নীলফামারীর মাহফূয (৩১) উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় এসে মেসজীবনে দেখেন, বাজার থেকে মাছ কিনে আনলে গৃহপরিচারিকা বিরক্ত হন। কারণ মাছ কাটা-ধোয়া তার জন্য বেশ ঝামেলার কাজ। পরে তিনি বুঝতে পারেন, এ শহরের অন্যরাও একই সমস্যায় আছেন। ব্যবসার ধারণাটি তখনই তার মাথায় আসে। ভাবলেন, ঢাকার বাইরে থেকে তাজা মাছ সংগ্রহ করে কেটে-ধুয়ে একদম রান্নার উপযোগী করে যদি বাসায় বাসায় পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহ’লে নগরবাসীর ঝামেলা কমবে। তার আয়ও হবে। এ ভাবনা থেকে শিক্ষার্থী অবস্থাতেই স্বল্পপরিসরে ঢাকায় এ ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বিবিএ-এমবিএ শেষ করে চাকরীর পেছনে না ছুটে তিনি পুরোদমে এ ব্যবসায় নেমে পড়েন। এই তরুণ উদ্যোক্তার এখন মাসে মুনাফাই আসে দেড় লাখ টাকার উপরে।
২০১৬ সালে ‘ফিশ মার্ট’ নামের অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসায়িক উদ্যোগ শুরু করেন বলে জানান মাহফূয। তিনি বলেন, শিক্ষক পিতা-মাতার সন্তান আমি। মাছ সংগ্রহ-বিক্রির কিছুই আমি জানতাম না। বিষয়টি বুঝার জন্য প্রথমে আমি ঢাকার বাইরে যাই। যেখানে ভালো ও তাজা মাছ পাওয়া যায়, তা ঘুরে দেখি। ফেসবুকে পেজ খুলে শুরুতে আস্ত মাছ বিক্রি করি। পরে কেটে-ধুয়ে বিক্রি করি। মূলত তখনই আমার ব্যবসায় গতি আসে। চাহিদা বাড়ায় ২০১৭ সালে এক কক্ষের একটি অফিস নেই। তারপর করোনার কারণে ফেসবুক পেজে অর্ডারও অনেক বেড়ে যায়। ফলে আয়ও বাড়তে থাকে।
মাহফূযের প্রতিষ্ঠানে এখন সব মিলিয়ে ২৭ কর্মী। ঢাকার অদূরের মৈনটঘাট, চাঁদপুর, ভৈরব, বরিশালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তাজা মাছ সংগ্রহ করেন তিনি। এই মাছ কেটে-ধুয়ে পুরোপুরি রান্নার উপযোগী করে তা ক্রেতাদের ঘরে পৌঁছে দেন তাঁর কর্মীরা। মাছের পাশাপাশি গোশতও বিক্রি করেন মাহফূয। ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ক্রয়াদেশ গ্রহণ করে তাঁর প্রতিষ্ঠান।
মাছের মানের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বলে জানান মাহফূয। তিনি বলেন, এখন দিনে কম করে হ’লেও ৮০ হাযার টাকার মাছ বিক্রি করি। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে দেড় লাখ টাকা মুনাফা হয়। আগামীতে দেশের সব ক’টি বিভাগীয় শহরে প্রতিষ্ঠানের শাখা খোলার পরিকল্পনা আছে তার।