শীতকালে
শরীরের বিভিন্ন ব্যথা বৃদ্ধি পায়। শরীরের পিঠ, কাঁধ, হাঁটু, মাথাসহ গাঁটের
ব্যথা সহ নানা ব্যথা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপমাত্রা কমলে জয়েন্ট বা
অস্থিসন্ধির রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে রক্তের তাপমাত্রাও
কমে যায়। ফলে জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে। তখনই ব্যথা বাড়ে। উপরন্তু
এবছর যেহেতু প্রায় সকলেই ঘরে বসে কাজ করছেন, টানা ৯ ঘন্টা বসে থাকছেন সে
কারণে ব্যথার প্রকোপও বেশী হবে।
এখনকার অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা ও পরিবেশ দূষণের ফলে অল্প বয়সেই শরীরে দেখা দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি। ঘাটতি হচ্ছে ভিটামিন ডি-এর। যে কারণে প্রথমেই ওষুধ না খেয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এবং ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে সুস্থ থাকা যায় সেদিকেই নযর দিতে হবে। এক্ষেত্রে নিম্নের খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়া যায়।
মেথি ভেজানো পানি : শরীরের যে কোন ব্যথার উপশম হয় মেথিতে। আগের রাতে এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ভাল করে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি পান করলে শরীরও ভাল থাকবে, ব্যথাও কমবে।
লবণ পানি দিয়ে সেঁক : এককাপ পানিতে সামান্য পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট মিশিয়ে ভাল করে গরম করে ঐ পানিতে কাপড় ডুবিয়ে সেঁক দিতে হবে। সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন সেঁকে দিলে ভাল উপকার হবে।
হলুদ ও আদার মিশ্রণ : এক গ্লাস পানিতে হলুদ ও আদা ফুটিয়ে নিয়ে আধা কাপ হ’লে নামিয়ে নিতে হবে। এবার ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে দিনে দু’বার পান করলে কমবে ব্যথা। সারা শীতকাল খেতে পারলে সুস্থ থাকা যাবে ইনশাআল্লাহ।
রসুন : রসুনের মধ্যে রয়েছে ব্যথানাশক উপাদান সালফার। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পেশী ও গাঁটের ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে বেশ উপকারী। এজন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া ভাল। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে রসুন-তেল গরম করে নিয়মিত মালিশ করা যেতে পারে।
ঠান্ডা-গরম সেঁক : হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে ভাল। নইলে একবার ঠান্ডা পানিতে, একবার গরম পানিতে পা ডোবাতে হবে। এরকম ১৫ মিনিট করতে হবে। হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে ৩০ মিনিট সেঁক দিলে গাঁটের ব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
কফি পান : কফি পানে ব্যায়ামজনিত ব্যথা দূর হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পান করলে মাথাব্যথা, মাইগ্রেইনের ব্যথা অনেক কমে, তবে সেটা দীর্ঘ সময়ের জন্যে নয়।
গাজরের জুস : গাজরের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই গাজরের জুস বানিয়ে তার মধ্যে পাতি লেবুর রস দিয়ে খালি পেটে প্রতিদিন সকালে খেলে উপকার হবে।
তিলের বীজ : তিল বীজও ব্যথা সারাতে ভাল কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা মাথা ব্যথা ও পেশীর ব্যথা অনায়াসে দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ও আদা : অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে আদার রস মিশিয়ে খাওয়া যায়। প্রয়োজনে সামান্য মধু যোগ করা যেতে পারে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগার হালকা গরম পানিসহ খেতে হয়।
মরিচের গুঁড়া ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ : গাঁটের ব্যথা কমাতে ক্যাপসাইসিন খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। লাল মরিচে মিলবে এই ক্যাপসাইসিন। আধা কাপ নারকেল তেলে দু’চামচ মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় ২০ মিনিট ধরে মালিশ করতে হবে। এর পর হালকা গরম পানি দিয়ে জায়গাটা ভাল করে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। দিনে অন্তত ৩-৪ বার এভাবে মালিশ করলে গাঁটের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
পুদিনা পাতার রস : পুদিনা পাতায় মেনথল নামে একটি উপাদান আছে, যা ধনুষ্টংকার রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এর তেল পায়ের কব্জি ও গোড়ালীতে মালিশে ব্যথা উপশম হয়। এমনকি মাথা ব্যথায় পুদিনা পাতা কপালে ঘষলেও ব্যথা উপশম হয়।
\ সংকলিত \