(খ) শারঈ বিধান মোতাবেক ব্যয়-বণ্টন না করার মাধ্যমে সীমালংঘন : সম্পদ উপার্জনের ক্ষেত্রে ইসলামে যেমন নীতিমালা রয়েছে, তেমনি তার ব্যয়-বণ্টনেরও সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। যেগুলো লংঘন করলে কঠিন পরিণাম ভোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কতিপয় সীমালংঘনের দিক নিম্নে তুলে ধরা হ’ল।-
১. কৃপণতা করা: সমাজে এমন কিছু লোক আছে, যাদের অঢেল টাকা-পয়সা থাকলেও কৃপণতা তাদের পিছ ছাড়ে না। ফরয যাকাত তো দূরে থাক সামান্য সায়েল কাতর কণ্ঠে কিছু চাইলেও তাদের হৃদয়ে সামান্যতম অাঁচড় কাটে না। দূর দূর করে বরং তাড়িয়ে দেয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেন,وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ ‘আর সাহায্য প্রার্থীকে ধমকাবে না’ (যোহা ৯৩/১০)। কৃপণদের কঠিন শাস্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَى وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى- ‘যে ব্যক্তি কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, অচিরেই আমরা তাকে কঠিন পথের জন্য সহজ করে দিব’ (লায়ল ৯২/৮-১০)। অর্থাৎ জাহান্নামের জন্য সহজ করে দিব।
পূর্ববর্তী
আয়াতে জান্নাতী বান্দাদের তিনটি বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা শেষে আলোচ্য
জাহান্নামীদের তিনটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক- তারা আল্লাহর পথে
ব্যয় করার বিষয়ে কৃপণতা করবে। দুই- আল্লাহর অবাধ্যতায় বেপরওয়া হবে এবং তিন-
তাওহীদের কালেমায় মিথ্যারোপ করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর বাণীর
অবাধ্যতা করবে। তাদের জন্য কঠিন পথ অর্থাৎ জাহান্নামের পথ সহজ করে দেয়া
হবে।[1]
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَمَنْ
يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ‘যারা অন্তরের
কার্পণ্য হ’তে মুক্ত, তারাই সফলকাম’ (তাগাবুন ৬৪/১৬; হাশর৫৯/৯)।
জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, اتَّقُوا الظُّلْمَ فَإِنَّ
الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاتَّقُوا الشُّحَّ فَإِنَّ
الشُّحَّ أَهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَمَلَهُمْ عَلَى أَنْ سَفَكُوا
دِمَاءَهُمْ وَاسْتَحَلُّوا مَحَارِمَهُمْ ‘তোমরা যুলম করা থেকে বেঁচে থাক।
কেননা যুলম ক্বিয়ামতের দিন অন্ধকারে পরিণত হবে। আর কৃপণতা থেকে বেঁচে থাক।
কেননা কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে। (এই কৃপণতাই) তাদেরকে
প্ররোচিত করেছিল। ফলে তারা নিজেদের মধ্যে রক্তপাত ঘটিয়েছিল এবং তাদের উপর
হারামকৃত বস্ত্তসমূহ হালাল করে নিয়েছিল’।[2]
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,إِيَّاكُمْ وَالشُّحَّ فَإِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِالشُّحِّ أَمَرَهُمْ بِالْبُخْلِ فَبَخَلُوا وَأَمَرَهُمْ بِالْقَطِيعَةِ فَقَطَعُوا وَأَمَرَهُمْ بِالْفُجُورِ فَفَجَرُوا ‘তোমরা কৃপণতা হ’তে বেঁচে থাক। কেননা কৃপণতা তোমাদের পূর্বেকার লোকদের ধ্বংস করেছে। সে তাদের বখীলী করার নির্দেশ দিয়েছে, তখন তারা তা করেছে। তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছে, তখন তারা তা করেছে। তাদের পাপ করার নির্দেশ দিয়েছে, তখন তারা তা করেছে’।[3] অতএব আল্লাহ প্রদত্ত সম্পদ তাঁর পথে ব্যয় করতে কার্পণ্য করা চরম সীমালংঘন।
২. ওশর-যাকাত প্রদান না করা:
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যাকাত। সম্পদশালীদের উপর এটি ফরয
বিধান। নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হ’লে প্রতিবছর নির্ধারিত হারে যাকাত
বের করতে হয় এবং সুনির্দিষ্ট খাতগুলিতে বণ্টন করতে হয়। রাসূল (ছাঃ)
বলেন,أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِى أَمْوَالِهِمْ،
تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ ‘নিশ্চয়ই
আল্লাহ তাদের উপর ছাদাক্বা (যাকাত) ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট হ’তে
গ্রহণ করা হবে এবং গরীবদের মাঝে বণ্টন করা হবে’।[4]
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ সমূহে যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ শাস্তির কথা বিধৃত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, وَالَّذِيْنَ يَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُوْنَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيْمٍ يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِيْ نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوْبُهُمْ وَظُهُوْرُهُمْ هَـذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوْقُواْ مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُوْنَ- ‘যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য সঞ্চয় করে রাখে, তা থেকে আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও। সেদিন ঐগুলোকে জাহান্নামের আগুনে গরম করা হবে এবং তদ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বদেশে ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে (আর বলা হবে) এটা সেই মাল, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রেখেছিলে। অতএব তোমরা এর স্বাদ আস্বাদন কর’ (তওবা ৩৪-৩৫)।
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,مَنْ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ
لَهُ مَالُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيْبَتَانِ
يُطَوِّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثُمَّ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ، يَعْنِى
شِدْقَيْهِ ثُمَّ يَقُوْلُ أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ ثُمَّ تَلاَ
وَلاَ يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَا آتَاهُمُ اللهُ مِن
فَضْلِهِ هُوَ خَيْراً لَّهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ سَيُطَوَّقُوْنَ
مَا بَخِلُواْ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ- ‘আল্লাহ যাকে ধন-সম্পদ দান
করেছেন অথচ সে তার যাকাত দেয়নি, ক্বিয়ামতের দিন তার সমস্ত মাল মাথায় টাক
পড়া সাপের আকৃতি ধারণ করবে। যার চোখের উপর দু’টি কালো চক্র থাকবে। ঐ সাপটি
তার গলা পেচিয়ে ধরে শাস্তি দিতে থাকবে আর বলবে, আমি তোমার মাল, আমি তোমার
সঞ্চিত সম্পদ। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) নিম্নোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন, ‘আল্লাহ
যাদেরকে ধন-সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু তারা কৃপণতা করল, তারা যেন ধারণা না করে
যে, এটা তাদের জন্য কল্যাণকর, বরং এটি তাদের জন্য ক্ষতিকর। ক্বিয়ামতের দিন ঐ
মালকে বেড়ি আকারে তার গলায় পরানো হবে’।[5]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বর্ণ ও রৌপ্যের মালিক অথচ তার হক (যাকাত) আদায়
করে না, ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য তা আগুনের পাত্ররূপে পেশ করা হবে এবং
জাহান্নামের আগুনে তা গরম করে তার কপালে, পার্শ্বদেশে ও পৃষ্ঠদেশে সেক দেয়া
হবে। যখন উহা ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন পুনরায় গরম করা হবে। এ অবস্থা
ক্বিয়ামতের পুরো দিন চলতে থাকবে, যার দৈর্ঘ্য পঞ্চাশ হাযার বছরের সমান হবে।
অতঃপর বান্দাদের মাঝে বিচার করা হবে, তখন সে দেখবে তার পথ কি জান্নাতের
দিকে, না জাহান্নামের দিকে’।[6]
অন্য হাদীছে
বর্ণিত হয়েছে,عَنْ أَبِى ذَرٍّ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ
سَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ رَّجُلٍ يَّكُوْنُ لَهُ إِبِلٌ أَوْ بَقَرٌ أَوْ
غَنَمٌ لاَّ يُؤَدِّيْ حَقَّهَا إلاَّ أُتِيَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
أَعْظَمَ مَا يَكُوْنُ وَأَسْمَنَهُ تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا وَتَنْطَحُهُ
بِقُرُوْنِهَا كُلَّمَا جَازَتْ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُوْلاَهَا
حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ- আবু যর (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা
করেন, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তির উট, গরু, ছাগল বা ভেড়া থাকবে, অথচ সে উহার
হক আদায় করবে না (অর্থাৎ যাকাত দিবে না), ক্বিয়ামতের দিন ঐগুলোকে তার নিকট
অতি বিরাটকায় ও অতি মোটাতাজা অবস্থায় উপস্থিত করা হবে। ঐগুলো দলে দলে তাকে
মাড়াতে থাকবে নিজেদের ক্ষুর দ্বারা এবং আঘাত করতে থাকবে এদের শিং দ্বারা।
যখনই এদের শেষ দল অতিক্রম করবে, পুনরায় প্রথম দল এসে তার সাথে এরূপ করতে
থাকবে, যতক্ষণ না মানুষের মধ্যে বিচার-মীমাংসা শেষ হবে’।[7]
৩. উত্তরাধিকার সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন না করা :
ব্যয়-বণ্টনে সীমালংঘনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উত্তরাধিকার সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন না করা। বিশেষকরে পিতার মৃত্যুর পর বোনদেরকে কোন অংশ না দেওয়া। সমুদয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিজেরা ভোগ করা। বোনদের পক্ষ থেকে দাবী করা হ’লে বরং তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়া বা তাদেরকে এমন কথা শুনিয়ে দেওয়া যে, পিতার অংশ নিয়ে কি চিরতরে সম্পর্ক শেষ করে দিতে চাচ্ছ? আর কি কখনো বেড়াতে আসবে না? অর্থাৎ পিতার অনুপস্থিতিতে ভাইদের বাড়ীতে বেড়ানোর অযুহাত দিয়ে তাদেরকে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা। অথচ এ বিষয়ে কুরআন সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে যে, لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنْهُ أَوْ كَثُرَ نَصِيبًا مَفْرُوضًا ‘পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদের অংশ রয়েছে এবং পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ রয়েছে, কম হৌক বা বেশী হৌক। এ অংশ সুনির্ধারিত’ (নিসা ৪/৭)।
আরো স্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেন,
يُوصِيكُمُ اللهُ فِي أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ فَإِنْ كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِنْ كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِنْ كَانَ لَهُ وَلَدٌ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ الثُّلُثُ فَإِنْ كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ السُّدُسُ مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا أَوْ دَيْنٍ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًا فَرِيضَةً مِنَ اللهِ إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا-
‘আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের (মধ্যে মীরাছ বণ্টনের) ব্যাপারে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। যদি তারা দুইয়ের অধিক কন্যা হয়, তাহ’লে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ পাবে। আর যদি কেবল একজনই কন্যা হয়, তবে তার জন্য অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার প্রত্যেকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ করে পাবে, যদি মৃতের কোন পুত্র সন্তান থাকে। আর যদি না থাকে এবং কেবল পিতা-মাতাই ওয়ারিছ হয়, তাহ’লে মা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। কিন্তু যদি মৃতের ভাইয়েরা থাকে, তাহ’লে মা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ মৃতের অছিয়ত পূরণ করার পর এবং তার ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রদের মধ্যে কে তোমাদের জন্য অধিক উপকারী, তা তোমরা জানো না। এটা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়’ (নিসা ৪/১১)।
এভাবে সূরা নিসার বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা উত্তরাধিকার সম্পদের বিধি-বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। মূলতঃ মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদের সাথে চারটি হক জড়িত। ১-তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করা। ২-তার ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করা। ৩- অছিয়ত থাকলে তা পূরণ করা ও ৪-উত্তরাধিকারদের মধ্যে শরী‘আত নির্ধারিত পন্থায় অবশিষ্ট সম্পদ বণ্টন করে দেয়া। এগুলো লংঘন করা কুরআনী বিধান লংঘন করার শামিল। যার পরিণতি অত্যন্ত ভায়াবহ। আল্লাহ বলেন,تِلْكَ حُدُودُ اللهِ وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ، وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُوْدَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيْهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِيْنٌ- ‘এগুলি হ’ল আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী সমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে এবং তাঁর সীমাসমূহ লংঘন করবে, তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরদিন থাকবে। আর তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (নিসা ৪/১৩-১৪)।
তাছাড়া উত্তরাধিকার সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন না করে আত্মসাৎ করা হ’লে এতে ‘হাক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করা হয়। যা কখনো আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। দুনিয়াতে এর কোন বিহিত না করলে আখেরাতে নেকী দিয়ে তা পরিশোধ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تَأْكُلُوْا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوْا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوْا فَرِيْقًا مِنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের সম্পদ ভক্ষণ করো না এবং অন্যের সম্পদ গর্হিত পন্থায় গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তোমরা জেনেশুনে তা বিচারকদের নিকট পেশ করো না’ (বাক্বারাহ ২/১৮৮)। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ مَتَاعَ فَقَالَ إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِى يَأْتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِى قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِى النَّار-ِ
‘তোমরা
কি জানো নিঃস্ব কে? সবাই বলল, আমাদের মধ্যে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি যার কোন
টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদ নেই। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে নিঃস্ব সেই
ব্যক্তি, যে দুনিয়া থেকে ছালাত-ছিয়াম-যাকাত ইত্যাদি আদায় করে আসবে। সাথে
ঐসব লোকেরাও আসবে, যাদের কাউকে সে গালি দিয়েছে, কারো উপরে অপবাদ দিয়েছে,
কারো মাল গ্রাস করেছে, কাউকে হত্যা করেছে বা কাউকে প্রহার করেছে। তখন ঐসব
পাওনাদারকে ঐ ব্যক্তির নেকী থেকে পরিশোধ করা হবে। এভাবে পরিশোধ করতে করতে
যদি তার নেকী শেষ হয়ে যায়, তখন ঐসব লোকদের পাপসমূহ এই ব্যক্তির উপর চাপানো
হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’।[8]
৪. পাওনাদারের পাওনা পরিশোধ না করা: দুনিয়াবী প্রয়োজনে মানুষ মানুষের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। প্রয়োজন পূরণ হ’লে তা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও দু’টি শ্রেণী রয়েছে। একশ্রেণীর মানুষ ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধের মানসিকতা নিয়ে। আরেক শ্রেণীর মানুষ ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধ না করার মানসিকতা নিয়ে। অপরদিকে বিপদগ্রস্থ হয়ে কেউ ঋণ করে। আবার কেউ প্রাচুর্যশীল হওয়ার জন্য ঋণ করে। আবার কেউবা প্রতিবেশী বা অন্য কোন পরিচিতজনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে গাড়ী, বাড়ী ও আসবাবপত্র ক্রয়ের জন্য ঋণ করে। ঋণ গ্রহণ যেন আজকাল অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করার পরিণতি সম্পর্কে আমরা যেন মোটেই ওয়াকেফহাল না।
অথচ
ইসলামে ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা
হয়েছে। করীম (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَخَذَ أَمْوَالَ النَّاسِ يُرِيدُ
أَدَاءَهَا أَدَّى اللهُ عَنْهُ ، وَمَنْ أَخَذَ يُرِيدُ إِتْلاَفَهَا
أَتْلَفَهُ اللهُ‘যে ব্যক্তি পরিশোধের নিয়তে মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে,
আল্লাহ তা‘আলা তার পক্ষ থেকে তা পরিশোধ করে দেন। আর যে তা বিনষ্ট করার
নিয়তে গ্রহণ করে থাকে, আল্লাহ তাকে বিনষ্ট করে দেন’।[9] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ ব্যতীত মৃত্যুবরণ করলে হাশরের মাঠে নিজের নেকী থেকে ঋণের দাবী পূরণ করতে হবে’।[10] নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় তার ঋণের কারণে, যতক্ষণ না তার পক্ষ হ’তে ঋণ পরিশোধ করা হয়’।[11]
অন্যত্র তিনি বলেন,سُبْحَانَ اللهِ مَاذَا أَنْزَلَ مِنَ التَّشْدِيدِ فِي
الدَّيْنِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ رَجُلًا قُتِلَ فِيْ
سَبِيلِ اللهِ ثُمَّ أُحْيِيَ ثُمَّ قُتِلَ ثُمَّ أُحْيِيَ ثُمَّ قُتِلَ
وَعَلَيْهِ دَيْنٌ مَا دَخَلَ الْجَنَّةَ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ دَيْنُهُ
‘সুবহা-নাল্লাহ! ঋণ প্রসঙ্গে কী কঠোর বাণীই না আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ
করেছেন। যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ, ঋণগ্রস্ত অবস্থায় কেউ যদি আল্লাহর
পথে শহীদ হয় তারপর জীবিত হয়, তারপর শহীদ হয়, তারপর জীবিত হয়, তারপর আবার
শহীদ হয় তবুও ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত সে জান্নাতে প্রবেশ করতে
পারবে না’।[12]
সুতরাং আমাদের উচিত আখেরাতে মুক্তির স্বার্থে ঋণ পরিশোদের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করে যাওয়া এবং মহান আল্লাহর নিকটে দো‘আ করা। ঋণমুক্তির দোআ হচেচ্ছ ‘আল্লা-হুম্মাকি্ফনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগ্নিনী বিফাযি্লকা ‘আম্মান সিওয়া-কা’। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন!’ রাসূল (ছাঃ) বলেন, এই দো‘আর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দিবেন’।[13] উল্লেখ্য যে, কোনভাবেই ঋণ পরিশোধ সম্ভব না হ’লে ঋণ দাতার নিকট থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে হবে অথবা দায়িত্বশীল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা সংগঠনের শরণাপন্ন হয়ে ঋণ মওকূফ বা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনভাবেই ঋণ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা লাভের উপায় :
১. অল্পে তুষ্ট থাকা : আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَإِنَّهُ أَجْدَرُ أَنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ ‘তোমাদের মধ্যে যে নীচে তোমরা তার দিকে তাকাও এবং যে তোমাদের উপরে তার দিকে তাকাবে না। আর এটাই হবে উৎকৃষ্ট পন্থা যে, তোমাদের প্রতি আল্লাহর যে নে‘মত রয়েছে তা তোমরা তুচ্ছ মনে করবে না’।[14] একই রাবী কর্তৃক অপর হাদীছ রাসূল (ছাঃ) বলেন,تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَالدِّرْهَمِ وَالْقَطِيفَةِ وَالْخَمِيصَةِ إِنْ أُعْطِىَ رَضِىَ وَإِنْ لَمْ يُعْطَ لَمْ يَرْضَ- ‘ধ্বংস হোক দীনারের গোলাম, দিরহাবের গোলাম ও উত্তম পোষাকের গোলাম! যদি তাকে দেওয়া হয়, তাহ’লে সে সন্তুষ্ট হয়, আর না দেওয়া হ’লে অসন্তুষ্ট হয়’।[15] সুতরাং অধিক পাওয়ার আকাংখা পরিত্যাগ করে আল্লাহ প্রদত্ত রিযিকের উপরে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
২. দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত হওয়া : কোন্
কর্ম দ্বারা আল্লাহর ভালাবাসা এবং মানুষের ভালবাসা পাওয়া সম্ভব? জনৈক
ব্যক্তির এমন প্রশ্নের জবাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِزْهَدْ فِى الدُّنْيَا
يُحِبَّكَ اللَّهُ وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبُّكَ النَّاسُ-
‘দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত হও তাহ’লে আল্লাহ তোমাকে ভালবাসবেন। আর লোকেদের
ধন-সম্পদের প্রতি অনাসক্ত হয়, তাহ’লে লোকেরা তোমাকে ভালবাসবে’।[16]
৩. হাশরের ময়দানের ভয়াবহতা অনুধাবন করা : মিক্বদাদ
ইবনুল আসওয়াদ আল-কিন্দী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে
শুনেছি, إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أُدْنِيَتِ الشَّمْسُ مِنَ
الْعِبَادِ حَتَّى تَكُوْنَ قِيْدَ مِيْلٍ أَوْ مِيْلَيْنِ قَالَ:
فَتَصْهَرُهُمُ الشَّمْسُ فَيَكُوْنُوْنَ فِى الْعَرَقِ بِقَدْرِ
أَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى كَعْبَيْهِ وَمِنْهُمْ مَنْ
يَكُونُ إِلَى رُكْبَتَيْهِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى حَقْوَيْهِ
وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ الْعَرَقُ إِلْجَامًا- ‘যখন ক্বিয়ামত সংঘটিত
হবে, তখন সূর্য এক মাইল বা দু’মাইল মাথার উপরে চলে আসবে। অতঃপর সূর্যতাপে
তাদের দেহ গলে যাবে। তাতে পাপের পরিমাণ অনুযায়ী কারো হাঁটু পর্যন্ত, কারো
কোমর পর্যন্ত কারো পায়ের টাখনু পর্যন্ত, কারো বুক পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে।[17]
আনাস (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) সূর্যগ্রহণের সময় দীর্ঘ ছালাত আদায়ের পর ছাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا ‘আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা কম কম হাসতে এবং বেশী বেশী করে কাঁদতে’। রাবী বলেন, এ কথা শুনে ছাহাবীগণ নিজেদের চেহারা ঢেকে নিলেন এবং তাদের কাছ থেকে কান্নার গুনগুন শব্দ আসতে লগলো।[18] অতএব দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা লাভ করতে হ’লে হাশরের ভয়াবহতা স্মরণ করে আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করতে হবে এবং দুনিয়ার মোহ পরিত্যাগ করে আল্পে তুষ্ট থাকতে হবে।
উপসংহার :
আল্লাহ মানুষকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে পরীক্ষা করেন, মানুষ
আল্লাহকে ভুলে যায় কি-না, সে বেপরোয়া হয় কি-না, আয়-রোযগার ও ব্যয়-বণ্টনে
সীমালংঘন করে কি-না? তা দেখার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, অধিকাংশ মানুষই আজ এ
বিষয়ে যারপরনাই উদাসীন। দুনিয়া লাভে এতটাই ব্যস্ত যে, এগুলি ভাববারও যেন
তার কোন অবকাশ নেই। অথচ ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেয়া
পর্যন্ত আদম সন্তানের এক কদম নড়ানোরও ক্ষমতা হবে না। তারমধ্যে দু’টি হ’ল,
‘কোন পথে সম্পদ উপার্জন করেছে এবং কোন পথে তা ব্যয় করেছে’।[19] রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ঐ দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যে দেহ হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে’।[20]
অতএব আমাদের সকলের দায়িত্ব নিজেদের আয়ের উৎসগুলো খতিয়ে দেখা। যদি হারাম আয় থাকে তবে অতিসত্তর আল্লাহর কাছে তওবা করে হারাম আয়ের উৎস বন্ধ করা এবং হালাল উপার্জনে প্রবৃত্ত হওয়া। আল্লাহ আমাদেরকে যাবতীয় হারাম ও সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করুন।-আমীন!!
[1]. তাফসীরুল কুরআন, ৩০ তম পারা, পৃ: ৩৩১।
[2]. মুসলিম হা/২৫৭৮; মিশকাত হা/১৮৬৫।
[3]. আবূদাঊদ হা/১৬৯৮; আহমাদ হা/৬৭৯২ সনদ ছহীহ।
[4]. বুখারী হা/১৩৯৫; মুসলিম হা/১৯; মিশকাত হা/১৭৭২।
[5]. আলে ইমরান ১৮০; বুখারী, মিশকাত হা/১৭৭৪; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৬৮২ ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[6]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৭৩; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৬৮১ ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[7]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৭৫; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৬৮৩; তাহক্বীক্ব তিরমিযী হা/৬১৭।
[8]. মুসলিম হা/৫৮১; মিশকাত হা/৫১২৭-২৮ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায় ‘যুলুম’ অনুচ্ছেদ।
[9]. বুখারী, মিশকাত হ/২৯১০।
[10]. বুখারী হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬।
[11]. তিরমিযী হা/১০৭৮; মিশকাত হা/২৯১৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৭৭৯।
[12]. নাসাঈ হা/৪৬৮৪; ছহীহুল জামে হা/৩৬০০।
[13]. তিরমিযী হা/৩৫৬৩; মিশকাত হা/২৪৪৯; ছহীহাহ হা/২৬৬।
[14]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৪২।
[15]. বুখারী, মিশকাত হা/৫১৬১।
[16]. মুসলিম হা/১০৭ (১৫৯৯); মিশকাত হা/৫১৮৭; রিয়ায হা/৪৭৬; সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহা হা/৯৪৪।
[17]. মুসলিম হা/২৮৬৪; তিরমিযী হা/২৪২১; মিশকাত হা/৫৫৪০।
[18]. বুখারী হ/৪৬২১; মুসলিম হা/৯০১; মিশকাত হা/১৪৮৩, ৫৩৩৯।
[19]. তিরিমিযী হা/২৪১৬।
[20]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, মিশকাত হ/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯।