পর্ব ১

যেনা-ব্যভিচারের পরকালীন শাস্তি : ব্যভিচারী নারী-পুরুষ কবরে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। সামুরা ইবনে জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,... ‘আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হ’লাম। সেখানে একটি গর্তের নিকটে এসে পৌঁছলাম, যা তন্দুরের মতো ছিল। এটার উপরাংশ ছিল সংকীর্ণ ও ভিতরের অংশটি ছিল প্রশস্ত। তার তলদেশে আগুন জ্বলছিল। আগুনের লেলিহান শিখা যখন উপরের দিকে উঠছে, তখন তার ভিতরে যারা রয়েছে তারাও উপরে উঠে আসছে এবং গর্ত হ’তে বাইরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। আর যখন অগ্নিশিখা কিছু স্তিমিত হচ্ছে তখন তারাও পুনরায় ভিতরের দিকে চলে যাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে কিছু সংখ্যক উলঙ্গ নারী-পুরুষ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি?... তারা বললেন,وَالَّذِيْ رَأَيْتَهُ فِي الثَّقْبِ فَهُمُ الزُّنَاةُ، ‘আর (আগুনের) তন্দুরে যাদেরকে দেখেছেন তারা হ’ল ব্যভিচারী (নারী-পুরুষ)’।[1]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ ‘তিন প্রকার মানুষ আছে, ক্বিয়ামতের দিন যাদের সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পাপ থেকে পবিত্র করবেন না’। অন্য বর্ণনায় আছে,وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‘আল্লাহ তাদের প্রতি (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি’। তারা হচ্ছে,شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ ‘বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক ও গরীব অহংকারী’।[2]

পরকীয়ার কুফল :

পরকীয়া একটি নিষিদ্ধ সম্পর্কের নাম। অনেকে সন্তান ও পরিবারের ভবিষ্যত চিন্তা করে স্বামী-স্ত্রীর এই নিষিদ্ধ সম্পর্ক নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে। অনেকেই বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার ন্যায় কবীরা গোনাহের পথ। আবার কেউ কেউ পরকীয়া নামক নরকযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ঘটাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। ইসলাম পরকীয়া-ব্যভিচারকে সমর্থন করে না। বৈধ সম্পর্কের মাধ্যমে ইসলাম মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ইসলামে পরকীয়ার সম্পর্ককে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। নারী-পুরুষ সবাইকেই চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। মহান আল্লাহ বলেন, وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ’ (বনী ইসরাঈল ১৭/৩২)। অপরদিকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) লজ্জাস্থান ও মুখ হিফাযতকারীর জন্য জান্নাতের যামিনদার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন’।[3] ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে পরকীয়ার বহুবিধ ক্ষতি রয়েছে। যেমন-

১. পরকীয়া একটি অমানবিক কাজ : মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। আল্লাহ তাদেরকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন (তীন ৯৫/৪) এবং অন্যান্য সৃষ্টির উপর সম্মানিত করেছেন (ইসরা ১৭/৭০)। তার আচার-ব্যবহার উন্নত। অপরদিকে পরকীয়া বিকৃত মানসিকতার কাজ। সুস্থ মস্তিষ্কের কোন নারী-পুরুষ পরকীয়ায় লিপ্ত হ’তে পারে না। নিজের স্ত্রী অন্য কারো সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হোক, কিংবা নিজের স্বামী অন্য কোন মহিলার সঙ্গে মেলামেশা করুক এটা কেউই মেনে নিবে না।

২. মানসিক অশান্তির কারণ : একজন মানুষের জন্য এর চেয়ে অশান্তির কারণ কি হ’তে পারে যে, তার সর্বাধিক প্রিয় মানুষ তাকে ফাঁকি দিয়ে অন্য লোকের সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত, অথচ আল্লাহ তাদেরকে একে অপরের পোষাক বলেছেন (বাক্বারাহ ২/১৮৭) এবং স্বামীর জন্য স্ত্রীকে সুখের নীড় বলেছেন (রূম ২১/৩০)। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অব নেভাদা’র অধ্যাপক ড্যানিয়েল উয়েগেল ও গবেষক রোজি শ্রাউটের মতে, ‘পরকীয়া সম্পর্ক ভুক্তভোগীর মনে ক্রোধ, অশান্তি, দুঃখ, অবিশ্বাস ও অশেষ মানসিক যন্ত্রণার সৃষ্টি করে’।[4]

৩. হত্যাকান্ডের অন্যতম কারণ : পরকীয়ায় জড়িত নারী-পুরুষের একে অপরকে প্রাথমিক দিকে ভাল লাগলেও তার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। কেউ পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে হত্যা করছে স্ত্রীকে। আবার কোন ক্ষেত্রে স্ত্রী তার প্রেমিক বা ভাড়াটে লোক দিয়ে খুন করাচ্ছে নিজ স্বামীকে। এমন স্বামীও রয়েছে, যে পরকীয়ার কারণে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে খুন করেছে তাদেরই আরেক সন্তানকে। গত ১৬ই আগষ্ট ২০২২ তারিখে লক্ষ্মীপুরের গৃহবধূ লায়লা নূর মজুমদার নিপু তার প্রেমিক সোহাগের সাথে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। সোহাগ তার বন্ধু রফিককে সাথে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যা করে মরদেহটি বাগানে ফেলে পালিয়ে যায়।[5] গত ২২শে জুন ২০১৯ ‘প্রথম আলো’ অনলাইনের সংবাদ অনুযায়ী ঝিনাইদহ যেলার সদর উপযেলার বাগুটিয়া গ্রামের পাটক্ষেত থেকে উদ্ধারকৃত সোহেল রানার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পুলিশ জানায় যে, ‘পরকীয়ার কারণে সোহেল রানাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে’।[6] এরূপ বহু ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশে।

৪. পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হয় : পরকীয়ার কারণে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয়, তেমনি পারিবারিক সম্পর্কে ফাটল ধরে। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল দেখা দেয়। একসময় তাদের বৈবাহিক জীবনে ভাঙন সৃষ্টি হয়। পরকীয়ার বিষফল মানবজাতি দীর্ঘকাল থেকে ভোগ করে আসছে। এক পরিসংখ্যান মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তালাকের মাধ্যমে সংসার ভাঙার কারণ স্বামীর পরকীয়া ও মাদকাসক্তি।[7] আরেকটি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, তালাকের অন্যতম কারণ হ’ল- ‘স্বামীর অন্য নারীর সাথে সম্পর্ক বা পরকীয়া’।[8] আর তালাকের আবেদনের মধ্যে ৭০ শতাংশই স্ত্রীদের পক্ষ থেকে।[9]

৫. সামাজিক অস্থিরতার কারণ : মানব সমাজকে সভ্য রাখতে মহান আল্লাহ বিবাহের বিধান দিয়েছেন। এই প্রথার বাইরে গিয়ে সুখ খোঁজার পরিণতি হচ্ছে পরিবার-সংসার ভাঙ্গার উপাখ্যান। যা পরিবারের সুখী মানুষগুলোর বোবাকান্নার জন্ম দেয়। একটি সুখী সুন্দর সংসার নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেবার সম্পর্কের নাম পরকীয়া। এটা পারিবারিক অশান্তি ও সামাজিক অস্থিরতার কারণ।

৬. সন্তানের উপর বিরূপ প্রভাব : মনোচিকিৎসায় একথা স্বীকৃত যে, পিতামাতার পরকীয়া সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক বিষণ্ণতা ও আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়। এছাড়া পারিবারিক ও দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতিতে পরকীয়া প্রভাব রাখে।[10] তাছাড়া পিতা-মাতার পরকীয়ার কারণে সন্তানদের লেখাপড়া, তাদের সেবাযত্ন ও প্রতিপালন ব্যাহত হয়। অনেক সময় পিতা-মাতার পরকীয়ার কারণে সন্তান হত্যারও শিকার হয়। বরিশাল যেলার সদর উপযেলায় লিপি আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার কবির খানের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গত ২৭শে মে ২০২২ লিপি আক্তার ও কবির খানকে ঘরের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে লিপির মেয়ে তন্বী। বিষয়টি পিতাকে জানাবে বললে লিপি ও কবির খান তন্বীকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে।[11] এ ধরনের বহু ঘটনা পত্র-পত্রিকা খুললেই নযরে আসে।[12]

৭. অবৈধ সন্তানের জন্ম : পরকীয়ায় জড়িয়ে পুরুষ-মহিলার গোপন অভিসারে ও অবৈধ মিলনের ফলে অবৈধ সন্তানের জন্ম হয়। ফলে মানববংশ বিস্তারের স্বাভাবিক ধারা ব্যাহত হয়। মানব বংশধারা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,

يَاأَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا،

‘হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে একজন মানুষ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর ঐ জোড়া থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন অগণিত পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের নিকট প্রার্থনা করে থাক এবং রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা সম্পর্কে সতর্ক হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের পর্যবেক্ষক’ (নিসা ৪/১)।

৮. তালাকযোগ্য অপরাধ : সমাজের সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ককে মেনে নেয় না। ফলে পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রীকে স্বামী তালাক দেয়। মহান আল্লাহ বলেন,

يَاأَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَاءَ كَرْهًا وَلَا تَعْضُلُوهُنَّ لِتَذْهَبُوْا بِبَعْضِ مَا آتَيْتُمُوْهُنَّ إِلَّا أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِنْ كَرِهْتُمُوْهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوْا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيْرًا-

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর হালাল নয় যে, তোমরা জোরপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী বনে যাও। আর তোমরা তাদেরকে (মোহরানা ও অন্যান্য সম্পদ) যা দিয়েছ, তা থেকে কিছু নিয়ে নেওয়ার (কপট) উদ্দেশ্যে (স্বামীদের মৃত্যুর পর) তাদেরকে অন্যত্র বিয়ে করতে বাধা দিয়ো না। অবশ্য যদি তারা প্রকাশ্যে কোন ফাহেশা কাজ করে (তবে সেকথা স্বতন্ত্র)। তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। যদি তোমরা তাদের অপসন্দ কর, (তবে হ’তে পারে) তোমরা এমন বস্ত্তকে অপসন্দ করছ, যার মধ্যে আল্লাহ প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন’ (নিসা ৪/১৯)। স্ত্রীর মধ্যে কোন ত্রুটি দেখলে স্বামী তাকে উপদেশ দিবে। সতর্ক করার পরেও সে সাবধান না হ’লে তাকে তালাক দিবে। তবে যদি স্ত্রী তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে খালেছ অন্তরে তওবা করে, তাহ’লে তাকে ক্ষমা করে দিয়ে পূর্বের ন্যায় সংসার করতে পারবে’ (আলে ইমরান ৩/১৩৫)।

৯. আত্মহত্যার কারণ : ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে কলুষিত করার অন্যতম নোংরা পন্থা হ’ল পরকীয়া। এর আরেকটি কুফল হ’ল হত্যাকান্ড। কারো স্বামী বা স্ত্রীর পরকীয়ার কথা প্রকাশ পেলে তার মান-সম্মান নষ্ট হয়ে যায়। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে কোন কোন ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী আত্মাহত্যার পথ বেছে নেয়। গত ২৯শে জুন ২০২২ তারিখে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, পরকীয়ার কারণে নেত্রকোনার মদনে স্বামী নান্দু মীর তার স্ত্রী হিমা আক্তারকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করে।[13] এরূপ আরো বহু ঘটনা পত্রিকার পাতায় নযর বুলালেই পাওয়া যায়।[14]

১০. পরিণাম জাহান্নাম : পরকীয়ার পরকালীন শাস্তি হ’ল জাহান্নাম। ফাযালা বিন ওবায়দ (রাঃ) বলেন,ثَلاَثَةٌ لاَ تَسْأَلْ عَنْهُمْ رَجُلٌ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ وَعَصَى إِمَامَهُ وَمَاتَ عَاصِياً وَأَمَةٌ أَوْ عَبْدٌ أَبَقَ فَمَاتَ وَامْرَأَةٌ غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا قَدْ كَفَاهَا مُؤْنَةَ الدُّنْيَا فَتَبَرَّجَتْ بَعْدَهُ فَلاَ تَسْأَلْ عَنْهُمْ ‘তিন প্রকার ধ্বংসে নিপতিত ব্যক্তিদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে না- (১) যে ব্যক্তি জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল এবং তার ইমামের (নেতার) অবাধ্য হ’ল এবং অবাধ্য অবস্থায় মারা গেল। (২) যে ক্রীতদাসী বা ক্রীতদাস তার মনিবের নিকট থেকে পালিয়ে গেল। (৩) যে নারীর স্বামী বহির্দেশে গিয়েছে, সে যদি তার অনুপস্থিতিতে তার রূপ যৌবনের পসরা করে বেড়ায় এবং ভ্রষ্টা হয়’।[15]

অন্যত্র নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন,وَشَرُّ نِسَائِكُمُ الْمُتَبَرِّجَاتُ الْمُتَخَيِّلاَتُ وَهُنَّ الْمُنَافِقَاتُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْهُنَّ إِلاَّ مِثْلُ الْغُرَابِ الأَعْصَمِ ‘তোমাদের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট নারী তারাই, যারা

সৌন্দর্য প্রকাশ করে, আর অহংকার করে। তারা তো মুনাফেক রমনী। ঐ নারীদের মধ্য থেকে ‘সাদা পা-বিশিষ্ট কাকের মতো’ অতীব বিরল সংখ্যক নারী জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[16]

ব্যভিচারের বিষয়টি আরও কদর্য ও ঘৃণিত হয়ে দাঁড়ায় তখন, যখন কোন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি ব্যভিচার করে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمَ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ ‘ক্বিয়ামত দিবসে তিন ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না; বরং তাদের জন্য থাকবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারা হ’ল বয়োবৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক ও অহংকারী দরিদ্র’।[17] [ক্রমশঃ]

মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ

 গ্রাম: তুলাগাঁও নোয়াপাড়া, দেবিদ্বার, কুমিল্লা।


[1]. তিরমিযী হা/৭০৪৮; মিশকাত হা/৪৬২১।

[2]. মুসলিম হা/১০৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৩৮০; মিশকাত হা/৫১০৯।

[3]. বুখারী হা/৬৪৭৪।

[4]. www.kalerkantho.com/online/Islamic-lifestylie/2019/12/ 12/850097

[5]. www.jagonews24.com/country/news/787520.

[6]. www.prothomalo.com/bangladesh/crime.

[7]. দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস, ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৯।

[8]. দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন ২২শে ডিসেম্বর ২০২০।

[9].dailyinqilab.com/article/458132.

[10]. /bn.wikipedia.org/wiki/পরকীয়া।

[11]. প্রথম আলো অনলাইন, ৪ঠা জুন ২০২২।

[12]. www.kalerkantho.com/online/country-news/2022/06/ 02/1151826; www.kalerkantho.com/online/country-news/2022/03/ 17/1129932

[13]. জাগো নিউজ ৩০শে জুন ২০২২।

[14]. দৈনিক ইত্তেফাক, ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯;দৈনিক ইনকিলাব, ১৫ই মার্চ, ২০২২; সময় টিভি অনলাইন, ৪ঠা এপ্রিল ২০২২।

[15]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৫৯০; ছহীহুল জামে‘ হা/৩০৫৮।

[16]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/১৩৪৭৮; ছহীহাহ হা/১৮৪৯।

[17]. মুসলিম হা/১৭২; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৩৮০; মিশকাত হা/৫১০৯।






বিষয়সমূহ: পাপ
দ্বীনের উপর অবিচলতা - আব্দুর রাক্বীব মাদানী, শিক্ষক, জামে‘আতুল ইমাম আল-বুখারী, কিষাণগঞ্জ, ভারত
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত পরিচিতি - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
পারিবারিক অপরাধ : কারণ ও প্রতিকার - মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন
আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম (৭ম কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
আতিথেয়তার আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর উপর নির্যাতন - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
মানবাধিকার ও ইসলাম (৩য় কিস্তি) - শামসুল আলম
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল - আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রাযযাক
অল্পে তুষ্টি - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
শোকর (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
মাসায়েলে কুরবানী - আত-তাহরীক ডেস্ক
হেদায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.