মগসহ কমপক্ষে ১১টি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বসবাস করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তন প্রায় ৫ হাযার ১৩৮ বর্গকিলোমিটার। যার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে মিয়ানমারের আরাকান পর্বত, পূর্বে মিজোরামের লুসাই ও মিয়ানমারের আরাকান পর্বত এবং পশ্চিমে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম যেলার অবস্থান।

চাকমা ঐ নেতা বলেন, ভারতের স্বাধীনতার সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ অধিবাসী ছিল বৌদ্ধ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের। কিন্তু স্যার সিরিল র‌্যাডক্লিফ নেতৃত্বাধীন সীমান্ত কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের ভূখন্ড হিসাবে ঘোষণা দিয়েছিল।

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রামের যেলা সদর দফতর রাঙ্গামাটিতে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন চাকমা নেতা শ্রেয়া কুমার চাকমা। এর দু’দিন পর রেডিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম হবে পাকিস্তানের অংশ। এ ঘোষণার পর ২১শে আগস্ট রাঙ্গামাটি থেকে ভারতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে তৎকালীন পাক সামরিক বাহিনী। তখন থেকে চাকমা নেতাদের ভারতের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

ত্রিপুরার এই চাকমাদের দাবী, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করলেও সেখানকার চাকমা এবং জাতিগত অন্যান্য গোষ্ঠী

এখনো ভারতকে তাদের ‘কল্পিত মাতৃভূমি’ হিসাবে মনে করে।

[১৮ই আগষ্ট ঢাকা সফরে আসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর রায়। তার আগের দিন এই রূপ দাবী উঠার পেছনে কেন্দ্রীয় সমর্থন আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় তাদের এ দাবী প্রকাশিত হওয়ার পরেও বিষয়টি ঢাকার আলোচনায় কেন আসল না সেটাও চিন্তার বিষয়। বাংলাদেশকে ভীত করার জন্য ভারত ইতিপূর্বে বঙ্গভূমি আন্দোলন, জুমল্যান্ড আন্দোলন করেছে। এখন আবার পার্বত্য চট্টগ্রাম তাদের বলে দাবী করল। আমাদের সরকার কি জবাব দিবেন সবাই সেদিকে তাকিয়ে থাকবে। আল্লাহ তুমি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ণ রাখ! (স.স.)] 






আরও
আরও
.