যারা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের ঘোরতর প্রতিপক্ষ, সেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য ইসলামী রাজনৈতিক দলও আওয়ামী লীগকে সরাসরি ইসলামবিরোধী দল হিসাবে আখ্যায়িত বা চিহ্নিত করেনি। যারা বামপন্থি বলে দাবি করে এবং সরাসরি কমিউনিজমের কথা বলে সেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি প্রভৃতি দল ইসলাম বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত। কারণ কমিউনিজমে ধর্মকে আফিম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই তারা যখন ঠারে-ঠোরে বা প্রকাশ্যে ইসলামের বিরোধিতা করে তখন মানুষ অবাক হয় না। কারণ ধর্মের বিনাশের জন্যই তাদের জন্ম। আওয়ামী লীগ এতদিন সেই পথে হাঁটেনি। বরং মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশ আমলে অসংখ্যবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কুরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোন আইন পাস করবে না। শেখ মুজিব যতদিন পাকিস্তানের কাঠামোতে রাজনীতি করেছেন ততদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্তও ইসলাম বিরোধী বাক্য উচ্চারণ করেননি। ইসলাম বিরোধিতা তো দূরের কথা, ধর্মনিরপেক্ষতার কথাও তিনি উচ্চারণ করেননি। বর্তমান বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলে মাত্র দুটি নির্বাচন হয়েছে। একটি ১৯৫৪ সালে। আরেকটি ১৯৭০ সালে। দুটি নির্বাচনের কোন নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেনি। এমনকি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান এবং বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রদত্ত শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাংলাদেশের সংবিধানে বিধৃত। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রসহ কোন ডকুমেন্টেই আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধিতা তো দূরের কথা, ধর্মনিরপেক্ষতার কথাও বলেনি। সেই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান রচনা করে সেখানে অকস্মাৎ ধর্মনিরপেক্ষতাকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসাবে ঘোষণা করে।

এখানে আরো স্মরণ করা যেতে পারে যে, আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালে সারা পাকিস্তানভিত্তিক যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি কিন্তু কোন পার্লামেন্ট বা সরকার গঠনের নির্বাচন ছিল না। সেটি ছিল পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র বা সংবিধান রচনার নির্বাচন। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের নিয়ে গঠিত হবে গণপরিষদ (Constituent Assembly)। এই গণপরিষদ পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করবে। সেটি আর সম্ভব হয়নি। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯ মাস পর পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল স্বাধীন হয়ে নাম ধারণ করে বাংলাদেশ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও শেখ মুজিবুর রহমানের স্পষ্ট ওয়াদা ছিল যে, নির্বাচিত হলে বা ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাস করবে না। এখানে উলে­­খ করা যেতে পারে যে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে যারা পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ঐ নির্বাচনে যারা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হন তাদের নিয়ে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার গণপরিষদ। সেই গণপরিষদ ১৯৭২ সালের সংবিধান রচনা করে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর যেসব সদস্য অঙ্গীকার করেছিলেন, কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন প্রণীত হবে না, সেই তারাই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যুক্ত করেন। শুধু ঐটুকুতেই তারা ক্ষান্ত হননি। ঐ সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় এবং মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী প্রভৃতি ইসলামী মূল্যবোধের অনুসারী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হ’ল এই যে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হ’লেও ধর্মবিরোধী বিশেষ করে ইসলাম বিরোধী রাজনীতি বহাল থাকে। তাই কমিউনিস্ট পার্টি এবং সমাজতন্ত্রের অনুসারী মনি-মোজাফফরের রাজনৈতিক দলসমূহ বহাল তবিয়তে রাজনীতির মাঠে থাকার লাইসেন্স পায়।

এত কিছু পরেও কিন্তু আওয়ামী লীগকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলসমূহ ইসলাম বিরোধী দল হিসাবে চিহ্নিত করেনি বা আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী, এই মর্মে কোন প্রচারণা চালায়নি। কিন্তু যতই দিন গেছে ততই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ধীরে ধীরে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের রাজনীতি এক বিরাট রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হতে বর্তমান পর্যায়ে এসেছে।

এই পর্যায়ে এসে দেখা যাচ্ছে যে, পাঠ্যপুস্তকে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং যেসব বিষয় বাদ দেয়া হয়েছে তার ফলে এখন অনেকে বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মূল্যবোধের অনুসারী দলগুলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধিতার অভিযোগ আনার সুযোগ পাচ্ছে। এটি একটি মারাত্মক বিষয়। বিষয়টি আরো প্রকট হয়ে উঠবে নিচের ঘটনাবলী পড়লে।

গত সপ্তাহে দু-তিনটি দৈনিক পত্রিকায় একটি উদ্বেগজনক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। খবরটি শুধু উদ্বেগজনকই নয়, এই জাতির ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশে ইসলামের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত হওয়ার মতো খবর। এই খবরটির ওপর হেফাজতে ইসলাম একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছে। এবারই প্রথম দেখলাম যে, হেফাজতের বিবৃতিটি অনেক খেটেখুটে অনেক গবেষণা করে প্রণয়ন করা হয়েছে। ঐ বিবৃতিতে দেখানো হয়েছে যে, স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অনেকগুলো ইসলামী বিষয় বাদ দেয়া হয়েছে এবং তার স্থানে হিন্দু দেব-দেবীদের কথা, পাঁঠাবলি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে, যেখানে কোন কোন জায়গায় ইসলাম ও মুসলমানদের বাদ দেয়া হয়েছে এবং কোন কোন জায়গায় হিন্দুত্ব ঢোকানো হয়েছে।

পাঠ্যপুস্তকে বাংলা বই থেকে বাদ দেওয়া বিষয়গুলো হচ্ছে- (১) দ্বিতীয় শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে ‘সবাই মিলে করি কাজ’ শিরোনামে মুসলমানদের শেষনবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। (২) তৃতীয় শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে ‘খলিফা হযরত আবুবকর’ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। (৩) চতুর্থ শ্রেণী- খলিফা হযরত ওমরের সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত বাদ দেয়া হয়েছে। (৪) পঞ্চম শ্রেণী- ‘বিদায় হজ’ নামক শেষনবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত বাদ দেয়া হয়েছে।

(৫) পঞ্চম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে কাজী কাদের নেওয়াজের লিখিত ‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক একটি কবিতা। যাতে বাদশাহ আলমগীরের মহত্ত্ব বর্ণনা উঠে এসেছে এবং শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণনা করা হয়েছে। (৬) পঞ্চম শ্রেণী- শহীদ তিতুমীর নামক একটি জীবন চরিত বাদ দেয়া হয়েছে। এ প্রবন্ধটিতে মুসলিম নেতা শহীদ তিতুমীরের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের বিবরণ উলে­খ রয়েছে। (৭) ষষ্ঠ শ্রেণী- ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ লিখিত ‘সততার পুরস্কার’ নামক একটি ধর্মীয় শিক্ষণীয় ঘটনা বাদ দেয়া হয়েছে। (৮) ষষ্ঠ শ্রেণী- মুসলিম দেশ ভ্রমণ কাহিনী ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’ নামক মিসর ভ্রমণের ওপর লেখাটি বাদ দেয়া হয়েছে। (৯) ষষ্ঠ শ্রেণী- মুসলিম সাহিত্যিক কায়কোবাদের লেখা ‘প্রার্থনা’ নামক কবিতাটি বাদ দেয়া হয়েছে। (১০) সপ্তম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে ‘মরু ভাস্কর’ নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত। (১১) অষ্টম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে ‘বাবরের মহত্ত্ব’ নামক কবিতাটি। (১২) অষ্টম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে বেগম সুফিয়া কামালের লেখা ‘প্রার্থনা’ কবিতা। (১৩) নবম-দশম শ্রেণী- সর্বপ্রথম বাদ দেয়া হয়েছে মধ্যযুগের বাংলা কবি শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ নামক ইসলাম ধর্মভিত্তিক কবিতাটি। (১৪) নবম-দশম শ্রেণী- এরপর বাদ দেয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি ‘আলাওল’-এর ধর্মভিত্তিক ‘হামদ’ নামক কবিতাটি। (১৫) নবম-দশম শ্রেণী- আরো বাদ দেয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি আব্দুল হাকিমের লেখা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি। (১৬) নবম-দশম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে শিক্ষণীয় লেখা ‘জীবন বিনিময়’ কবিতাটি। কবিতাটি মুঘল বাদশাহ বাবর ও তার পুত্র হুমায়ুনকে নিয়ে লেখা। (১৭) নবম-দশম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিখ্যাত ‘ওমর ফারূক’ কবিতাটি।

ওপরের বিষয়গুলো বাদ দিয়ে স্কুলের নতুন পাঠ্যবইয়ে নিচের বিষয়গুলো যুক্ত করা হয়েছে- (১) পঞ্চম শ্রেণী- স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত ‘বই’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত: মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ পবিত্র কুরআন বিরোধী কবিতা। (২) ষষ্ঠ শ্রেণী- প্রবেশ করানো হয়েছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা। যেখানে রয়েছে হিন্দুদের দেবী দুর্গার প্রশংসা। (৩) ষষ্ঠ শ্রেণী- সংযুক্ত হয়েছে ‘লাল গরুটা’ নামক একটি ছোট গল্প যা দিয়ে কোটি কোটি মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মতো, অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ। (৪) ষষ্ঠ শ্রেণী- অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের হিন্দুদের তীর্থস্থান রাঁচির ভ্রমণ কাহিনী। (৫) সপ্তম শ্রেণী- ‘লালু’ নামক গল্পে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে পাঁঠাবলির নিয়ম-কানুন। (৬) অষ্টম শ্রেণী- পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ ‘রামায়ণ’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। (৭) নবম-দশম শ্রেণী- প্রবেশ করেছে ‘আমার সন্তান’ নামক একটি কবিতা। কবিতাটি হিন্দুদের ধর্ম সম্পর্কিত ‘মঙ্গল কাব্য’-এর অন্তর্ভুক্ত, যা দেবী অন্নপূর্ণার প্রশংসা ও তার কাছে প্রার্থনাসূচক কবিতা। (৮) নবম-দশম শ্রেণী- অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের পর্যটন স্পট ‘পালমৌ’-এর ভ্রমণ কাহিনী। (৯) নবম-দশম শ্রেণী- পড়ানো হচ্ছে ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ শিরোনামে বাউলদের বিকৃত যৌনাচারের কাহিনী। (১০) নবম-দশম শ্রেণী- ‘সাকোটা দুলছে’ শিরোনামের কবিতা দিয়ে ’৪৭-এর দেশভাগকে হেয় করা হয়েছে, যা দিয়ে কৌশলে ‘দুই বাংলা এক করে দেয়া’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হতে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। (১১) নবম-দশম শ্রেণী- প্রবেশ করেছে ‘সুখের লাগিয়া’ নামক একটি কবিতা, যা হিন্দুদের রাধা-কৃষ্ণের লীলাকীর্তন। (১২) প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে দেয়া হয়েছে ‘নিজেকে জানুন’ নামক যৌন শিক্ষার বই।

উপরের এই তালিকাটি এতই পরিষ্কার যে, এটি আর ব্যাখ্যা করে বলার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমি ভেবে অবাক হচ্ছি যে, আওয়ামী সরকারের আমলে মুসলমানিত্ব ছাঁটাই করে হিন্দুত্ব ঢোকানো হচ্ছে কেন? এটা তো আওয়ামী লীগের এজেন্ডা নয়। এটা হ’ল সিপিবি বা কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, গণজাগরণ মঞ্চ, ব­­গার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, এদের এজেন্ডা। তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায় আওয়ামী লীগ কেন নিজের ঘাড়ে নিল?

আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই নামাজ-রোজা করেন, হজব্রত পালন করেন। সিপিবি বা ঐ লাইনের পলিটিশিয়ান, আতেল, গায়ক-গায়িকা, ড্যান্সার, ঐ লাইনের কবি, হুমায়ুন আজাদ লাইনের কথাশিল্পী প্রমুখের এজেন্ডা। ৯২ শতাংশ জনগণ তাদের ইসলামবিরোধী বলে জানে। তাই পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমল মিলে তাদের রাজনীতি আছে ঐ তাল গাছের মতো, এক পায়ে দাঁড়িয়ে। এক ইঞ্চিও নট নড়ন চড়ন। তাদের ভোটের বাক্স সবসময় শূন্য থাকে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস সংশোধন করুন। সিপিবি লাইনের সিলেবাস বানাবেন না। এমন সিলেবাস বানান যেখানে ৯২ শতাংশ মানুষের হৃদয়ের অনুক্ত কথা বাঙ্ময় হয়ে ওঠে (সংকলিত)।

হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতির বাকী অংশ :

তারা বলেন, দেশের স্কুল-কলেজ ও ইউনির্ভার্সিটিগুলোতে কোটি কোটি মুসলমানের সন্তান কী পড়ছে, অভিভাবকরা তা জানেন না। ইসলাম ও মুসলমানদেরকে কটাক্ষ করে যারা নিয়মিত লেখালেখি করে, তাদের লেখা প্রায় প্রত্যেক শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত গল্প ও কবিতার সংখ্যা ১৯৩টি। এর মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক্যবাদীদের লেখার সংখ্যা হ’ল ১৩৭টি। অবশিষ্ট লেখার মধ্যেও ইসলামী ভাবধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোন লেখা নেই। জাতীয় শিক্ষাবোর্ডসহ অন্যান্য সকল বোর্ডের নিয়ন্ত্রণমূলক গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষপদগুলোতে মুসলমানদের বাদ দিয়ে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে হেফাজতের বিবৃতিতে একটি পরিসংখ্যান দিয়ে উলে­খ করা হয় যে, (১) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন নারায়ণ চন্দ্র পাল, (২) পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিব হচ্ছেন বজ্রগোপাল ভৌমিক, (৩) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হলেন ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র, (৪) একই বোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হচ্ছে তপন কুমার সরকার, (৫) কুমিল­া শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন প্রফেসর ইন্দোভূষণ ভৌমিক, (৬) বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন ডা. দিলীপ কুমার রায়, (৭) প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী, তৃতীয় শ্রেণীর ‘আমার বাংলা’ বইয়ের সমন্বয়ক হলেন উত্তম কুমার ধর, (৮) ৪র্থ শ্রেণী, ৫ম শ্রেণীর ‘আমার বাংলা’ বইয়ের সমন্বয়ক হলেন শুভাশিষ চক্রবর্তী, (৯) বাংলা ব্যকরণ ও নির্মিতি ৬ষ্ঠ শ্রেণীর প্রধান সমন্বয়ক হলেন গৌরাঙ্গ লাল সরকার এবং (১০) পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অধিকাংশ বইয়ের ছবি অংকনকারী হচ্ছেন সুদর্শন বাছার। (১১) এছাড়াও গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের দীর্ঘ দিনের একান্ত সচিব ছিলেন মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে এটা ষড়যন্ত্রের আলামত।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, স্কুল-কলেজে বিদ্যমান পাঠ্যবই বহাল থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেবল ঈমানহারা হয়েই গড়ে ওঠবে না, বরং ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠবে। ৯২ ভাগ মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে এটা কোনভাবেই চলতে দেয়া যায় না, চলতে দেয়া হবে না (দৈনিক সংগ্রাম, ৯.৪.২০১৬ইং)।

আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন (স.স.)।







বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট - মেহেদী হাসান পলাশ
মিয়ানমার এখন বাংলাদেশকে দূষছে - এ কে এম যাকারিয়া
অবরুদ্ধ পৃথিবীর আর্তনাদ! - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যুগে যুগে ষড়যন্ত্র - মুহাম্মাদ আব্দুল গফুর
করোনার চিকিৎসা ও টিকা বিনামূল্যে সবার জন্য চাই
ফ্রান্স ও স্পেনে হিজাব নিষিদ্ধ
সিঙ্গাপুর যে কারণে উন্নত - আত-তাহরীক ডেস্ক
কুরআন ও বাইবেলের আলোকে যাবীহুল্লাহ কে? - রূহুল হোসাইন, জলঙ্গী, মুর্শিদাবাদ, ভারত
শিক্ষা আইন ২০১৬-এর খসড়ার উপর আমাদের মতামত - মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আজারবাইজানের নাগর্নো-কারাবাখ বিজয় - মুহাম্মাদ ফেরদাউস
বাংলা ভাষা ও বাংলা একাডেমী নিয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ​র অগ্রন্থিত বক্তৃতা
আফগানদের কাছে আরেকটি মার্কিন পরাজয় - ড. মারূফ মল্লিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
আরও
আরও
.